মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
২৯- সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামত পরবর্তী বর্ণনা
হাদীস নং: ৫৬৮৬
দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জাহান্নাম ও জাহান্নামীদের বর্ণনা
৫৬৮৬। হযরত আবুদ দারদা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ দোযখবাসীদিগকে ভীষণ ক্ষুধায় লিপ্ত করা হইবে এবং ক্ষুধার যাতনা সেই আযাবের সমান হইবে, যাহা তাহারা পূর্ব হইতে দোযখে ভোগ করিতেছিল। তাহারা ফরিয়াদ করিবে। ইহার প্রেক্ষিতে তাহাদিগকে যারী' নামক এক প্রকার কাঁটাযুক্ত দুর্গন্ধময় খাদ্য দেওয়া হইবে। উহা তাহাদেরকে তৃপ্ত করিবে না এবং ক্ষুধাও নিবারণ করিবে না। অতঃপর পুনরায় খাদ্যের জন্য ফরিয়াদ করিবে, এইবার এমন খাদ্য দেওয়া হইবে, যাহা তাহাদের গলায় আটকাইয়া যাইবে। তখন তাহাদের দুনিয়ার ঐ কথাটি স্মরণে আসিবে যে, এইভাবে গলায় কোন খাদ্য আটকাইয়া গেলে তখন পানি গলাধঃকরণ করিয়া উহাকে নীচের দিকে ঢুকান হইত, সুতরাং তাহারা পানির জন্য ফরিয়াদ করিবে, তখন তপ্ত-গরম পানি লোহার কড়া দ্বারা উঠাইয়া কাছে ধরা হইবে, যখন উহা তাহাদের মুখের নিকটবর্তী করা হইবে, তখন তাহাদের মুখের গোশত ভাজা-পোড়া হইয়া যাইবে, আর যখনই সেই পানি তাহাদের পেটের ভিতরে ঢুকিবে, উহা তাহাদের পেটের ভিতরে যাহাকিছু আছে, তাহা খণ্ড-বিখণ্ড করিয়া ফেলিবে। এইবার দোযখীগণ পরস্পরে বলিবে, দোযখের রক্ষীদেরকে আহ্বান কর, (যেন আমাদের শাস্তি হ্রাস করা হয়।) তখন রক্ষীগণ বলিবেন, তোমাদের কাছে কি আল্লাহর রাসূলগণ স্পষ্ট দলীল-প্রমাণ লইয়া উপস্থিত হন নাই ? তাহারা বলিবে হ্যাঁ, আসিয়াছিলেন, (তবে আমরা তাঁহাদিগকে মিথ্যাবাদী বলিয়াছিলাম।) তখন রক্ষীগণ বলিবেন, তোমাদের ফরিয়াদ তোমরা নিজেরাই কর। অথচ কাফেরদের ফরিয়াদ নিরর্থক (অর্থাৎ, আল্লাহ্ তা'আলা উহা কবুল করিবেন না)। হুযুর (ﷺ) বলেন; এইবার দোযখীগণ বলাবলি করিবে, (দোযখের দারোগা) মালেককে ডাক। তখন তাহারা বলিবে, হে মালেক! তুমি আমাদের জন্য তোমার রবের কাছে এই আবেদন কর, তিনি যেন আমাদিগকে মৃত্যু দান করেন। উত্তরে মালেক বলিবেন, তোমরা হামেশার জন্য এইখানে এই অবস্থায়ই থাকিবে।
অধস্তন রাবী আ'মাশ বলেন, আমাকে বর্ণনা করা হইয়াছে; দোযখীদের আহ্বান বা ফরিয়াদ আর মালেকের জওয়াবের মাঝখানে একহাজার বৎসর অতিক্রান্ত হইবে। হুযূর (ﷺ) বলেন; দোযখীগণ সর্বদিক হইতে নিরাশ হইয়া অতঃপর তাহারা পরস্পরে বলিবে, এইবার তোমরা তোমাদের পরওয়ারদিগারের কাছে সরাসরি ফরিয়াদ কর। তোমাদের রবের চাইতে উত্তম আর কেহই নাই। তখন তাহারা বলিবে, হে আমাদের পরওয়ারদিগার। আমাদের দুর্ভাগ্য আমাদের উপর প্রবল হইয়া গিয়াছে, ফলে আমরা গোমরাহ্ সম্প্রদায়ে পরিণত হইয়াছি। হে আমাদের রব! আমাদিগকে এই দোযখ হইতে বাহির করিয়া দাও। ইহার পরও যদি আমরা পুনরায় নাফরমানীতে লিপ্ত হই, তাহা হইলে আমরাই হইব নিজেদের উপর অত্যাচারী। হুযূর (ﷺ) বলেন; তখন আল্লাহ্ তা'আলা তাহাদিগকে উত্তর দিবেন (হে হতভাগার দল!) দূর হও, জাহান্নামেই পড়িয়া থাক, তোমরা আমার সাথে আর কথা বলিবে না। হুযুর (ﷺ) বলেন; এই সময় তাহারা আল্লাহ্ তা'আলার সর্বপ্রকারের কল্যাণ হইতে নিরাশ হইয়া পড়িবে। এবং ইহার পর হইতে তাহারা (দোযখের মধ্যে থাকিয়া) বিকটভাবে চীৎকার ও হা-হুতাশ এবং নিজের উপর ধিক্কার করিতে থাকিবে। আব্দুল্লাহ্ ইবনে আব্দুর রহমান বলেন, লোকেরা এই হাদীসটি মরফুরূপে বর্ণনা করেন না। – তিরমিযী
অধস্তন রাবী আ'মাশ বলেন, আমাকে বর্ণনা করা হইয়াছে; দোযখীদের আহ্বান বা ফরিয়াদ আর মালেকের জওয়াবের মাঝখানে একহাজার বৎসর অতিক্রান্ত হইবে। হুযূর (ﷺ) বলেন; দোযখীগণ সর্বদিক হইতে নিরাশ হইয়া অতঃপর তাহারা পরস্পরে বলিবে, এইবার তোমরা তোমাদের পরওয়ারদিগারের কাছে সরাসরি ফরিয়াদ কর। তোমাদের রবের চাইতে উত্তম আর কেহই নাই। তখন তাহারা বলিবে, হে আমাদের পরওয়ারদিগার। আমাদের দুর্ভাগ্য আমাদের উপর প্রবল হইয়া গিয়াছে, ফলে আমরা গোমরাহ্ সম্প্রদায়ে পরিণত হইয়াছি। হে আমাদের রব! আমাদিগকে এই দোযখ হইতে বাহির করিয়া দাও। ইহার পরও যদি আমরা পুনরায় নাফরমানীতে লিপ্ত হই, তাহা হইলে আমরাই হইব নিজেদের উপর অত্যাচারী। হুযূর (ﷺ) বলেন; তখন আল্লাহ্ তা'আলা তাহাদিগকে উত্তর দিবেন (হে হতভাগার দল!) দূর হও, জাহান্নামেই পড়িয়া থাক, তোমরা আমার সাথে আর কথা বলিবে না। হুযুর (ﷺ) বলেন; এই সময় তাহারা আল্লাহ্ তা'আলার সর্বপ্রকারের কল্যাণ হইতে নিরাশ হইয়া পড়িবে। এবং ইহার পর হইতে তাহারা (দোযখের মধ্যে থাকিয়া) বিকটভাবে চীৎকার ও হা-হুতাশ এবং নিজের উপর ধিক্কার করিতে থাকিবে। আব্দুল্লাহ্ ইবনে আব্দুর রহমান বলেন, লোকেরা এই হাদীসটি মরফুরূপে বর্ণনা করেন না। – তিরমিযী
وَعَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: يُلْقَى عَلَى أَهْلِ النَّارِ الْجُوعُ فَيَعْدِلُ مَا هُمْ فِيهِ مِنَ الْعَذَابِ فَيَسْتَغِيثُونَ فَيُغَاثُونَ بِطَعَامٍ مِنْ ضَرِيعٍ لَا يُسْمِنُ وَلَا يُغْنِي مِنْ جُوعٍ فَيَسْتَغِيثُونَ بِالطَّعَامِ فَيُغَاثُونَ بِطَعَامٍ ذِي غُصَّةٍ فَيَذْكُرُونَ أَنَّهُمْ كَانُوا يُجِيزُونَ الْغُصَصَ فِي الدُّنْيَا بِالشَّرَابِ فَيَسْتَغِيثُونَ بِالشَّرَابِ فَيُرْفَعُ إِلَيْهِمُ الْحَمِيمُ بِكَلَالِيبِ الْحَدِيدِ فَإِذَا دَنَتْ مِنْ وُجُوهِهِمْ شَوَتْ وُجُوهَهُمْ فَإِذَا دَخَلَتْ بُطُونَهُمْ قطعتْ مَا فِي بطونِهم فيقولونَ: ادْعوا خَزَنَةَ جهنمَ فيقولونَ: أَلمْ تَكُ تَأْتِيكُمْ رُسُلُكُمْ بِالْبَيِّنَاتِ؟ قَالُوا: بَلَى. قَالُوا: فَادْعُوا وَمَا دُعَاءُ الْكَافِرِينَ إِلَّا فِي ضَلَالٍ قَالَ: فيقولونَ: ادْعوا مَالِكًا فيقولونَ: يَا مالكُ ليَقْضِ علَينا ربُّكَ قَالَ: «فيُجيبُهم إِنَّكم ماكِثونَ» . قَالَ الْأَعْمَشُ: نُبِّئْتُ أَنَّ بَيْنَ دُعَائِهِمْ وَإِجَابَةِ مَالِكٍ إِيَّاهُمْ أَلْفَ عَامٍ. قَالَ: فَيَقُولُونَ: ادْعُوا رَبَّكُمْ فَلَا أَحَدَ خَيْرٌ مِنْ رَبِّكُمْ فَيَقُولُونَ: رَبَّنَا غَلَبَتْ عَلَيْنَا شِقْوَتُنَا وَكُنَّا قَوْمًا ضَالِّينَ رَبَّنَا أَخْرِجْنَا مِنْهَا فَإِنْ عُدْنَا فَإِنَّا ظَالِمُونَ قَالَ: فيُجيبُهم: اخْسَؤوا فِيهَا وَلَا تُكلمونِ قَالَ: «فَعِنْدَ ذَلِكَ يَئِسُوا مِنْ كُلِّ خَيْرٍ وَعِنْدَ ذَلِكَ يَأْخُذُونَ فِي الزَّفِيرِ وَالْحَسْرَةِ وَالْوَيْلِ» . قَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ: وَالنَّاسُ لَا يرفعونَ هَذَا الحديثَ. رَوَاهُ الترمذيُّ
