মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)

২৯- সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামত পরবর্তী বর্ণনা

হাদীস নং: ৫৬৬৬
প্রথম অনুচ্ছেদ - জাহান্নাম ও জাহান্নামীদের বর্ণনা
৫৬৬৬। হযরত ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন কিয়ামতের দিন জাহান্নামকে এমন অবস্থায় উপস্থিত করা হইবে যে, উহার সত্তরটি লাগাম হইবে এবং প্রতিটি লাগামের সহিত সত্তর হাজার ফিরিশতা থাকিবে, তাহারা উহা টানিয়া আনিবে। —মুসলিম
وَعَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يُؤْتَى بِجَهَنَّمَ يَوْمَئِذٍ لَهَا سَبْعُونَ أَلْفَ زِمَامٍ مَعَ كُلِّ زِمَامٍ سبعونَ ألفَ مَلَكٍ يجرُّونها» . رَوَاهُ مُسلم

হাদীসের ব্যাখ্যা:

১. আল্লাহ্ তা'আলা জাহান্নামকে যেখানে তৈয়ার করিয়াছেন সেখান হইতে আনিয়া জান্নাতে গমনের পথে রাখা হইবে এবং উহার উপরেই বিছান হইবে পুলসিরাত। ইহা হইতে সহজেই ধারণা করা যায় যে, উহা কত বৃহৎ এবং উহা হইতে বাহির হওয়াও অসম্ভব।

২. জাহান্নাম শব্দটি আরবী না অনারবী, সে সম্পর্কে মতভেদ আছে। কারও মতে আরবী। এর উৎপত্তি جهومة থেকে। অর্থ বীভৎস দর্শন। অথবা এর উৎপত্তি جهنام থেকে। অর্থ গভীর। উভয় অর্থই জাহান্নামের সঙ্গে খাটে। জাহান্নামের দৃশ্য বীভৎস এবং তা অনেক গভীরও।

যেদিন সমস্ত মানুষ হিসাবের জন্য আল্লাহ তাআলার সামনে দাঁড়ানো থাকবে, সেদিন জাহান্নামকে টেনে তাদের সামনে উপস্থিত করা হবে। টানার জন্য তার সত্তর হাজার লাগাম থাকবে এবং প্রত্যেক লাগামের সঙ্গে থাকবে সত্তর হাজার ফিরিশতা। জাহান্নাম কেমন, তার লাগামই বা কেমন এবং কিভাবে তা টানা হবে, তা অদৃশ্য জগতের বিষয়। এ জগতে থেকে সে সম্পর্কে পুরোপুরি ধারণা লাভ করা সম্ভব নয়।

জাহান্নামকে টেনে সামনে আনার উদ্দেশ্য হয়তো হাশরের ময়দানের বিভীষিকাকে অধিকতর ভয়ংকর করে তোলা। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে সেদিনের বিভীষিকা থেকে তাঁর রহমতের ছায়ায় আশ্রয় দান করুন।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

ক. এ হাদীছ দ্বারা অনুমান করা যায় হাশরের ময়দান কতটা বিভীষিকাময় হবে।

খ. হাদীছটি দ্বারা জানা যায় জাহান্নাম অস্তিত্বমান বস্তু। সুতরাং জাহান্নামের শাস্তি কেবল মানসিক বিষয় নয়; বাস্তবিক শাস্তিই। এর দ্বারা জাহান্নামের বিশালতাও অনুভব করা যায়।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
মিশকাতুল মাসাবীহ - হাদীস নং ৫৬৬৬ | মুসলিম বাংলা