মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
২৯- সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামত পরবর্তী বর্ণনা
হাদীস নং: ৫৫৬১
তৃতীয় অনুচ্ছেদ - হিসাব-নিকাশ, প্রতিশোধ গ্রহণ ও মীযানের বর্ণনা
৫৫৬১। হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, একদা এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর সম্মুখে আসিয়া বসিল এবং বলিল, ইয়া রাসূলাল্লাহ্। আমার কাছে কতিপয় গোলাম আছে। উহারা আমার কাছে মিথ্যা কথা বলে, আমার মাল-সম্পদে খিয়ানত করে এবং আমার নির্দেশের নাফরমানী করে, তাই আমি উহাদিগকে গাল-মন্দ করি এবং মারধরও করিয়া থাকি। (কিয়ামতে) উহাদের ব্যাপারে আমার অবস্থা কি হইবে? তখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিলেনঃ যখন কিয়ামত সংঘটিত হইবে তখন গোলামদের খিয়ানত, নাফরমানী, মিথ্যা বলা এবং তোমার শাস্তি দেওয়া সবকিছুর হিসাব লওয়া হইবে। যদি তোমার শাস্তি প্রদান উহাদের অপরাধের সমান হয়, তখন ব্যাপার সমান সমান থাকিবে। তুমি সওয়াবও পাইবে না এবং তোমাকে কোন শাস্তিও দেওয়া হইবে না। আর যদি তোমার শাস্তি প্রদান উহাদের অপরাধের তুলনায় কম হয়, তখন উহাদের বর্ধিত অপরাধের শাস্তি না দেওয়ার জন্য তুমি সওয়াব পাইবে। কিন্তু যদি তোমার শাস্তি প্রদান উহাদের অপরাধের তুলনায় বেশী হয়, তখন গোলামদের জন্য তোমার নিকট হইতে প্রতিশোধ লওয়া হইবে। এই সমস্ত কথা শুনিয়া লোকটি অন্যত্র সরিয়া বসিল এবং চীৎকার দিয়া কাঁদিতে লাগিল। তখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তাহাকে লক্ষ্য করিয়া বলিলেন, তুমি কি আল্লাহর এই বাণীটি পড় নাই ? وَنَضَعُ الْمَوَازِينَ الْقِسْطَ لِيَوْمِ الْقِيَامَةِ فَلَا تُظْلَمُ نَفْسٌ شَيْئًا وَإِنْ كَانَ مِثْقَالَ حَبَّةٍ مِنْ خَرْدَلٍ أَتَيْنَا بِهَا وَكَفَى بِنَا حَاسِبِينَ (অর্থাৎ, কিয়ামতের দিন আমি ন্যায় ও নির্ভুল ওজনের পাল্লা স্থাপন করিব এবং কোন ব্যক্তির প্রতি সামান্য পরিমাণও অবিচার করা হইবে না, যদি আমল সরিষার দানা পরিমাণও হয় আমি উহাও উপস্থিত করিব, আর আমি হিসাব গ্রহণকারী হিসাবে যথেষ্ট।) তখন লোকটি বলিল, ইয়া রাসূলাল্লাহ্। আমি আমার নিজের এবং ঐ সমস্ত গোলামদের ব্যাপারে উহাদিগকে আমার নিকট হইতে পৃথক করিয়া দেওয়া অপেক্ষা উত্তম আর কিছু পাইতেছি না। আমি আপনাকে সাক্ষী করিয়া বলিতেছি যে, উহারা সকলেই মুক্ত। — তিরমিযী
اَلْفصْلُ الثَّالِثُ
عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: جَاءَ رَجُلٌ فَقَعَدَ بَيْنَ يَدَيْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ لِي مَمْلُوكِينَ يَكْذِبُونَنِي وَيَخُونُونَنِي وَيَعْصُونَنِي وَأَشْتِمُهُمْ وَأَضْرِبُهُمْ فَكَيْفَ أَنَا مِنْهُمْ؟ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِذَا كَانَ يَوْمُ الْقِيَامَةِ يُحْسَبُ مَا خَانُوكَ وَعَصَوْكَ وَكَذَّبُوكَ وَعِقَابُكَ إِيَّاهُمْ فَإِنْ كَانَ عِقَابُكَ إِيَّاهُمْ بِقَدْرِ ذُنُوبِهِمْ كَانَ كَفَافًا لَا لَكَ وَلَا عَلَيْكَ وَإِنْ كَانَ عِقَابُكَ إِيَّاهُمْ دُونَ ذَنْبِهِمْ كَانَ فَضْلًا لَكَ وَإِنْ كَانَ عِقَابُكَ إِيَّاهُمْ فَوْقَ ذُنُوبِهِمْ اقْتُصَّ لَهُمْ مِنْكَ الْفَضْلُ فَتَنَحَّى الرَّجُلُ وَجَعَلَ يَهْتِفُ وَيَبْكِي فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَمَا تَقْرَأُ قَوْلَ اللَّهِ تَعَالَى: (وَنَضَعُ الْمَوَازِينَ الْقِسْطَ لِيَوْمِ الْقِيَامَةِ فَلَا تُظْلَمُ نَفْسٌ شَيْئًا وَإِنْ كَانَ مِثْقَالَ حَبَّةٍ مِنْ خَرْدَلٍ أَتَيْنَا بِهَا وَكَفَى بِنَا حَاسِبِينَ) فَقَالَ الرَّجُلُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا أَجِدُ لِي وَلِهَؤُلَاءِ شَيْئًا خَيْرًا مِنْ مُفَارَقَتِهِمْ أُشْهِدُكَ أَنهم كلَّهم أحرارٌ. رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ
