মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
২৮- ফিতনাসমূহ ও কিয়ামতের আলামতের বর্ণনা
হাদীস নং: ৫৪৩৫
- ফিতনাসমূহ ও কিয়ামতের আলামতের বর্ণনা
তৃতীয় অনুচ্ছেদ - যুদ্ধবিগ্রহ সম্পৰ্কীয়
৫৪৩৫। শাকীক বলেন, হযরত হোযাইফা (রাঃ) বলিয়াছেন, একদা আমরা হযরত উমর (রাঃ)-এর নিকট বসা ছিলাম। তখন তিনি বলিলেন, তোমাদের মধ্যে কোন ব্যক্তির রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর ফিতনা সম্পর্কীয় বাণী স্মরণ আছে? হোযাইফা বলেন, আমি বলিলাম; আমার স্মরণ আছে তিনি যেভাবে বলিয়াছেন। উমর (রাঃ) বলিলেন, উহা পেশ কর। এই ব্যাপারে তুমিই সৎসাহসী। আচ্ছা বল দেখি, তিনি ফিতনা সম্পর্কে কিরূপ বলিয়াছেন ? আমি বলিলাম, আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)কে বলিতে শুনিয়াছি, মানুষ ফিতনায় পড়িবে তাহার পরিবার-পরিজনের ব্যাপারে, মাল-সম্পদের ব্যাপারে, তাহার নিজের সন্তান-সন্ততি ও পাড়া-প্রতিবেশীর ব্যাপারে। তবে নামায-রোযা, সদকা এবং ভাল কাজের আদেশ ও মন্দ কাজের নিষেধ তাহা মিটাইয়া দিবে। হযরত উমর (রাঃ) বলিলেন, আমি এই ফিতনা সম্পর্কে জানিতে চাহি নাই; বরং যেই ফিতনা সমুদ্রের তরং্গমালার মত উত্থিত হইবে এবং তোলপাড় করিয়া ফেলিবে, সেই ফিতনা সম্পর্কে জানিতে চাহিয়াছি। হোযাইফা বলেন, তখন আমি বলিলাম ; হে আমীরুল মু'মেনীন! উক্ত ফিনার সহিত আপনার কি সম্পর্ক? (উহা তো আপনাকে পাইবে না।) কেননা, সেই ফিতনা ও আপনার মধ্যে একটি আব্দ্ধ দরজা রহিয়াছে। তিনি জিজ্ঞাসা করিলেন, আচ্ছা, সেই দরজাটি কি ভাঙ্গিয়া দেওয়া হইবে, না খোলা হইবে? হোযাইফা বলেন; আমি বলিলাম, খোলা হইবে না; বরং ভাঙ্গিয়া দেওয়া হইবে। তখন উমর (রাঃ) বলিলেন, তাহা হইলে স্বভাবতঃ ইহাই প্রকাশ পায় যে, উহা আর কখনও বন্ধ করা হইবে না। রাবী বলেন, তখন আমরা হোযাইফাকে জিজ্ঞাসা করিলাম – আচ্ছা, উমর (রাঃ) কি জানিতেন—দরজাটি কে? উত্তরে তিনি বলিলেন হ্যাঁ, তিনি এমন নিশ্চিতভাবে জানিতেন যেমন আগামীকল্যের পূর্বে রাত্রির আগমন সুনিশ্চিত। আমি তাঁহাকে (উমরকে) এমন একটি হাদীস বর্ণনা করিয়াছি—যাহা কোন গোলক ধাঁধা নহে। রাবী বলেন, আমরা তো এই ব্যাপারে হোযাইফাকে জিজ্ঞাসা করিতে ভয় পাইতেছিলাম, তাই হযরত মাসরূককে বলিলে তিনি হোযাইফাকে জিজ্ঞাসা করিলেন; দরজাটি কে? উত্তরে তিনি বলিলেন; দরজাটি হইলেন 'উমর’ নিজেই। —মোত্তাঃ
كتاب الفتن
اَلْفصْلُ الثَّالِثُ
عَن شَقِيق عَن حُذَيْفَة قَالَ: كُنَّا عِنْدَ عُمَرَ فَقَالَ: أَيُّكُمْ يَحْفَظُ حَدِيثِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الْفِتْنَةِ؟ فَقُلْتُ: أَنَا أَحْفَظُ كَمَا قَالَ: قَالَ: هَاتِ إِنَّكَ لِجَرِيءٌ وَكَيْفَ؟ قَالَ: قُلْتُ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ «فِتْنَةُ الرَّجُلِ فِي أَهْلِهِ وَمَالِهِ وَنَفْسِهِ وَوَلَدِهِ وَجَارِهِ يُكَفِّرُهَا الصِّيَامُ وَالصَّلَاةُ وَالصَّدَقَةُ وَالْأَمْرُ بِالْمَعْرُوفِ وَالنَّهْيُ عَنِ الْمُنْكَرِ» فَقَالَ عُمَرُ: لَيْسَ هَذَا أُرِيدُ إِنَّمَا أُرِيدُ الَّتِي تَمُوجُ كَمَوْجِ الْبَحْر. قَالَ: مَا لَكَ وَلَهَا يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ؟ إِنَّ بَيْنَكَ وَبَيْنَهَا بَابًا مُغْلَقًا. قَالَ: فَيُكْسَرُ الْبَابُ أويفتح؟ قَالَ: قُلْتُ: لَا بَلْ يُكْسَرُ. قَالَ: ذَاكَ أَحْرَى أَنْ لَا يُغْلَقَ أَبَدًا. قَالَ: فَقُلْنَا لحذيفةَ: هَل كَانَ عمر يعلم مَنِ البابُ؟ قَالَ: نَعَمْ كَمَا يَعْلَمُ أَنَّ دُونَ غَدٍ لَيْلَةٌ إِنِّي حَدَّثْتُهُ حَدِيثًا لَيْسَ بِالْأَغَالِيطِ قَالَ: فَهِبْنَا أَنْ نَسْأَلَ حُذَيْفَةَ مَنِ الْبَابُ؟ فَقُلْنَا لِمَسْرُوقٍ: سَلْهُ. فَسَأَلَهُ فَقَالَ: عُمَرُ. مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ
হাদীসের ব্যাখ্যা:
'দরজাটি ভাঙ্গিয়া দেওয়া হইবে' –এর মধ্যে হযরত উমরের শাহাদতের প্রতি ইঙ্গিত রহিয়াছে। যাহার পর আর অদ্যাবধি তথা কিয়ামত পর্যন্ত ফিনার দরজা বন্ধ হইবে না।