মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
২৮- ফিতনাসমূহ ও কিয়ামতের আলামতের বর্ণনা
হাদীস নং: ৫৩৭৯
- ফিতনাসমূহ ও কিয়ামতের আলামতের বর্ণনা
ফিতনা পর্ব:
প্রথম অনুচ্ছেদ
প্রথম অনুচ্ছেদ
৫৩৭৯। হযরত হোযাইফা (রাঃ) বলেন, একদা রাসুলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের মাঝে দাড়াইয়া ভাষণ দিলেন এবং তখন হইতে কিয়ামত পর্যন্ত যাহাকিছু ঘটিবে উহার সমস্ত কিছুই বর্ণনা করেন। তাঁহার সেই ভাষণটি যাহারা স্মরণে রাখিতে পারে তাহারা স্মরণে রাখিয়াছে, আর যাহারা ভুলিয়া যাওয়ার তাহারা ভুলিয়া গিয়াছে। নিশ্চয়ই আমার বন্ধুগণ (সাহাবায়ে কেরামগণ)-ও সেই বিষয় অবগত আছেন। অবশ্য যখন কোন ঘটনা সম্মুখে আসে, যাহার কথা আমি ভুলিয়া গিয়াছি, তখন রাসূলুল্লাহ্ (ছাঃ)-এর সেই দিনের ভাষণটি আমার স্মরণে পড়ে। যেমন— কোন ব্যক্তি কিছুদিন অনুপস্থিত থাকার পর সম্মুখে উপস্থিত হইলে তাহাকে দেখামাত্রই চিনা যায়—এই তো সেই অমুক ব্যক্তি। — মোত্তাঃ
كتاب الفتن
كتاب الْفِتَن: الْفَصْل الأول
عَن حُذَيْفَة قَالَ: قَامَ فِينَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَقَامًا مَا تَرَكَ شَيْئًا يَكُونُ فِي مقَامه إِلَى قِيَامِ السَّاعَةِ إِلَّا حَدَّثَ بِهِ حَفِظَهُ مَنْ حَفِظَهُ وَنَسِيَهُ مَنْ نَسِيَهُ قَدْ عَلِمَهُ أَصْحَابِي هَؤُلَاءِ وَإِنَّهُ لَيَكُونُ مِنْهُ الشَّيْءُ قَدْ نَسِيتُهُ فَأَرَاهُ فَأَذْكُرُهُ كَمَا يَذْكُرُ الرَّجُلُ وَجْهَ الرَّجُلِ إِذَا غَابَ عَنْهُ ثُمَّ إِذَا رَآهُ عرفه. مُتَّفق عَلَيْهِ
হাদীসের ব্যাখ্যা:
فتن (ফিতান) فتنة (ফিতনা)-এর বহুবচন। অর্থ, বিপদ, বিপর্যয় এবং পরীক্ষা। আল্লাহর কালামে বিভিন্ন আয়াতে ফিতনার উল্লেখ রহিয়াছে। এখানে ইহা ব্যক্তির দ্বীনদারীর পরীক্ষা অর্থে ব্যবহৃত হইয়াছে। যথা—কে দ্বীনের প্রতি নিষ্ঠাবান, আর কে নিষ্ঠাবান নয়, আর কে কোন বিপদ-আপদে দ্বীনের উপর অবিচল থাকে, আর কে উহাতে জড়াইয়া পড়ে তাহা পরীক্ষা করা। বস্তুতঃ পরীক্ষা ব্যতীত কোন ব্যক্তির গুণের বিকাশ এবং মর্যাদার দ্বার উন্মোচন হয় না। যেমন, আল্লাহ্ তা'আলা বলেনঃ أَحَسِبَ النَّاسُ أَن يُتْرَكُوا أَن يَقُولُوا آمَنَّا وَهُمْ لَا يُفْتَنُونَ (অর্থাৎ মানুষ কি মনে করে যে, 'আমরা ঈমান আনিয়াছি' এই কথা বলিলেই তাহাদিগকে পরীক্ষা না করিয়া অব্যাহতি দেওয়া হইবে।) আরও বলা হইয়াছেঃ إِنَّمَا أَمْوَالُكُمْ وَأَوْلَادُكُمْ فِتْنَةٌ (অর্থাৎ, প্রকৃত পক্ষে তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততিগণ তোমাদের জন্য পরীক্ষার বস্তুমাত্র।)
হযরত শাহ্ ওয়ালী উল্লাহ্ মুহাদ্দিসে দেহলবী (রঃ) বলেনঃ ‘ফিতনা' বিভিন্ন প্রকারে ও বিভিন্নভাবে যেমন—ব্যক্তিগত জীবনে, পারিবারিক জীবনে, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ—যাহা সাধারণতঃ দ্বীন ও শরীঅত বিরোধী কার্যকলাপের আধিক্য এবং অত্যাচারীদের অত্যাচারের কারণে হইয়া থাকে। অত্র অধ্যায়ের হাদীসসমূহে এইরূপ ফিতনাসমূহ সম্পর্কে সতর্ক করা হইয়াছে।
অর্থাৎ, হুযূর (ﷺ)-এর সেই ভাষণটি ছিল খুবই তাৎপর্যপূর্ণ, কিন্তু সাহাবাগণ উহা পুরাপুরিভাবে স্মরণ রাখিতে পারেন নাই। হোযাইফা (রাঃ) বলেন, আমার স্মৃতি হইতেও অনেক কিছু মুছিয়া গিয়াছে। তবে, উহার কোন একটি সংঘটিত হইতে দেখিলে তাঁহার সেই দিনের কথাটি আমার মনে পড়ে। এইজন্য সমস্ত সাহাবীগণের মধ্যে এই কথাটি প্রসিদ্ধ ছিল যে, হযরত হোযাইফা (রাঃ) ছিলেন ফিতনা সম্পর্কীয় হাদীসের অত্যধিক সংরক্ষণকারী।
হযরত শাহ্ ওয়ালী উল্লাহ্ মুহাদ্দিসে দেহলবী (রঃ) বলেনঃ ‘ফিতনা' বিভিন্ন প্রকারে ও বিভিন্নভাবে যেমন—ব্যক্তিগত জীবনে, পারিবারিক জীবনে, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ—যাহা সাধারণতঃ দ্বীন ও শরীঅত বিরোধী কার্যকলাপের আধিক্য এবং অত্যাচারীদের অত্যাচারের কারণে হইয়া থাকে। অত্র অধ্যায়ের হাদীসসমূহে এইরূপ ফিতনাসমূহ সম্পর্কে সতর্ক করা হইয়াছে।
অর্থাৎ, হুযূর (ﷺ)-এর সেই ভাষণটি ছিল খুবই তাৎপর্যপূর্ণ, কিন্তু সাহাবাগণ উহা পুরাপুরিভাবে স্মরণ রাখিতে পারেন নাই। হোযাইফা (রাঃ) বলেন, আমার স্মৃতি হইতেও অনেক কিছু মুছিয়া গিয়াছে। তবে, উহার কোন একটি সংঘটিত হইতে দেখিলে তাঁহার সেই দিনের কথাটি আমার মনে পড়ে। এইজন্য সমস্ত সাহাবীগণের মধ্যে এই কথাটি প্রসিদ্ধ ছিল যে, হযরত হোযাইফা (রাঃ) ছিলেন ফিতনা সম্পর্কীয় হাদীসের অত্যধিক সংরক্ষণকারী।