আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

৫০- নবীজীর সাঃ যুদ্ধাভিযানসমূহ

হাদীস নং:
আন্তর্জাতিক নং: ৪৩৭০
২২৩৩. আব্দুল কায়স গোত্রের প্রতিনিধি দল
৪০৩১। ইয়াহয়া ইবনে সুলাইমান ও বকর ইবনে মুদার (রাহঃ) .... বুকাইর (রাহঃ) থেকে বর্ণিত, (তিনি বলেন), ইবনে আব্বাস (রাযিঃ)- এর আযাদকৃত গোলাম কু্রাইব (রাহঃ) তাকে বর্ণনা করেছেন যে, ইবনে আব্বাস, আব্দুর রহমান ইবনে আযহার এবং মিসওয়ার ইবনে মাখরামা (রাযিঃ) (এ তিনজনে) আমাকে আয়েশা (রাযিঃ)- এর কাছে পাঠিয়ে বললেন, তাঁকে আমাদের সবার পক্ষ থেকে সালাম জানাবে। এবং তাঁকে আসরের পরের দু’রাকআত নামায সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করবে। কারণ আমরা অবহিত হয়েছি যে, আপনি নাকি এই দু’রাকআত নামায আদায় করেন অথচ রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এ দু’রাকআত নামায আদায় করতে নিষেধ করেছেন- এ হাদীসও আমাদের কাছে পৌঁছেছে। ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) বলেন, আমি উমর (রাযিঃ) সহ এ দু’রাকআত নামায আদায়কারী লোকদেরকে প্রহার করতাম।
কুরায়ব (রাহঃ) বলেন, আমি তাঁর [আয়েশা (রাযিঃ)] কাছে গেলাম এবং আমাকে যে ব্যাপারে পাঠিয়েছেন তা জানালাম। তিনি বললেন, বিষয়টি উম্মে সালামা (রাযিঃ)- এর কাছে জিজ্ঞাসা কর। এরপর আমি তাঁদেরকে [আয়েশা (রাযিঃ)- এর জবাবের কথা] জানালে তাঁরা আবার আমাকে উম্মে সালামা (রাযিঃ)- এর কাছে পাঠালেন এবং আয়েশা (রাযিঃ)- এর কাছে যা বলতে বলেছিলেন সেসব কথা তাঁর কাছেও গিয়ে বলতে বললেন।
তখন উম্মে সালামা (রাযিঃ) বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে শুনেছি যে, তিনি দু’রাকআত নামায আদায় করা থেকে নিষেধ করেছেন। কিন্তু একদিন তিনি আসরের নামায আদায় করে আমার ঘরে প্রবেশ করলেন। এ সময় আমার কাছে ছিল আনসারদের বনী হারাম গোত্রের কতিপয় মহিলা। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) দু’রাকআত নামায আদায় করলেন। আমি তা দেখে খাদীমা কে পাঠিয়ে বললাম, তুমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর পাশে গিয়ে দাঁড়াবে এবং বলবে, ‘উম্মে সালামা (রাযিঃ) আপনাকে এ কথা বলেছেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি কি আপনাকে এ দু’রাকআত আদায় করা থেকে নিষেধ করতে শুনিনি? অথচ দেখতে পাচ্ছি, আপনি সেই দু’রাকআত আদায় করছেন।এরপর যদি তিনি হাত দিয়ে ইশারা করেন তাহলে পিছনে সরে যাবে।
খাদীমা গিয়ে (সেভাবে কথাটি) বলল। তিনি হাত দিয়ে ইশারা করলেন। খাদীমা পেছনের দিকে সরে গেল। এরপর নামায সেরে তিনি বললেন, হে আবু উমাইয়ার কন্যা! (উম্মে সালামা) তুমি আমাকে আসরের পরের দু’রাকআত নামাযের কথা জিজ্ঞাসা করছ। আসলে আজ আব্দুল কায়স গোত্র থেকে তাদের কয়েকজন লোক আমার কাছে ইসলাম গ্রহণ করতে এসেছিল। তাঁরা আমাকে ব্যস্ত রাখার কারণে যোহরের পরের দু’রাকআত নামায আদায় করার সুযোগ আমার হয়নি। আর সেই দু’রাকআত হল এ দু’রাকআত নামায।

হাদীসের ব্যাখ্যা:

এ হাদীস থেকে প্রমাণিত হয় যে, নফল নামাযের মাকরূহ ওয়াক্তেও কাযা নামায পড়া যায়। এটাই হানাফী মাযহাবের মত। (শামী: ১/৩৭৫) অবশ্য সুন্নাতের কাযা পড়ার বিষয়টি রসূলুল্লাহ স.-এর বৈশিষ্ট্য। এ ছাড়া তিনি নফলেরও কাযা পড়তেন। অন্যদের জন্য নফল নামাযের কাযা নেই এবং আসরের পরে তা আদায় করার বৈধতাও নেই।