আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ
৫০- নবীজীর সাঃ যুদ্ধাভিযানসমূহ
হাদীস নং:
আন্তর্জাতিক নং: ৪৩৩১
২২২০. তায়েফের যুদ্ধ।
৩৯৯৫। আব্দুল্লাহ ইবনে মুহাম্মাদ (রাহঃ) .... আনাস ইবনে মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন আল্লাহ্ তাঁর রাসূল (ﷺ)-কে হাওয়াযিন গোত্রের সম্পদ থেকে গনীমত হিসেবে যতটুকু দান করতে চেয়েছেন দান করলেন, তখন নবী কারীম (ﷺ) কতিপয় লোককে এক একশ’ করে উট দান করতে লাগলেন। (এ অবস্থা দেখে) আনসারদের কিছুসংখ্যক লোক বলে ফেললেন, আল্লাহ্ রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- কে ক্ষমা করুন, তিনি আমাদেরকে বাদ দিয়ে কুরাইশদেরকে (গনীমতের মাল) দিচ্ছেন। অথচ আমাদের তরবারি থেকে এখনো তাদের তাজা রক্ত টপকাচ্ছে।
আনাস (রাযিঃ) বলেন, তাঁদের এ কথা রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- কে বর্ণনা করা হলে তিনি আনসারদের কাছে সংবাদ পাঠালেন এবং তাদেরকে একটি চামড়ার তৈরী তাঁবুতে জমায়েত করলেন। এবং তাঁরা ব্যতীত অন্য কাউকে এখানে উপস্থিত থাকতে অনুমতি দেননি। এরপর তাঁরা সবাই জমায়েত হলে নবী কারীম (ﷺ) দাঁড়িয়ে বললেন, তোমাদের কাছ থেকে কি কথা আমার নিকট পৌঁছলো? আনসারদের বিজ্ঞ উলামাবৃন্দ বললেনঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাদের নেতৃস্থানীয় কেউ তো কিছু বলেনি, তবে আমাদের কতিপয় কমবয়সী লোকেরা বলেছে যে, আল্লাহ্ রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- কে ক্ষমা করুন, তিনি আমাদেরকে বাদ দিয়ে কুরাইশদেরকে (গনীমতের মাল) দিচ্ছেন। অথচ আমাদের তরবারিগুলো থেকে এখনো তাদের তাজা রক্ত টপকাচ্ছে।
তখন নবী কারীম (ﷺ) বললেন, আমি অবশ্য এমন কিছু লোককে (গনীমতের মাল) দিচ্ছি যারা সবেমাত্র কুফর ত্যাগ করে ইসলামে প্রবেশ করেছে। আর তা এ জন্য যেন তাদের মনকে আমি ঈমানের উপর সুদৃঢ় করতে পারি। তোমরা কি এতে সন্তুষ্ট নও যে, অন্যান্য লোক ফিরে যাবে ধন-সম্পদ নিয়ে আর তোমরা বাড়ি ফিরে যাবে (আল্লাহর) নবী কারীম (ﷺ)- কে সঙ্গে নিয়ে? আল্লাহর কসম, তোমরা যে জিনিস নিয়ে ফিরে যাবে তা অনেক উত্তম ঐ ধন-সম্পদ অপেক্ষা, যা নিয়ে তারা ফিরে যাচ্ছে। আনসারগণ বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরা এতে সন্তুষ্ট থাকলাম। নবী কারীম (ﷺ) তাদের বললেন, অচিরেই তোমরা (নিজেদের উপর) অন্যদের প্রাধান্য প্রবলভাবে অনুভব করতে থাকবে। অতএব, আমার মৃত্যুর পর আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের সঙ্গে সাক্ষাত করা পর্যন্ত তোমরা সবর করে থাকবে। আমি হাউজে কাউসারের নিকট থাকব। আনাস (রাযিঃ) বলেন, কিন্তু তাঁরা (আনসাররা) সবর করেননি।
আনাস (রাযিঃ) বলেন, তাঁদের এ কথা রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- কে বর্ণনা করা হলে তিনি আনসারদের কাছে সংবাদ পাঠালেন এবং তাদেরকে একটি চামড়ার তৈরী তাঁবুতে জমায়েত করলেন। এবং তাঁরা ব্যতীত অন্য কাউকে এখানে উপস্থিত থাকতে অনুমতি দেননি। এরপর তাঁরা সবাই জমায়েত হলে নবী কারীম (ﷺ) দাঁড়িয়ে বললেন, তোমাদের কাছ থেকে কি কথা আমার নিকট পৌঁছলো? আনসারদের বিজ্ঞ উলামাবৃন্দ বললেনঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাদের নেতৃস্থানীয় কেউ তো কিছু বলেনি, তবে আমাদের কতিপয় কমবয়সী লোকেরা বলেছে যে, আল্লাহ্ রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- কে ক্ষমা করুন, তিনি আমাদেরকে বাদ দিয়ে কুরাইশদেরকে (গনীমতের মাল) দিচ্ছেন। অথচ আমাদের তরবারিগুলো থেকে এখনো তাদের তাজা রক্ত টপকাচ্ছে।
তখন নবী কারীম (ﷺ) বললেন, আমি অবশ্য এমন কিছু লোককে (গনীমতের মাল) দিচ্ছি যারা সবেমাত্র কুফর ত্যাগ করে ইসলামে প্রবেশ করেছে। আর তা এ জন্য যেন তাদের মনকে আমি ঈমানের উপর সুদৃঢ় করতে পারি। তোমরা কি এতে সন্তুষ্ট নও যে, অন্যান্য লোক ফিরে যাবে ধন-সম্পদ নিয়ে আর তোমরা বাড়ি ফিরে যাবে (আল্লাহর) নবী কারীম (ﷺ)- কে সঙ্গে নিয়ে? আল্লাহর কসম, তোমরা যে জিনিস নিয়ে ফিরে যাবে তা অনেক উত্তম ঐ ধন-সম্পদ অপেক্ষা, যা নিয়ে তারা ফিরে যাচ্ছে। আনসারগণ বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরা এতে সন্তুষ্ট থাকলাম। নবী কারীম (ﷺ) তাদের বললেন, অচিরেই তোমরা (নিজেদের উপর) অন্যদের প্রাধান্য প্রবলভাবে অনুভব করতে থাকবে। অতএব, আমার মৃত্যুর পর আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের সঙ্গে সাক্ষাত করা পর্যন্ত তোমরা সবর করে থাকবে। আমি হাউজে কাউসারের নিকট থাকব। আনাস (রাযিঃ) বলেন, কিন্তু তাঁরা (আনসাররা) সবর করেননি।
হাদীসের ব্যাখ্যা:
একটা সময় আসবে, হকদার হওয়া সত্ত্বেও তোমাদেরকে হক থেকে বঞ্চিত করা হবে। বঞ্চিত করা হলেও তোমরা আমীরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করবে না। সবর অবলম্বন করবে এবং যথারীতি আমীরের আনুগত্য করে যাবে। তা করতে পারলে আমার সংগে হাউযে কাউসারে সাক্ষাত লাভ করতে পারবে।
বোঝা গেল, সরকারের পক্ষ থেকে প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়ে ধৈর্যধারণ করতে পারলে তার পুরস্কার হচ্ছে আখিরাতে হাওযে কাউসারে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাক্ষাতলাভ এবং তাঁর হাতে হাওযে কাউসারের পানি পান করতে পারা। আল্লাহ তা'আলা আমাদেরকে সেই সৌভাগ্য দান করুন।
হাওযে কাউসার
‘হাওযে কাউসার’ আখিরাতের একটি বিশাল জলাশয়ের নাম। তার দৈর্ঘ্য উদয়াচল থেকে অস্তাচলের দূরত্ব পরিমাণ। তার পানি দুধের চেয়ে সাদা, মধুর চেয়ে মিষ্ট। বিভিন্ন হাদীছে হাওযে কাউসারের বিভিন্ন অবস্থা বর্ণিত হয়েছে। নিচে কয়েকটি হাদীছ উল্লেখ করা গেল।
ইমাম মুসলিম রহ. হযরত আনাস রাযি. থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন। হঠাৎ তাঁর কিছুটা তন্দ্রাভাব দেখা দেয়। তারপর তিনি মুচকি হাসি দিয়ে মাথা তুললেন। আমরা জিজ্ঞেস করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি হাসছেন কেন? তিনি বললেন, এইমাত্র আমার প্রতি একটি সূরা নাযিল হয়েছে। তারপর তিনি বিসমিল্লাহর সাথে সূরা কাউসার পাঠ করলেন। তারপর বললেন, তোমরা কি জান কাউসার কী? আমরা বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভালো জানেন। তিনি বললেন, এটা একটা নহর। আমার প্রতিপালক আমাকে দেবেন বলে ওয়াদা করেছেন। এর কল্যাণ প্রভূত।কিয়ামতের দিন এ হাওযের তীরে আমার উম্মত উপস্থিত হবে। এর পানপাত্র আকাশের তারকারাজির মত (অসংখ্য হবে)। কোনও কোনও বান্দাকে এর কাছে আসতে বাধা দেওয়া হবে। আমি বলব, হে আমার রব্ব্! এরা তো আমার উম্মত। তিনি বলবেন, আপনি জানেন না। আপনার পর এরা কী সব কাণ্ড করেছে।
বুখারী ও মুসলিম শরীফে হযরত আনাস রাযি. সূত্রে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-
دَخَلْتُ الْجَنَّةَ ، فَإِذَا أَنَا بِنَهْرٍ حَافَتَاهُ خِيَامُ اللُّؤْلُؤِ ، فَضَرَبْتُ بِيَدِي إِلَى مَا يَجْرِي فِيهِ الْمَاءُ ، فَإِذَا مِسْكٌ أَذْفَرُ ، قُلْتُ مَا هَذَا يَا جِبْرِيلُ قَالَ هَذَا الْكَوْثَرُ الَّذِي أَعْطَاكَهُ اللَّهُ
‘আমি জান্নাতে প্রবেশ করলাম। সেখানে একটি নহর দেখতে পেলাম, যার দু'তীরে মণিমুক্তার ছাউনী। আমি তার প্রবাহে হাত রাখলাম। দেখলাম তা খাঁটি মিস্ক। আমি বললাম, হে জিবরাঈল এটা কী? তিনি বললেন, এটাই কাউসার, যা আল্লাহ আপনাকে দান করেছেন।”
তিরমিযী শরীফে হযরত আনাস রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-
هُوَ أَشَدُّ بَيَاضًا مِنَ اللَّبَنِ، وَأَحْلَى مِنَ العَسَلِ، فِيهِ طُيُورٌ أَعْنَاقُهَا كَأَعْنَاقِ الجُزُرِ، قَالَ عُمَرُ رَضِيَ اللهُ عَنهُ: يَا رَسُولَ اللهِ، إِنَّهَا لَنَاعِمَةٌ، قَالَ: آكِلُهَا أَنْعَمُ مِنْهَا
‘তা দুধের চেয়েও সাদা, মধুর চেয়েও মিষ্টি। তাতে উটের গলার মত গলাবিশিষ্ট পাখি আছে। একথা শুনে হযরত উমর রাযি. বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! তা তো ভারী উপভোগের হবে। তিনি বললেন, যারা তা খাবে, তারা অনেক বেশি সুখী হবে।
হাওযে কাউসার সংক্রান্ত হাদীছ প্রচুর। হযরত আবূ বকর সিদ্দীক রাযি., হযরত ‘উমর ফারূক রাযি. হযরত উছমান গনী রাযি. ও হযরত আলী রাযি.-সহ পঞ্চাশেরও বেশি সংখ্যক সাহাবী থেকে হাওযে কাউসারের কথা বর্ণিত আছে। ইমাম সুয়ূতী রহ ‘বুদুরুস-সাফিরা' গ্রন্থে এ সম্পর্কিত প্রায় সত্তরটি হাদীছ বর্ণনা করেছেন।
এ বরকতময় হাওয থেকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাতে যারা পানি পান করবে, আল্লাহ তা'আলা নিজ মেহেরবানীতে আমাদেরকেও তাদের মধ্যে শামিল রাখুন- আমীন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. নিজ স্বার্থহানিতে ধৈর্যধারণ হাওযে কাউসারের পানি পানের সৌভাগ্য লাভ হওয়ার একটি বড় উপায়।
খ. হাওযে কাউসার সত্য। তাতে বিশ্বাস রাখা উচিত। আখিরাতে তার পানি পান করতে পারা অনেক বড় সৌভাগ্যের ব্যাপার। সেই সৌভাগ্য তারই নসিব হবে, যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নত অনুযায়ী জীবনযাপন করবে।
বোঝা গেল, সরকারের পক্ষ থেকে প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়ে ধৈর্যধারণ করতে পারলে তার পুরস্কার হচ্ছে আখিরাতে হাওযে কাউসারে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাক্ষাতলাভ এবং তাঁর হাতে হাওযে কাউসারের পানি পান করতে পারা। আল্লাহ তা'আলা আমাদেরকে সেই সৌভাগ্য দান করুন।
হাওযে কাউসার
‘হাওযে কাউসার’ আখিরাতের একটি বিশাল জলাশয়ের নাম। তার দৈর্ঘ্য উদয়াচল থেকে অস্তাচলের দূরত্ব পরিমাণ। তার পানি দুধের চেয়ে সাদা, মধুর চেয়ে মিষ্ট। বিভিন্ন হাদীছে হাওযে কাউসারের বিভিন্ন অবস্থা বর্ণিত হয়েছে। নিচে কয়েকটি হাদীছ উল্লেখ করা গেল।
ইমাম মুসলিম রহ. হযরত আনাস রাযি. থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন। হঠাৎ তাঁর কিছুটা তন্দ্রাভাব দেখা দেয়। তারপর তিনি মুচকি হাসি দিয়ে মাথা তুললেন। আমরা জিজ্ঞেস করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি হাসছেন কেন? তিনি বললেন, এইমাত্র আমার প্রতি একটি সূরা নাযিল হয়েছে। তারপর তিনি বিসমিল্লাহর সাথে সূরা কাউসার পাঠ করলেন। তারপর বললেন, তোমরা কি জান কাউসার কী? আমরা বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভালো জানেন। তিনি বললেন, এটা একটা নহর। আমার প্রতিপালক আমাকে দেবেন বলে ওয়াদা করেছেন। এর কল্যাণ প্রভূত।কিয়ামতের দিন এ হাওযের তীরে আমার উম্মত উপস্থিত হবে। এর পানপাত্র আকাশের তারকারাজির মত (অসংখ্য হবে)। কোনও কোনও বান্দাকে এর কাছে আসতে বাধা দেওয়া হবে। আমি বলব, হে আমার রব্ব্! এরা তো আমার উম্মত। তিনি বলবেন, আপনি জানেন না। আপনার পর এরা কী সব কাণ্ড করেছে।
বুখারী ও মুসলিম শরীফে হযরত আনাস রাযি. সূত্রে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-
دَخَلْتُ الْجَنَّةَ ، فَإِذَا أَنَا بِنَهْرٍ حَافَتَاهُ خِيَامُ اللُّؤْلُؤِ ، فَضَرَبْتُ بِيَدِي إِلَى مَا يَجْرِي فِيهِ الْمَاءُ ، فَإِذَا مِسْكٌ أَذْفَرُ ، قُلْتُ مَا هَذَا يَا جِبْرِيلُ قَالَ هَذَا الْكَوْثَرُ الَّذِي أَعْطَاكَهُ اللَّهُ
‘আমি জান্নাতে প্রবেশ করলাম। সেখানে একটি নহর দেখতে পেলাম, যার দু'তীরে মণিমুক্তার ছাউনী। আমি তার প্রবাহে হাত রাখলাম। দেখলাম তা খাঁটি মিস্ক। আমি বললাম, হে জিবরাঈল এটা কী? তিনি বললেন, এটাই কাউসার, যা আল্লাহ আপনাকে দান করেছেন।”
তিরমিযী শরীফে হযরত আনাস রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-
هُوَ أَشَدُّ بَيَاضًا مِنَ اللَّبَنِ، وَأَحْلَى مِنَ العَسَلِ، فِيهِ طُيُورٌ أَعْنَاقُهَا كَأَعْنَاقِ الجُزُرِ، قَالَ عُمَرُ رَضِيَ اللهُ عَنهُ: يَا رَسُولَ اللهِ، إِنَّهَا لَنَاعِمَةٌ، قَالَ: آكِلُهَا أَنْعَمُ مِنْهَا
‘তা দুধের চেয়েও সাদা, মধুর চেয়েও মিষ্টি। তাতে উটের গলার মত গলাবিশিষ্ট পাখি আছে। একথা শুনে হযরত উমর রাযি. বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! তা তো ভারী উপভোগের হবে। তিনি বললেন, যারা তা খাবে, তারা অনেক বেশি সুখী হবে।
হাওযে কাউসার সংক্রান্ত হাদীছ প্রচুর। হযরত আবূ বকর সিদ্দীক রাযি., হযরত ‘উমর ফারূক রাযি. হযরত উছমান গনী রাযি. ও হযরত আলী রাযি.-সহ পঞ্চাশেরও বেশি সংখ্যক সাহাবী থেকে হাওযে কাউসারের কথা বর্ণিত আছে। ইমাম সুয়ূতী রহ ‘বুদুরুস-সাফিরা' গ্রন্থে এ সম্পর্কিত প্রায় সত্তরটি হাদীছ বর্ণনা করেছেন।
এ বরকতময় হাওয থেকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাতে যারা পানি পান করবে, আল্লাহ তা'আলা নিজ মেহেরবানীতে আমাদেরকেও তাদের মধ্যে শামিল রাখুন- আমীন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. নিজ স্বার্থহানিতে ধৈর্যধারণ হাওযে কাউসারের পানি পানের সৌভাগ্য লাভ হওয়ার একটি বড় উপায়।
খ. হাওযে কাউসার সত্য। তাতে বিশ্বাস রাখা উচিত। আখিরাতে তার পানি পান করতে পারা অনেক বড় সৌভাগ্যের ব্যাপার। সেই সৌভাগ্য তারই নসিব হবে, যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নত অনুযায়ী জীবনযাপন করবে।
