মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)

২৬- আদাব - শিষ্টাচার অধ্যায়

হাদীস নং: ৪৯৫৪
১৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - সৃষ্টির প্রতি দয়া ও অনুগ্রহ
৪৯৫৪। হযরত নোমান ইবনে বাশীর (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেনঃ সকল মু'মিন এক ব্যক্তির মত, যদি তাহার চক্ষু অসুস্থ হয় তখন তাহার সর্বাঙ্গ অসুস্থ হইয়া পড়ে। আর যদি তাহার মাথায় ব্যথা হয় তখন তাহার সমস্ত দেহই বাধিত হয়। —মুসলিম
وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْمُؤْمِنُونَ كَرَجُلٍ وَاحِدٍ إِنِ اشْتَكَى عَيْنُهُ اشْتَكَى كُلُّهُ وَإِنِ اشْتَكَى رَأْسُهُ اشْتَكَى كُله» . رَوَاهُ مُسلم

হাদীসের ব্যাখ্যা:

এ হাদীছে মূলত মুমিনদেরকে পরস্পর সহমর্মী ও সমব্যথী হয়ে থাকতে আদেশ করা হয়েছে। এ সমবেদনা ও সহমর্মিতার দাবি হচ্ছে মুসলিমগণ একে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে থাকবে। কেউ কাউকে কোনওভাবেই কষ্ট দেবে না। কেউ কারও কোনও হক নষ্ট করবে না। যখন অন্যের ব্যথা-বেদনাকে নিজের ব্যথা-বেদনা গণ্য করতে বলা হয়েছে, তখন নিজে কিভাবে অন্যকে কষ্ট দেওয়ার কথা ভাবতে পারে? যখন অন্যের দুঃখ-কষ্ট নিবারণের চেষ্টা করতে বলা হয়েছে, তখন নিজেকে কিভাবে অন্যের দুঃখ-কষ্টের কারণ বানানো যেতে পারে? যে ব্যক্তি অন্য মুসলিমের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবে, সে অবশ্যই লক্ষ রাখবে যাতে তার দ্বারা অন্য কারও জান, মাল ও ইজ্জতের কোনও ক্ষতি না হয়ে যায়। নিজের জান, মাল ও ইজ্জতের যেভাবে হেফাজত করা হয়ে থাকে, সে অন্যের জান, মাল ও ইজ্জতের হেফাজতেও সেরকম ভূমিকা রাখবে।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

ক. এ হাদীছ মুমিনদেরকে পারস্পরিক সহমর্মিতার শিক্ষাদান করে।

খ. মুমিন ব্যক্তির কর্তব্য অন্যের দুঃখ-কষ্টকে নিজ দুঃখ-কষ্ট গণ্য করা এবং নিজ সাধ্য অনুযায়ী তা লাঘবের চেষ্টা করা।

গ. মুমিন ব্যক্তি অন্যের হক সম্পর্কে সচেতন থাকবে। সে তার কাছে অন্যের যা-কিছু প্রাপ্য আছে তা আদায়ে যত্নবান থাকবে এবং সতর্ক থাকবে, যাতে তার দ্বারা অন্যের জান, মাল ও ইজ্জতের কোনও ক্ষতি না হয়ে যায়।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
মিশকাতুল মাসাবীহ - হাদীস নং ৪৯৫৪ | মুসলিম বাংলা