মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
২৬- আদাব - শিষ্টাচার অধ্যায়
হাদীস নং: ৪৭৩৮
৬. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - হাঁচি দেয়া এবং হাই তোলা
৪৭৩৮। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হইতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) যখন হাঁচি দিতেন তখন স্বীয় হাত অথবা কাপড় দ্বারা মুখমণ্ডল ঢাকিয়া ফেলিতেন এবং হাঁচির শব্দকে নীচু রাখিতেন। —তিরমিযী ও আবু দাউদ। এবং তিরমিযী বলিয়াছেন—এই হাদীসটি হাছান ছহীহ।
الْفَصْل الثَّانِي
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ إِذَا عَطَسَ غَطَّى وَجْهَهُ بِيَدِهِ أَوْ ثَوْبِهِ وَغَضَّ بِهَا صَوْتَهُ. رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ. وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ: هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيح
হাদীসের ব্যাখ্যা:
হাঁচি দিলে মুখ থেকে থুথুর ছিটা বের হয়। চিকিৎসাবিজ্ঞান মতে সে ছিটা সামনে প্রায় পাঁচ ফুট পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়তে পারে। ফলে তার সঙ্গে বেরিয়ে আসা রোগ-জীবাণু দ্বারা আশপাশের লোকজনের সংক্রমিত হয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে, যদি হাঁচিদাতা ব্যক্তি ইনফ্লুয়েঞ্জা, জলবসন্ত, হাম প্রভৃতি রোগে আক্রান্ত থাকে। তাই হাঁচি সাবধানে দেওয়া উচিত। কেননা রোগ-জীবাণু না ছড়ালেও অন্তত এতটুকু তো হতেই পারে যে, প্রবল বেগে বের হয়ে আসা থুথুর কণা অন্যের গায়ে লেগে যাবে। এটা যে-কারও জন্য বিরক্তিকর।
এমনিভাবে হাঁচির উচ্চ আওয়াজও কষ্টদায়ক। অনেকে এমন শব্দে হাঁচি দেয়, যাতে শান্ত পরিবেশ নষ্ট হয়ে যায়। মনোযোগ বিঘ্নিত হয়। তাছাড়া ঘুম ভেঙে যাওয়া ও বিশ্রামে ব্যাঘাত ঘটার বিষয় তো আছেই। অনেকে তো ইচ্ছা করেই বড় আওয়াজে হাঁচি দিয়ে থাকে। এটা ইচ্ছাকৃত অন্যকে কষ্ট দেওয়ার মধ্যে পড়ে। অথচ ইচ্ছাকৃত কাউকে কষ্ট দেওয়া মোটেই জায়েয নয়।
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতিটি শিক্ষাই অতীব কল্যাণকর। তার উপর আমল করার দ্বারা যেমন বহুবিধ ফায়দা হাসিল হয়, তেমনি নানারকম ক্ষতি থেকেও রক্ষা পাওয়া যায়। আলোচ্য হাদীছটিতে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাঁচি বিষয়ে বিশেষ দু'টি আদবের শিক্ষাদান করেছেন। একটি হল হাঁচি দেওয়ার সময় মুখের সামনে কাপড় বা হাত রাখা। এটা করলে হাঁচির সঙ্গে বেরিয়ে আসা থুতুর কণা সামনে ছড়িয়ে পড়বে না এবং অন্যের গায়েও লাগবে না। এখন চিকিৎসাবিজ্ঞান এ সতর্কতার কথা বলছে। অথচ নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেই চৌদ্দশ' বছর আগে মানুষকে এ সতর্কতামূলক শিক্ষাদান করে গেছেন। এতটুকুর মধ্যে চিন্তা করলেও তাঁর নবুওয়াতের সত্যতার প্রমাণ মেলে।
হাঁচি বিষয়ে তাঁর দ্বিতীয় শিক্ষা হল বিকট আওয়াজে হাঁচি না দেওয়া। আওয়াজ নিয়ন্ত্রন করতে হবে। সংযত আওয়াজে হাঁচি দেওয়ার অভ্যাস করতে হবে। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও এরকমই করতেন। আমাদেরকেও এরূপ করতে আদেশ করা হয়েছে। এক রেওয়ায়েতে আছে-
إِذَا تَجَشَّأَ أَحَدُكُمْ أَوْ عَطَسَ , فَلَا يَرْفَعن بِهِمَا الصَّوْتَ , فَإِنَّ الشَّيْطَانَ يُحِبُّ أَنْ يَرْفَعَ بِهِمَا الصَّوْتَ
'তোমাদের কেউ যখন ঢেকুর তোলে বা হাঁচি দেয়, তখন যেন আওয়াজ উঁচু না করে। কেননা শয়তান এ দুই কাজে আওয়াজ উঁচু করাকে পসন্দ করে’। (বায়হাকী, শু'আবুল ঈমান: ৮৯১২)
উল্লেখ্য, হাদীছে হাঁচির আওয়াজকে সংযত করতে বলা হয়েছে। হাঁচি আটকাতে বলা হয়নি। হাঁচি আটকানো ক্ষতিকর। এক ক্ষতি তো এই যে, বহুবিধ কল্যাণকর শারীরিক যে প্রক্রিয়াটি আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে হয়, সেটি আটকানোর দ্বারা কল্যাণ ও উপকারকেই আটকানো হবে। বহুবিধ উপকার থেকে নিজের বঞ্চিত থাকা হবে। তাছাড়া তীব্র বেগে ধেয়ে আসা হাঁচিকে আটকাতে গেলে ফুসফুস ও মস্তিষ্কের উপর যে চাপ পড়বে, তার দরুন অনেক কঠিন স্নায়বিক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। চিকিৎসাবিজ্ঞান সেসব ক্ষতি সম্পর্কে সতর্ক করেছে। তাই অন্যে কষ্ট পেতে পারে বা অন্যের ক্ষতি হতে পারে এ অজুহাতে হাঁচি আটকানো কিছুতেই সমীচীন নয়। সে ক্ষতি থেকে বাঁচার জন্য হাদীছে বর্ণিত আদব রক্ষা করাই যথেষ্ট।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. হাঁচি দেওয়ার সময় মুখের সামনে হাত বা কোনও কাপড় রাখতে হবে।
খ. যথাসম্ভব সংযত আওয়াজে হাঁচি দেওয়া চাই। ইচ্ছাকৃত হাঁচির আওয়াজ বড় করা কিছুতেই সঙ্গত নয়।
এমনিভাবে হাঁচির উচ্চ আওয়াজও কষ্টদায়ক। অনেকে এমন শব্দে হাঁচি দেয়, যাতে শান্ত পরিবেশ নষ্ট হয়ে যায়। মনোযোগ বিঘ্নিত হয়। তাছাড়া ঘুম ভেঙে যাওয়া ও বিশ্রামে ব্যাঘাত ঘটার বিষয় তো আছেই। অনেকে তো ইচ্ছা করেই বড় আওয়াজে হাঁচি দিয়ে থাকে। এটা ইচ্ছাকৃত অন্যকে কষ্ট দেওয়ার মধ্যে পড়ে। অথচ ইচ্ছাকৃত কাউকে কষ্ট দেওয়া মোটেই জায়েয নয়।
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতিটি শিক্ষাই অতীব কল্যাণকর। তার উপর আমল করার দ্বারা যেমন বহুবিধ ফায়দা হাসিল হয়, তেমনি নানারকম ক্ষতি থেকেও রক্ষা পাওয়া যায়। আলোচ্য হাদীছটিতে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাঁচি বিষয়ে বিশেষ দু'টি আদবের শিক্ষাদান করেছেন। একটি হল হাঁচি দেওয়ার সময় মুখের সামনে কাপড় বা হাত রাখা। এটা করলে হাঁচির সঙ্গে বেরিয়ে আসা থুতুর কণা সামনে ছড়িয়ে পড়বে না এবং অন্যের গায়েও লাগবে না। এখন চিকিৎসাবিজ্ঞান এ সতর্কতার কথা বলছে। অথচ নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেই চৌদ্দশ' বছর আগে মানুষকে এ সতর্কতামূলক শিক্ষাদান করে গেছেন। এতটুকুর মধ্যে চিন্তা করলেও তাঁর নবুওয়াতের সত্যতার প্রমাণ মেলে।
হাঁচি বিষয়ে তাঁর দ্বিতীয় শিক্ষা হল বিকট আওয়াজে হাঁচি না দেওয়া। আওয়াজ নিয়ন্ত্রন করতে হবে। সংযত আওয়াজে হাঁচি দেওয়ার অভ্যাস করতে হবে। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও এরকমই করতেন। আমাদেরকেও এরূপ করতে আদেশ করা হয়েছে। এক রেওয়ায়েতে আছে-
إِذَا تَجَشَّأَ أَحَدُكُمْ أَوْ عَطَسَ , فَلَا يَرْفَعن بِهِمَا الصَّوْتَ , فَإِنَّ الشَّيْطَانَ يُحِبُّ أَنْ يَرْفَعَ بِهِمَا الصَّوْتَ
'তোমাদের কেউ যখন ঢেকুর তোলে বা হাঁচি দেয়, তখন যেন আওয়াজ উঁচু না করে। কেননা শয়তান এ দুই কাজে আওয়াজ উঁচু করাকে পসন্দ করে’। (বায়হাকী, শু'আবুল ঈমান: ৮৯১২)
উল্লেখ্য, হাদীছে হাঁচির আওয়াজকে সংযত করতে বলা হয়েছে। হাঁচি আটকাতে বলা হয়নি। হাঁচি আটকানো ক্ষতিকর। এক ক্ষতি তো এই যে, বহুবিধ কল্যাণকর শারীরিক যে প্রক্রিয়াটি আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে হয়, সেটি আটকানোর দ্বারা কল্যাণ ও উপকারকেই আটকানো হবে। বহুবিধ উপকার থেকে নিজের বঞ্চিত থাকা হবে। তাছাড়া তীব্র বেগে ধেয়ে আসা হাঁচিকে আটকাতে গেলে ফুসফুস ও মস্তিষ্কের উপর যে চাপ পড়বে, তার দরুন অনেক কঠিন স্নায়বিক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। চিকিৎসাবিজ্ঞান সেসব ক্ষতি সম্পর্কে সতর্ক করেছে। তাই অন্যে কষ্ট পেতে পারে বা অন্যের ক্ষতি হতে পারে এ অজুহাতে হাঁচি আটকানো কিছুতেই সমীচীন নয়। সে ক্ষতি থেকে বাঁচার জন্য হাদীছে বর্ণিত আদব রক্ষা করাই যথেষ্ট।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. হাঁচি দেওয়ার সময় মুখের সামনে হাত বা কোনও কাপড় রাখতে হবে।
খ. যথাসম্ভব সংযত আওয়াজে হাঁচি দেওয়া চাই। ইচ্ছাকৃত হাঁচির আওয়াজ বড় করা কিছুতেই সঙ্গত নয়।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
