মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
২৬- আদাব - শিষ্টাচার অধ্যায়
হাদীস নং: ৪৭৩০
৫. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - বসা, ঘুমানো ও চলাফেরা করা
৪৭৩০। হযরত আমর ইবনে শারীদ (রাঃ) তাঁহার পিতা হইতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেনঃ একদা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) আমার নিকট দিয়া গমন করিলেন। তখন আমি এমন অবস্থায় বসা ছিলাম যে, আমার বাম হাত ছিল আমার পিঠের পিছনে। আর (ডান) হাতের তালুর উপর ভর দিয়া ছিলাম। তখন তিনি আমাকে বলিলেনঃ তুমি কি এমন অবস্থায় বসিয়া রহিয়াছ যেমন আল্লাহর অভিশপ্ত লোকেরা বসে? – আবু দাউদ
الْفَصْل الثَّالِث
عَن عمْرِو
بن الشَّريدِ عَن أبيهِ قَالَ: مَرَّ بِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَنَا جَالِسٌ هَكَذَا وَقَدْ وَضَعْتُ يَدِي الْيُسْرَى خَلْفَ ظَهْرِي وَاتَّكَأْتُ عَلَى أَلْيَةِ يَدِي. قَالَ: «أَتَقْعُدُ قِعْدَةَ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
بن الشَّريدِ عَن أبيهِ قَالَ: مَرَّ بِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَنَا جَالِسٌ هَكَذَا وَقَدْ وَضَعْتُ يَدِي الْيُسْرَى خَلْفَ ظَهْرِي وَاتَّكَأْتُ عَلَى أَلْيَةِ يَدِي. قَالَ: «أَتَقْعُدُ قِعْدَةَ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
হাদীসের ব্যাখ্যা:
১. এইভাবে বসা দুই কারণে নিষিদ্ধ — (১) অহংকারীগণ এমন করিয়া বসে, (২) এই রূপ বসা ইহুদীদের অভ্যাস।
২. এ হাদীছটিতে বসার একটি বিশেষ ভঙ্গিকে অভিশপ্ত সম্প্রদায়ের বসার ভঙ্গি সাব্যস্ত করা হয়েছে। হযরত শারীদ রাযি. কে সে ভঙ্গিতে বসা দেখে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে তিরস্কার করেন যে, কেন তিনি অভিশপ্ত সম্প্রদায়ের বসার মতো করে বসেছেন। ভঙ্গিটি ছিল এরকম যে, তিনি তাঁর বাম হাত পিঠের সঙ্গে লাগিয়ে রেখে ডান হাতের মাংসল স্থানে ভর করে বসা ছিলেন।
অভিশপ্ত সম্প্রদায় বলে ইহুদিদের বোঝানো হয়েছে। সূরা ফাতিহার শেষে যে আছে-
غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّالِّينَ
(তাদের পথে নয়, যারা অভিশপ্ত এবং যারা পথভ্রষ্ট), হাদীছে এর ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে যে, অভিশপ্ত হল ইহুদি সম্প্রদায় আর পথভ্রষ্ট খ্রিষ্ট সম্প্রদায়। কুরআন মাজীদের বিভিন্ন আয়াতে ইহুদি জাতির প্রতি আল্লাহ তা'আলার লা'নত ও অভিশাপ বর্ষণের কথা জানানো হয়েছে। কাজেই আলোচ্য হাদীছে অভিশপ্ত জাতি বলতে ইহুদি জাতিকেই বোঝানো হবে। তারা যেহেতু এ ভঙ্গিতে বসত, তাই আমাদেরকে এভাবে বসতে নিষেধ করা হয়েছে। এক হাদীছে ইরশাদ হয়েছে-
مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ
যে ব্যক্তি কোনও সম্প্রদায়ের সাদৃশ্য অবলম্বন (অনুকরণ) করে, সে সেই সম্প্রদায়ের একজন।
(সুনানে আবূ দাউদ: ৪০৩১; মুসনাদে আহমাদ: ৫১১৫; মুসনাদুল বাযযার: ৮৬০৬; তহাবী, শারহু মুশকিলিল আছার : ২৩১; তাবারানী, আল মু'জামুল আওসাত: ৮৩২৭; বায়হাকী, শু'আবুল ঈমান : ১১৫৪; মুসান্নাফে ইবন আবী শায়বা: ১৯৪০১; জামে' মা'মার ইবন রাশিদ : ২০৯৮৬; সুনানে সা'ঈদ ইবন মানসূর: ২৩৭০;)
এতে সতর্ক করা হয়েছে আমরা যেন আমাদের কাজকর্ম, ভাবভঙ্গি, ধরন-ধারণ তথা কোনওকিছুতেই অন্য কোনও সম্প্রদায়ের অনুকরণ না করি। আমাদের রয়েছে স্বতন্ত্র সংস্কৃতি। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নতই আমাদের মর্যাদাপূর্ণ সংস্কৃতি। তাই কোনওকিছুতেই অন্য কোনও সম্প্রদায়ের অনুকরণ করার প্রয়োজন আমাদের নেই। ইহুদি সম্প্রদায় যেহেতু অভিশপ্ত জাতি, তাই তাদের অনুকরণ অধিকতর নিন্দনীয় হবে। এজন্যই তাদের মতো করে বসায় নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত শারীদ রাযি.-কে তিরস্কার করেছেন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. বসার ভঙ্গিসহ কোনওকিছুতেই অন্য কোনও জাতির অনুকরণ করা যাবে না। ইহুদি সম্প্রদায়ের অনুসরণ অধিকতর নিন্দনীয়।
খ. আমরা সবকিছুতেই নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নতের অনুসরণ করে চলব।
২. এ হাদীছটিতে বসার একটি বিশেষ ভঙ্গিকে অভিশপ্ত সম্প্রদায়ের বসার ভঙ্গি সাব্যস্ত করা হয়েছে। হযরত শারীদ রাযি. কে সে ভঙ্গিতে বসা দেখে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে তিরস্কার করেন যে, কেন তিনি অভিশপ্ত সম্প্রদায়ের বসার মতো করে বসেছেন। ভঙ্গিটি ছিল এরকম যে, তিনি তাঁর বাম হাত পিঠের সঙ্গে লাগিয়ে রেখে ডান হাতের মাংসল স্থানে ভর করে বসা ছিলেন।
অভিশপ্ত সম্প্রদায় বলে ইহুদিদের বোঝানো হয়েছে। সূরা ফাতিহার শেষে যে আছে-
غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّالِّينَ
(তাদের পথে নয়, যারা অভিশপ্ত এবং যারা পথভ্রষ্ট), হাদীছে এর ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে যে, অভিশপ্ত হল ইহুদি সম্প্রদায় আর পথভ্রষ্ট খ্রিষ্ট সম্প্রদায়। কুরআন মাজীদের বিভিন্ন আয়াতে ইহুদি জাতির প্রতি আল্লাহ তা'আলার লা'নত ও অভিশাপ বর্ষণের কথা জানানো হয়েছে। কাজেই আলোচ্য হাদীছে অভিশপ্ত জাতি বলতে ইহুদি জাতিকেই বোঝানো হবে। তারা যেহেতু এ ভঙ্গিতে বসত, তাই আমাদেরকে এভাবে বসতে নিষেধ করা হয়েছে। এক হাদীছে ইরশাদ হয়েছে-
مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ
যে ব্যক্তি কোনও সম্প্রদায়ের সাদৃশ্য অবলম্বন (অনুকরণ) করে, সে সেই সম্প্রদায়ের একজন।
(সুনানে আবূ দাউদ: ৪০৩১; মুসনাদে আহমাদ: ৫১১৫; মুসনাদুল বাযযার: ৮৬০৬; তহাবী, শারহু মুশকিলিল আছার : ২৩১; তাবারানী, আল মু'জামুল আওসাত: ৮৩২৭; বায়হাকী, শু'আবুল ঈমান : ১১৫৪; মুসান্নাফে ইবন আবী শায়বা: ১৯৪০১; জামে' মা'মার ইবন রাশিদ : ২০৯৮৬; সুনানে সা'ঈদ ইবন মানসূর: ২৩৭০;)
এতে সতর্ক করা হয়েছে আমরা যেন আমাদের কাজকর্ম, ভাবভঙ্গি, ধরন-ধারণ তথা কোনওকিছুতেই অন্য কোনও সম্প্রদায়ের অনুকরণ না করি। আমাদের রয়েছে স্বতন্ত্র সংস্কৃতি। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নতই আমাদের মর্যাদাপূর্ণ সংস্কৃতি। তাই কোনওকিছুতেই অন্য কোনও সম্প্রদায়ের অনুকরণ করার প্রয়োজন আমাদের নেই। ইহুদি সম্প্রদায় যেহেতু অভিশপ্ত জাতি, তাই তাদের অনুকরণ অধিকতর নিন্দনীয় হবে। এজন্যই তাদের মতো করে বসায় নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত শারীদ রাযি.-কে তিরস্কার করেছেন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. বসার ভঙ্গিসহ কোনওকিছুতেই অন্য কোনও জাতির অনুকরণ করা যাবে না। ইহুদি সম্প্রদায়ের অনুসরণ অধিকতর নিন্দনীয়।
খ. আমরা সবকিছুতেই নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নতের অনুসরণ করে চলব।
২. ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
