মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
২৫- স্বপ্ন ও তার ব্যাখ্যা সংক্রান্ত অধ্যায়
হাদীস নং: ৪৬০৬
- স্বপ্ন ও তার ব্যাখ্যা সংক্রান্ত অধ্যায়
স্বপ্ন পর্ব:
প্রথম অনুচ্ছেদ
প্রথম অনুচ্ছেদ
৪৬০৬। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্, ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন। নবুওতের কোন চিহ্ন এখন আর অবশিষ্ট নাই। তবে শুধু সুসংবাদ বহনকারী রহিয়া গিয়াছে। লোকেরা জিজ্ঞাসা করিল, সুসংবাদ বহনকারী কি? তিনি বলিলেন: ভাল স্বপ্ন। -বুখারী।
كتاب الرؤيا
كتاب الرُّؤْيَا: الْفَصْلُ الْأَوَّلُ
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَمْ يَبْقَ مِنَ النُّبُوَّةِ إِلَّا الْمُبَشِّرَاتُ» قَالُوا: وَمَا الْمُبَشِّرَاتُ؟ قَالَ: «الرُّؤْيَا الصالحةُ» . رَوَاهُ البُخَارِيّ
হাদীসের ব্যাখ্যা:
১. স্বপ্ন তিন প্রকার। সত্য স্বপ্ন, শয়তানের ওয়াসওয়াসা ও মনের কল্পনা। তবে ভাল ও সত্য স্বপ্ন দ্বারা আল্লাহ্ তা'আলা কোন বান্দাহকে সুসংবাদ দান করেন অথবা তাহাকে সতর্ক করিয়া দেন।
২. لَمْ يَبْقَ مِنَ النُّبُوَّةِ إِلَّا الْمُبَشِّرَاتِ (নবুওয়াতের কিছুই অবশিষ্ট নেই মুবাশশিরাত ছাড়া)। অর্থাৎ আমিই সর্বশেষ নবী। আমার পর কোনও নবী নেই। কাজেই আমার মৃত্যুতে ওহীর ধারা বন্ধ হয়ে যাবে। যখন ওহীর ধারা বন্ধ হয়ে যাবে, তখন ভবিষ্যতে যা ঘটবে তা জানার কোনও মাধ্যম থাকবে না। থাকবে কেবল মুবাশশিরাত। মুবাশশিরাত অর্থ সুসংবাদদাতা।
   
সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন, মুবাশশিরাত কী? নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন- اَلرُّؤْيَا الصَّالِحَةُ (সঠিক স্বপ্ন)। অর্থাৎ বাস্তবসম্মত স্বপ্ন। যে স্বপ্নের ফল বাস্তবে পাওয়া যায়। ভবিষ্যতে যা ঘটবে ঠিক তাই যে স্বপ্নে দেখা হয় বা জানানো হয়, সেটাই সঠিক স্বপ্ন। কোনও কোনও হাদীছে এরূপ স্বপ্নকে الرُّؤْيَا الصَّادِقَةُ (সত্য স্বপ্ন)-ও বলা হয়েছে। এটা সুসংবাদ-দুঃসংবাদ দু-ই হতে পারে। ভবিষ্যতে ভালো যা ঘটবে, স্বপ্নে আগাম তা জানিয়ে দেওয়া হয় বলে এরূপ স্বপ্নকে মুবাশশিরাত বা সুসংবাদ হয়, যার সম্পর্ক ভবিষ্যতের মন্দ বা অপ্রীতিকর কোনওকিছুর সঙ্গে। এরূপ স্বপ্ন দ্বারা বান্দাকে আগেভাগে সতর্ক করে দেওয়া হয়। এটা বান্দার প্রতি আল্লাহর দয়া, যাতে সে আগে থেকেই সেই বিষয়ে মানসিক ও বাস্তবিক প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারে। তাহলে দেখা যাচ্ছে সঠিক স্বপ্ন দু'প্রকার। সুসংবাদদাতা স্বপ্ন ও সতর্ককারী স্বপ্ন। হাদীছে উভয়প্রকার স্বপ্নকেই সুসংবাদদাতা বলা হয়েছে। এটা বলা হয়েছে ভালোকে মন্দের উপর প্রাধান্যদানের নীতিতে। এটা আরবী অলংকারশাস্ত্রের একটা নিয়ম। অনেক সময় দু'টি বিষয়ের একটিকে অন্যটির উপর প্রাধান্য দিয়ে উভয়ের জন্য একই শব্দ বা একই নাম ব্যবহার করা হয়। পরিভাষায় একে 'তাগলীব' বলা হয়।
     
এ হাদীছ দ্বারা বোঝা যাচ্ছে সত্য-সঠিক স্বপ্ন নবুওয়াতের একটা অংশ। তা এ হিসেবে যে, নবুওয়াত দ্বারা যে বিভিন্ন রকমের জ্ঞান লাভ হয়ে থাকে, তার মধ্যে একটা হল ভবিষ্যৎ বিষয়ে আগাম খবর। এ ধরনের জ্ঞান স্বপ্ন দ্বারাও লাভ হয়। স্বপ্নে ভবিষ্যৎ বিষয়ে হয়তো সুসংবাদ জানানো হয় অথবা সতর্ক করা হয়। কেবল এই এতটুকু বিষয়ে নবুওয়াতের সঙ্গে মিল আছে। সে হিসেবেই স্বপ্নকে নবুওয়াতের অংশ বলা হয়েছে। কিন্তু নবুওয়াত অনেক ব্যাপক। বিশেষত তা দ্বারা শরী'আত বা বিধি-বিধানের জ্ঞান লাভ হয় এবং নবুওয়াতী জ্ঞান অকাট্য ও সন্দেহাতীত হয়ে থাকে। পক্ষান্তরে স্বপ্ন দ্বারা কখনও বিধি-বিধান সাব্যস্ত হয় না এবং তা অকাট্য ও সন্দেহাতীতও নয়। পার্থক্য বিপুল।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. স্বপ্ন মাত্রই ভিত্তিহীন নয়। কোনও কোনও স্বপ্ন বাস্তবসম্মতও বটে।
খ. সত্য ও সঠিক স্বপ্ন দ্বারা ভবিষ্যতে ঘটবে এমন প্রীতিকর বিষয়ে সুসংবাদ দেওয়া হয় কিংবা অপ্রীতিকর বিষয়ে আগে থেকেই সতর্ক করা হয়।
গ. হযরত মুহাম্মাদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বশেষ নবী। তাঁর পরে আর কোনও নবী নেই। ফলে তাঁর মৃত্যুতে ওহী নাযিলের ধারা সমাপ্ত হয়ে গেছে।
২. لَمْ يَبْقَ مِنَ النُّبُوَّةِ إِلَّا الْمُبَشِّرَاتِ (নবুওয়াতের কিছুই অবশিষ্ট নেই মুবাশশিরাত ছাড়া)। অর্থাৎ আমিই সর্বশেষ নবী। আমার পর কোনও নবী নেই। কাজেই আমার মৃত্যুতে ওহীর ধারা বন্ধ হয়ে যাবে। যখন ওহীর ধারা বন্ধ হয়ে যাবে, তখন ভবিষ্যতে যা ঘটবে তা জানার কোনও মাধ্যম থাকবে না। থাকবে কেবল মুবাশশিরাত। মুবাশশিরাত অর্থ সুসংবাদদাতা।
সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন, মুবাশশিরাত কী? নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন- اَلرُّؤْيَا الصَّالِحَةُ (সঠিক স্বপ্ন)। অর্থাৎ বাস্তবসম্মত স্বপ্ন। যে স্বপ্নের ফল বাস্তবে পাওয়া যায়। ভবিষ্যতে যা ঘটবে ঠিক তাই যে স্বপ্নে দেখা হয় বা জানানো হয়, সেটাই সঠিক স্বপ্ন। কোনও কোনও হাদীছে এরূপ স্বপ্নকে الرُّؤْيَا الصَّادِقَةُ (সত্য স্বপ্ন)-ও বলা হয়েছে। এটা সুসংবাদ-দুঃসংবাদ দু-ই হতে পারে। ভবিষ্যতে ভালো যা ঘটবে, স্বপ্নে আগাম তা জানিয়ে দেওয়া হয় বলে এরূপ স্বপ্নকে মুবাশশিরাত বা সুসংবাদ হয়, যার সম্পর্ক ভবিষ্যতের মন্দ বা অপ্রীতিকর কোনওকিছুর সঙ্গে। এরূপ স্বপ্ন দ্বারা বান্দাকে আগেভাগে সতর্ক করে দেওয়া হয়। এটা বান্দার প্রতি আল্লাহর দয়া, যাতে সে আগে থেকেই সেই বিষয়ে মানসিক ও বাস্তবিক প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারে। তাহলে দেখা যাচ্ছে সঠিক স্বপ্ন দু'প্রকার। সুসংবাদদাতা স্বপ্ন ও সতর্ককারী স্বপ্ন। হাদীছে উভয়প্রকার স্বপ্নকেই সুসংবাদদাতা বলা হয়েছে। এটা বলা হয়েছে ভালোকে মন্দের উপর প্রাধান্যদানের নীতিতে। এটা আরবী অলংকারশাস্ত্রের একটা নিয়ম। অনেক সময় দু'টি বিষয়ের একটিকে অন্যটির উপর প্রাধান্য দিয়ে উভয়ের জন্য একই শব্দ বা একই নাম ব্যবহার করা হয়। পরিভাষায় একে 'তাগলীব' বলা হয়।
এ হাদীছ দ্বারা বোঝা যাচ্ছে সত্য-সঠিক স্বপ্ন নবুওয়াতের একটা অংশ। তা এ হিসেবে যে, নবুওয়াত দ্বারা যে বিভিন্ন রকমের জ্ঞান লাভ হয়ে থাকে, তার মধ্যে একটা হল ভবিষ্যৎ বিষয়ে আগাম খবর। এ ধরনের জ্ঞান স্বপ্ন দ্বারাও লাভ হয়। স্বপ্নে ভবিষ্যৎ বিষয়ে হয়তো সুসংবাদ জানানো হয় অথবা সতর্ক করা হয়। কেবল এই এতটুকু বিষয়ে নবুওয়াতের সঙ্গে মিল আছে। সে হিসেবেই স্বপ্নকে নবুওয়াতের অংশ বলা হয়েছে। কিন্তু নবুওয়াত অনেক ব্যাপক। বিশেষত তা দ্বারা শরী'আত বা বিধি-বিধানের জ্ঞান লাভ হয় এবং নবুওয়াতী জ্ঞান অকাট্য ও সন্দেহাতীত হয়ে থাকে। পক্ষান্তরে স্বপ্ন দ্বারা কখনও বিধি-বিধান সাব্যস্ত হয় না এবং তা অকাট্য ও সন্দেহাতীতও নয়। পার্থক্য বিপুল।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. স্বপ্ন মাত্রই ভিত্তিহীন নয়। কোনও কোনও স্বপ্ন বাস্তবসম্মতও বটে।
খ. সত্য ও সঠিক স্বপ্ন দ্বারা ভবিষ্যতে ঘটবে এমন প্রীতিকর বিষয়ে সুসংবাদ দেওয়া হয় কিংবা অপ্রীতিকর বিষয়ে আগে থেকেই সতর্ক করা হয়।
গ. হযরত মুহাম্মাদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বশেষ নবী। তাঁর পরে আর কোনও নবী নেই। ফলে তাঁর মৃত্যুতে ওহী নাযিলের ধারা সমাপ্ত হয়ে গেছে।
২. ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)