আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

৫০- নবীজীর সাঃ যুদ্ধাভিযানসমূহ

হাদীস নং:
আন্তর্জাতিক নং: ৪২৭৪
২২১০. মক্কা বিজয়ের অভিযান এবং নবী কারীম (ﷺ)- এর অভিযান প্রস্তুতির সংবাদ ফাঁস করে মক্কাবাসীদের নিকট হাতিব ইবনে আবু বালতা‘আর লোক প্রেরণ
৩৯৪৭। কুতায়বা (রাহঃ) .... আলী (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমাকে এবং যুবায়র ও মিকদাদ (রাযিঃ)- কে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এ কথা বলে পাঠালেন যে, তোমরা রওয়ানা হয়ে রাওযায়ে খাখ নামক স্থানে চলে যাও, সেখানে সওয়ারীর পিঠে হাওদায় আরোহিণী জনৈক মহিলার কাছে একখানা পত্র আছে। তোমরা ঐ পত্রটি সেই মহিলা থেকে কেড়ে আনবে। আলী (রাযিঃ) বলেন, আমরা রাওযায়ে খাখ পর্যন্ত পৌঁছে গেলাম। গিয়েই আমরা হাওদায় আরোহিণী মহিলাটিকে দেখতে পেলাম। আমরা (তাকে) বললাম,পত্রটি বের কর।
সে উত্তর দিলঃ আমার কাছে কোন পত্র নেই। আমরা বললাম অবশ্যই তোমাকে পত্রটি বের করতে হবে, অন্যথায় আমরা তোমার কাপড়-চোপড় খুলে তালাশ করব। রাবী বলেন, মহিলাটি তখন তার চুলের খোপা থেকে পত্রটি বের করল। আমরা পত্রটি নিয়ে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর কাছে আসলাম। দেখা গেল এটি হাতিব ইবনে আবু বালতা‘আ (রাযিঃ)-এর পক্ষ থেকে মক্কার কতিপয় মুশরিকের কাছে পাঠানো হয়েছে। তিনি এতে মক্কার কাফেরদের বিরুদ্ধে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর গৃহীত কিছু গোপন তৎপরতার সংবাদ ফাঁস করে দিয়েছেন।
তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, হে হাতিব! এ কি কাজ করেছ? তিনি বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! (অনুগ্রহ পূর্বক) আমার ব্যাপারে তাড়াতাড়ি কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন না। আমি কুরাইশদের স্বগোত্রীয় কেউ ছিলাম না বরং তাদের বন্ধু অর্থাৎ তাদের মিত্র গোত্রের একজন ছিলাম। আপনার সঙ্গে যেসব মুহাজির আছেন কুরাইশ গোত্রে তাঁদের অনেক আত্মীয়-স্বজন রয়েছেন। যারা এদের পরিবার-পরিজন, ধন-সম্পদের হিফাজত করছে। আর কুরাইশ গোত্রে যখন আমার বংশগত কোন সম্পর্ক নেই তাই আমি ভাবলাম যদি আমি তাদের কোন উপকার করে দেই তাহলে তারা আমার পরিবার-পরিজনের হিফাজতে এগিয়ে আসবে। কখনো আমি আমার দ্বীন পরিত্যাগ করা কিংবা ইসলাম গ্রহণের পর কুফরকে গ্রহণ করার জন্য এ কাজ করিনি।
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তখন বললেন, সে (হাতিব) তোমাদের কাছে সত্য কথাই বলেছে। উমর (রাযিঃ) বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাকে অনুমতি দিন, আমি এ মুনাফিকের গর্দান উড়িয়ে দেবো। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, দেখ, সে বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে। তুনি তো জানো না, হয়তো আল্লাহ্ তাআলা বদরে অংশগ্রহণকারীরদের উপর সন্তুষ্ট হয়ে বলে দিয়েছেন, তোমরা যা খুশী করতে থাক, আমি তোমারদেরকে ক্ষমা করি দিয়েছি।
তখন আল্লাহ্ তাআলা এ সূরা অবতীর্ণ করেনঃ হে মু’মিনগণ! আমার শত্রু ও তোমাদের শত্রুকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। তোমরা কি তাদের সাথে বন্ধুত্ব করছ অথচ তারা তোমাদের কাছে যে সত্য এসেছে তা প্রত্যাখ্যান করেছে। রাসূলুল্লাহ
(ﷺ)- কে এবং তোমাদেরকে (স্বদেশ থেকে) বহিস্কার করেছে এ কারণে যে, তোমরা তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহকে বিশ্বাস কর। যদি তোমরা আমার সন্তুষ্টি লাভের জন্য আমার পথে জিহাদের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে থাক তবে কেন তোমরা ওদের সাথে গোপনে বন্ধুত্ব করছ? তোমরা যা গোপন কর এবং যা প্রকাশ কর তা আমি সম্যক অবগত আছি। আর তোমাদের মধ্যে যে কেউ এ কাজ করে সে তো বিচ্যুত হয়ে যায় সরল পথ থেকে (৬০ঃ ১)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক নিষ্প্রয়োজন