মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)

২৩- পোষাক-পরিচ্ছদের বর্ণনা

হাদীস নং: ৪৩১৪
- পোষাক-পরিচ্ছদের বর্ণনা
প্রথম অনুচ্ছেদ
৪৩১৪। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন টাখনার নীচে ইযারের যে অংশ থাকিবে উহা জাহান্নামে। (অর্থাৎ, শরীরের ঐ অংশ দোযখে যাইবে। অথবা ঐ সামান্য অংশের জন্য গোটা দেহই আগুনে জ্বলিবে।) —বুখারী
كتاب اللباس
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا أَسْفَلَ مِنَ الْكَعْبَيْنِ مِنَ الْإِزَارِ فِي النَّارِ» . رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ

হাদীসের ব্যাখ্যা:

এ হাদীছটিতে টাখনুর নিচে লুঙ্গি পরিধানের পরিণাম সম্পর্কে কঠিন সতর্কবাণী উচ্চারিত হয়েছে। বলা হয়েছে, লুঙ্গির যতটুকু অংশ টাখনুর নিচে থাকবে, ততটুকু জাহান্নামে যাবে। এর দু'টি অর্থ হতে পারে। এক অর্থ হল পায়ের সেই অংশ অর্থাৎ টাখনুর নিচের অংশ, যা পরিধানের কাপড় দ্বারা ঢাকা হয়েছে, জাহান্নামে যাবে। বলাবাহুল্য কোনও ব্যক্তির এক অংশ জাহান্নামে যাবে আর বাকি অংশ জান্নাতে, এরূপ হতে পারে না। এক অংশ যখন জাহান্নামে যাবে, তখন বাকি অংশও অবশ্যই জাহান্নামেই যাবে। তার মানে লুঙ্গি টাখনুর নিচে ঝুলিয়ে পরা জাহান্নামে যাওয়ার একটি কারণ।

দ্বিতীয় অর্থ হতে পারে এরকম যে, লুঙ্গি টাখনুর নিচে নামিয়ে পরার কাজটি জাহান্নামীদের কাজের মধ্যে গণ্য। অর্থাৎ এভাবে লুঙ্গি পরে তারাই, যারা জাহান্নামে যাবে। কাজেই কোনও মুমিন-মুসলিম ব্যক্তির এভাবে লুঙ্গি পরা উচিত নয়।

উল্লেখ্য, এ সতর্কবাণী কেবল লুঙ্গির জন্যই নির্ধারিত নয়; বরং এটা জামা ও পায়জামার জন্যও প্রযোজ্য। অর্থাৎ পরিধেয় যে-কোনও বস্ত্র নিচের দিকে সর্বোচ্চ টাখনু পর্যন্ত নামানো যাবে, এর নিচে নয়। পুরুষের সতর যেহেতু হাঁটু পর্যন্ত, তাই হাঁটুর নিচে নামাতে হবে অবশ্যই। তার মানে পরিধেয় বস্ত্র হাঁটু ও টাখনুর মাঝামাঝি যে-কোনও স্থান পর্যন্ত নামানো যাবে।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

পরিধেয় কাপড় অর্থাৎ লুঙ্গি, পায়জামা, ফুলপ্যান্ট ও জুব্বা টাখনুর নিচে ঝুলিয়ে পরা যাবে না।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান