মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)

২১- শিকার ও জবাইয়ের পশুর বিধান

হাদীস নং: ৪০৬৪
- শিকার ও জবাইয়ের পশুর বিধান
শিকার ও যবাহ্ পর্বঃ
প্রথম অনুচ্ছেদ
৪০৬৪। হযরত আদী ইবনে হাতেম (রাঃ) হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বলিয়াছেন: যখন তুমি তোমার কুকুরকে (শিকারের প্রতি) ছাড়িয়া দিবে, তখন আল্লাহর নাম লইবে। যদি সে শিকার ধরিয়া তোমার জন্য রাখিয়া দেয়, আর তুমিও শিকারকৃত জানোয়ারটিকে জীবিত অবস্থায় পাইয়া থাক, তখন তুমি উহাকে যবাহ্ করিয়া দাও। আর যদি তুমি উহাকে এমন অবস্থায় পাও যে, সে উহাকে মারিয়া ফেলিয়াছে, কিন্তু সে উহার কোন অংশ খায় নাই, তখন তুমি উহা খাইতে পার। আর যদি সে কিছু খাইয়া থাকে, তবে তুমি খাইবে না। কেননা, (তখন ইহাই বুঝিতে হইবে যে, সে উহা নিজের জন্যই শিকার করিয়াছে। আর যদি তুমি তোমার নিজের কুকুরের সঙ্গে অন্যের কুকুর দেখিতে পাও যে, তাহারা শিকার ধরিয়া উহাকে মারিয়াও ফেলিয়াছে, তখন উহা খাইতে পারিবে না। কেননা, তুমি অবগত নও যে, তাহাদের উভয়ের মধ্যে কে শিকার ধরিয়াছে বা মারিয়াছে। আর যখন তুমি তোমার তীর নিক্ষেপ কর তখন আল্লাহর নাম লইবে অতঃপর যদি (উক্ত শিকার) ন্যূনতম একদিন তোমার নিকট অদৃশ্য থাকে (এবং তুমি উহাকে মৃত অবস্থায় পাও) এবং উহার গায়ে একমাত্র তোমার তীরের চিহ্ন ব্যতীত অন্য কিছুর আঘাত না পাও, তখন ইচ্ছা করিলে উহাকে খাইতে পার। কিন্তু যদি তুমি উহাকে পানিতে ডুবা অবস্থায় পাইয়া থাক, তখন উহা আর খাইতে পারিবে না। মোত্তাঃ
كتاب الصيد والذبائح
كتاب الصَّيْد والذبائح: الْفَصْل الأول
عَن عدِيِّ بنِ حاتِمٍ قَالَ: قَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا أَرْسَلْتَ كَلْبَكَ فَاذْكُرِ اسْمَ اللَّهِ فَإِنْ أَمْسَكَ عَلَيْكَ فَأَدْرَكْتَهُ حَيًّا فَاذْبَحْهُ وَإِنْ أَدْرَكْتَهُ قَدْ قَتَلَ وَلَمْ يَأْكُلْ مِنْهُ فَكُلْهُ وَإِنْ أَكَلَ فَلَا تَأْكُلْ فَإِنَّمَا أَمْسَكَ عَلَى نَفْسِهِ فَإِنْ وَجَدْتَ مَعَ كَلْبِكَ كَلْبًا غَيْرَهُ وَقَدْ قَتَلَ فَلَا تَأْكُلْ فَإِنَّكَ لَا تَدْرِي أَيُّهُمَا قَتَلَ. وَإِذَا رَمَيْتَ بِسَهْمِكَ فَاذْكُرِ اسْمَ اللَّهِ فَإِنْ غَابَ عَنْكَ يَوْمًا فَلَمْ تَجِدْ فِيهِ إِلَّا أَثَرَ سَهْمِكَ فَكُلْ إِنْ شِئْتَ وَإِنْ وَجَدْتَهُ غَرِيقًا فِي الْمَاءِ فَلَا تأكُلْ»

হাদীসের ব্যাখ্যা:

الصيد অর্থঃ শিকার করা। এইখানে কোন হালাল পশু-পাখী শিকার করার অর্থে ব্যবহৃত হইয়াছে।
الذبائح অর্থ, হালাল জানোয়ার বা পাখীকে যবাহ্ করা। উহা দুই ধরনের হইতে পারে, اختيارى او اضطرارى অর্থাৎ স্বাভাবিক বা অস্বাভাবিক। আল্লাহর কালামে বর্ণিত আছেঃ ان الله يامركم ان تذبحوا بقرة ফলে এই আয়াত হইতে যবাহ্ করার বৈধতা প্রমাণিত হয়। স্বাভাবিক অবস্থায় হলকুম ও ওয়াদাজান অর্থাৎ, খাদ্যনালী ও শ্বাস-প্রশ্বাসের নালী এবং গর্দানের উভয় পার্শ্বের রক্ত চলাচলের মোটা মোটা দুইটি শিরা বা রগ, এই চারিটির অধিকগুলি অর্থাৎ, ন্যূনতম তিনটি কাটা গেলে জানোয়ার হালাল হইয়া যায়। ইহা ইমাম আবু হানীফা (রহঃ)-এর অভিমত। যবাহ্ করার স্থান হইল বক্ষস্থল হইতে ত গলদেশের টুঁটি পর্যন্ত ইহার মধ্যবর্তী জায়গা।

শিকারী কুকুর কিংবা অন্য কোন জানোয়ারকে বিসমিল্লাহ্ বলিয়া শিকার ধরার জন্য ছাড়িয়া দিলে ধরার পর শিকার মরিয়া গেলেও উহা খাওয়া জায়েয। কেননা, তখন সে মৃত্যুকে যবাহ-এর মৃত্যু বলিয়া গণ্য করা হইবে। আর যদি কুকুর নিজে নিজে শিকার ধরিয়া আনে এবং যবাহ্ করার আগে উহা মরিয়া যায়, এমন শিকার খাওয়া জায়েয নাই ।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
মিশকাতুল মাসাবীহ - হাদীস নং ৪০৬৪ | মুসলিম বাংলা