মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)

১৯- রাষ্ট্রনীতি ও আদালত-বিচার অধ্যায়

হাদীস নং: ৩৭৪৫
- রাষ্ট্রনীতি ও আদালত-বিচার অধ্যায়
৩. প্রথম অনুচ্ছেদ - বিচারকদের (সহকর্মীদের) বেতন ও হাদিয়া গ্রহণ করা
৩৭৪৫। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেনঃ আমি স্বীয় ইচ্ছায় তোমাদিগকে কিছু প্রদান করি না, আবার বঞ্চিতও করি না। (এইসব কিছুর প্রকৃত মালিক হইলেন মহান আল্লাহ্।) আমি শুধুমাত্র বণ্টনকারী। সুতরাং আমি যেইভাবে আদিষ্ট হইয়াছি ঠিক সেইভাবেই দান করি বা বন্টন করি। -বুখারী
كتاب الإمارة والقضاء
بَابُ رِزْقِ الْوُلَاةِ وَهَدَايَاهُمْ: الْفَصْل الأول
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا أُعْطِيكُمْ وَلَا أَمْنَعُكُمْ أَنَا قَاسِمٌ أَضَعُ حَيْثُ أُمِرْتُ» . رَوَاهُ البُخَارِيّ

হাদীসের ব্যাখ্যা:

যাহারা সরকারী কিংবা বেসরকারী পদে চাকুরী করেন, চাই তাহারা যেই কোন বিভাগেই চাকুরী করুন না কেন, তিনি পারিশ্রমিক হিসাবে অযীফা বা বেতন গ্রহণ করিতে পারেন। কাযী শুরায় প্রসিদ্ধ বিচারপতি, তিনি বিচারকের পদে থাকিয়া পারিশ্রমিক গ্রহণ করিয়াছেন। হযরত আয়েশা (রাঃ) বলিয়াছেন, এতীমের অভিভাবক, এতীমের সম্পদ হইতে তাহার শ্রম অনুযায়ী ন্যায়সঙ্গতভাবে খাইতে পারেন। হযরত আবু বকর ও ওমর (রাঃ) তাঁহাদের খেলাফতকালে বেতন গ্রহণ করিতেন। সুতরাং জমহুরে ওলামা ও সাহাবায়ে কেরামদের বিরাট দল ইহাকে জায়েয বলিয়াছেন। আবশ্য কাযী মাকসহ কয়েকজন বলিয়াছেন, বেতন গ্রহণ করা মারূহে তানযীহী। তবে হানাফী ইমামগণ বলেন, যদি বিচারক গরীব হন, তাহার জন্য উহা গ্রহণ করা শুধু উত্তমই নহে; বরং ওয়াজেবও বটে, যেই পরিমাণে তাহার প্রয়োজন সারে। তবে মালদার হইলে না লওয়াই উত্তম। অবশ্য সহীহ্ কথা হইল, এই বর্তমান যুগে যদি বেতন না লওয়া হয়, তাহা হইলে তাহার কাজে ও দায়িত্বে শৈথিল্য দেখা দিবে। তাই শ্রম পরিমাণ পারিশ্রমিক লওয়া জায়েয। তবে উপঢৌকন সম্পর্কে হযরত ওমর ইবনে আবদুল আযীয (রঃ) বলিয়াছেন, উপঢৌকন এক সময় হাদিয়া বা উপঢৌকন ছিল। কিন্তু বর্তমান যুগে উহা ঘুষ বা উৎকোচ। কাজেই উহা গ্রহণ করা উচিত নহে।

হাদীসের অর্থ হইল, আমি নিজের মনের ইচ্ছায় ও নফসের প্ররোচনায় কাহাকেও দেওয়া বা না দেওয়া নীতি অবলম্বন করি না; বরং আল্লাহর আদেশ ও হুকুমেই আদিষ্ট হইয়া যাহা করিতে হয় তাহাই করি। আবার হাদীসে বর্ণিত, ‘দেওয়া বা না দেওয়া'-এর দ্বারা মাল সম্পদও হইতে পারে, আবার এম, ওহী এবং শরীআতের বিধিবিধান ইত্যাদিও হইতে পারে। যেমন, আল্লাহর কালামঃ مَا يَنْطِقُ عَنِ الْهَوَى إِنْ هُوَ إِلَّا وَحْيٌ يُوحَى
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান