মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
১৫- গোলাম আযাদ করা সম্পর্কিত
হাদীস নং: ৩৩৮৮
- গোলাম আযাদ করা সম্পর্কিত
১. প্রথম অনুচ্ছেদ - অংশীদারী গোলাম মুক্তি করা ও নিকটাত্মীয়কে ক্রয় করা এবং অসুস্থাবস্থায় গোলাম মুক্তি করা
৩৩৮৮। হযরত ইবনে ওমর (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেনঃ যে ব্যক্তি কোন যৌথ মালিকানাধীন ক্রীতদাসের মধ্যে নিজের (মালিকানা) অংশটুকু মুক্ত করিল, যদি তাহার নিকট কোন ন্যায়বান ব্যক্তির নিরূপিত মূল্য অনুযায়ী দাসটির পুরা মূল্য পরিমাণ সম্পদ থাকে, তখন সে অন্যান্য অংশীদারকে তাহাদের স্ব স্ব অংশের মূল্য পরিশোধ করিয়া দাসটিকে মুক্ত করিয়া দিবে, অন্যথায় সে যতটুকু অংশ মুক্ত করিয়াছে কেবল ততটুকু অংশই মুক্ত বলিয়া গণ্য হইবে। —মোত্তাঃ
كتاب العتق
بَابُ إِعْتَاقِ الْعَبْدِ الْمُشْتَرَكِ وَشِرَاءِ الْقَرِيْبِ وَالْعِتْقِ فِى الْمَرَضِ: الْفَصْل الأول
عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ أَعْتَقَ شِرْكًا لَهُ فِي عَبْدٍ وَكَانَ لَهُ مَالٌ يَبْلُغُ ثَمَنَ الْعَبْدِ قُوِّمَ الْعَبْدُ قِيمَةَ عَدْلٍ فَأُعْطِيَ شُرَكَاؤُهُ حِصَصَهُمْ وَعَتَقَ عَلَيْهِ الْعَبْدُ وَإِلَّا فَقَدْ عَتَقَ مِنْهُ مَا عَتَقَ»
হাদীসের ব্যাখ্যা:
অংশীদারী দাস মুক্ত করা ও নিকটাত্মীয়কে
ক্রয় এবং পীড়াবস্থায় দাস মুক্ত করা
কোন কোন বস্তুর উপর যেমন একাধিক ব্যক্তির মালিকানা স্বত্ব পাওয়া যায়, অনুরূপভাবে একটি ক্রীতদাসের মধ্যেও কয়েকজনের যৌথ মালিকানা স্বত্ব থাকিতে পারে। কিন্তু যদি তাহাদের কোন একজন তাহার অংশ (যদিও উহা সামান্য হয়) আযাদ করিয়া দেয়, তবে উক্ত দাসটিকে পূর্ববৎ গোলামে পরিণত করা যাইবে না; বরং তাহাকে দাসত্ব হইতে মুক্ত করিতেই হইবে। (বিস্তারিত আলোচনা সামনের হাদীসের ব্যাখ্যায় দ্রষ্টব্য।) আর যদি কোন ব্যক্তি তাহার নিকটতম কোন আত্মীয়কে খরিদ করে, তবে সে ক্রয়কৃত লোকটির মালিক হইবে না; বরং খরিদ করার সঙ্গে সঙ্গেই সে আযাদ হইয়া যাইবে। অবশ্য যেহেতু বাহ্যতঃ ক্রয়-মূল্য আদান-প্রদান হইয়া থাকে, এই হিসাবে উহাকে ক্রয়-বিক্রয় বলা হইয়াছে।
যৌথ মালিকানাধীন ক্রীতদাসের কোন একজন অংশীদার তাহার নিজের অংশ আযাদ করিয়া দিলে গোলামটিকে পুরোপুরি মুক্তি দান করাও ঐ ব্যক্তির উপর ওয়াজির হইয়া যায়। তবে ওলামাদের ঐকমত্য এই যে, যেই ক্রীতদাসের কিছু অংশ মুক্ত করা হইয়াছে তাহাকে আবার পূর্ণ ক্রীতদাসে পরিণত করা যাইবে না। এমতাবস্থায় যদি আংশিক মুক্তিদানকারী সম্পদশালী হয়, তাহা হইলে অন্যান্য অংশীদারকে তাহাদের স্ব স্ব অংশ পরিমাণ মূল্য পরিশোধ করিয়া গোলামটিকে সম্পূর্ণরূপে মুক্ত করিয়া দিবে। অবশ্য কোন ন্যায় নিষ্ঠাবান ব্যক্তিই উহার মূল্য নির্ধারণ ও নিরূপণ করিবে। কিন্তু যদি সে সম্পদশালী না হয় এবং অন্যান্য অংশীদারের মূল্য পরিশোধ করার মত সামর্থ্য না থাকে, তখন কি হুকুম হইবে পরবর্তী হাদীসে উহার সমাধান দেওয়া হইয়াছে।
ক্রয় এবং পীড়াবস্থায় দাস মুক্ত করা
কোন কোন বস্তুর উপর যেমন একাধিক ব্যক্তির মালিকানা স্বত্ব পাওয়া যায়, অনুরূপভাবে একটি ক্রীতদাসের মধ্যেও কয়েকজনের যৌথ মালিকানা স্বত্ব থাকিতে পারে। কিন্তু যদি তাহাদের কোন একজন তাহার অংশ (যদিও উহা সামান্য হয়) আযাদ করিয়া দেয়, তবে উক্ত দাসটিকে পূর্ববৎ গোলামে পরিণত করা যাইবে না; বরং তাহাকে দাসত্ব হইতে মুক্ত করিতেই হইবে। (বিস্তারিত আলোচনা সামনের হাদীসের ব্যাখ্যায় দ্রষ্টব্য।) আর যদি কোন ব্যক্তি তাহার নিকটতম কোন আত্মীয়কে খরিদ করে, তবে সে ক্রয়কৃত লোকটির মালিক হইবে না; বরং খরিদ করার সঙ্গে সঙ্গেই সে আযাদ হইয়া যাইবে। অবশ্য যেহেতু বাহ্যতঃ ক্রয়-মূল্য আদান-প্রদান হইয়া থাকে, এই হিসাবে উহাকে ক্রয়-বিক্রয় বলা হইয়াছে।
যৌথ মালিকানাধীন ক্রীতদাসের কোন একজন অংশীদার তাহার নিজের অংশ আযাদ করিয়া দিলে গোলামটিকে পুরোপুরি মুক্তি দান করাও ঐ ব্যক্তির উপর ওয়াজির হইয়া যায়। তবে ওলামাদের ঐকমত্য এই যে, যেই ক্রীতদাসের কিছু অংশ মুক্ত করা হইয়াছে তাহাকে আবার পূর্ণ ক্রীতদাসে পরিণত করা যাইবে না। এমতাবস্থায় যদি আংশিক মুক্তিদানকারী সম্পদশালী হয়, তাহা হইলে অন্যান্য অংশীদারকে তাহাদের স্ব স্ব অংশ পরিমাণ মূল্য পরিশোধ করিয়া গোলামটিকে সম্পূর্ণরূপে মুক্ত করিয়া দিবে। অবশ্য কোন ন্যায় নিষ্ঠাবান ব্যক্তিই উহার মূল্য নির্ধারণ ও নিরূপণ করিবে। কিন্তু যদি সে সম্পদশালী না হয় এবং অন্যান্য অংশীদারের মূল্য পরিশোধ করার মত সামর্থ্য না থাকে, তখন কি হুকুম হইবে পরবর্তী হাদীসে উহার সমাধান দেওয়া হইয়াছে।