আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ
৫০- নবীজীর সাঃ যুদ্ধাভিযানসমূহ
হাদীস নং: ৩৮২২
আন্তর্জাতিক নং: ৪১২২
২১৯৪. আহযাব যুদ্ধ থেকে নবী কারীম (ﷺ)-এর প্রত্যাবর্তন এবং বনু কুরায়য়ার প্রতি তাঁর অভিযান এবং তাদের অবরোধ
৩৮২২। যাকারিয়া ইবনে ইয়াহয়া (রাহঃ) ......... আয়েশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, খন্দকের যুদ্ধে সা‘দ (রাযিঃ) আহত হয়েছিলেন। কুরাইশ গোত্রের হিব্বান ইবনে ইরকা নামক এক ব্যক্তি তাঁর উভয় বাহুর মধ্যবর্তী রগে তীর বিদ্ধ করেছিল। কাছে থেকে তার শুশ্রূষা করার জন্য নবী কারীম (ﷺ) মসজিদে নববীতে একটি খিমা তৈরী করেছিলেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) খন্দকের যুদ্ধ থেকে প্রত্যাবর্তন করে যখন হাতিয়ার রেখে গোসল সমাপন করলেন তখন জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) তাঁর মাথার ধূলোবালি ঝাড়তে ঝাড়তে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর কাছে উপস্থিত হলেন এবং বললেন, আপনি তো হাতিয়ার রেখে দিয়েছেন, কিন্তু আল্লাহর কসম! আমি এখনও তা রেখে দেই নি। চলুন তাঁদের প্রতি। নবী কারীম (ﷺ) তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন কোথায়? তিনি বনী কুরায়যা গোত্রের প্রতি ইঙ্গিত করলেন।
তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বনু কুরায়যার মহল্লায় এলেন। পরিশেষে তারা রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর ফয়সালা মেনে নিয়ে দুর্গ থেকে নীচে নেমে এল। কিন্তু তিনি ফয়সালার ভার সা‘দ (রাযিঃ)-এর উপর অর্পণ করলেন। তখন সা‘দ (রাযিঃ) বললেন, তাদের ব্যাপারে আমি এই রায় দিচ্ছি যে, তাদের যোদ্ধাদেরকে হত্যা করা হবে, নারী ও সন্তানদেরকে বন্দী করা হবে এবং তাদের ধন-সম্পদ (মুসলমানদের মধ্যে) বন্টন করে দেওয়া হবে। বর্ণনাকারী হিশাম (রাহঃ) বলেন, আমার পিতা [উরওয়া (রাযিঃ)] আয়েশা (রাযিঃ) থেকে আমার কাছে বর্ণনা করেছেন যে, সা‘দ (রাযিঃ) (বনু কুরায়যার ঘটনার পর) আল্লাহর কাছে এ বলে দু'আ করছিলেন, হে আল্লাহ! আপনি তো জানেন, যে সম্প্রদায় আপনার রাসূল (ﷺ)- কে মিথ্যাবাদী বলেছে এবং দেশ থেকে বের করে দিয়েছে আপনার সন্তুষ্টির জন্য তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ করার চেয়ে কোন কিছুই আমার কাছে অধিক প্রিয় নয়। হে আল্লাহ! আমি মনে করি (খন্দক যুদ্ধের পর) আপনি তো আমাদের ও তাদের মধ্যে যুদ্ধের অবসান ঘটিয়েছেন তবে এখনো যদি কুরাইশদের বিরুদ্ধে কোন যুদ্ধ বাকী থেকে থাকে তাহলে আমাকে সে জন্য বাঁচিয়ে রাখুন, যেন আমি আপনার রাস্তায় তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ করতে পারি।
আর যদি যুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে থাকেন তাহলে ক্ষতস্থান থেকে রক্ত প্রবাহিত করুন এবং এতেই আমার মৃত্যু ঘটান। এরপর তাঁর ক্ষত স্থান থেকে রক্তক্ষরণ হয়ে তা প্রবাহিত হতে লাগল। মসজিদে বনী গিফার গোত্রের একটি তাঁবু ছিল। তাদের দিকে রক্ত প্রবাহিত হয়ে আসতে দেখে তারা ভীত হয়ে বললেন, হে তাঁবুবাসীগণ আপনাদের দিক থেকে এসব কি আমাদের দিকে বয়ে আসছে? পরে তাঁরা দেখলেন যে, সা‘দ (রাযিঃ)- এর ক্ষতস্থান থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। অবশেষে এ জখমের কারণেই তিনি মারা যান।
তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বনু কুরায়যার মহল্লায় এলেন। পরিশেষে তারা রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর ফয়সালা মেনে নিয়ে দুর্গ থেকে নীচে নেমে এল। কিন্তু তিনি ফয়সালার ভার সা‘দ (রাযিঃ)-এর উপর অর্পণ করলেন। তখন সা‘দ (রাযিঃ) বললেন, তাদের ব্যাপারে আমি এই রায় দিচ্ছি যে, তাদের যোদ্ধাদেরকে হত্যা করা হবে, নারী ও সন্তানদেরকে বন্দী করা হবে এবং তাদের ধন-সম্পদ (মুসলমানদের মধ্যে) বন্টন করে দেওয়া হবে। বর্ণনাকারী হিশাম (রাহঃ) বলেন, আমার পিতা [উরওয়া (রাযিঃ)] আয়েশা (রাযিঃ) থেকে আমার কাছে বর্ণনা করেছেন যে, সা‘দ (রাযিঃ) (বনু কুরায়যার ঘটনার পর) আল্লাহর কাছে এ বলে দু'আ করছিলেন, হে আল্লাহ! আপনি তো জানেন, যে সম্প্রদায় আপনার রাসূল (ﷺ)- কে মিথ্যাবাদী বলেছে এবং দেশ থেকে বের করে দিয়েছে আপনার সন্তুষ্টির জন্য তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ করার চেয়ে কোন কিছুই আমার কাছে অধিক প্রিয় নয়। হে আল্লাহ! আমি মনে করি (খন্দক যুদ্ধের পর) আপনি তো আমাদের ও তাদের মধ্যে যুদ্ধের অবসান ঘটিয়েছেন তবে এখনো যদি কুরাইশদের বিরুদ্ধে কোন যুদ্ধ বাকী থেকে থাকে তাহলে আমাকে সে জন্য বাঁচিয়ে রাখুন, যেন আমি আপনার রাস্তায় তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ করতে পারি।
আর যদি যুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে থাকেন তাহলে ক্ষতস্থান থেকে রক্ত প্রবাহিত করুন এবং এতেই আমার মৃত্যু ঘটান। এরপর তাঁর ক্ষত স্থান থেকে রক্তক্ষরণ হয়ে তা প্রবাহিত হতে লাগল। মসজিদে বনী গিফার গোত্রের একটি তাঁবু ছিল। তাদের দিকে রক্ত প্রবাহিত হয়ে আসতে দেখে তারা ভীত হয়ে বললেন, হে তাঁবুবাসীগণ আপনাদের দিক থেকে এসব কি আমাদের দিকে বয়ে আসছে? পরে তাঁরা দেখলেন যে, সা‘দ (রাযিঃ)- এর ক্ষতস্থান থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। অবশেষে এ জখমের কারণেই তিনি মারা যান।
بَابُ مَرْجِعِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنَ الأَحْزَابِ، وَمَخْرَجِهِ إِلَى بَنِي قُرَيْظَةَ وَمُحَاصَرَتِهِ إِيَّاهُمْ
4122 - حَدَّثَنَا زَكَرِيَّاءُ بْنُ يَحْيَى، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا هِشَامٌ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ: أُصِيبَ سَعْدٌ يَوْمَ الخَنْدَقِ، رَمَاهُ رَجُلٌ مِنْ قُرَيْشٍ، يُقَالُ لَهُ حِبَّانُ بْنُ العَرِقَةِ وَهُوَ حِبَّانُ بْنُ قَيْسٍ، مِنْ بَنِي مَعِيصِ بْنِ عَامِرِ بْنِ لُؤَيٍّ رَمَاهُ فِي الأَكْحَلِ، فَضَرَبَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَيْمَةً فِي المَسْجِدِ لِيَعُودَهُ مِنْ قَرِيبٍ، فَلَمَّا رَجَعَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنَ الخَنْدَقِ وَضَعَ السِّلاَحَ وَاغْتَسَلَ، فَأَتَاهُ جِبْرِيلُ عَلَيْهِ السَّلاَمُ وَهُوَ يَنْفُضُ رَأْسَهُ مِنَ الغُبَارِ، فَقَالَ: " قَدْ وَضَعْتَ السِّلاَحَ، وَاللَّهِ مَا وَضَعْتُهُ، اخْرُجْ إِلَيْهِمْ، قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: فَأَيْنَ فَأَشَارَ إِلَى بَنِي قُرَيْظَةَ " فَأَتَاهُمْ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَنَزَلُوا عَلَى حُكْمِهِ، فَرَدَّ الحُكْمَ إِلَى سَعْدٍ، قَالَ: فَإِنِّي أَحْكُمُ فِيهِمْ: أَنْ تُقْتَلَ المُقَاتِلَةُ، وَأَنْ تُسْبَى النِّسَاءُ وَالذُّرِّيَّةُ، وَأَنْ تُقْسَمَ أَمْوَالُهُمْ قَالَ هِشَامٌ، فَأَخْبَرَنِي أَبِي، عَنْ عَائِشَةَ: " أَنَّ سَعْدًا قَالَ: اللَّهُمَّ إِنَّكَ تَعْلَمُ أَنَّهُ لَيْسَ أَحَدٌ أَحَبَّ إِلَيَّ أَنْ أُجَاهِدَهُمْ فِيكَ، مِنْ قَوْمٍ [ص:113] كَذَّبُوا رَسُولَكَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَخْرَجُوهُ، اللَّهُمَّ فَإِنِّي أَظُنُّ أَنَّكَ قَدْ وَضَعْتَ الحَرْبَ بَيْنَنَا وَبَيْنَهُمْ، فَإِنْ كَانَ بَقِيَ مِنْ حَرْبِ قُرَيْشٍ شَيْءٌ فَأَبْقِنِي لَهُ، حَتَّى أُجَاهِدَهُمْ فِيكَ، وَإِنْ كُنْتَ وَضَعْتَ الحَرْبَ فَافْجُرْهَا وَاجْعَلْ مَوْتَتِي فِيهَا، فَانْفَجَرَتْ مِنْ لَبَّتِهِ فَلَمْ يَرُعْهُمْ، وَفِي المَسْجِدِ خَيْمَةٌ مِنْ بَنِي غِفَارٍ، إِلَّا الدَّمُ يَسِيلُ إِلَيْهِمْ، فَقَالُوا: يَا أَهْلَ الخَيْمَةِ، مَا هَذَا الَّذِي يَأْتِينَا مِنْ قِبَلِكُمْ؟ فَإِذَا سَعْدٌ يَغْذُو جُرْحُهُ دَمًا، فَمَاتَ مِنْهَا رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ "
