মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
১৪- বিবাহ-শাদী সম্পর্কিত অধ্যায়
হাদীস নং: ৩২৪৬
১০. প্রথম অনুচ্ছেদ - স্ত্রীদের সাথে সদ্ব্যবহার এবং তাদের প্রত্যেকের (স্বামী-স্ত্রীর) পারস্পরিক হক ও অধিকার সংক্রান্ত
৩২৪৬। আবু হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ স্বামী যখন তার স্ত্রীকে (সহবাসের উদ্দেশে) বিছানায় ডাকে আর স্ত্রী তার ডাক প্রত্যাখ্যান করে। এমতাবস্থায় স্বামী অসন্তোষ অবস্থায় রাত্রি যাপন করে, তখন এ স্ত্রী এভাবে রাত্রি যাপন করে যে, মালায়িকাহ্ (ফিরিশতাগণ) তার ওপর অভিশাপ করতে থাকে রাত্রি শেষে ভোর অবধি। বুখারী ও মুসলিম
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا دَعَا الرَّجُلُ امْرَأَتَهُ إِلَى فِرَاشِهِ فَأَبَتْ فَبَاتَ غَضْبَانَ لَعَنَتْهَا الْمَلَائِكَةُ حَتَّى تُصْبِحَ» . مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ. وَفِي رِوَايَةٍ لَهُمَا قَالَ: «وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ مَا مِنْ رَجُلٍ يَدْعُو امْرَأَتَهُ إِلَى فِرَاشِهِ فَتَأْبَى عَلَيْهِ إِلَّا كَانَ الَّذِي فِي السَّمَاءِ ساخطا عَلَيْهَا حَتَّى يرضى عَنْهَا»
হাদীসের ব্যাখ্যা:
স্বামীর ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও স্ত্রীর বিছানায় আসতে অস্বীকৃতির বিষয়ে হাদীসে কঠিন ধমকি বর্ণিত হয়েছে। কোন কোন হাদীসে আল্লাহর অসন্তুষ্টির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
আর কোন কোন হাদীসে ফেরেশতাদের লানতের বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। যাইহোক ফিরিশতাদের এ লা'নত করা এবং আল্লাহ তাআলার অসন্তুষ্ট হওয়ার কারণ হল শরীআতে বিবাহের বিধান যে উদ্দেশ্যে দেওয়া হয়েছে, স্ত্রীর আচরণ তার পরিপন্থী। এ বিধানের একটি বড় উদ্দেশ্য জৈবচাহিদা পূরণ। ইসলাম মানুষের স্বভাবগত কোনও চাহিদাকেই সম্পূর্ণ উপেক্ষা করেনি; বরং তা বৈধভাবে পূরণের ব্যবস্থা দান করেছে। পেটে ক্ষুধা লাগা একটি স্বভাবগত বিষয়। এর জন্য মানুষের খাদ্যচাহিদা দেখা দেয়। এ চাহিদা পূরণের জন্য চাইলে মানুষ যে-কোনও উপায়ই অবলম্বন করতে পারে। কিন্তু শরীআত এ ব্যাপারে সীমারেখা টেনে দিয়েছে। কোনও উপায়কে বৈধ করেছে এবং কোনওটাকে অবৈধ বলেছে। মানুষের কর্তব্য অবৈধ উপায় পরিহার করে ক্ষুধা নিবারণের বৈধ উপায় অবলম্বন করা।
কামচাহিদার ব্যাপারটাও সেরকমই। এর জন্য নানা অবৈধ উপায় আছে, কিন্তু শরীআত তা হারাম করেছে। মানুষ যাতে বৈধ উপায়ে এ চাহিদা পূরণ করতে পারে, সে লক্ষ্যেই বিবাহের ব্যবস্থা দান করেছে। কাজেই স্ত্রী যদি স্বামীর ডাকে সাড়া না দেয়, তবে এটা হবে সে লক্ষ্যের পরিপন্থী। এ ক্ষেত্রে স্বামী হয়তো চাহিদা অবদমন করতে বাধ্য হবে, যা তার শরীরের উপর এক অনাকাঙ্ক্ষিত চাপ। সে হিসেবে স্ত্রীর পক্ষ থেকে তার উপর একরকম জুলুম করা হবে। অন্যথায় স্বামী অবৈধ কোনও পন্থা অবলম্বন করবে। এতে যে গুনাহ হয়, বলাবাহুল্য তার দায় স্ত্রীর উপরও বর্তায়। এ কারণেই ফিরিশতাদের লা'নত ও আল্লাহ তাআলার অসন্তুষ্টি।
উল্লেখ্য, স্ত্রীর সাড়াদান না করাটা যদি ওজরবশত হয়, তবে স্বামীর কর্তব্য সে ওজর বিবেচনা করা। কারও কারও স্থায়ী ওজরও থাকে। সে ক্ষেত্রে যদি আরেকটি বিবাহের সামর্থ্য থাকে এবং স্বামীও তাতে আগ্রহ প্রকাশ করে, তবে স্ত্রীর তাতে বাধা হওয়া সমীচীন নয়। স্বামীর যদি দ্বিতীয় বিবাহের সামর্থ্য না থাকে, তবে সে ক্ষেত্রে সে নিজেও মা'যূর বৈকি। তার কর্তব্য হবে সংযম অবলম্বন করা।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. স্বামীর বিশেষ ডাকে সাড়া না দেওয়া স্ত্রীর জন্য গুরুতর পাপ। প্রত্যেক স্ত্রীর এ ব্যাপারে সতর্ক থাকা অবশ্যকর্তব্য।
আর কোন কোন হাদীসে ফেরেশতাদের লানতের বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। যাইহোক ফিরিশতাদের এ লা'নত করা এবং আল্লাহ তাআলার অসন্তুষ্ট হওয়ার কারণ হল শরীআতে বিবাহের বিধান যে উদ্দেশ্যে দেওয়া হয়েছে, স্ত্রীর আচরণ তার পরিপন্থী। এ বিধানের একটি বড় উদ্দেশ্য জৈবচাহিদা পূরণ। ইসলাম মানুষের স্বভাবগত কোনও চাহিদাকেই সম্পূর্ণ উপেক্ষা করেনি; বরং তা বৈধভাবে পূরণের ব্যবস্থা দান করেছে। পেটে ক্ষুধা লাগা একটি স্বভাবগত বিষয়। এর জন্য মানুষের খাদ্যচাহিদা দেখা দেয়। এ চাহিদা পূরণের জন্য চাইলে মানুষ যে-কোনও উপায়ই অবলম্বন করতে পারে। কিন্তু শরীআত এ ব্যাপারে সীমারেখা টেনে দিয়েছে। কোনও উপায়কে বৈধ করেছে এবং কোনওটাকে অবৈধ বলেছে। মানুষের কর্তব্য অবৈধ উপায় পরিহার করে ক্ষুধা নিবারণের বৈধ উপায় অবলম্বন করা।
কামচাহিদার ব্যাপারটাও সেরকমই। এর জন্য নানা অবৈধ উপায় আছে, কিন্তু শরীআত তা হারাম করেছে। মানুষ যাতে বৈধ উপায়ে এ চাহিদা পূরণ করতে পারে, সে লক্ষ্যেই বিবাহের ব্যবস্থা দান করেছে। কাজেই স্ত্রী যদি স্বামীর ডাকে সাড়া না দেয়, তবে এটা হবে সে লক্ষ্যের পরিপন্থী। এ ক্ষেত্রে স্বামী হয়তো চাহিদা অবদমন করতে বাধ্য হবে, যা তার শরীরের উপর এক অনাকাঙ্ক্ষিত চাপ। সে হিসেবে স্ত্রীর পক্ষ থেকে তার উপর একরকম জুলুম করা হবে। অন্যথায় স্বামী অবৈধ কোনও পন্থা অবলম্বন করবে। এতে যে গুনাহ হয়, বলাবাহুল্য তার দায় স্ত্রীর উপরও বর্তায়। এ কারণেই ফিরিশতাদের লা'নত ও আল্লাহ তাআলার অসন্তুষ্টি।
উল্লেখ্য, স্ত্রীর সাড়াদান না করাটা যদি ওজরবশত হয়, তবে স্বামীর কর্তব্য সে ওজর বিবেচনা করা। কারও কারও স্থায়ী ওজরও থাকে। সে ক্ষেত্রে যদি আরেকটি বিবাহের সামর্থ্য থাকে এবং স্বামীও তাতে আগ্রহ প্রকাশ করে, তবে স্ত্রীর তাতে বাধা হওয়া সমীচীন নয়। স্বামীর যদি দ্বিতীয় বিবাহের সামর্থ্য না থাকে, তবে সে ক্ষেত্রে সে নিজেও মা'যূর বৈকি। তার কর্তব্য হবে সংযম অবলম্বন করা।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. স্বামীর বিশেষ ডাকে সাড়া না দেওয়া স্ত্রীর জন্য গুরুতর পাপ। প্রত্যেক স্ত্রীর এ ব্যাপারে সতর্ক থাকা অবশ্যকর্তব্য।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
