আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ
৫০- নবীজীর সাঃ যুদ্ধাভিযানসমূহ
হাদীস নং: ৩৭৪৮
আন্তর্জাতিক নং: ৪০৪৩ - ৪০৪৪
২১৭৯. উহুদ যুদ্ধ।
৩৭৪৮। উবাইদুল্লাহ ইবনে মুসা (রাহঃ) .... বারা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ঐ দিন (উহুদ যুদ্ধের দিন) আমরা মুশরিকদের মুকাবিলায় অবতীর্ণ হলে নবী কারীম (ﷺ) আব্দুল্লাহ (ইবনে জুবাইর) (রাযিঃ)- কে তীরন্দাজ বাহিনীর অধিনায়ক নিযুক্ত করে তাদেরকে (নির্ধারিত এক স্থানে) মোতায়েন করলেন এবং বললেন, যদি তোমরা আমাদেরকে দেখ যে, আমরা তাদের উপর বিজয় লাভ করেছি, তাহলেও তোমরা এখান থেকে সরবে না। অথবা যদি তোমরা তাদেরকে দেখ যে, তারা আমাদের উপর জয় লাভ করেছে, তাহলেও তোমরা এই স্থান পরিত্যাগ করে আমাদের সহযোগিতার জন্য এগিয়ে আসবে না। এরপর আমরা তাদের সাথে যুদ্ধে অবতীর্ণ হলে তারা পালাতে আরম্ভ করল। এমনকি আমরা দেখতে পেলাম যে, মহিলাগণ দ্রুত দৌড়ে পাহাড়ে আশ্রয় নিচ্ছে। তারা বস্ত্র পায়ের গোছা থেকে টেনে তুলছে, ফলে পায়ের অলংকারগুলো পর্যন্ত বেরিয়ে পড়ছে। এ সময় তারা (তীরন্দাজ বাহিনীর লোকেরা) বলতে লাগলেন, এ-ই গনীমত-গনীমত! তখন আব্দুল্লাহ [ইবনে জুবাইর (রাযিঃ)] বললেন, তোমরা যেন এ স্থান না ছাড় এ ব্যাপারে নবী কারীম (ﷺ) আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন। তারা এ কথা অগ্রাহ্য করল।
যখন তারা এ কথা অগ্রাহ্য করল, তখন তাদের রোখ ফিরিয়ে দেয়া হল এবং শহীদ হলেন তাদের সত্তর জন সাহাবী। আবু সুফিয়ান একটি উঁচু স্থানে উঠে বলল, কওমের মধ্যে মুহাম্মাদ জীবিত আছে কি? নবী কারীম (ﷺ) বললেন, তোমরা তার কোন উত্তর দিওনা। সে আবার বলল, কওমের মধ্যে ইবনে আবু কুহাফা (আবু বকর) বেঁচে আছে কি? নবী কারীম (ﷺ) বললেন, তোমরা তার কোন জবাব দিও না। সে পুনরায় বলল, কওমের মধ্যে ইবনুল খাত্তাব কি জীবিত আছে? তারপর সে বলল, এরা সকলেই নিহত হয়েছে। বেঁচে থাকলে নিশ্চয়ই জবাব দিত। এ সময় উমর (রাযিঃ) নিজেকে সামলাতে না পেরে বললেন, হে আল্লাহর দুশমন, তুমি মিথ্যা কথা বলছ। যে জিনিসে তোমাকে লাঞ্ছিত করবে আল্লাহ তা বাকি রেখেছেন।
আবু সুফিয়ান বলল, হুবালের জয়। তখন নবী কারীম (ﷺ) সাহাবীগণকে বললেন, তোমরা তার উত্তর দাও। তারা বললেন, আমরা কি বলব? তিনি বললেন, তোমরা বল- اللَّهُ أَعْلَى وَأَجَلُّ আল্লাহ সমুন্নত ও মহান। আবু সুফিয়ান বলল لَنَا الْعُزَّى وَلاَ عُزَّى لَكُمْ আমাদের উযযা আছে, তোমাদের উযযা নেই। নবী কারীম (ﷺ) বললেন, তোমরা তার জবাব দাও। তারা বললেন, আমরা কি জবাব দেব? তিনি বললেন, বল- اللَّهُ مَوْلاَنَا وَلاَ مَوْلَى لَكُمْ আল্লাহ আমাদের অভিভাবক, তোমাদের তো কোনো অভিভাবক নেই। পরিশেষে আবু সুফিয়ান বলল, আজকের দিন বদর যুদ্ধের বিনিময়ের দিন, যুদ্ধ কূপ থেকে পানি উঠানোর পাত্রের মত (অর্থাৎ একবার এক হাতে আরেকবার অন্য হাতে) (যুদ্ধের ময়দানে) তোমরা নাক-কান কাটা কিছু লাশ দেখতে পাবে। আমি এরূপ করতে আদেশ করিনি। অবশ্য আমি এতে অসন্তুষ্টও নই।
আব্দুল্লাহ ইবনে মুহাম্মাদ (রাহঃ) .... জাবির (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, উহুদ যুদ্ধের দিন কিছু সংখ্যক সাহাবী সকাল বেলা শরাব পান করেছিলেন।*এরপর তাঁরা শাহাদাত বরণ করেন।
*তখন পর্যন্ত শরাব হারাম ঘোষিত হয়নি।
যখন তারা এ কথা অগ্রাহ্য করল, তখন তাদের রোখ ফিরিয়ে দেয়া হল এবং শহীদ হলেন তাদের সত্তর জন সাহাবী। আবু সুফিয়ান একটি উঁচু স্থানে উঠে বলল, কওমের মধ্যে মুহাম্মাদ জীবিত আছে কি? নবী কারীম (ﷺ) বললেন, তোমরা তার কোন উত্তর দিওনা। সে আবার বলল, কওমের মধ্যে ইবনে আবু কুহাফা (আবু বকর) বেঁচে আছে কি? নবী কারীম (ﷺ) বললেন, তোমরা তার কোন জবাব দিও না। সে পুনরায় বলল, কওমের মধ্যে ইবনুল খাত্তাব কি জীবিত আছে? তারপর সে বলল, এরা সকলেই নিহত হয়েছে। বেঁচে থাকলে নিশ্চয়ই জবাব দিত। এ সময় উমর (রাযিঃ) নিজেকে সামলাতে না পেরে বললেন, হে আল্লাহর দুশমন, তুমি মিথ্যা কথা বলছ। যে জিনিসে তোমাকে লাঞ্ছিত করবে আল্লাহ তা বাকি রেখেছেন।
আবু সুফিয়ান বলল, হুবালের জয়। তখন নবী কারীম (ﷺ) সাহাবীগণকে বললেন, তোমরা তার উত্তর দাও। তারা বললেন, আমরা কি বলব? তিনি বললেন, তোমরা বল- اللَّهُ أَعْلَى وَأَجَلُّ আল্লাহ সমুন্নত ও মহান। আবু সুফিয়ান বলল لَنَا الْعُزَّى وَلاَ عُزَّى لَكُمْ আমাদের উযযা আছে, তোমাদের উযযা নেই। নবী কারীম (ﷺ) বললেন, তোমরা তার জবাব দাও। তারা বললেন, আমরা কি জবাব দেব? তিনি বললেন, বল- اللَّهُ مَوْلاَنَا وَلاَ مَوْلَى لَكُمْ আল্লাহ আমাদের অভিভাবক, তোমাদের তো কোনো অভিভাবক নেই। পরিশেষে আবু সুফিয়ান বলল, আজকের দিন বদর যুদ্ধের বিনিময়ের দিন, যুদ্ধ কূপ থেকে পানি উঠানোর পাত্রের মত (অর্থাৎ একবার এক হাতে আরেকবার অন্য হাতে) (যুদ্ধের ময়দানে) তোমরা নাক-কান কাটা কিছু লাশ দেখতে পাবে। আমি এরূপ করতে আদেশ করিনি। অবশ্য আমি এতে অসন্তুষ্টও নই।
আব্দুল্লাহ ইবনে মুহাম্মাদ (রাহঃ) .... জাবির (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, উহুদ যুদ্ধের দিন কিছু সংখ্যক সাহাবী সকাল বেলা শরাব পান করেছিলেন।*এরপর তাঁরা শাহাদাত বরণ করেন।
*তখন পর্যন্ত শরাব হারাম ঘোষিত হয়নি।
باب غَزْوَةِ أُحُدٍ
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُوسَى، عَنْ إِسْرَائِيلَ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنِ الْبَرَاءِ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ لَقِينَا الْمُشْرِكِينَ يَوْمَئِذٍ، وَأَجْلَسَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم جَيْشًا مِنَ الرُّمَاةِ، وَأَمَّرَ عَلَيْهِمْ عَبْدَ اللَّهِ وَقَالَ " لاَ تَبْرَحُوا، إِنْ رَأَيْتُمُونَا ظَهَرْنَا عَلَيْهِمْ فَلاَ تَبْرَحُوا وَإِنْ رَأَيْتُمُوهُمْ ظَهَرُوا عَلَيْنَا فَلاَ تُعِينُونَا ". فَلَمَّا لَقِينَا هَرَبُوا حَتَّى رَأَيْتُ النِّسَاءَ يَشْتَدِدْنَ فِي الْجَبَلِ، رَفَعْنَ عَنْ سُوقِهِنَّ قَدْ بَدَتْ خَلاَخِلُهُنَّ، فَأَخَذُوا يَقُولُونَ الْغَنِيمَةَ الْغَنِيمَةَ. فَقَالَ عَبْدُ اللَّهِ عَهِدَ إِلَىَّ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَنْ لاَ تَبْرَحُوا. فَأَبَوْا، فَلَمَّا أَبَوْا صُرِفَ وُجُوهُهُمْ، فَأُصِيبَ سَبْعُونَ قَتِيلاً، وَأَشْرَفَ أَبُو سُفْيَانَ فَقَالَ أَفِي الْقَوْمِ مُحَمَّدٌ فَقَالَ " لاَ تُجِيبُوهُ ". فَقَالَ أَفِي الْقَوْمِ ابْنُ أَبِي قُحَافَةَ قَالَ " لاَ تُجِيبُوهُ ". فَقَالَ أَفِي الْقَوْمِ ابْنُ الْخَطَّابِ فَقَالَ إِنَّ هَؤُلاَءِ قُتِلُوا، فَلَوْ كَانُوا أَحْيَاءً لأَجَابُوا، فَلَمْ يَمْلِكْ عُمَرُ نَفْسَهُ فَقَالَ كَذَبْتَ يَا عَدُوَّ اللَّهِ، أَبْقَى اللَّهُ عَلَيْكَ مَا يُخْزِيكَ. قَالَ أَبُو سُفْيَانَ أُعْلُ هُبَلْ. فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " أَجِيبُوهُ ". قَالُوا مَا نَقُولُ قَالَ " قُولُوا اللَّهُ أَعْلَى وَأَجَلُّ ". قَالَ أَبُو سُفْيَانَ لَنَا الْعُزَّى وَلاَ عُزَّى لَكُمْ. فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " أَجِيبُوهُ ". قَالُوا مَا نَقُولُ قَالَ " قُولُوا اللَّهُ مَوْلاَنَا وَلاَ مَوْلَى لَكُمْ ". قَالَ أَبُو سُفْيَانَ يَوْمٌ بِيَوْمِ بَدْرٍ، وَالْحَرْبُ سِجَالٌ، وَتَجِدُونَ مُثْلَةً لَمْ آمُرْ بِهَا وَلَمْ تَسُؤْنِي. أَخْبَرَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَمْرٍو، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ اصْطَبَحَ الْخَمْرَ يَوْمَ أُحُدٍ نَاسٌ ثُمَّ قُتِلُوا شُهَدَاءَ.
