মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
৯- কুরআনের ফাযাঈল অধ্যায়
হাদীস নং: ২১২৩
প্রথম অনুচ্ছেদ
২১২৩। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, এক রাতে রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে ফিতরার মাল পাহারায় নিযুক্ত করিলেন। এসময় আমার নিকট এক ব্যক্তি। আসিল এবং অঞ্জলি ভরিয়া খাদ্য-শসা লইতে লাগিল। আমি তাহাকে ধরিয়া ফেলিলাম এবং বলিলাম, তোমাকে আমি রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট লইয়া যাইব। সে বলিল, আমি একজন অভাবগ্রস্ত লোক, আমার বহু পোষ্য রহিয়াছে এবং আমার অভাবও নিদারুণ। আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, আমি তাহাকে ছাড়িয়া দিলাম। যখন ভোরে গেলাম, নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বলিলেনঃ আবু হুরায়রা। তোমার গত রাতের বন্দীর কি হইল? আমি বলিলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্। সে নিদারুণ অভাব ও বহু পোষ্যের অভিযোগ করিল, তাই আমি তাহার প্রতি দয়া করিলাম এবং তাহাকে ছাড়িয়া দিলাম। হুযূর (ছাঃ) বলিলেন, শুন, সে তোমার কাছে মিথ্যা বলিয়াছে এবং সে আবার আসিবে। [আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন,] আমি নিশ্চিত রকমে বুঝিলাম যে, সে আবার আসিবে, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বলার কারণে সে আবার আসিবে।" অতএব, আমি তাহার প্রতীক্ষায় রহিলাম। সে আবার আসিল এবং অঞ্জলি ভরিয়া খাদ্য-শস্য লইতে লাগিল। এসময় আমি তাহাকে ধরিয়া ফেলিলাম এবং বলিলাম, আমি তোমাকে রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট লইয়া যাইব। সে বলিল, এবারও আমাকে ছাড়, আমি বড় অভাবগ্রস্ত এবং আমার বহু পোষ্য রহিয়াছে; আমি আর আসিব না। [আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন,] এবারও আমি তাহার প্রতি দয়া করিলাম এবং তাহাকে ছাড়িয়া দিলাম। যখন আমি ভোরে উঠিলাম, রাসুলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বলিলেন, আবু হুরায়রা! তোমার বন্দীর কি হইল ! আমি বলিলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্। সে নিদারুণ অভাব ও বহু পোষ্যের অভিযোগ করিল, তাই আমি তাহার প্রতি দয়া করিয়া তাহাকে ছাড়িয়া দিলাম। হুযূর (ছাঃ) বলিলেন, শুন, সে তোমার কাছে মিথ্যা বলিয়াছে, সে আবারও আসিবে। (আবু হুরায়রা বলেন, আমি বুঝিতে পারিলাম যে, সে আবার আসিবে। কারণ, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন " সে আবার আসিবে"। সুতরাং আমি তাহার প্রতীক্ষায় রহিলাম। সে আবার আসিল এবং অঞ্জলি ভরিয়া খাদ্য-শস্য লইতে লাগিল। আমি তাহাকে ধরিয়া ফেলিলাম এবং বলিলাম, আমি তোমাকে রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট লইয়া যাইব, ইহা তিনবারের শেষবার তুমি ওয়াদা করিয়াছিলে তুমি আর আসিবে না, অথচ তুমি আসিয়াছ। সে বলিল, এবারও আমাকে ছাড়, আমি তোমাকে এমন ক্যাটি বাক্য শিখাইব, যারা আল্লাহ তোমাকে উপকৃত করিবেন।
তাহা এই— যখন তুমি শয্যা গ্রহণ করিবে, 'আয়াতুল কুরসী' পড়িবে: "আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হওয়াল হাইয়্যুল কাইয়াম" আয়াতের শেষ পর্যন্ত। তাহা হইলে আল্লাহর তরফ হইতে সর্বদা তোমার জন্য একজন নেগাহবান থাকিবে এবং শয়তান তোমার নিকট আসিতে পারিবে না, যাবৎ না তুমি ভোরে উঠ। এবারও আমি তাহাকে ছাড়িয়া দিলাম। যখন ভোরে উঠিলাম, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বলিলেন, তোমার বন্দীর কি হইল? আমি বলিলাম, (হুয়ূর।) সে বলিল, সে আমাকে এমন কয়টি কথা শিখাইবে, যাহার দ্বারা আল্লাহ্ আমাকে উপকৃত করিবেন। হুযূর (ছাঃ) বলিলেন, শুন, সে এবার তোমাকে সত্য বলিয়াছে, অথচ সে ডাহা মিথ্যুক। তুমি কি জান— তুমি তিন রাত্রি যাবৎ কাহার সাথে কথা বলিতেছ! আমি বলিলাম, জি না। তিনি বলিলেন, সে ছিল একটা শয়তান। —বুখারী
তাহা এই— যখন তুমি শয্যা গ্রহণ করিবে, 'আয়াতুল কুরসী' পড়িবে: "আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হওয়াল হাইয়্যুল কাইয়াম" আয়াতের শেষ পর্যন্ত। তাহা হইলে আল্লাহর তরফ হইতে সর্বদা তোমার জন্য একজন নেগাহবান থাকিবে এবং শয়তান তোমার নিকট আসিতে পারিবে না, যাবৎ না তুমি ভোরে উঠ। এবারও আমি তাহাকে ছাড়িয়া দিলাম। যখন ভোরে উঠিলাম, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বলিলেন, তোমার বন্দীর কি হইল? আমি বলিলাম, (হুয়ূর।) সে বলিল, সে আমাকে এমন কয়টি কথা শিখাইবে, যাহার দ্বারা আল্লাহ্ আমাকে উপকৃত করিবেন। হুযূর (ছাঃ) বলিলেন, শুন, সে এবার তোমাকে সত্য বলিয়াছে, অথচ সে ডাহা মিথ্যুক। তুমি কি জান— তুমি তিন রাত্রি যাবৎ কাহার সাথে কথা বলিতেছ! আমি বলিলাম, জি না। তিনি বলিলেন, সে ছিল একটা শয়তান। —বুখারী
اَلْفَصْلُ الْأَوَّلُ
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: وَكَّلَنِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِحِفْظِ زَكَاةِ رَمَضَانَ فَأَتَانِي آتٍ فَجَعَلَ يَحْثُو من الطَّعَام فَأَخَذته وَقلت وَالله لَأَرْفَعَنَّكَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ إِنِّي مُحْتَاجٌ وَعَلَيَّ عِيَالٌ وَلِي حَاجَةٌ شَدِيدَةٌ قَالَ فَخَلَّيْتُ عَنْهُ فَأَصْبَحْتُ فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يَا أَبَا هُرَيْرَة مَا فعل أسيرك البارحة» . قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ شَكَا حَاجَةً شَدِيدَةً وَعِيَالًا فَرَحِمْتُهُ فَخَلَّيْتُ سَبِيلَهُ قَالَ: «أَمَا إِنَّهُ قَدْ كَذَبَكَ وَسَيَعُودُ» . فَعَرَفْتُ أَنَّهُ سَيَعُودُ لِقَوْلِ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَنَّهُ سيعود» . فَرَصَدْتُهُ فَجَاءَ يَحْثُو مِنَ الطَّعَامِ فَأَخَذْتُهُ فَقُلْتُ: لَأَرْفَعَنَّكَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ دَعْنِي فَإِنِّي مُحْتَاجٌ وَعَلَيَّ عِيَالٌ لَا أَعُودُ فَرَحِمْتُهُ فَخَلَّيْتُ سَبِيلَهُ فَأَصْبَحْتُ فَقَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يَا أَبَا هُرَيْرَةَ مَا فَعَلَ أَسِيرُكَ؟» قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ شَكَا حَاجَةً شَدِيدَةً وَعِيَالًا فَرَحِمْتُهُ فَخَلَّيْتُ سَبِيلَهُ قَالَ: «أَمَا إِنَّهُ قَدْ كَذبك وَسَيَعُودُ» . فرصدته الثَّالِثَة فَجَاءَ يَحْثُو مِنَ الطَّعَامِ فَأَخَذْتُهُ فَقُلْتُ لَأَرْفَعَنَّكَ إِلَى رَسُول الله وَهَذَا آخِرُ ثَلَاثِ مَرَّاتٍ إِنَّكَ تَزْعُمُ لَا تَعُودُ ثُمَّ تَعُودُ قَالَ دَعْنِي أُعَلِّمُكَ كَلِمَاتٍ ينفعك الله بهَا قلت مَا هُوَ قَالَ إِذَا أَوَيْتَ إِلَى فِرَاشِكَ فَاقْرَأْ آيَةَ الْكُرْسِيِّ (اللَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ)
حَتَّى تَخْتِمَ الْآيَةَ فَإِنَّكَ لَنْ يَزَالَ عَلَيْكَ من الله حَافظ وَلَا يقربنك شَيْطَانٌ حَتَّى تُصْبِحَ فَخَلَّيْتُ سَبِيلَهُ فَأَصْبَحْتُ فَقَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا فَعَلَ أَسِيرُكَ؟» قُلْتُ: زَعَمَ أَنَّهُ يُعَلِّمُنِي كَلِمَات يَنْفَعنِي الله بهَا فخليت سبيلهقال النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم: «أما إِنَّه قد صدقك وَهُوَ كذوب تعلم من تخاطب مُنْذُ ثَلَاث لَيَال» . يَا أَبَا هُرَيْرَة قَالَ لَا قَالَ: «ذَاك شَيْطَان» . رَوَاهُ البُخَارِيّ
حَتَّى تَخْتِمَ الْآيَةَ فَإِنَّكَ لَنْ يَزَالَ عَلَيْكَ من الله حَافظ وَلَا يقربنك شَيْطَانٌ حَتَّى تُصْبِحَ فَخَلَّيْتُ سَبِيلَهُ فَأَصْبَحْتُ فَقَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا فَعَلَ أَسِيرُكَ؟» قُلْتُ: زَعَمَ أَنَّهُ يُعَلِّمُنِي كَلِمَات يَنْفَعنِي الله بهَا فخليت سبيلهقال النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم: «أما إِنَّه قد صدقك وَهُوَ كذوب تعلم من تخاطب مُنْذُ ثَلَاث لَيَال» . يَا أَبَا هُرَيْرَة قَالَ لَا قَالَ: «ذَاك شَيْطَان» . رَوَاهُ البُخَارِيّ
