মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)

৮- রোযার অধ্যায়

হাদীস নং: ২০৩০
৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - (সিয়াম) কাযা করা।

'কাযা' শব্দের অর্থ পূর্ণ করা। এখানে ইহা ভাঙ্গা রোযা পূর্ণ করার অর্থেই ব্যবহৃত হইয়াছে। ওযরের কারণে রোযা ভাঙ্গিলে বা না রাখিলে শুধু কাযা করিয়া অর্থাৎ পূর্ণ করিয়া দিলেই চলে। বিনা ওযরে ইচ্ছা করিয়া রোযা না রাখিলে বা ভাঙ্গিলে উহার কাযা এবং কাফ্ফারা উভয় আদায় করিতে হয়। ভুলিয়া রোযা ভাঙ্গিলে উহার কাযা বা কাফ্ফারা কিছুই লাগে না । ‘কাফ্ফারা' বলে—একটি গোলাম আযাদ করা অথবা পরপর দুই মাস রোযা রাখা অথবা ষাট জন মিসকীনকে আহার করানকে।
২০৩০। হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, আমার রমযানের রোযা বাকি থাকিত, আমি উহা (পরবর্তী) শা'বানে ব্যতীত পূর্ণ করিতে পারিতাম না। রাবী ইয়াহুয়া ইবনে সায়ীদ বলেন, হযরত আয়েশা এখানে ইহাই বুঝাইতে চাহিয়াছেন যে, তাঁহার সাথে নবী করীমের কাজ থাকার কারণে অথবা নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে তাঁহার কাজ থাকার কারণে। --মোত্তাঃ
بَابُ الْقَضَاءِ
عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: كَانَ يَكُونُ عَلَيَّ الصَّوْمُ مِنْ رَمَضَانَ فَمَا أَسْتَطِيعُ أَنْ أَقْضِيَ إِلَّا فِي شَعْبَانَ. قَالَ يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ: تَعْنِي الشّغل من النَّبِي أَو بِالنَّبِيِّ صلى الله عَلَيْهِ وَسلم

হাদীসের ব্যাখ্যা:

অর্থাৎ, হযরত আয়েশা সর্বক্ষণ এজন্য প্রস্তুত থাকিতেন যে, নবী করীম (ﷺ) যদি ইচ্ছা করেন তাহার সহিত আপন ইচ্ছা পূর্ণ করিতে পারেন অথবা বিবি আয়েশা নিজেই তাঁহার সাথে মিলনের আকাঙ্ক্ষায় থাকিতেন ।
এই উদ্দেশ্যে রমযানের কাযা রোযা রাখা বছরের শেষ মাস পর্যন্তও পিছাইয়া দেওয়া যাইতে পারে ; কিন্তু ইহার পর পিছাইতে গেলে ইমাম মালেক, শাফেয়ী ও আমদের মতে কাযার সাথে সাথে প্রত্যেক রোযার জন্য এক 'মুদ' (প্রায় আধা সের) গম ফিদিয়া (কাফ্ফারা) দিতে হইবে। ইমাম আ'যম আবু হানীফা ফিদিয়ার কথা বলেন না, তবে এত পিছাইয়া দেওয়া অনুচিত বলিয়া মনে করেন। স্বামীর মনোরঞ্জনের খেয়াল ত্যাগ করিয়াও বছরের শেষের দিকে রমযানের কাযা আদায় করা আবশ্যক।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
মিশকাতুল মাসাবীহ - হাদীস নং ২০৩০ | মুসলিম বাংলা