মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)

৮- রোযার অধ্যায়

হাদীস নং: ১৯৬২
তৃতীয় অনুচ্ছেদ
১৯৬২। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিলেনঃ মুসলমানগণ! তোমাদের নিকট রমযান মাস — বরকতময় মাস আসিয়াছে। উহার রোযা আল্লাহ্ তোমাদের উপর ফরয করিয়াছেন। উহাতে আসমানের দরজাসমূহ খোলা হয় এবং দোযখের দরজাসমূহ বন্ধ করা হয়। অবাধ্য শয়তানসকলকে শৃংখলিত করা হয়। আল্লাহ্র বিশেষ রহমতের জন্য উহাতে এমন একটি রাত্রি রহিয়াছে, যাহা হাজার মাস (৮৩ বছর ৪ মাস) অপেক্ষাও উত্তম। যে উহা হইতে বঞ্চিত হইয়াছে সে সর্বপ্রকার মঙ্গল হইতে বঞ্চিত হইয়াছে। — আহমদ ও নাসায়ী
اَلْفَصْلُ الثَّالِثُ
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَتَاكُمْ رَمَضَانُ شَهْرٌ مُبَارَكٌ فَرَضَ اللَّهُ عَلَيْكُمْ صِيَامَهُ تُفْتَحُ فِيهِ أَبْوَابُ السَّمَاءِ وَتُغْلَقُ فِيهِ أَبْوَابُ الْجَحِيمِ وَتُغَلُّ فِيهِ مَرَدَةُ الشَّيَاطِينِ لِلَّهِ فِيهِ لَيْلَةٌ خَيْرٌ مِنْ أَلْفِ شَهْرٍ مَنْ حُرِمَ خَيْرَهَا فَقَدْ حُرِمَ» . رَوَاهُ أَحْمَدُ وَالنَّسَائِيُّ

হাদীসের ব্যাখ্যা:

মাহে রমযান বছরের বাকি এগার মাস অপেক্ষা অধিক মর্যাদাশীল ও বরকতপূর্ণ মাস। এ মাসের বিশেষত্ব অনেক।

১. এ মাসেই মানুষ ও জিন জাতির মুক্তির সনদ কুরআন মজীদ একত্রে লাওহে মাহফূয থেকে প্রথম আসমানে বাইতুল ইযযতে অবতীর্ণ হয় এবং রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম–এর নিকট সর্বপ্রথম এ মাসেই ওহী অবতীর্ণ হয়। কুরআন মজীদে ইরশাদ হয়েছে– (তরজমা) ‘রমযান মাসই হল সে মাস যাতে নাযিল করা হয়েছে কুরআন, যা মানুষের জন্য হেদায়াত এবং সত্যপথযাত্রীদের জন্য সুস্পষ্ট পথনির্দেশ। –সূরা বাকারা ১৮৫

২. এ মাসে রহমতের দরজা উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। হাদীস শরীফে এসেছে– ‘রমযান মাস শুরু হলেই রহমতের দরজা খুলে দেওয়া হয়।’ –সহীহ মুসলিম, হাদীস ১০৭৯/২

৩. অন্য এক হাদীসে এ মাসের ফযীলত বর্ণিত হয়েছে যে, ‘রমযান মাসের শুভাগমন উপলক্ষে জান্নাতের দরজাসমুহ উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় এবং জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। আর শয়তানকে শৃংখলাবদ্ধ করা হয়।’ –সহীহ বুখারী, হাদীস ১৮৯৯; সহীহ মুসলিম, হাদীস ১০৭৯/১

৪. এ মাস জাহান্নাম থেকে নাজাত লাভের মাস। সুতরাং বেশি বেশি ইবাদত ও ইস্তেগফারের মাধ্যমে মুক্তির পরওয়ানা লাভ করার এটিই সুবর্ণ সুযোগ। হাদীস শরীফে এসেছে– ‘আল্লাহ তাআলা প্রত্যহ ইফতারের সময় অসংখ্য ব্যক্তিকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে থাকেন।’ –মুসনাদে আহমদ হাদীস ২১৬৯৮
(আল কাউসার)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান