আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

৪৯- নবীজী সাঃ ও সাহাবা রাঃ ; মর্যাদা ও বিবিধ ফাযায়েল

হাদীস নং: ৩৬৫৪
আন্তর্জাতিক নং: ৩৯৩৮
২১৫৯. নবী কারীম (ﷺ) কিভাবে তাঁর সাহাবীদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব স্থাপন করলেন।
৩৬৫৪। হামীদ ইবনে উমর (রাহঃ) .... আনাস (রাযিঃ) বর্ণনা করেন, আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম (রাযিঃ)- এর নিকট নবী কারীম (ﷺ)- এর মাদীনায় আগমনের সংবাদ পৌছলে তিনি এসে তাঁকে কয়েকটি প্রশ্ন করলেন। তিনি বললেন, আমি আপনাকে তিনটি প্রশ্ন করছি। এগুলোর সঠিক উত্তর নবী (ﷺ) ব্যতীত অন্য কেউ জানে না। (১) কিয়ামতের সর্বপ্রথম আলামত ও লক্ষণ কি? (২) জান্নাতবাসীদের সর্বপ্রথম আহার্য কি? (৩) কি কারণে সন্তান আকৃতিতে কখনও পিতার অনুরূপ কখনো বা মায়ের অনুরূপ হয়? নবী কারীম
(ﷺ) বললেন, এবিষয়গুলি সম্পর্কে এইমাত্র জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) আমাকে জানিয়ে গেলেন।
আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম (রাযিঃ) একথা শুনে বললেন, তিনিই ফিরিশতাদের মধ্যে ইয়াহুদীদের শত্রু। নবী কারীম (ﷺ) বললেন, (১) কিয়ামত নিকটবর্তী হওয়ার সর্বপ্রথম লক্ষণ হল লেলীহান আগুন যা মানুষকে পুর্বদিক থেকে পশ্চিম দিকে ধাওয়া করে নিয়ে যাবে এবং সবাইকে সমবেত করবে। (২) সর্বপ্রথম আহার্য যা জান্নাতবাসী ভক্ষণ করবে তা হল মাছের কলীজার অতিরিক্ত অংশ (৩) যদি নারীর আগে পুরুষের বীর্যপাত ঘটে তবে সন্তান পিতার অনুরূপ হয় আর যদি পুরুষের আগে নারীর বির্যপাত ঘটে তবে সন্তান মায়ের অনুরূপ হয়। আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম বললেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন মা‘বুদ নেই এবং নিশ্চয়ই আপনি আল্লাহর রাসূল। ইয়া রাসূলাল্লাহ! ইয়াহুদীগণ এমন একটি সম্প্রদায় যারা অন্যের কুৎসা রটনায় অত্যন্ত পটু। আমার ইসলাম গ্রহণ প্রকাশ হওয়ার পূর্বে আমার অবস্থা সম্পর্কে তাদেরকে জিজ্ঞাসা করুন। নবী কারীম (ﷺ) তাদেরকে ডাকলেন, তারা হাযির হল। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তোমাদের মধ্যে আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম কেমন লোক?
তারা বলল, তিনি আমাদের মধ্যে সর্বোত্তম এবং সর্বোত্তম ব্যক্তির সন্তান। তিনি আমাদের সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তি এবং সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তির পুত্র। নবী কারীম (ﷺ) বললেন, আচ্ছা বলত, যদি আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম ইসলাম গ্রহণ করে তবে কেমন হবে? তারা বলল, আল্লাহ তাকে একাজ থেকে রক্ষা করুন। নবী কারীম (ﷺ) আবার একথাটি বললেন, তারাও পূর্বরূপ উত্তর দিল। তখন আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম বেরিয়ে আসলেন, এবং বললেন, أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ ইহা শুনে ইয়াহুদীগণ বলতে লাগল, সে আমাদের মধ্যে মন্দ লোক এবং মন্দ লোকের ছেলে। অতঃপর তারা তাকে হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে আরো অনেক কথাবার্তা বলল। আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম (রাযিঃ) বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি ইহাই আশঙ্কা করেছিলাম।
باب كَيْفَ آخَى النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَيْنَ أَصْحَابِهِ
3938 - حَدَّثَنِي حَامِدُ بْنُ عُمَرَ، عَنْ بِشْرِ بْنِ المُفَضَّلِ، حَدَّثَنَا حُمَيْدٌ، حَدَّثَنَا أَنَسٌ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ سَلاَمٍ، بَلَغَهُ مَقْدَمُ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ المَدِينَةَ فَأَتَاهُ يَسْأَلُهُ عَنْ أَشْيَاءَ، فَقَالَ: إِنِّي سَائِلُكَ عَنْ ثَلاَثٍ لاَ يَعْلَمُهُنَّ إِلَّا نَبِيٌّ، مَا أَوَّلُ أَشْرَاطِ السَّاعَةِ؟، وَمَا أَوَّلُ طَعَامٍ يَأْكُلُهُ أَهْلُ الجَنَّةِ؟، وَمَا بَالُ الوَلَدِ يَنْزِعُ إِلَى أَبِيهِ أَوْ إِلَى أُمِّهِ؟، قَالَ: «أَخْبَرَنِي بِهِ جِبْرِيلُ آنِفًا» قَالَ ابْنُ سَلاَمٍ: ذَاكَ عَدُوُّ اليَهُودِ مِنَ المَلاَئِكَةِ، قَالَ: «أَمَّا أَوَّلُ أَشْرَاطِ السَّاعَةِ فَنَارٌ تَحْشُرُهُمْ مِنَ المَشْرِقِ إِلَى المَغْرِبِ، وَأَمَّا أَوَّلُ طَعَامٍ يَأْكُلُهُ أَهْلُ الجَنَّةِ فَزِيَادَةُ كَبِدِ الحُوتِ، وَأَمَّا الوَلَدُ فَإِذَا سَبَقَ مَاءُ الرَّجُلِ مَاءَ المَرْأَةِ نَزَعَ الوَلَدَ، وَإِذَا سَبَقَ مَاءُ المَرْأَةِ مَاءَ الرَّجُلِ نَزَعَتِ الوَلَدَ» قَالَ: أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ، وَأَنَّكَ رَسُولُ اللَّهِ، قَالَ [ص:70] يَا رَسُولَ اللَّهِ: إِنَّ اليَهُودَ قَوْمٌ بُهُتٌ فَاسْأَلْهُمْ عَنِّي، قَبْلَ أَنْ يَعْلَمُوا بِإِسْلاَمِي، فَجَاءَتِ اليَهُودُ فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَيُّ رَجُلٍ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ سَلاَمٍ فِيكُمْ؟» قَالُوا: خَيْرُنَا وَابْنُ خَيْرِنَا، وَأَفْضَلُنَا وَابْنُ أَفْضَلِنَا، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَرَأَيْتُمْ إِنْ أَسْلَمَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ سَلاَمٍ» قَالُوا: أَعَاذَهُ اللَّهُ مِنْ ذَلِكَ، «فَأَعَادَ عَلَيْهِمْ» ، فَقَالُوا: مِثْلَ ذَلِكَ، فَخَرَجَ إِلَيْهِمْ عَبْدُ اللَّهِ فَقَالَ: أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ، قَالُوا: شَرُّنَا وَابْنُ شَرِّنَا، وَتَنَقَّصُوهُ، قَالَ: هَذَا كُنْتُ أَخَافُ يَا رَسُولَ اللَّهِ
tahqiqতাহকীক:বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)
সহীহ বুখারী - হাদীস নং ৩৬৫৪ | মুসলিম বাংলা