আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

৭- নামাযের অধ্যায়

হাদীস নং:
আন্তর্জাতিক নং: ৩৭১
২৫৩। উরু সম্পর্কে বর্ণনা।
আবু আব্দুল্লাহ (রাহঃ) বলেন, বর্ণিত আছে যে, ইবনে আব্বাস, জারহাদ ও মুহাম্মাদ ইবনে জাহশ (রাযিঃ) নবী (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, উরু সতরের অন্তর্ভুক্ত।
আর আনাস (রাযিঃ) বলেনঃ নবী (ﷺ) তাঁর উরু থেকে কাপড় সরিয়েছিলেন।
আবু আব্দুল্লাহ বুখারী (রাহঃ) বলেন, সনদের দিক থেকে আনাস (রাযিঃ)-এর হাদীস অধিক সহীহ আর জারহাদ (রাযিঃ)-এর হাদীস অধিকতর সতর্কতামূলক। এভাবেই আমরা মতবিরোধ এড়াতে পারি।
আর আবু মুসা (রাযিঃ) বলেছেনঃ উসমান (রাযিঃ)-এর আগমনে নবী (ﷺ) তাঁর হাঁটু ঢেকে নেন।
যায়দ ইবনে সাবিত (রাযিঃ) বলেনঃ আল্লাহ তাআলা তাঁর রাসূল (ﷺ) এর উপর ওহী নাযিল করেছেন এমন অবস্থায় যখন তাঁর উরু ছিল আমার উরুর উপর। আমার কাছে তাঁর উরু এত ভারী বোধ হচ্ছিল যে, আমি আশঙ্কা করছিলাম, হয়ত আমার উরুর হাড় ভেঙ্গে যাবে।
৩৬৪। ইয়াকুব ইবনে ইবরাহীম (রাহঃ) .... আনাস ইবনে মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, নবী (ﷺ) খায়বর যুদ্ধে বের হয়েছিলেন। সেখানে আমরা ফজরের নামায খুব ভোরে আদায় করলাম। তারপর নবী (ﷺ) সওয়ার হলেন। আবু তালহা (রাযিঃ)-ও সওয়ার হলেন, আর আমি আবু তালহার পেছনে বসা ছিলাম। নবী (ﷺ) তাঁর সওয়ারীকে খায়বরের পথে চালিত করলেন। আমার হাঁটু নবী (ﷺ) এর উরুতে লাগছিল। এরপর নবী (ﷺ) এর উরু থেকে ইযার সরে গেল। এমনকি নবী (ﷺ) এর উরুর উজ্জ্বলতা যেন এখনও আমি দেখছি। তিনি যখন নগরে প্রবেশ করলেন তখন বললেনঃ আল্লাহু আকবার। খায়বর ধ্বংস হউক। আমরা যখন কোন কওমের প্রাঙ্গণে অবতরণ করি তখন সতর্কীকৃতদের ভোর হবে কতই না মন্দ! এ কথা তিনি তিনবার উচ্চারণ করলেন।
আনাস (রাযিঃ) বলেনঃ খায়বরের অধিবাসীরা নিজেদের কাজে বেরিয়েছিল। তারা বলে উঠলঃ মুহাম্মাদ! আব্দুল আযীয (রাহঃ) বলেনঃ আমাদের কোন কোন সাথী “পূর্ণ বাহিনীসহ” (ওয়াল খামীস) শব্দও যোগ করেছেন। পরে যুদ্ধের মাধ্যমে আমরা খায়বর জয় করলাম। তখন যুদ্ধবন্দীদের সমবেত করা হল। দিহয়া (রাযিঃ) এসে বললেনঃ হে আল্লাহর নবী! বন্দীদের থেকে আমাকে একটি দাসী দিন। তিনি বললেনঃ যাও তুমি একটি দাসী নিয়ে যাও। তিনি সাফিয়্যা বিনতে হুওয়াই (রাযিঃ)-কে নিলেন। তখন এক ব্যক্তি নবী (ﷺ) এর কাছে এসে বললঃ ইয়া নবীয়াল্লাহ! বনু কুরাইযা ও বনু নাযীরের অন্যতম নেত্রী সাফিয়্যা বিনতে হুয়াইকে আপনি দিহয়াকে দিচ্ছেন? তিনি তো একমাত্র আপনারই যোগ্য। তিনি বললেনঃ দিহয়াকে সাফিয়্যাসহ ডেকে আন। তিনি সাফিয়্যাসহ উপস্থিত হলেন। যখন নবী (ﷺ) সাফিয়্যা (রাযিঃ)-কে দেখলেন তখন (দিহয়াকে) বললেনঃ তুমি বন্দীদের থেকে অন্য একটি দাসী দেখে নাও। রাবী বলেনঃ নবী (ﷺ) সাফিয়্যা (রাযিঃ)-কে আযাদ করে দিলেন এবং তাঁকে বিয়ে করলেন।
রাবী সাবিত (রাহঃ) আবু হামযা (আনাস) (রাযিঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলেনঃ নবী (ﷺ) তাঁকে কি মোহর দিলেন? আনাস (রাযিঃ) জওয়াব দিলেন তাঁকে আযাদ করাই তাঁর মোহর। এর বিনিময়ে তিনি তাঁকে বিয়ে করেছেন। এরপর পথে উম্মে সুলায়ম (রাযিঃ) সাফিয়্যা (রাযিঃ)-কে সাজিয়ে রাতে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর খিদমতে পেশ করলেন। নবী (ﷺ) বাসর রাত যাপন করে ভোরে উঠলেন। তিনি ঘোষণা দিলেনঃ যার কাছে খানার কিছু আছে সে যেন তা নিয়ে আসে। এ বলে তিনি একটা চামড়ার দস্তরখান বিছালেন। কেউ খেজুর নিয়ে আসলো, কেউ ঘি আনলো। আব্দুল আযীয (রাহঃ) বলেনঃ আমার মনে হয় আনাস (রাযিঃ) ছাতুর কথাও উল্লেখ করেছেন। তারপর তাঁরা এসব মিশিয়ে খাবার তৈরী করলেন। এ-ই ছিল রাসূল (ﷺ) এর ওয়ালীমা।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক নিষ্প্রয়োজন