আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ
৪৯- নবীজী সাঃ ও সাহাবা রাঃ ; মর্যাদা ও বিবিধ ফাযায়েল
হাদীস নং:
আন্তর্জাতিক নং: ৩৮১৮
২১৩০. নবী কারীম (ﷺ)- এর সাথে খাদীজাহ (রাযিঃ)- এর বিবাহ এবং তার ফযীলত
৩৫৪৬। উমর ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে হাসান (রাহঃ) .... আয়িশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী কারীম (ﷺ)- এর অন্য কোন সহধর্মিণীর প্র্রতি এতটুকু অভিমান করিনি, যতটুকু খাদীজা (রাযিঃ)-এর প্রতি করেছি। অথচ আমি তাকে দেখিনি। কিন্তু নবী কারীম (ﷺ) তার কথা অধিক সময় আলোচনা করতেন। কোন কোন সময় বকরী যবেহ করে গোশতের পরিমাণ বিবেচনায় হাড়-গোশতকে ছোট ছোট টুকরা করে হলেও খাদীজা (রাযিঃ)- এর বান্ধবীদের ঘরে পৌঁছে দিতেন। আমি কোন সময় অভিমানের সুরে নবী কারীম (ﷺ)- কে বলতাম, (আপনার অবস্থা দৃষ্টে) মনে হয়, খাদীজা (রাযিঃ) ছাড়া পৃথিবীতে যেন আর কোন নারী নেই। প্রতি উত্তরে তিনি বলতেন, হ্যাঁ। তিনি এমন ছিলেন, তার গর্ভে আমার সন্তান জন্মেছিল।
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছটির বর্ণনায় আম্মাজান হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রাযি. এই বলে নিজ অনুভূতি প্রকাশ করেন যে- (আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অন্য কোনও স্ত্রীর প্রতি এমন ঈর্ষাবোধ করিনি, যেমনটা ঈর্ষাবোধ করেছি খাদীজা রাযি.-এর প্রতি)। বলাবাহুল্য এই ঈর্ষা দোষের নয়। কেননা এর সঙ্গে দুনিয়ার কোনও সম্পর্ক নেই। এর সম্পর্ক ছিল নবীপ্রেমের সঙ্গে। নবীপ্রেম সম্পূর্ণই দীন। হাদীছের ভাষ্য অনুযায়ী প্রকৃত মুমিন সেই, যে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সর্বাপেক্ষা বেশি ভালোবাসে, এমনকি নিজ প্রাণের চেয়েও। উম্মাহাতুল মুমিনীনের প্রত্যেকেই তাঁকে প্রাণাধিক ভালোবাসতেন। তাঁর ভালোবাসাও যাতে সর্বাপেক্ষা বেশি অর্জিত হয়ে যায়, তাঁদের প্রত্যেকে সে আকাঙ্ক্ষাও লালন করতেন। সকলেরই জানা যে, মাদানী জীবনে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্ত্রীদের মধ্যে তাঁর ভালোবাসা সর্বাপেক্ষা বেশি লাভ করতে পেরেছিলেন হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রাযি.। স্বাভাবিকভাবেই তাঁর নিজেরও তা জানা ছিল। এ অবস্থায় নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কোনও কথা দ্বারা যদি বুঝতে পারতেন যে, উম্মুল মুমিনীন হযরত খাদীজা রাযি.-কে তিনি অনেক বেশি ভালোবাসেন, তবে তাঁর নবীপ্রেমে আপ্লুত অন্তরে কিছু না কিছু ঈর্ষা জন্মানোরই কথা।
ঈর্ষা দোষের হয় তখনই, যখন তার তাড়নায় ঈর্ষণীয় ব্যক্তির ক্ষতি করার ইচ্ছা থাকে। লক্ষ্য যদি হয় কল্যাণ ও শুভতায় তাকে ছাড়িয়ে যাওয়া, তবে সে দোষের তো নয়ই; বরং একান্ত কাম্য। হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রাযি.-এর কামনা তো এই হয়ে থাকবে যে, প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পক্ষ থেকে ভালোবাসা তিনি যেন হযরত খাদীজা রাযি.-কেও ছাড়িয়ে যেতে পারেন।
হযরত আয়েশা রাযি, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মুখে উম্মুল মুমিনীন হযরত খাদীজা রাযি.র কথা খুব বেশি শুনতে পেতেন। বলা হয়ে থাকে, যে ব্যক্তি যাকে ভালোবাসে, সে তার কথা বেশি বেশি বলে। কাজেই নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত খাদীজা রাযি.-কে বেশি বেশি স্মরণ করায় স্পষ্টই বোঝা যেত যে, তিনি তাঁকে অনেক ভালোবাসেন। তাই অনুরূপ ভালোবাসা পাওয়ার জন্য হযরত আয়েশা রাযি.-এর অন্তরও আকুল হয়ে উঠত। সে কথাই তিনি এভাবে ব্যক্ত করছেন যে- আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অন্য কোনও স্ত্রীর প্রতি এমন ঈর্ষাবোধ করিনি, যেমনটা ঈর্ষাবোধ করেছি খাদীজা রাযি.-এর প্রতি।
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত খাদীজা রাযি.-এর কথা যে স্মরণ করেই ক্ষান্ত থাকতেন তা নয়; বরং কাজকর্ম দ্বারাও তাঁর প্রতি নিজ ভালোবাসার পরিচয় দিতেন। হাদীসে আছে হযরত আয়েশা রাযি. বলতেন (কখনও কখনও বকরি জবাই করে তার অঙ্গগুলো কেটে আলাদা আলাদা করতেন, তারপর তা খাদীজার বান্ধবীদের কাছে পাঠিয়ে দিতেন)। বকরি জবাই করার কাজটি হয়তো নিজেই করতেন। তিনি সাধারণত নিজের কাজ নিজে করতেই অভ্যস্ত ছিলেন। যেমন হাদীছে আছে كان كان رسول الله ﷺ يخصف نعله، ويخيط ثوبه، ويعمل في بيته كما يعمل أحدكم 'রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজ জুতা সেলাই করতেন, কাপড় সেলাই করতেন এবং ঘরের কাজকর্ম করতেন, যেমনটা তোমরা করে থাক।১৬৮
হাদীসে আছে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত খাদীজা রাযি.-এর সখী বান্ধবীদের কাছে এভাবে মাঝেমধ্যেই হাদিয়া পাঠাতেন। এটা হযরত খাদীজা রাযি.-এর প্রতি তাঁর মহব্বতের প্রকাশ। এ অবস্থা দেখে হযরত আয়েশা রাযি. মন্তব্য করতেন كأن لم يكن في الدنيا إلا خديجة (দুনিয়ায় যেন খাদীজা ছাড়া আর কোনও নারী ছিল না!)। অর্থাৎ তাঁর সমতুল্য ও তাঁর সমগুণের বুঝি কেউ ছিল না, যে কারণে তাঁর প্রতি এমন বাড়তি খাতির যে, তাঁর বান্ধবীদের কাছে পর্যন্ত হাদিয়া পাঠানো হয়। হাদীসে আছে, তিনি এ কথাও বলতেন যে قد أبدلك الله خيرا منها ما تذكر من عجوز من عجائز قريش، حمراء الشدقين، هلكت في الدهر (আপনি কুরায়শের ওই বৃদ্ধা মহিলার কথা কী স্মরণ করেন, যার চোয়ালদু'টি হয়ে গিয়েছিল লাল (অর্থাৎ মুখে দাঁত ছিল না, ফলে কেবল লাল মাড়িই দেখা যেত), যে কিনা বহুকাল আগে দুনিয়া থেকে চলে গেছে, অথচ আল্লাহ তাআলা তার বদলে আপনাকে আরও উত্তম স্ত্রী দান করেছেন)।১৬৯
এর জবাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেন إنها كانت ، وكانت ، وكان لي منها ولد (সে তো এরকম ছিল, এরকম ছিল এবং তার গর্ভে আমার সন্তানও জন্মগ্রহণ করেছিল)। ‘এরকম এরকম ছিল' বলে তাঁর একেকটি গুণ ও বৈশিষ্ট্যের কথা উল্লেখ করতেন। যেমন এক বর্ণনায় আছে যে, তিনি বলেছিলেন-
ما أبدلني الله عز وجل خيرا منها، قد آمنت بي إذ كفر بي الناس، وصدقتني إذ كذبني الناس، وواستني بمالها إذ حرمني الناس، ورزقني الله عز وجل ولدها إذ حرمني أولاد النساء
'আল্লাহ তাআলা আমাকে তার চেয়ে উত্তম স্ত্রী দেননি। লোকে যখন আমাকে প্রত্যাখ্যান করেছিল তখন সে আমার প্রতি ঈমান এনেছিল, লোকে যখন আমাকে মিথ্যুক ঠাওরিয়েছিল তখন সে আমাকে সত্যবাদী বলে গ্রহণ করেছিল, লোকে যখন আমাকে বঞ্চিত করেছিল তখন সে নিজ সম্পদ নিয়ে আমার পাশে দাঁড়িয়েছিল। তাছাড়া আল্লাহ তাআলা তার গর্ভে আমাকে সন্তান দান করেছেন, যখন অন্য কোনও নারীর গর্ভে তিনি আমাকে সন্তান দেননি।১৭০
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. স্বামীর উচিত নয়—তার মরহুমা স্ত্রীকে সম্পূর্ণ ভুলে যাওয়া। বরং তার সদ্গুণাবলী ও সুকীর্তির কথা স্মরণ রাখা উচিত এবং অন্যদের সামনে তা আলোচনাও করা উচিত। একই কথা স্ত্রীর বেলায়ও প্রযোজ্য।
খ. মরহুমা স্ত্রীর সম্মানার্থে তার জীবিত আত্মীয়-স্বজনকেও সম্মান করা উচিত।
গ. সামর্থ্য অনুযায়ী মরহুমা স্ত্রীর আত্মীয়-স্বজন ও সখী বান্ধবীদের হাদিয়া-তোহফা দেওয়া চাই ।
ঘ. এ হাদীছটি দ্বারা আমরা আম্মাজান খাদীজাতুল কুবরা রাযি.-এর মর্যাদাও উপলব্ধি করতে পারি। মুহাক্কিক উলামায়ে কেরামের মতে উম্মাহাতুল মুমিনীনের মধ্যে তিনিই শ্রেষ্ঠতম।
১৬৮. মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ২৫৩৪১; বুখারী, আল-আদাবুল মুফরাদ, হাদীছ নং ৫৩৯; সহীহ ইবন হিব্বান, হাদীছ নং ৬৪৪০; বাগাবী, শারহুস্ সুন্নাহ, হাদীছ নং ৩৬৭৫
১৬৯, সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৩৮২১; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ২৪৩৭; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ২৪৮৬৪; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ১৪৭৯৬
১৭০, মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ২৪৮৬৪; তাবারানী, আল মু'জামুল কাবীর, হাদীছ নং ২১
ঈর্ষা দোষের হয় তখনই, যখন তার তাড়নায় ঈর্ষণীয় ব্যক্তির ক্ষতি করার ইচ্ছা থাকে। লক্ষ্য যদি হয় কল্যাণ ও শুভতায় তাকে ছাড়িয়ে যাওয়া, তবে সে দোষের তো নয়ই; বরং একান্ত কাম্য। হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রাযি.-এর কামনা তো এই হয়ে থাকবে যে, প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পক্ষ থেকে ভালোবাসা তিনি যেন হযরত খাদীজা রাযি.-কেও ছাড়িয়ে যেতে পারেন।
হযরত আয়েশা রাযি, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মুখে উম্মুল মুমিনীন হযরত খাদীজা রাযি.র কথা খুব বেশি শুনতে পেতেন। বলা হয়ে থাকে, যে ব্যক্তি যাকে ভালোবাসে, সে তার কথা বেশি বেশি বলে। কাজেই নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত খাদীজা রাযি.-কে বেশি বেশি স্মরণ করায় স্পষ্টই বোঝা যেত যে, তিনি তাঁকে অনেক ভালোবাসেন। তাই অনুরূপ ভালোবাসা পাওয়ার জন্য হযরত আয়েশা রাযি.-এর অন্তরও আকুল হয়ে উঠত। সে কথাই তিনি এভাবে ব্যক্ত করছেন যে- আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অন্য কোনও স্ত্রীর প্রতি এমন ঈর্ষাবোধ করিনি, যেমনটা ঈর্ষাবোধ করেছি খাদীজা রাযি.-এর প্রতি।
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত খাদীজা রাযি.-এর কথা যে স্মরণ করেই ক্ষান্ত থাকতেন তা নয়; বরং কাজকর্ম দ্বারাও তাঁর প্রতি নিজ ভালোবাসার পরিচয় দিতেন। হাদীসে আছে হযরত আয়েশা রাযি. বলতেন (কখনও কখনও বকরি জবাই করে তার অঙ্গগুলো কেটে আলাদা আলাদা করতেন, তারপর তা খাদীজার বান্ধবীদের কাছে পাঠিয়ে দিতেন)। বকরি জবাই করার কাজটি হয়তো নিজেই করতেন। তিনি সাধারণত নিজের কাজ নিজে করতেই অভ্যস্ত ছিলেন। যেমন হাদীছে আছে كان كان رسول الله ﷺ يخصف نعله، ويخيط ثوبه، ويعمل في بيته كما يعمل أحدكم 'রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজ জুতা সেলাই করতেন, কাপড় সেলাই করতেন এবং ঘরের কাজকর্ম করতেন, যেমনটা তোমরা করে থাক।১৬৮
হাদীসে আছে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত খাদীজা রাযি.-এর সখী বান্ধবীদের কাছে এভাবে মাঝেমধ্যেই হাদিয়া পাঠাতেন। এটা হযরত খাদীজা রাযি.-এর প্রতি তাঁর মহব্বতের প্রকাশ। এ অবস্থা দেখে হযরত আয়েশা রাযি. মন্তব্য করতেন كأن لم يكن في الدنيا إلا خديجة (দুনিয়ায় যেন খাদীজা ছাড়া আর কোনও নারী ছিল না!)। অর্থাৎ তাঁর সমতুল্য ও তাঁর সমগুণের বুঝি কেউ ছিল না, যে কারণে তাঁর প্রতি এমন বাড়তি খাতির যে, তাঁর বান্ধবীদের কাছে পর্যন্ত হাদিয়া পাঠানো হয়। হাদীসে আছে, তিনি এ কথাও বলতেন যে قد أبدلك الله خيرا منها ما تذكر من عجوز من عجائز قريش، حمراء الشدقين، هلكت في الدهر (আপনি কুরায়শের ওই বৃদ্ধা মহিলার কথা কী স্মরণ করেন, যার চোয়ালদু'টি হয়ে গিয়েছিল লাল (অর্থাৎ মুখে দাঁত ছিল না, ফলে কেবল লাল মাড়িই দেখা যেত), যে কিনা বহুকাল আগে দুনিয়া থেকে চলে গেছে, অথচ আল্লাহ তাআলা তার বদলে আপনাকে আরও উত্তম স্ত্রী দান করেছেন)।১৬৯
এর জবাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেন إنها كانت ، وكانت ، وكان لي منها ولد (সে তো এরকম ছিল, এরকম ছিল এবং তার গর্ভে আমার সন্তানও জন্মগ্রহণ করেছিল)। ‘এরকম এরকম ছিল' বলে তাঁর একেকটি গুণ ও বৈশিষ্ট্যের কথা উল্লেখ করতেন। যেমন এক বর্ণনায় আছে যে, তিনি বলেছিলেন-
ما أبدلني الله عز وجل خيرا منها، قد آمنت بي إذ كفر بي الناس، وصدقتني إذ كذبني الناس، وواستني بمالها إذ حرمني الناس، ورزقني الله عز وجل ولدها إذ حرمني أولاد النساء
'আল্লাহ তাআলা আমাকে তার চেয়ে উত্তম স্ত্রী দেননি। লোকে যখন আমাকে প্রত্যাখ্যান করেছিল তখন সে আমার প্রতি ঈমান এনেছিল, লোকে যখন আমাকে মিথ্যুক ঠাওরিয়েছিল তখন সে আমাকে সত্যবাদী বলে গ্রহণ করেছিল, লোকে যখন আমাকে বঞ্চিত করেছিল তখন সে নিজ সম্পদ নিয়ে আমার পাশে দাঁড়িয়েছিল। তাছাড়া আল্লাহ তাআলা তার গর্ভে আমাকে সন্তান দান করেছেন, যখন অন্য কোনও নারীর গর্ভে তিনি আমাকে সন্তান দেননি।১৭০
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. স্বামীর উচিত নয়—তার মরহুমা স্ত্রীকে সম্পূর্ণ ভুলে যাওয়া। বরং তার সদ্গুণাবলী ও সুকীর্তির কথা স্মরণ রাখা উচিত এবং অন্যদের সামনে তা আলোচনাও করা উচিত। একই কথা স্ত্রীর বেলায়ও প্রযোজ্য।
খ. মরহুমা স্ত্রীর সম্মানার্থে তার জীবিত আত্মীয়-স্বজনকেও সম্মান করা উচিত।
গ. সামর্থ্য অনুযায়ী মরহুমা স্ত্রীর আত্মীয়-স্বজন ও সখী বান্ধবীদের হাদিয়া-তোহফা দেওয়া চাই ।
ঘ. এ হাদীছটি দ্বারা আমরা আম্মাজান খাদীজাতুল কুবরা রাযি.-এর মর্যাদাও উপলব্ধি করতে পারি। মুহাক্কিক উলামায়ে কেরামের মতে উম্মাহাতুল মুমিনীনের মধ্যে তিনিই শ্রেষ্ঠতম।
১৬৮. মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ২৫৩৪১; বুখারী, আল-আদাবুল মুফরাদ, হাদীছ নং ৫৩৯; সহীহ ইবন হিব্বান, হাদীছ নং ৬৪৪০; বাগাবী, শারহুস্ সুন্নাহ, হাদীছ নং ৩৬৭৫
১৬৯, সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৩৮২১; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ২৪৩৭; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ২৪৮৬৪; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ১৪৭৯৬
১৭০, মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ২৪৮৬৪; তাবারানী, আল মু'জামুল কাবীর, হাদীছ নং ২১
