আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ
৪৯- নবীজী সাঃ ও সাহাবা রাঃ ; মর্যাদা ও বিবিধ ফাযায়েল
হাদীস নং: ৩৫২৪
আন্তর্জাতিক নং: ৩৭৯৬
২১১৯. নবী কারীম (ﷺ)- এর দুআ (হে আল্লাহ!) আনসার ও মুহাজিরদের মঙ্গল করুন
৩৫২৪। আদম (রাহঃ) .... আনাস ইবনে মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আনসারগণ খন্দক যুদ্ধের পরিখা খননকালে বলেছিলেন, আমরা হলাম ঐ সমস্ত লোক যারা মুহাম্মাদ (ﷺ)- এর হাতে জিহাদের জন্য বায়‘আত করেছি যতদিন আমরা বেঁচে থাকব। এর উত্তরে নবী কারীম (ﷺ) বললেন, হে আল্লাহ! আখিরাতের জীবনই প্রকৃত জীবন। (হে আল্লাহ!) আনসার ও মুহাজিরদের সম্মান বৃদ্ধি করে দিন।
باب دُعَاءُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَصْلِحِ الأَنْصَارَ وَالْمُهَاجِرَةَ
3796 - حَدَّثَنَا آدَمُ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ حُمَيْدٍ الطَّوِيلِ، سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: كَانَتِ الأَنْصَارُ يَوْمَ الخَنْدَقِ تَقُولُ:
نَحْنُ الَّذِينَ بَايَعُوا مُحَمَّدَا ... عَلَى الجِهَادِ مَا حَيِينَا أَبَدَا
فَأَجَابَهُمْ
«اللَّهُمَّ لاَ عَيْشَ إِلَّا عَيْشُ الآخِرَهْ ... فَأَكْرِمِ الأَنْصَارَ وَالمُهَاجِرَهْ»
نَحْنُ الَّذِينَ بَايَعُوا مُحَمَّدَا ... عَلَى الجِهَادِ مَا حَيِينَا أَبَدَا
فَأَجَابَهُمْ
«اللَّهُمَّ لاَ عَيْشَ إِلَّا عَيْشُ الآخِرَهْ ... فَأَكْرِمِ الأَنْصَارَ وَالمُهَاجِرَهْ»
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ কথাটি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একাধিকবার বলেছেন। সর্বপ্রথম বলেছেন হিজরী ৪র্থ সনে আহযাবের যুদ্ধকালে পরিখা খননের সময়। সাহাবীগণের সঙ্গে তিনি নিজেও বিপুল উদ্যমে খননকার্য চালিয়ে যাচ্ছিলেন। একপর্যায়ে তিনি যখন তাদের ক্লান্তশ্রান্ত অবস্থা দেখতে পান, তখন তিনি উচ্চ আওয়াজে বলে ওঠেন
اللهم لا عيش إلا عيش الآخرة (হে আল্লাহ! আখিরাতের জীবনই প্রকৃত জীবন)।
এর দ্বারা তিনি সাহাবীদের অন্তরে এভাবে প্রাণশক্তি যোগাচ্ছিলেন যে, দেখ দুনিয়ার এ কষ্ট স্থায়ী কিছু নয়। দুনিয়া যেমন ক্ষণস্থায়ী, তেমনি এর কষ্ট-ক্লেশও ক্ষণস্থায়ী। তোমরা এ কষ্ট করছ আল্লাহর জন্য। একদিন এ কষ্ট থাকবে না। কিন্তু এর পুরস্কারস্বরূপ অনন্ত অসীম আখিরাতে তোমরা অফুরন্ত সুখ-শান্তি ভোগ করতে পারবে।
পরিখা খননের কষ্টকালে যেমন তিনি এ বাক্যটি উচ্চারণ করেছিলেন, তেমনি পরম আনন্দের এক পরিবেশেও তিনি এ কথাটি পুনর্ব্যক্ত করেছিলেন। তা বিদায় হজ্জের সময় আরাফার দিন। আরাফাতের বিশাল বিস্তৃত ময়দানে লক্ষাধিক ভক্ত-অনুরক্ত সাহাবীর সমাবেশে তাঁর সমুচ্চ উচ্চারণ ছিল- لبيك ان العيش عيش الآخرة (আমরা হাজির, হে আল্লাহ আমরা হাজির। নিশ্চয়ই আখিরাতের জীবনই প্রকৃত জীবন)। যেমন আল্লাহ বলছেন
وَإِنَّ الدَّارَ الْآخِرَةَ لَهِيَ الْحَيَوَانُ
'বস্তুত আখিরাতের জীবনই প্রকৃত জীবন।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ বাক্যটির মাধ্যমে যেন উম্মতকে সতর্ক করছেন, দুনিয়ার কোনও সফলতা, সমৃদ্ধি কিংবা অন্য কোনও আনন্দদায়ক বস্তু অর্জিত হয়ে যাওয়ায় তোমরা খুশিতে মেতে যেয়ো না। কারণ ক্ষণস্থায়ী দুনিয়ার সবই ক্ষণস্থায়ী। স্থায়ী সুখ ও আনন্দ কেবল আখিরাতেই আছে। তাই আসল লক্ষ্যবস্তু হওয়া উচিত আখিরাতের সফলতা। সর্বাবস্থায় সে চিন্তা-চেতনা অন্তরে জাগ্রত রেখো।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
দুনিয়ার সুখ-দুঃখ, আরাম-কষ্ট কোনও অবস্থায়ই আখিরাতের কথা ভুলে যেতে নেই। সর্বাবস্থায় মন-মস্তিষ্কে এ চেতনা জাগ্রত রাখা চাই যে, আখিরাতের জীবনই প্রকৃত জীবন। তাই সে জীবনে মুক্তিলাভ করাই হবে জীবনের আসল লক্ষ্যবস্তু।
اللهم لا عيش إلا عيش الآخرة (হে আল্লাহ! আখিরাতের জীবনই প্রকৃত জীবন)।
এর দ্বারা তিনি সাহাবীদের অন্তরে এভাবে প্রাণশক্তি যোগাচ্ছিলেন যে, দেখ দুনিয়ার এ কষ্ট স্থায়ী কিছু নয়। দুনিয়া যেমন ক্ষণস্থায়ী, তেমনি এর কষ্ট-ক্লেশও ক্ষণস্থায়ী। তোমরা এ কষ্ট করছ আল্লাহর জন্য। একদিন এ কষ্ট থাকবে না। কিন্তু এর পুরস্কারস্বরূপ অনন্ত অসীম আখিরাতে তোমরা অফুরন্ত সুখ-শান্তি ভোগ করতে পারবে।
পরিখা খননের কষ্টকালে যেমন তিনি এ বাক্যটি উচ্চারণ করেছিলেন, তেমনি পরম আনন্দের এক পরিবেশেও তিনি এ কথাটি পুনর্ব্যক্ত করেছিলেন। তা বিদায় হজ্জের সময় আরাফার দিন। আরাফাতের বিশাল বিস্তৃত ময়দানে লক্ষাধিক ভক্ত-অনুরক্ত সাহাবীর সমাবেশে তাঁর সমুচ্চ উচ্চারণ ছিল- لبيك ان العيش عيش الآخرة (আমরা হাজির, হে আল্লাহ আমরা হাজির। নিশ্চয়ই আখিরাতের জীবনই প্রকৃত জীবন)। যেমন আল্লাহ বলছেন
وَإِنَّ الدَّارَ الْآخِرَةَ لَهِيَ الْحَيَوَانُ
'বস্তুত আখিরাতের জীবনই প্রকৃত জীবন।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ বাক্যটির মাধ্যমে যেন উম্মতকে সতর্ক করছেন, দুনিয়ার কোনও সফলতা, সমৃদ্ধি কিংবা অন্য কোনও আনন্দদায়ক বস্তু অর্জিত হয়ে যাওয়ায় তোমরা খুশিতে মেতে যেয়ো না। কারণ ক্ষণস্থায়ী দুনিয়ার সবই ক্ষণস্থায়ী। স্থায়ী সুখ ও আনন্দ কেবল আখিরাতেই আছে। তাই আসল লক্ষ্যবস্তু হওয়া উচিত আখিরাতের সফলতা। সর্বাবস্থায় সে চিন্তা-চেতনা অন্তরে জাগ্রত রেখো।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
দুনিয়ার সুখ-দুঃখ, আরাম-কষ্ট কোনও অবস্থায়ই আখিরাতের কথা ভুলে যেতে নেই। সর্বাবস্থায় মন-মস্তিষ্কে এ চেতনা জাগ্রত রাখা চাই যে, আখিরাতের জীবনই প্রকৃত জীবন। তাই সে জীবনে মুক্তিলাভ করাই হবে জীবনের আসল লক্ষ্যবস্তু।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
