আল-আদাবুল মুফরাদ- ইমাম বুখারী রহঃ
আল-আদাবুল মুফরাদের পরিচ্ছেদসমূহ
হাদীস নং: ১০৭৩
৪৯৩- তিনবার অনুমতি প্রার্থনা করবে।
১০৭৩. উবায়দ ইব্ন উমায়র বর্ণনা করেনঃ একদা হযরত আবু মুসা আশ’আরী (রাযিঃ) হযরত উমর ইব্নুল খাত্তাবের দরবারে হাযির হইবার জন্য অনুমতি প্রার্থনা করিলেন। কিন্তু তাঁহাকে অনুমতি প্রদান করা হইল না। সম্ভবত তিনি তখন কোন কাজে ব্যস্ত ছিলেন। হযরত আবু মুসা (রাযিঃ) ফিরিয়া গেলেন। অতঃপর হযরত উমর (রাযিঃ) তাঁহার কাজ হইতে অবসর হইলেন বলিলেনঃ আব্দুল্লাহ্ ইব্ন কায়সের আওয়াজ যেন আমার কানে আসিয়াছিল, তাঁহাকে ডাক। বল হইল, তিনি তো চলিয়া গিয়াছেন। তখন হযরত উমর (রাযিঃ) তাঁহাকে ডাকিয়া আনিয়া তাঁহার ফিরিয়া যাওয়ার কারণ জিজ্ঞাসা করিলেন। তিনি বলিলেনঃ (রাসূলুল্লাহ্র পক্ষ হইতে) আমাদিগকে এরূপই নির্দেশ দেওয়া হইত। হযরত উমর (রাযিঃ) বলিলেনঃ তোমার এ বক্তব্যের সমর্থনে প্রমাণ লইয়া আইস! তিনি তখন আনসারদের এক মজলিসে গিয়া উপস্থিত হইলেন এবং তাঁহাদিগকে ব্যাপারটি আনুপূর্বিক বলিয়া জিজ্ঞাসা করিলেনঃ তোমাদিগের মধ্যকার কেহ কি নবী (ﷺ)-এর এই নির্দেশ শুনিয়াছ এবং এই ব্যাপারে সাক্ষ্য প্রদান করিতে প্রস্তুত আছে ? তাঁহারা বলিলেনঃ আমাদের সর্বকনিষ্ঠ আবু সাঈদ খুদরী-ই এ ব্যাপারে সাক্ষী দিতে পারে। তখন তিনি আবু সাঈদকে লইয়াই হাযির হইলেন। তাঁহার বক্তব্য শুনিয়া হযরত উমর (রাযিঃ) বলিলেনঃ রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর এমন একটি নির্দেশ কি আমার নিকট অবিদিত থাকিতে পারে? হ্যাঁ, বাজারে বাজারে বেচাকেনা লইয়া ব্যস্ততার কারণে আমি উক্ত নির্দেশ শ্রবণ করিতে পারি নাই।
بَابُ الاسْتِئْذَانِ ثَلاثًا
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَلاَمٍ، قَالَ: أَخْبَرَنَا مَخْلَدٌ، قَالَ: أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ قَالَ: أَخْبَرَنِي عَطَاءٌ، عَنْ عُبَيْدِ بْنِ عُمَيْرٍ، أَنَّ أَبَا مُوسَى الأَشْعَرِيَّ اسْتَأْذَنَ عَلَى عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ، فَلَمْ يُؤَذَنْ لَهُ، وَكَأَنَّهُ كَانَ مَشْغُولاً، فَرَجَعَ أَبُو مُوسَى، فَفَرَغَ عُمَرُ فَقَالَ: أَلَمْ أَسْمَعْ صَوْتَ عَبْدِ اللهِ بْنِ قَيْسٍ؟ إِيذَنُوا لَهُ، قِيلَ: قَدْ رَجَعَ، فَدَعَاهُ، فَقَالَ: كُنَّا نُؤْمَرُ بِذَلِكَ، فَقَالَ: تَأْتِينِي عَلَى ذَلِكَ بِالْبَيِّنَةِ، فَانْطَلَقَ إِلَى مَجْلِسِ الأَنْصَارِ فَسَأَلَهُمْ، فَقَالُوا: لاَ يَشْهَدُ لَكَ عَلَى هَذَا إِلاَّ أَصْغَرُنَا: أَبُو سَعِيدٍ الْخُدْرِيُّ فَذَهَبَ بِأَبِي سَعِيدٍ، فَقَالَ عُمَرُ: أَخَفِيَ عَلَيَّ مِنْ أَمْرِ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم؟ أَلْهَانِي الصَّفْقُ بِالأَسْوَاقِ، يَعْنِي الْخُرُوجَ إِلَى التِّجَارَةِ.
হাদীসের ব্যাখ্যা:
বস্তুত এটা ছিল হযরত উমর ফারুক রাযি.-এর দূরদর্শীতা ও হাদীছ বিষয়ে তাঁর কঠোর সতর্কতা। হযরত আবূ মূসা রাযি.-এর বিশ্বস্ততায় তাঁর কোনও সন্দেহ ছিল না। কিন্তু হাদীছ যেহেতু শরী'আতের দলীল, তাই এর বর্ণনায় যাতে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হয় সেটাই ছিল তাঁর লক্ষ্যবস্তু। তাঁর আমলে তিনি ছিলেন সমগ্র উম্মতের অভিভাবক। তাই উম্মতের দীন ও দুনিয়া উভয় বিষয়ে তাঁর সতর্ক অবস্থান বাঞ্ছনীয় ছিল। বিশেষত এ শরী'আত যেহেতু সর্বশেষ শরী'আত, তাই কিয়ামত পর্যন্ত এর সুরক্ষার ব্যবস্থা গ্রহণ করা উম্মতের উলামা ও শাসকবর্গের অপরিহার্য কর্তব্য ছিল। সাহাবায়ে কেরাম থেকে শুরু করে পরবর্তী শত শত বছর উম্মতের দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গ এ কর্তব্য যথাযথভাবে পালন করে এসেছে। ফলে আজ এ আখেরী শরী'আত ও এর উৎস কুরআন-সুন্নাহ যথাযথভাবে সংরক্ষিত আছে।
যাহোক অনুমতি চাওয়ার সর্বোচ্চ সীমা হল তিনবার। তিনবারের পর আর অনুমতি চাওয়া সঙ্গত নয়। এটা পীড়াপীড়ির মধ্যে পড়ে। কাউকে পীড়াপীড়ি করে কষ্ট দেওয়া উচিত না। অনুমতি চাইলে যে অনুমতি দিতেই হবে এর কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। মানুষের নানারকম ওজর থাকতে পারে। হয়তো এমন সময় অনুমতি চাওয়া হয়েছে, যখন অনুমতি দেওয়াটা সম্ভব নয়। তা দিতে গেলে বিশেষ কষ্ট বা পেরেশানি হবে। সাক্ষাৎপ্রার্থীর উচিত মানুষের কষ্ট-ক্লেশ বা ওজর-অজুহাতকে সম্মান দেওয়া এবং অনুমতি না পাওয়াকে সহজভাবে গ্রহণ করা। হাঁ, সাক্ষাৎপ্রার্থীর প্রয়োজনও বিশেষ জরুরি হতে পারে। তাই যথাসম্ভব অনুমতি দেওয়া বাঞ্ছনীয়। কঠিন ওজর না থাকলে তাকে ফিরিয়ে দেওয়া সঙ্গত নয়।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. কারও সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চাইলে আগে অনুমতি নেওয়া জরুরি।
খ. অনুমতি চাওয়ার সর্বোচ্চ সীমা তিনবার। তৃতীয়বারেও অনুমতি পাওয়া না গেলে ফিরে যেতে হবে। চতুর্থ বার অনুমতি চাওয়া বিধিসম্মত নয়।
যাহোক অনুমতি চাওয়ার সর্বোচ্চ সীমা হল তিনবার। তিনবারের পর আর অনুমতি চাওয়া সঙ্গত নয়। এটা পীড়াপীড়ির মধ্যে পড়ে। কাউকে পীড়াপীড়ি করে কষ্ট দেওয়া উচিত না। অনুমতি চাইলে যে অনুমতি দিতেই হবে এর কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। মানুষের নানারকম ওজর থাকতে পারে। হয়তো এমন সময় অনুমতি চাওয়া হয়েছে, যখন অনুমতি দেওয়াটা সম্ভব নয়। তা দিতে গেলে বিশেষ কষ্ট বা পেরেশানি হবে। সাক্ষাৎপ্রার্থীর উচিত মানুষের কষ্ট-ক্লেশ বা ওজর-অজুহাতকে সম্মান দেওয়া এবং অনুমতি না পাওয়াকে সহজভাবে গ্রহণ করা। হাঁ, সাক্ষাৎপ্রার্থীর প্রয়োজনও বিশেষ জরুরি হতে পারে। তাই যথাসম্ভব অনুমতি দেওয়া বাঞ্ছনীয়। কঠিন ওজর না থাকলে তাকে ফিরিয়ে দেওয়া সঙ্গত নয়।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. কারও সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চাইলে আগে অনুমতি নেওয়া জরুরি।
খ. অনুমতি চাওয়ার সর্বোচ্চ সীমা তিনবার। তৃতীয়বারেও অনুমতি পাওয়া না গেলে ফিরে যেতে হবে। চতুর্থ বার অনুমতি চাওয়া বিধিসম্মত নয়।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
