আল-আদাবুল মুফরাদ- ইমাম বুখারী রহঃ
আল-আদাবুল মুফরাদের পরিচ্ছেদসমূহ
হাদীস নং: ১০৫৬
৪৮০. মহিলাদের সালাম করা
১০৫৬. আস্মা বিনতে ইয়াযীদ আল-আনসারী (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। নবী (ﷺ) আমাকে অতিক্রম করলেন। আমি তখন আমাদের মহিলাদের সাথে বসা ছিলাম। তিনি আমাদেরকে সালাম দেয়ার পর বলেনঃ নিয়ামতপ্রাপ্তদের অকৃতজ্ঞতা থেকে সাবধান হও। নারীদের মধ্যে আমি তাঁর নিকট প্রশ্ন করতে খুবই নির্ভীক ছিলাম। অতএব আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! নি’আমতপ্রাপ্তদের অকৃতজ্ঞতা কি? তিনি বলেনঃ হয়তো তোমাদের কারো পিতা-মাতার ঘরে অবিবাহিত অবস্থায় দীর্ঘকাল অতিবাহিত হয়। অতঃপর আল্লাহ্ তাকে স্বামী দান করেন এবং তার ঔরসে তাকে সন্তানাদি দান করেন। তারপরও সে খুব অসন্তুষ্ট হয়ে অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এবং বলে, আমি তোমার নিকট কখনো ভালো ব্যবহার পেলাম না।
حَدَّثَنَا مَخْلَدٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا مُبَشِّرُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، عَنِ ابْنِ أَبِي غَنِيَّةَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ مُهَاجِرٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَسْمَاءَ ابْنَةِ يَزِيدَ الأَنْصَارِيَّةِ، مَرَّ بِيَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَأَنَا فِي جِوَارِ أَتْرَابٍ لِي، فَسَلَّمَ عَلَيْنَا وَقَالَ: إِيَّاكُنَّ وَكُفْرَ الْمُنْعِمِينَ، وَكُنْتُ مِنْ أَجْرَئِهِنَّ عَلَى مَسْأَلَتِهِ، فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ، وَمَا كُفْرُ الْمُنْعِمِينَ؟ قَالَ: لَعَلَّ إِحْدَاكُنَّ تَطُولُ أَيْمَتُهَا مِنْ أَبَوَيْهَا، ثُمَّ يَرْزُقُهَا اللَّهُ زَوْجًا، وَيَرْزُقُهَا مِنْهُ وَلَدًا، فَتَغْضَبُ الْغَضْبَةَ فَتَكْفُرُ فَتَقُولُ: مَا رَأَيْتُ مِنْكَ خَيْرًا قَطُّ.
হাদীসের ব্যাখ্যা:
তিরমিযীর বর্ণনা এরূপ– একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে যাচ্ছিলেন। একদল নারী বসা ছিল। তিনি হাত দ্বারা ইশারা করে সালাম দিলেন।
এ হাদীছটির বর্ণনা অনুযায়ী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মহিলাদেরকে সালাম দিয়েছেন আর তা দিয়েছেন হাতের ইশারায়। মহিলাদেরকে সালাম দেওয়া সম্পর্কে উলামায়ে কেরামের বিভিন্ন মত আছে। এমনিতে সালাম দেওয়া ফরয বা ওয়াজিব নয়: সুন্নত। যদিও জবাব দেওয়া ওয়াজিব। অপরদিকে নিজেকে গুনাহ থেকে বাঁচানো জরুরি। মহিলাদেরকে সালাম দেওয়ার দ্বারা সাধারণদের ক্ষেত্রে গুনাহের আশঙ্কা থাকে। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মা'সূম ছিলেন। তাই তাঁর সালাম দেওয়ায় কোনও সমস্যা ছিল না। তাঁর সালাম উম্মতের জন্য বিশাল প্রাপ্তি। নারী-পুরুষ সকলের জন্যই। পক্ষান্তরে নারীর প্রতি স্বভাবগত আকর্ষণ থাকায় সাধারণ মানুষের বেলায় আশঙ্কা রয়েছে যে, সালাম দিতে গিয়ে সে নারীর প্রতি এবং নারীও সালামদাতার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়বে। গায়রে মাহরাম নারীর প্রতি ইচ্ছাকৃত তাকানো জায়েয নয়। সালাম দেওয়ার ছলে হয়তো তাকিয়ে বসবে। শয়তান সেই সুযোগ গ্রহণ করবে। মনের ভেতর কুচিন্তার জন্ম দেবে। এভাবে সালামদাতা বা যাকে সালাম দেওয়া হল সেই নারী কিংবা উভয়ে ফিতনার শিকার হবে। তাই সাধারণভাবে গায়রে মাহরাম নারীকে সালাম দেওয়া ঠিক নয়। হাঁ, গায়রে মাহরাম নারীর সঙ্গে যদি পুরুষ থাকে, তবে সে পুরুষকে লক্ষ্য করে সালাম দেওয়া যাবে। এমনিভাবে সে নারী যদি বৃদ্ধা হয়, যেখানে ফিতনার আশঙ্কা নেই, সে ক্ষেত্রেও সালাম দেওয়া জায়েয হবে
এ হাদীছটিতে যে ইশারায় সালাম দেওয়ার কথা আছে, প্রকৃতপক্ষে তা কেবল ইশারা ছিল না; ইশারা সঙ্গে মুখে সালাম উচ্চারণও করা হয়েছিল। কেননা এ হাদীছেরই অপর এক বর্ণনায় আছে, হযরত আসমা বিনতে ইয়াযীদ রাযি. বলেন–
مَرَّ عَلَيْنَا النَّبِيُّﷺ فِي نِسْوَةٍ فَسَلَّمَ عَلَيْنَا
'নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের একদল মহিলাদের নিকট নিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি আমাদেরকে সালাম দিলেন।' (সুনানে আবূ দাউদ : ৫২০৪; সুনানে ইবন মাজাহ : ৩৭০০; মুসনাদুল হুমায়দী: ৩৭০; মুসান্নাফে ইবন আবী শায়বা : ২৫৭৮০; মুসনাদে ইসহাক ইবন রাহুয়াহ: ২২৯৬; তাবারানী, আল মুজামুল কাবীর : ৪৩৬; বায়হাকী, শুআবুল ঈমান: ৮৫০৯)
সুতরাং সালাম মুখের উচ্চারণেই দিতে হবে। হাঁ, যাকে সালাম দেওয়া হল তার দৃষ্টি আকর্ষণ করা এবং তাকে যে সালাম দেওয়া হচ্ছে এ কথা বোঝানোর জন্য উচ্চারণের সঙ্গে হাত দ্বারা ইশারাও করা যেতে পারে। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাতের ইশারা ছিল সেরকমই।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. যে ক্ষেত্রে ফিতনার আশঙ্কা নেই, সে ক্ষেত্রে নারীদের সালাম দেওয়া যেতে পারে।
খ. সালামের বাক্য মুখে উচ্চারণ করা জরুরি। তবে দৃষ্টি আকর্ষণ করা অথবা সালাম দেওয়া হচ্ছে এ কথা বোঝানোর জন্য হাত দিয়ে ইশারা করা যেতে পারে।
এ হাদীছটির বর্ণনা অনুযায়ী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মহিলাদেরকে সালাম দিয়েছেন আর তা দিয়েছেন হাতের ইশারায়। মহিলাদেরকে সালাম দেওয়া সম্পর্কে উলামায়ে কেরামের বিভিন্ন মত আছে। এমনিতে সালাম দেওয়া ফরয বা ওয়াজিব নয়: সুন্নত। যদিও জবাব দেওয়া ওয়াজিব। অপরদিকে নিজেকে গুনাহ থেকে বাঁচানো জরুরি। মহিলাদেরকে সালাম দেওয়ার দ্বারা সাধারণদের ক্ষেত্রে গুনাহের আশঙ্কা থাকে। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মা'সূম ছিলেন। তাই তাঁর সালাম দেওয়ায় কোনও সমস্যা ছিল না। তাঁর সালাম উম্মতের জন্য বিশাল প্রাপ্তি। নারী-পুরুষ সকলের জন্যই। পক্ষান্তরে নারীর প্রতি স্বভাবগত আকর্ষণ থাকায় সাধারণ মানুষের বেলায় আশঙ্কা রয়েছে যে, সালাম দিতে গিয়ে সে নারীর প্রতি এবং নারীও সালামদাতার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়বে। গায়রে মাহরাম নারীর প্রতি ইচ্ছাকৃত তাকানো জায়েয নয়। সালাম দেওয়ার ছলে হয়তো তাকিয়ে বসবে। শয়তান সেই সুযোগ গ্রহণ করবে। মনের ভেতর কুচিন্তার জন্ম দেবে। এভাবে সালামদাতা বা যাকে সালাম দেওয়া হল সেই নারী কিংবা উভয়ে ফিতনার শিকার হবে। তাই সাধারণভাবে গায়রে মাহরাম নারীকে সালাম দেওয়া ঠিক নয়। হাঁ, গায়রে মাহরাম নারীর সঙ্গে যদি পুরুষ থাকে, তবে সে পুরুষকে লক্ষ্য করে সালাম দেওয়া যাবে। এমনিভাবে সে নারী যদি বৃদ্ধা হয়, যেখানে ফিতনার আশঙ্কা নেই, সে ক্ষেত্রেও সালাম দেওয়া জায়েয হবে
এ হাদীছটিতে যে ইশারায় সালাম দেওয়ার কথা আছে, প্রকৃতপক্ষে তা কেবল ইশারা ছিল না; ইশারা সঙ্গে মুখে সালাম উচ্চারণও করা হয়েছিল। কেননা এ হাদীছেরই অপর এক বর্ণনায় আছে, হযরত আসমা বিনতে ইয়াযীদ রাযি. বলেন–
مَرَّ عَلَيْنَا النَّبِيُّﷺ فِي نِسْوَةٍ فَسَلَّمَ عَلَيْنَا
'নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের একদল মহিলাদের নিকট নিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি আমাদেরকে সালাম দিলেন।' (সুনানে আবূ দাউদ : ৫২০৪; সুনানে ইবন মাজাহ : ৩৭০০; মুসনাদুল হুমায়দী: ৩৭০; মুসান্নাফে ইবন আবী শায়বা : ২৫৭৮০; মুসনাদে ইসহাক ইবন রাহুয়াহ: ২২৯৬; তাবারানী, আল মুজামুল কাবীর : ৪৩৬; বায়হাকী, শুআবুল ঈমান: ৮৫০৯)
সুতরাং সালাম মুখের উচ্চারণেই দিতে হবে। হাঁ, যাকে সালাম দেওয়া হল তার দৃষ্টি আকর্ষণ করা এবং তাকে যে সালাম দেওয়া হচ্ছে এ কথা বোঝানোর জন্য উচ্চারণের সঙ্গে হাত দ্বারা ইশারাও করা যেতে পারে। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাতের ইশারা ছিল সেরকমই।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. যে ক্ষেত্রে ফিতনার আশঙ্কা নেই, সে ক্ষেত্রে নারীদের সালাম দেওয়া যেতে পারে।
খ. সালামের বাক্য মুখে উচ্চারণ করা জরুরি। তবে দৃষ্টি আকর্ষণ করা অথবা সালাম দেওয়া হচ্ছে এ কথা বোঝানোর জন্য হাত দিয়ে ইশারা করা যেতে পারে।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
