আল-আদাবুল মুফরাদ- ইমাম বুখারী রহঃ
আল-আদাবুল মুফরাদের পরিচ্ছেদসমূহ
হাদীস নং: ৫৪৯
২৫১. অহংকার
৫৪৯। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইব্ন আম্র (রাযিঃ) বলেনঃ একদা আমরা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর নিকট বসা ছিলাম, তখন এক মরুবাসী যাহার পরিধানে ছিল মীজান (এক প্রকার মাছ) রংয়ের জুব্বা, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর দরবারে আসিয়া একেবারে তাঁহার মাথার কাছে দাঁড়াইল এবং বলিল, তোমাদের নেতা আরোহীদিগকে অবদমিত করিয়াছেন অথবা সে ব্যক্তি বলিয়াছেনঃ তিনি আরোহীদিগকে অবদমিত এবং রাখালদের সমুন্নত করিতে চাহেন। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তখন তাহার জুব্বার বন্ধনস্থল ধরিলেন এবং বলিলেনঃ তোমাকে আমি কি নির্বোধের পোশাকে দেখিতেছি না? অতঃপর তিনি বলিলেনঃ যখন আল্লাহ্র নবী হযরত নূহের ইন্তিকালের সময় উপস্থিত হইল তখন তিনি তাহার পুত্রকে লক্ষ্য করিয়া বলিলেনঃ আমি তোমাকে একটি উপদেশের মাধ্যমে দুইটি বিষয়ে আদেশ করিতেছি এবং দুইটি বিষয় হইতে বারণ করিতেছি। আমি তোমাকে ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু’-এর নির্দেশ দিতেছি। কেননা, সাত আসমান ও সাত যমীনকে যদি এক পাল্লায় তোলা হয় আর অপর পাল্লায় ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ তোলা হয়, তবে সেই পাল্লাই ভারী প্রতিপন্ন হইবে। সাত আসমান ও সাত যমীন যদি একটি জটিল গ্রন্থির রূপ ধারণ করে তবে ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ এবং ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বি-হামদিহী’ উহা ভাঙ্গিয়া দিবে, কেননা উহা হইতেছে সব কিছুরই নামায এবং সকলেই উহার বদৌলতে জীবিকা লাভ করিয়া থাকে।
যে দুইটি বিষয় হইতে বারণ করিতেছি তাহা হইল শিরক এবং অহংকার। আমি বলিলাম. অথবা রাবী বলিয়াছেনঃ তাহাকে বলা হইল, শিরক তো আমরা বুঝিলাম, অহংকার কি ? আমাদের কাহারো যদি সুন্দর পোশাক থাকে আর সে উহা পরিধান করে তবে কি অহংকার হইবে ? বলিলেনঃ না। প্রশ্নকারী আবার বলিল, যদি আমাদের কোন ব্যক্তির সুন্দর এক জোড়া পাদুকা থাকে আর উহার একজোড়া সুন্দর ফিতাও থাকে, তবে উহা কি অহংকারের আওতায় পড়ে? বলিলেনঃ না। প্রশ্নকারী পুনরায় বলিল, যদি আমাদের কোন ব্যক্তির একটি বাহন জন্তু থাকে আর সে উহাতে আরোহণ করে, তবে উহা কি অহংকার হইবে? তিনি বলিলেন, না। প্রশ্নকারী পুনরায় জিজ্ঞাসা করিলেন, যদি আমাদের কোন ব্যক্তির বন্ধু-বান্ধব থাকে আর তাহারা তাহার সহিত ওঠা-বসাও করে, তবে তাহা কি অহংকার হইবে ? বলিলেনঃ না। তখন প্রশ্নকারী বলিলেনঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্! তাহা হইলে অহংকার বস্তুটা কি? বলিলেনঃ সত্য হইতে পরান্মুখ থাকা এবং মানুষকে হেয় মনে করা।
যে দুইটি বিষয় হইতে বারণ করিতেছি তাহা হইল শিরক এবং অহংকার। আমি বলিলাম. অথবা রাবী বলিয়াছেনঃ তাহাকে বলা হইল, শিরক তো আমরা বুঝিলাম, অহংকার কি ? আমাদের কাহারো যদি সুন্দর পোশাক থাকে আর সে উহা পরিধান করে তবে কি অহংকার হইবে ? বলিলেনঃ না। প্রশ্নকারী আবার বলিল, যদি আমাদের কোন ব্যক্তির সুন্দর এক জোড়া পাদুকা থাকে আর উহার একজোড়া সুন্দর ফিতাও থাকে, তবে উহা কি অহংকারের আওতায় পড়ে? বলিলেনঃ না। প্রশ্নকারী পুনরায় বলিল, যদি আমাদের কোন ব্যক্তির একটি বাহন জন্তু থাকে আর সে উহাতে আরোহণ করে, তবে উহা কি অহংকার হইবে? তিনি বলিলেন, না। প্রশ্নকারী পুনরায় জিজ্ঞাসা করিলেন, যদি আমাদের কোন ব্যক্তির বন্ধু-বান্ধব থাকে আর তাহারা তাহার সহিত ওঠা-বসাও করে, তবে তাহা কি অহংকার হইবে ? বলিলেনঃ না। তখন প্রশ্নকারী বলিলেনঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্! তাহা হইলে অহংকার বস্তুটা কি? বলিলেনঃ সত্য হইতে পরান্মুখ থাকা এবং মানুষকে হেয় মনে করা।
بَابُ الْكِبْرِ
حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنِ الصَّقْعَبِ بْنِ زُهَيْرٍ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ قَالَ: لاَ أَعْلَمُهُ إِلاَّ عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو قَالَ: كُنَّا جُلُوسًا عِنْدَ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَجَاءَ رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ الْبَادِيَةِ عَلَيْهِ جُبَّةُ سِيجَانٍ، حَتَّى قَامَ عَلَى رَأْسِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ: إِنَّ صَاحِبَكُمْ قَدْ وَضَعَ كُلَّ فَارِسٍ، أَوْ قَالَ: يُرِيدُ أَنْ يَضَعَ كُلَّ فَارِسٍ، وَيَرْفَعَ كُلَّ رَاعٍ، فَأَخَذَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِمَجَامِعِ جُبَّتِهِ فَقَالَ: أَلاَ أَرَى عَلَيْكَ لِبَاسَ مَنْ لاَ يَعْقِلُ، ثُمَّ قَالَ: إِنَّ نَبِيَّ اللهِ نُوحًا صلى الله عليه وسلم لَمَّا حَضَرَتْهُ الْوَفَاةُ قَالَ لِابْنِهِ: إِنِّي قَاصٌّ عَلَيْكَ الْوَصِيَّةَ، آمُرُكَ بِاثْنَتَيْنِ، وَأَنْهَاكَ عَنِ اثْنَتَيْنِ: آمُرُكَ بِلاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ، فَإِنَّ السَّمَاوَاتِ السَّبْعَ وَالأَرَضِينَ السَّبْعَ، لَوْ وُضِعْنَ فِي كِفَّةٍ وَوُضِعَتْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ فِي كِفَّةٍ لَرَجَحَتْ بِهِنَّ، وَلَوْ أَنَّ السَّمَاوَاتِ السَّبْعَ وَالأَرَضِينَ السَّبْعَ كُنَّ حَلْقَةً مُبْهَمَةً لَقَصَمَتْهُنَّ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ، وَسُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِهِ، فَإِنَّهَا صَلاَةُ كُلِّ شَيْءٍ، وَبِهَا يُرْزَقُ كُلُّ شَيْءٍ، وَأَنْهَاكَ عَنِ الشِّرْكِ وَالْكِبْرِ، فَقُلْتُ، أَوْ قِيلَ: يَا رَسُولَ اللهِ، هَذَا الشِّرْكُ قَدْ عَرَفْنَاهُ، فَمَا الْكِبْرُ؟ هُوَ أَنْ يَكُونَ لأَحَدِنَا حُلَّةٌ يَلْبَسُهَا؟ قَالَ: لاَ، قَالَ: فَهُوَ أَنْ يَكُونَ لأَحَدِنَا نَعْلاَنِ حَسَنَتَانِ، لَهُمَا شِرَاكَانِ حَسَنَانِ؟ قَالَ: لاَ، قَالَ: فَهُوَ أَنْ يَكُونَ لأَحَدِنَا دَابَّةٌ يَرْكَبُهَا؟ قَالَ: لاَ، قَالَ: فَهُوَ أَنْ يَكُونَ لأَحَدِنَا أَصْحَابٌ يَجْلِسُونَ إِلَيْهِ؟ قَالَ: لاَ، قَالَ: يَا رَسُولَ اللهِ، فَمَا الْكِبْرُ؟ قَالَ: سَفَهُ الْحَقِّ، وَغَمْصُ النَّاسِ.
