আল-আদাবুল মুফরাদ- ইমাম বুখারী রহঃ
আল-আদাবুল মুফরাদের পরিচ্ছেদসমূহ
হাদীস নং: ৫১০
২২৯.অসুস্থতার কথা প্রকাশ করা কি অভিযোগ ?
৫১০। হিশাম তদীয় পিতার সূত্রে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলিয়াছেনঃ আমি এবং আব্দুল্লাহ্ ইব্ন যুবায়র তাঁহার শাহাদতের দশ দিন পূর্বে (তাঁহার মাতা) হযরত আসমা (রাযিঃ)-এর খেদমতে উপস্থিত হইলাম। হযরত আসমা (রাযিঃ) তখন রোগশয্যায়। আব্দুল্লাহ্ তাঁহাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, আপনি কেমন বোধ করিতেছেন? তিনি বলিলেনঃ অসুস্থ বোধ করিতেছি। আব্দুল্লাহ্ বলিলেনঃ আর আমি তো মৃত্যুর মুখামুখি দাঁড়াইয়া আছি! আসমা (রাযিঃ) বলিলেনঃ সম্ভবত তুমি চাও যে, আমার মৃত্যু (তৎপূর্বেই) হইয়া যাউক। তাই তুমি উহা কামনা করিতেছ এমনটি করিও না। কসম আল্লাহর, তোমার এক দিক না হওয়া পর্যন্ত আমি মরিতে চাই না। হয় তুমি শহীদ হইবে আর আমি তোমার জন্য (ধৈর্যজনিত) সাওয়াবের আশা করিব, না হয়, তুমি বিজয়ী হইয়াছ দেখিয়া আমার চক্ষু জুড়াইব। সাবধান! তোমার বিবেকে অবাঞ্ছিত কোন পরিস্থিতিকে কেবল মৃত্যুভয়ে গ্রহণ করিয়া লইও না। ইব্ন যুবায়রের মনে আশংকা ছিল যে, তিনি শহীদ হইলে উহা তাহার জননীকে শোকার্ত করিয়া তুলিবে।১
بَابُ هَلْ يَكُونُ قَوْلُ الْمَرِيضِ: إِنِّي وَجِعٌ، شِكَايَةً؟
حَدَّثَنَا حَدَّثَنَا زَكَرِيَّا ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ ، عَنْ هِشَامٍ ، عَنْ أَبِيهِ ، قَالَ : " دَخَلْتُ أَنَا وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ الزُّبَيْرِ عَلَى أَسْمَاءَ ، قَبْلَ قَتْلِ عَبْدِ اللَّهِ بِعَشْرِ لَيَالٍ ، وَأَسْمَاءُ وَجِعَةٌ ، فَقَالَ لَهَا عَبْدُ اللَّهِ : " كَيْفَ تَجِدِينَكِ ؟ ، قَالَتْ : وَجِعَةٌ ، قَالَ : إِنِّي فِي الْمَوْتِ ، فَقَالَتْ : لَعَلَّكَ تَشْتَهِي مَوْتِي ، فَلِذَلِكَ تَتَمَنَّاهُ ؟ فَلا تَفْعَلْ ، فَوَاللَّهِ مَا أَشْتَهِي أَنْ أَمُوتَ حَتَّى يَأْتِيَ عَلَيَّ أَحَدُ طَرَفَيْكَ ، أَوْ تُقْتَلَ فَأَحْتَسِبَكَ ، وَإِمَّا أَنْ تَظْفُرَ فَتَقَرَّ عَيْنِي ، فَإِيَّاكَ أَنْ تُعْرَضَ عَلَيْكَ خُطَّةٌ ، فَلا تُوَافِقُكَ ، فَتَقْبَلُهَا كَرَاهِيَةَ الْمَوْتِ ، وَإِنَّمَا عَنَى ابْنُ الزُّبَيْرِ لِيُقْتَلَ فَيُحْزِنُهَا ذَلِكَ " .
হাদীসের ব্যাখ্যা:
১. ইব্ন যুবায়র ছিলেন উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়েশা (রা)-এর ভগ্নি পুত্র। মক্কা-মদীনায় তিনি খলীফা বলিয়া স্বীকৃত হইয়া গিয়াছিলেন। এবং গোটা মুসলিম জাহানের খলীফা রূপে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হইয়া উঠিয়াছিল। অবশেষে আবদুল মালিকের আমলে সেনাপতি হাজ্জাজের হাতে তাঁহার পতন ঘটে এবং তিনি শহীদ হন। মৃত্যুকে ভয় করার পাত্র তিনি ছিলেন না। তবে তিনি শহীদ হইলে তাঁহার বৃদ্ধা জননী শোকার্ত হইবেন, এই আশংকায় তিনি তাঁহার মহীয়সী জননীর মৃত্যু কামনা করিতেছিলেন। কিন্তু তাঁহার মহীয়সী জননীর অন্তর এত সহজে দমিয়া যাইবার মত ছিল না। তাই পুত্রকে তিনি সত্যের পথে অবিচল থাকিবার জন্য তাগিদ দিয়াছিলেন এবং পুত্রের শাহাদত লাভের পর গাছের ডালে তাঁহার ঝুলন্ত লাশ দেখিয়া ঘোড়ার উপরে বীর সিপাহী বলিয়া তাহাকে অভিনন্দন জানাইয়াছিলেন।
