আল-আদাবুল মুফরাদ- ইমাম বুখারী রহঃ
আল-আদাবুল মুফরাদের পরিচ্ছেদসমূহ
হাদীস নং: ২২৬
১১৫- প্রতিটি সৎকর্ম সাদাকা স্বরূপ
২২৬। আবু যার (রাঃ) বলেন, বলা হলো, ইয়া রাসূলাল্লাহ! বিত্তবানরা সওয়াব লুটে নিয়ে যাচ্ছেন। আমরা যেমন নামায পড়ি, তারাও নামায পড়েন, আমরা যেমন রোযা রাখি, তারাও রোযা রাখেন এবং তারা তাদের উদৃত্ত মাল থেকে দান-খয়রাত করেন। তিনি বলেনঃ আল্লাহ কি তোমাদের জন্য দান-খয়রাতের ব্যবস্থা রাখেননি? নিশ্চয় প্রতিটি তাসবীহ ও তাহমীদ দানস্বরূপ এবং তোমাদের স্বামী-স্ত্রীর মিলনও দানস্বরূপ। সাহাবীগণ বলেন, তার যৌনমিলনও কি দানস্বরূপ। তিনি বলেনঃ যদি সে হারাম পথে তা চরিতার্থ করতো তবে কি তা তার জন্য পাপ হতো না? অনুরূপ সে তা হালালভাবে চরিতার্থ করলে তার জন্য সওয়াব রয়েছে
بَابُ إِنَّ كُلَّ مَعْرُوفٍ صَدَقَةٌ
حَدَّثَنَا أَبُو النُّعْمَانِ قَالَ: حَدَّثَنِي مَهْدِيُّ بْنُ مَيْمُونٍ، عَنْ وَاصِلٍ مَوْلَى أَبِي عُيَيْنَةَ، عَنْ يَحْيَى بْنِ عَقِيلٍ، عَنْ يَحْيَى بْنِ يَعْمَُرَ، عَنْ أَبِي الأَسْوَدِ الدِّيلِيِّ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ قَالَ: قِيلَ: يَا رَسُولَ اللهِ، ذَهَبَ أَهْلُ الدُّثُورِ بِالأُجُورِ، يُصَلُّونَ كَمَا نُصَلِّي، وَيَصُومُونَ كَمَا نَصُومُ، وَيَتَصَدَّقُونَ بِفُضُولِ أَمْوَالِهِمْ، قَالَ: أَلَيْسَ قَدْ جَعَلَ اللَّهُ لَكُمْ مَا تَصَدَّقُونَ؟ إِنَّ بِكُلِّ تَسْبِيحَةٍ وَتَحْمِيدَةٍ صَدَقَةً، وَبُضْعُ أَحَدِكُمْ صَدَقَةٌ، قِيلَ: فِي شَهْوَتِهِ صَدَقَةٌ؟ قَالَ: لَوْ وُضِعَ فِي الْحَرَامِ، أَلَيْسَ كَانَ عَلَيْهِ وِزْرٌ؟ ذَلِكَ إِنْ وَضَعَهَا فِي الْحَلاَلِ كَانَ لَهُ أَجْرٌ.
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছ দ্বারা সাহাবায়ে কিরামের ছাওয়াব ও পুণ্যার্জনের কী তীব্র আকাঙ্ক্ষা ছিল তা অনুমান করা যায়। তখন গরীবগণ পুণ্যার্জনের সকল ক্ষেত্রে ধনীদের পাশাপাশি ছিল। কিন্তু ধনীগণ দান-সদাকার মাধ্যমে যে ছাওয়াব অর্জন করতেন তা করতে না পারার কারণে গরীব সাহাবীদের মনে আক্ষেপ ছিল। এ হাদীছে তাঁরা নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে সে আক্ষেপের কথাই প্রকাশ করেছেন এবং জানতে চেয়েছেন কিভাবে তাঁরা তাঁদের এ কমতিটুকু পূরণ করতে পারেন। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম গরীব সাহাবীদের সে আক্ষেপের কদর করেন এবং মমতাভরে তাদেরকে উপায় বাতলে দেন, যা এ হাদীছে বর্ণিত হয়েছে।
এ হাদীছেও তাসবীহ, তাহলীল ইত্যাদিকে সদাকা সাব্যস্ত করা হয়েছে। অর্থাৎ আল্লাহর পথে দানখয়রাত করলে যে ছাওয়াব পাওয়া যায়, এর মাধ্যমেও তেমনি ছাওয়াব পাওয়া যায়। কাজেই যাদের বেশি টাকাপয়সা নেই, সেই গরীবগণ বেশি বেশি তাসবীহ-তাহলীল ও যিকর-আযকারের মাধ্যমে দান-সদাকার দ্বারা পুণ্য অর্জন করতে না পারার প্রতিকার করতে পারে। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ হাদীছে গরীব সাহাবীদেরকে সে পথই দেখিয়েছেন।
বলা হয়েছে স্ত্রী সহবাসেও সদাকার ছাওয়াব হয়। এটা প্রমাণ করে সহীহ নিয়ত দ্বারা মুবাহ কাজও 'ইবাদতে পরিণত হয়। স্ত্রী সহবাসে যদি স্ত্রীর হক আদায় করা, নিজ চরিত্রের হেফাজত করা, স্ত্রীর চরিত্রের হেফাজত করা, তাদের উভয়ের নজরের হেফাজত করা এবং সুসন্তান কামনা করার নিয়ত থাকে, তবে এটা কেবল একটা পার্থিব কাজ হিসেবেই থেকে যায় না; বরং 'ইবাদতের মর্যাদা লাভ করে। এই একই কথা পানাহার করা, হাট-বাজারে যাওয়া, বেচাকেনা করা, চাষাবাদ করা এমনকি বিশ্রাম করার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। ইখলাস ও সহীহ নিয়তের দ্বারা যে-কোনও পার্থিব কাজ, যদি তা শরী'আতসম্মত পন্থায় করা হয়, তবে ‘ইবাদতে পরিণত হয়ে যায় এবং তার বিনিময়ে প্রভূত ছাওয়াব অর্জন করা যায়।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছ দ্বারা জানা যায় সাহাবায়ে কিরামের অন্তরে ছাওয়াব হাসিলের আকাঙ্ক্ষা কত তীব্র ছিল। অনুরূপ আকাঙ্ক্ষা যাতে আমাদের অন্তরেও এসে যায়, আমাদের উচিত সে উপায় খোঁজা।
খ. গরীবদের উচিত দান-সদাকা করতে না পারার কারণে আক্ষেপ না করে যিকর ও তিলাওয়াত দ্বারা তার প্রতিকারে সচেষ্ট থাকা।
গ. যে-কোনও মুবাহ কাজ ইখলাস ও নেক নিয়তের সাথে করা উচিত। তাতেও "ইবাদতের ছাওয়াব হবে।
এ হাদীছেও তাসবীহ, তাহলীল ইত্যাদিকে সদাকা সাব্যস্ত করা হয়েছে। অর্থাৎ আল্লাহর পথে দানখয়রাত করলে যে ছাওয়াব পাওয়া যায়, এর মাধ্যমেও তেমনি ছাওয়াব পাওয়া যায়। কাজেই যাদের বেশি টাকাপয়সা নেই, সেই গরীবগণ বেশি বেশি তাসবীহ-তাহলীল ও যিকর-আযকারের মাধ্যমে দান-সদাকার দ্বারা পুণ্য অর্জন করতে না পারার প্রতিকার করতে পারে। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ হাদীছে গরীব সাহাবীদেরকে সে পথই দেখিয়েছেন।
বলা হয়েছে স্ত্রী সহবাসেও সদাকার ছাওয়াব হয়। এটা প্রমাণ করে সহীহ নিয়ত দ্বারা মুবাহ কাজও 'ইবাদতে পরিণত হয়। স্ত্রী সহবাসে যদি স্ত্রীর হক আদায় করা, নিজ চরিত্রের হেফাজত করা, স্ত্রীর চরিত্রের হেফাজত করা, তাদের উভয়ের নজরের হেফাজত করা এবং সুসন্তান কামনা করার নিয়ত থাকে, তবে এটা কেবল একটা পার্থিব কাজ হিসেবেই থেকে যায় না; বরং 'ইবাদতের মর্যাদা লাভ করে। এই একই কথা পানাহার করা, হাট-বাজারে যাওয়া, বেচাকেনা করা, চাষাবাদ করা এমনকি বিশ্রাম করার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। ইখলাস ও সহীহ নিয়তের দ্বারা যে-কোনও পার্থিব কাজ, যদি তা শরী'আতসম্মত পন্থায় করা হয়, তবে ‘ইবাদতে পরিণত হয়ে যায় এবং তার বিনিময়ে প্রভূত ছাওয়াব অর্জন করা যায়।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছ দ্বারা জানা যায় সাহাবায়ে কিরামের অন্তরে ছাওয়াব হাসিলের আকাঙ্ক্ষা কত তীব্র ছিল। অনুরূপ আকাঙ্ক্ষা যাতে আমাদের অন্তরেও এসে যায়, আমাদের উচিত সে উপায় খোঁজা।
খ. গরীবদের উচিত দান-সদাকা করতে না পারার কারণে আক্ষেপ না করে যিকর ও তিলাওয়াত দ্বারা তার প্রতিকারে সচেষ্ট থাকা।
গ. যে-কোনও মুবাহ কাজ ইখলাস ও নেক নিয়তের সাথে করা উচিত। তাতেও "ইবাদতের ছাওয়াব হবে।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
