আল-আদাবুল মুফরাদ- ইমাম বুখারী রহঃ
আল-আদাবুল মুফরাদের পরিচ্ছেদসমূহ
হাদীস নং: ১১৯
৬৬- প্রতিবেশীকে কষ্ট দিবে না
১১৯। উমারা ইব্ন গুরাব বলেন, তাঁহার ফুফু তাঁহাকে বলিয়াছেন যে, একদা তিনি উম্মুল মু'মিনীন হযরত আয়েশা (রাযিঃ)-কে প্রশ্ন করিলেন ঃ আমাদের মধ্যকার কেহ যখন তাহার স্বামী তাহাকে কামনা করে তখন সে নিজেকে স্বামীর নিকট সমর্পণ করে না-হয় রাগবশত নতুবা প্রবৃত্তি হয় না বলিয়া; ইহাতে কি দোষ আছে ? তিনি বলিলেন ঃ হ্যা, দোষ আছে বৈ কি! (কেননা) তােমার উপর তাহার হক হইতেছে যখন সে তােমাকে কামনা করে, তখন তুমি তাহার নিকট নিজেকে সমর্পণ করিবে-যদিও তুমি তখন উষ্ট্রপৃষ্ঠেই হওনা কেন। রেওয়ায়েতকারিণী বলেন, তখন আমি তাহাকে বলিলাম, আমাদের মধ্যকার কেহ ঋতুমতী হয়, অথচ তাহার ও তাহার স্বামীর একটি মাত্র বিছানা বা লেপ থাকে, তখন সে কি করিবে ? বলিলেন ঃ সে তাহার নিম্নাঙ্গে উত্তমরূপে বস্ত্র কষিয়া বাঁধিবে, অতঃপর তাহার সাথেই শুইবে। উহার উপর দিয়া সে যাহা করিতে পারে তাহা করিবার অধিকার তাহার আছে। উপরন্তু নবী করীম (ﷺ) কি করিয়াছিলেন তাহাও আমি এক্ষুণি তােমাকে বলিতেছি। একদা রাত্রিতে আমার পালা ছিল। আমি কিছু যব পিষিলাম এবং তাহার জন্য পিঠা তৈরী করিলাম। তিনি ঘরে আসিলেন এবং দরজা বন্ধ করিলেন, অতঃপর মসজিদে গিয়া প্রবেশ করিলেন। তাঁহার অভ্যাস ছিল যখন তিনি শয়ন করিতে উদ্যত হইতেন, তখন দরজা বন্ধ করিতেন, মশক বন্ধ করিতেন, পেয়াল বরতন ঘরের একটি পাশে রাখিতেন এবং বাতি নিভাইয়া দিতেন। আমি তখন অপেক্ষায় রহিলাম যে তিনি ফিরিবেন এবং আমি তাঁহাকে পিঠা খাওয়াইব, কিন্তু তিনি ফিরিলেন না। এমনকি শেষ পর্যন্ত নিদ্রা আমাকে আচ্ছন্ন করিয়া ফেলিল এবং শীত তাঁহাকে পীড়া দিতে লাগিল। এমন সময় তিনি আমার নিকট আসিলেন এবং আমাকে তুলিলেন। তারপর বলিলেন ঃ আমাকে উত্তাপ দাও! আমাকে উত্তাপ দাও!! আমি তাহাকে বলিলাম ? আমি তাে ঋতুবতী। তিনি ফরমাইলেন ঃ তথাপি তােমার জানুদ্বয় একটু বিস্তার করা! আমি আমার জানুদ্বয় বিস্তার করিয়া দিলাম, তিনি তাঁহার গণ্ডদেশ ও মস্তক আমার জানুদ্বয়ের উপর রাখিলেন যাহাতে তাহার শরীরেও স্বাভাবিক উত্তাপ আসিল। এমন সময় আমার এক প্রতিবেশীর পােশা ছাগী আসিয়া পড়িল এবং পিঠা খাইতে উদ্যত হইল। আমি তখন উহা তুলিয়া ফেলিলাম এবং উহাকে তাড়া করিলাম। হযরত আয়েশা (রাযিঃ) বলেন ঃ আমার এই নড়াচড়া করায় নবী করীম (ﷺ)-এর ঘুম ভাঙ্গিয়া গেল। আমি তখন ক্ষিপ্রগতিতে উহাকে দরজার দিকে হাঁকাইয়া দিলাম। তখন নবী করীম (ﷺ) ফরমাইলেন ঃ তুমি যে পিঠা উঠাইয়াছ, উহা রাখিয়া দাও এবং তােমার প্রতিবেশীকে তাহার ছাগীর জন্য (কটুবাক্য দ্বারা) পীড়া দিও না।
بَابُ لا يُؤْذِي جَارَهُ
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ يَزِيدَ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ زِيَادٍ قَالَ: حَدَّثَنِي عُمَارَةُ بْنُ غُرَابٍ، أَنَّ عَمَّةً لَهُ حَدَّثَتْهُ، أَنَّهَا سَأَلَتْ عَائِشَةَ أُمَّ الْمُؤْمِنِينَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، فَقَالَتْ: إِنَّ زَوْجَ إِحْدَانَا يُرِيدُهَا فَتَمْنَعُهُ نَفْسَهَا، إِمَّا أَنْ تَكُونَ غَضَبَى أَوْ لَمْ تَكُنْ نَشِيطَةً، فَهَلْ عَلَيْنَا فِي ذَلِكَ مِنْ حَرَجٍ؟ قَالَتْ: نَعَمْ، إِنَّ مِنْ حَقِّهِ عَلَيْكِ أَنْ لَوْ أَرَادَكِ وَأَنْتِ عَلَى قَتَبٍ لَمْ تَمْنَعِيهِ، قَالَتْ: قُلْتُ لَهَا: إِحْدَانَا تَحِيضُ، وَلَيْسَ لَهَا وَلِزَوْجِهَا إِلاَّ فِرَاشٌ وَاحِدٌ أَوْ لِحَافٌ وَاحِدٌ، فَكَيْفَ تَصْنَعُ؟ قَالَتْ: لِتَشُدَّ عَلَيْهَا إِزَارَهَا ثُمَّ تَنَامُ مَعَهُ، فَلَهُ مَا فَوْقَ ذَلِكَ، مَعَ أَنِّي سَوْفَ أُخْبِرُكِ مَا صَنَعَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم: إِنَّهُ كَانَ لَيْلَتِي مِنْهُ، فَطَحَنْتُ شَيْئًا مِنْ شَعِيرٍ، فَجَعَلْتُ لَهُ قُرْصًا، فَدَخَلَ فَرَدَّ الْبَابَ، وَدَخَلَ إِلَى الْمَسْجِدِ، وَكَانَ إِذَا أَرَادَ أَنْ يَنَامَ أَغْلَقَ الْبَابَ، وَأَوْكَأَ الْقِرْبَةَ، وَأَكْفَأَ الْقَدَحَ، وَأطْفَأَ الْمِصْبَاحَ، فَانْتَظَرْتُهُ أَنْ يَنْصَرِفَ فَأُطْعِمُهُ الْقُرْصَ، فَلَمْ يَنْصَرِفْ، حَتَّى غَلَبَنِي النَّوْمُ، وَأَوْجَعَهُ الْبَرْدُ، فَأَتَانِي فَأَقَامَنِي ثُمَّ قَالَ: أَدْفِئِينِي أَدْفِئِينِي، فَقُلْتُ لَهُ: إِنِّي حَائِضٌ، فَقَالَ: وَإِنْ، اكْشِفِي عَنْ فَخِذَيْكِ، فَكَشَفْتُ لَهُ عَنْ فَخِذَيَّ، فَوَضَعَ خَدَّهُ وَرَأْسَهُ عَلَى فَخِذَيَّ حَتَّى دَفِئَ. فَأَقْبَلَتْ شَاةٌ لِجَارِنَا دَاجِنَةٌ فَدَخَلَتْ، ثُمَّ عَمَدَتْ إِلَى الْقُرْصِ فَأَخَذَتْهُ، ثُمَّ أَدْبَرَتْ بِهِ. قَالَتْ: وَقَلِقْتُ عَنْهُ، وَاسْتَيْقَظَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَبَادَرْتُهَا إِلَى الْبَابِ، فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم: خُذِي مَا أَدْرَكْتِ مِنْ قُرْصِكِ، وَلاَ تُؤْذِي جَارَكِ فِي شَاتِهِ.
