আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

৪৯- নবীজী সাঃ ও সাহাবা রাঃ ; মর্যাদা ও বিবিধ ফাযায়েল

হাদীস নং:
আন্তর্জাতিক নং: ৩৬৩২
২০৭৫. ইসলাম আগমনের পর নবুওয়্যাতের নিদর্শনসমূহ
৩৩৭১। আহমদ ইবনে ইসহাক (রাহঃ) .... আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, সা‘দ ইবনে মু‘আয (রাযিঃ) (আনসারী) উমরা আদায় করার জন্য (মক্কা) গমন করলেন এবং সাফওয়ানের পিতা উমাইয়া ইবনে খালাফ এর বাড়িতে তিনি অতিথি হলেন। উমাইয়াও সিরিয়ায় গমনকালে (মদীনায়) সা‘দ (রাযিঃ)- এর বাড়িতে অবস্থান করত। উমাইয়া সা‘দ (রাযিঃ)- কে বলল, অপেক্ষা করুন, যখন দুপুর হবে এবং যখন চলাফেরা কমে যাবে, তখন আপনি যেয়ে তাওয়াফ করে নিবেন। (অবসর মুহূর্তে) সা‘দ (রাযিঃ) তাওয়াফ করছিলেন। এমতাবস্থায় আবু জেহেল এসে হাজির হল। সা‘দ (রাযিঃ)- কে দেখে জিজ্ঞাসা করল, এ ব্যক্তি কে? যে কা‘বার তাওয়াফ করছে? সা‘দ (রাযিঃ) বললেন, আমি সা‘দ।
আবু জেহেল বলল, তুমি নির্বিঘ্নে কা‘বার তাওয়াফ করছ? অথচ তোমরাই মুহাম্মাদ ও তাঁর সাথীদেরকে আশ্রয় দিয়েছ? সা‘দ (রাযিঃ) বললেন, হ্যাঁ। এভাবে দু’জনের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়ে গেল। তখন উমাইয়া সা‘দ (রাযিঃ)- কে বলল, আবুল হাকামের সাথে উচ্চস্বরে কথা বল না, কেননা সে মক্কাবাসীদের (সর্বজন মান্য) নেতা। এরপর সা‘দ (রাযিঃ) বললেন, আল্লাহর কসম! তুমি যদি আমাকে বায়তুল্লাহর তাওয়াফ করতে বাঁধা প্রদান কর, তবে আমিও তোমার সিরিয়ার সাথে ব্যবসা বাণিজ্যের রাস্তা বন্ধ করে দিব।
উমাইয়া সা‘দ (রাযিঃ)- কে তখন বলতে লাগল, তোমার স্বর উচু করো না এবং সে তাঁকে বিরত করতে চেষ্টা করতে লাগল। তখন সা‘দ (রাযিঃ) ক্রোধান্বিত হয়ে বললেন, আমাকে ছেড়ে দাও। আমি মুহাম্মাদ (ﷺ)- কে বলতে শুনেছি, সে তোমাকে হত্যা করবে। উমাইয়া বলল, আমাকেই? তিনি বলেলন, হ্যাঁ (তোমাকেই) উমাইয়া বলল, আল্লাহর কসম মুহাম্মাদ (ﷺ) কখনো মিথ্যা কথা বলেন না। এরপর উমাইয়া তাঁর স্ত্রীর কাছে ফিরে এসে বলল, তুমি কি জানো, আমার ইয়াসরিবী ভাই (মদীনা) আমাকে কি বলেছে? স্ত্রী জিজ্ঞাসা করল কি বলেছে?
উমাইয়া বলল, সে মুহাম্মাদ (ﷺ)- কে বলতে শুনেছে যে, সে আমাকে হত্যা করবে। তার স্ত্রী বলল, আল্লাহর কসম, মুহাম্মাদ (ﷺ) তো মিথ্যা বলেন না। যখন মক্কার মুশরিকরা বদরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হল এবং আহবানকারী আহবান চালাল। তখন উমাইয়ার স্ত্রী তাঁকে স্মরণ করিয়ে দিল, তোমার ইয়াসরিবী ভাই তোমাকে যে কথা বলেছিল সে কথা কি তোমার স্মরণ নেই? তখন উমাইয়া (বদরের যুদ্ধে) না যাওয়াই সিদ্ধান্ত নিল। আবু জেহেল তাকে বলল, তুমি এ অঞ্চলের একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা। (তুমি যদি না যাও তবে কেউ-ই যাবে না) আমাদের সাথে দুই একদিনের পথ চলো। (এরপর না হয় ফিরে আসবে।) উমাইয়া তাদের সাথে চলল। আল্লাহ তাআলার ইচ্ছায় (বদর প্রান্তে মুসলমানদের হাতে) সে নিহত হল।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক নিষ্প্রয়োজন