আল-আদাবুল মুফরাদ- ইমাম বুখারী রহঃ
আল-আদাবুল মুফরাদের পরিচ্ছেদসমূহ
হাদীস নং: ৪০
২০- পিতা যাহাদের প্রতি সদ্ব্যবহার করিতেন তাহাদের প্রতি সদ্ব্যবহার
৪০। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবন উমর (রাযিঃ) হইতে বর্ণিত আছে যে, একদা জনৈক বেদুইনের সহিত সফরে তাঁহার সাক্ষাৎ। সেই বেদুইনের পিতা তাঁহার পিতা হযরত উমরের বন্ধু ছিলেন। তখন বেদুইনটি তাঁহাকে জিজ্ঞাসা করিল ঃ আপনি কি অমুকের পুত্র নন? তিনি বলিলেন ঃ হ্যাঁ! অতঃপর তিনি তাহার সাথে আনা একটি গাধা বেদুইনকে প্রদান করিলেন এবং তাহার নিজ পাগড়ী মাথা হইতে খুলিয়া তাহাকে প্রদান করিলেন, তখন তাহার জনৈক সঙ্গী বলিলেন, ইহাকে দুইটি দিরহাম দিলেই কি যথেষ্ট হইত না?
তখন তিনি বলিলেন ঃ নবী করীম (ﷺ) ফরমাইয়াছেনঃ পিতার বন্ধুত্বকে অটুট রাখ, উহাকে ছিন্ন করিও না; নতুবা আল্লাহ্ তা'আলা তােমার (ঈমানের) আলাে নির্বাপিত করিয়া দিবেন।
তখন তিনি বলিলেন ঃ নবী করীম (ﷺ) ফরমাইয়াছেনঃ পিতার বন্ধুত্বকে অটুট রাখ, উহাকে ছিন্ন করিও না; নতুবা আল্লাহ্ তা'আলা তােমার (ঈমানের) আলাে নির্বাপিত করিয়া দিবেন।
بَابُ بِرِّ مِنْ كَانَ يَصِلُهُ أَبُوهُ
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ صَالِحٍ قَالَ: حَدَّثَنِي اللَّيْثُ، عَنْ خَالِدِ بْنِ يَزِيدَ، عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ دِينَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ: مَرَّ أَعْرَابِيٌّ فِي سَفَرٍ، فَكَانَ أَبُو الأعْرَابِيِّ صَدِيقًا لِعُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، فَقَالَ لِلأَعْرَابِيِّ: أَلَسْتَ ابْنَ فُلاَنٍ؟ قَالَ: بَلَى، فَأَمَرَ لَهُ ابْنُ عُمَرَ بِحِمَارٍ كَانَ يَسْتَعْقِبُ، وَنَزَعَ عِمَامَتَهُ عَنْ رَأْسِهِ فَأَعْطَاهُ. فَقَالَ بَعْضُ مَنْ مَعَهُ: أَمَا يَكْفِيهِ دِرْهَمَانِ؟ فَقَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم: احْفَظْ وُدَّ أَبِيكَ، لاَ تَقْطَعْهُ فَيُطْفِئَ اللَّهُ نُورَكَ.
হাদীসের ব্যাখ্যা:
উদ্ধৃত হাদীছটির বর্ণনাকারী হযরত আব্দুল্লাহ ইবন উমর রাযি. যে প্রেক্ষাপটে হাদীছটি বর্ণনা করেছিলেন সেই প্রেক্ষাপট ও বিস্তারিত ব্যাখ্যা তুলে ধরা হয়েছে।
হযরত আব্দুল্লাহ ইবন উমর রাযি.-এর ঘটনা
আব্দুল্লাহ ইবন দীনার রহ. হযরত আব্দুল্লাহ ইবন উমর রাযি. থেকে এ হাদীছটি বর্ণনা করেছেন। তিনি হযরত আব্দুল্লাহ ইবন উমর রাযি.-এর মাওলা (আযাদকৃত গোলাম)। একবার তিনি হযরত আব্দুল্লাহ ইবন উমর রাযি.-এর সঙ্গে মদীনা মুনাউওয়ারা থেকে মক্কা মুকাররামায় যাচ্ছিলেন। পথে জনৈক বেদুঈনের সঙ্গে দেখা হলে হযরত ইবন উমর রাযি. তার নাম-পরিচয় জিজ্ঞেস করলেন। তাতে জানা গেল সে বেদুঈন তাঁর পিতা হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব রাযি.-এর একজন বন্ধুস্থানীয় লোক। তখন তিনি নিজের কাছে থাকা অতিরিক্ত গাধাটি তাকে দিয়ে দিলেন। সফরকালে এ গাধাটি তিনি নিজের সঙ্গে রাখতেন। উটনীর পিঠে চলতে চলতে ক্লান্ত হয়ে পড়লে তিনি কিছুক্ষণের জন্য ওই গাধাটি ব্যবহার করতেন। তারপর ক্লান্তি দূর হওয়ার পর ফের উটনীর পিঠে সওয়ার হতেন। এরকম প্রয়োজনীয় বাহনটি তো তাকে দিলেনই, সেইসঙ্গে নিজের ব্যবহার করা একটা পাগড়িও তাকে দিলেন ।
বেদুঈনকে এরূপ খাতির করতে দেখে আব্দুল্লাহ ইবন দীনার রহ.-এর আশ্চর্য বোধ হলো। তিনি বলেই ফেললেন যে, সামান্য কিছু পেলেই যারা খুশি হয়ে যায় তাদেরকে এমন দামী বস্তু দেওয়া কেন? এ কথা বলার আগে তিনি তাঁর জন্য দুআ করে নিলেন যে- اصلحك الله (আল্লাহ তাআলা আপনার কল্যাণ করুন) এবং غفر الله لك (আল্লাহ আপনাকে ক্ষমা করুন)। এটা এক সময়কার দীনদারদের মধ্যে ব্যবহৃত সম্বোধনের ভাষা। নিজের চেয়ে বড় ও সম্মানিত ব্যক্তিকে বিশেষ কোনও বিষয়ের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণকালে এরকম দুআ করা হতো। এর দ্বারা তার প্রতি সম্মান প্রদর্শনের পাশাপাশি তার যদি কোনও ভুলও হয়ে থাকে, সেজন্য আল্লাহ তাআলার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা হয়। এর জন্য যে কাজের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয় সেটি ভুল হওয়া জরুরি নয়। সেটি ভুল না হলেও মানুষের জীবনে কোনও না কোনও ভুলত্রুটি ও গুনাহখাতা থাকেই । কাজেই এরকম দুআ যে-কারও জন্যই করা যায়।
যাহোক আব্দুল্লাহ ইবন দীনার রহ. বিস্ময় প্রকাশ করলে হযরত আব্দুল্লাহ ইবন উমর রাযি. বললেন, এই ব্যক্তির পিতা আমার পিতা হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব রাযি.-এর বন্ধু ছিলেন। আর আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি— إنَّ مِنْ أبرِّ البرِّ أنْ يَصِلَ الرّجلُ أهلَ وُدِّ أبِيه بَعْدَ أَنْ يُوَلِّيَ (নেককাজসমূহের মধ্যে একটি বড় নেককাজ হলো কোনও ব্যক্তির তার পিতার মৃত্যুর পর তার বন্ধুদের সঙ্গে সদাচরণ করা)। হাদীছটির অর্থ এরকমও করা যায় যে, পিতার প্রতি একটি উৎকৃষ্ট সদাচরণ এইও যে, তার মৃত্যুর পর তার বন্ধুদের প্রতি সদাচরণ করা হবে। অর্থাৎ বন্ধুদের প্রতি সদাচরণ প্রকারান্তরে পিতার প্রতিই সদাচরণ। কেননা এর দ্বারা বন্ধুবর্গের মধ্যে পিতার ইজ্জত-সম্মান রক্ষা পায়। হযরত ইবন উমর রাযি. বোঝাচ্ছেন যে, আমি এ অনুসরণার্থেই এই ব্যক্তির প্রতি এরকম আচরণ করেছি।
লক্ষণীয়, ওই ব্যক্তি ছিল বেদুঈন, আমাদের অঞ্চলে যেমন কোনও গ্রাম্য ব্যক্তি। সামাজিকভাবে শহুরে ব্যক্তিদের মত তাদেরকে বিশেষ গুরুত্বের দৃষ্টিতে দেখা হয় না । কিন্তু হযরত ইবন উমর রাযি. তাকে অবজ্ঞার দৃষ্টিতে দেখলেন না। কেননা এ জাতীয় সামাজিক বিভাজন ইসলামসম্মত নয়। তিনি তাকে দেখেছেন পিতার বন্ধুরূপে। বন্ধু শহুরে হোক বা গ্রামের হোক, বন্ধুত্বের মর্যাদা তার প্রাপ্য। অনুরূপ যে-কোনও ধরনের সম্পর্কের ক্ষেত্রে সম্পর্কটাই লক্ষণীয়। বাসস্থান, পেশা ইত্যাদি বিবেচ্য নয়।
উল্লেখ্য, একই কথা মায়ের সখী বান্ধবীদের বেলায়ও প্রযোজ্য।
হাদীছ থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. পিতার মৃত্যুর পরও তার বন্ধু-বান্ধবদের ভুলে যাওয়া উচিত নয়। তাদের খেদমত করাকে পিতৃসেবার বিকল্পরূপে গ্রহণ করা উচিত।
খ. পিতার জীবদ্দশায়ও তার বন্ধু-বান্ধবদের সম্মান করা উচিত। তাতে পিতার মানসম্মান রক্ষা হয়।
গ. পিতার বন্ধু-বান্ধবদের প্রতি যা করণীয়, মায়ের সখী বান্ধবীদের বেলায়ও তা প্রযোজ্য।
ঘ. পিতা-মাতার সাথে যাদের সম্পর্ক, তারা কোথাকার বাসিন্দা বা কোন্ পেশার লোক তা বিবেচ্য নয়; সম্পর্কটাকেই মূল্যায়ন করা চাই।
ঙ. শ্রদ্ধেয় ব্যক্তির কোনও ত্রুটি-বিচ্যুতির প্রতি তার দৃষ্টি আকর্ষণ করার সময় প্রথমে কথা ও কাজে তার প্রতি শ্রদ্ধা-ভক্তি প্রদর্শন করা চাই।
চ. মাগফিরাতের দুআ জীবিত ও মৃত এবং বড় ও ছোট যে-কারও জন্যই এবং পেছনে ও সামনাসামনি যে-কোনও অবস্থায়ই করা যায়।
হযরত আব্দুল্লাহ ইবন উমর রাযি.-এর ঘটনা
আব্দুল্লাহ ইবন দীনার রহ. হযরত আব্দুল্লাহ ইবন উমর রাযি. থেকে এ হাদীছটি বর্ণনা করেছেন। তিনি হযরত আব্দুল্লাহ ইবন উমর রাযি.-এর মাওলা (আযাদকৃত গোলাম)। একবার তিনি হযরত আব্দুল্লাহ ইবন উমর রাযি.-এর সঙ্গে মদীনা মুনাউওয়ারা থেকে মক্কা মুকাররামায় যাচ্ছিলেন। পথে জনৈক বেদুঈনের সঙ্গে দেখা হলে হযরত ইবন উমর রাযি. তার নাম-পরিচয় জিজ্ঞেস করলেন। তাতে জানা গেল সে বেদুঈন তাঁর পিতা হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব রাযি.-এর একজন বন্ধুস্থানীয় লোক। তখন তিনি নিজের কাছে থাকা অতিরিক্ত গাধাটি তাকে দিয়ে দিলেন। সফরকালে এ গাধাটি তিনি নিজের সঙ্গে রাখতেন। উটনীর পিঠে চলতে চলতে ক্লান্ত হয়ে পড়লে তিনি কিছুক্ষণের জন্য ওই গাধাটি ব্যবহার করতেন। তারপর ক্লান্তি দূর হওয়ার পর ফের উটনীর পিঠে সওয়ার হতেন। এরকম প্রয়োজনীয় বাহনটি তো তাকে দিলেনই, সেইসঙ্গে নিজের ব্যবহার করা একটা পাগড়িও তাকে দিলেন ।
বেদুঈনকে এরূপ খাতির করতে দেখে আব্দুল্লাহ ইবন দীনার রহ.-এর আশ্চর্য বোধ হলো। তিনি বলেই ফেললেন যে, সামান্য কিছু পেলেই যারা খুশি হয়ে যায় তাদেরকে এমন দামী বস্তু দেওয়া কেন? এ কথা বলার আগে তিনি তাঁর জন্য দুআ করে নিলেন যে- اصلحك الله (আল্লাহ তাআলা আপনার কল্যাণ করুন) এবং غفر الله لك (আল্লাহ আপনাকে ক্ষমা করুন)। এটা এক সময়কার দীনদারদের মধ্যে ব্যবহৃত সম্বোধনের ভাষা। নিজের চেয়ে বড় ও সম্মানিত ব্যক্তিকে বিশেষ কোনও বিষয়ের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণকালে এরকম দুআ করা হতো। এর দ্বারা তার প্রতি সম্মান প্রদর্শনের পাশাপাশি তার যদি কোনও ভুলও হয়ে থাকে, সেজন্য আল্লাহ তাআলার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা হয়। এর জন্য যে কাজের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয় সেটি ভুল হওয়া জরুরি নয়। সেটি ভুল না হলেও মানুষের জীবনে কোনও না কোনও ভুলত্রুটি ও গুনাহখাতা থাকেই । কাজেই এরকম দুআ যে-কারও জন্যই করা যায়।
যাহোক আব্দুল্লাহ ইবন দীনার রহ. বিস্ময় প্রকাশ করলে হযরত আব্দুল্লাহ ইবন উমর রাযি. বললেন, এই ব্যক্তির পিতা আমার পিতা হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব রাযি.-এর বন্ধু ছিলেন। আর আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি— إنَّ مِنْ أبرِّ البرِّ أنْ يَصِلَ الرّجلُ أهلَ وُدِّ أبِيه بَعْدَ أَنْ يُوَلِّيَ (নেককাজসমূহের মধ্যে একটি বড় নেককাজ হলো কোনও ব্যক্তির তার পিতার মৃত্যুর পর তার বন্ধুদের সঙ্গে সদাচরণ করা)। হাদীছটির অর্থ এরকমও করা যায় যে, পিতার প্রতি একটি উৎকৃষ্ট সদাচরণ এইও যে, তার মৃত্যুর পর তার বন্ধুদের প্রতি সদাচরণ করা হবে। অর্থাৎ বন্ধুদের প্রতি সদাচরণ প্রকারান্তরে পিতার প্রতিই সদাচরণ। কেননা এর দ্বারা বন্ধুবর্গের মধ্যে পিতার ইজ্জত-সম্মান রক্ষা পায়। হযরত ইবন উমর রাযি. বোঝাচ্ছেন যে, আমি এ অনুসরণার্থেই এই ব্যক্তির প্রতি এরকম আচরণ করেছি।
লক্ষণীয়, ওই ব্যক্তি ছিল বেদুঈন, আমাদের অঞ্চলে যেমন কোনও গ্রাম্য ব্যক্তি। সামাজিকভাবে শহুরে ব্যক্তিদের মত তাদেরকে বিশেষ গুরুত্বের দৃষ্টিতে দেখা হয় না । কিন্তু হযরত ইবন উমর রাযি. তাকে অবজ্ঞার দৃষ্টিতে দেখলেন না। কেননা এ জাতীয় সামাজিক বিভাজন ইসলামসম্মত নয়। তিনি তাকে দেখেছেন পিতার বন্ধুরূপে। বন্ধু শহুরে হোক বা গ্রামের হোক, বন্ধুত্বের মর্যাদা তার প্রাপ্য। অনুরূপ যে-কোনও ধরনের সম্পর্কের ক্ষেত্রে সম্পর্কটাই লক্ষণীয়। বাসস্থান, পেশা ইত্যাদি বিবেচ্য নয়।
উল্লেখ্য, একই কথা মায়ের সখী বান্ধবীদের বেলায়ও প্রযোজ্য।
হাদীছ থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. পিতার মৃত্যুর পরও তার বন্ধু-বান্ধবদের ভুলে যাওয়া উচিত নয়। তাদের খেদমত করাকে পিতৃসেবার বিকল্পরূপে গ্রহণ করা উচিত।
খ. পিতার জীবদ্দশায়ও তার বন্ধু-বান্ধবদের সম্মান করা উচিত। তাতে পিতার মানসম্মান রক্ষা হয়।
গ. পিতার বন্ধু-বান্ধবদের প্রতি যা করণীয়, মায়ের সখী বান্ধবীদের বেলায়ও তা প্রযোজ্য।
ঘ. পিতা-মাতার সাথে যাদের সম্পর্ক, তারা কোথাকার বাসিন্দা বা কোন্ পেশার লোক তা বিবেচ্য নয়; সম্পর্কটাকেই মূল্যায়ন করা চাই।
ঙ. শ্রদ্ধেয় ব্যক্তির কোনও ত্রুটি-বিচ্যুতির প্রতি তার দৃষ্টি আকর্ষণ করার সময় প্রথমে কথা ও কাজে তার প্রতি শ্রদ্ধা-ভক্তি প্রদর্শন করা চাই।
চ. মাগফিরাতের দুআ জীবিত ও মৃত এবং বড় ও ছোট যে-কারও জন্যই এবং পেছনে ও সামনাসামনি যে-কোনও অবস্থায়ই করা যায়।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
