আল জামিউল কাবীর- ইমাম তিরমিযী রহঃ
৪৮. নবীজী সাঃ ও সাহাবা রাঃ ; মর্যাদা ও বিবিধ ফাযায়েল
হাদীস নং: ৩৮৫৪
আন্তর্জাতিক নং: ৩৮৫৪
পরিচ্ছেদঃ বারা' ইবন মালিক (রাযিঃ)-এর মর্যাদা ও গুণাবলী
৩৮৫৪। আব্দুল্লাহ ইবন আবু যিয়াদ (রাহঃ)... আনাস ইবন মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন : রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেন: কত এমন আল্লাহর বান্দা উস্কোখুস্কো ধুলিধূসরিত যাদের চুল, গায়ে যাদের ফাটা-পুরানা বস্ত্র কেউ কোন মূল্য দেয় না তাদের। কিন্তু (আল্লাহর কাছে তারা এত মর্যাদা পায় যে) কোন বিষয়ে যদি আল্লাহর কাছে কান করে বসে, তবে আল্লাহ্ তার সেই কসমকে বাস্তবায়িত করেন। বারা' ইবন আযিব হল এই ধরনের ব্যক্তিদের অন্যতম । এ হাদীসটি হাসান-গারীর।
بَابُ مَنَاقِبِ البَرَاءِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أَبِي زِيَادٍ قال: حَدَّثَنَا سَيَّارٌ قال: حَدَّثَنَا جَعْفَرُ بْنُ سُلَيْمَانَ قال: حَدَّثَنَا ثَابِتٌ، وَعَلِيُّ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «كَمْ مِنْ أَشْعَثَ أَغْبَرَ ذِي طِمْرَيْنِ لَا يُؤْبَهُ لَهُ لَوْ أَقْسَمَ عَلَى اللَّهِ لَأَبَرَّهُ مِنْهُمُ البَرَاءُ بْنُ مَالِكٍ»: «هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الوَجْهِ»
হাদীসের ব্যাখ্যা:
সারকথা এর দ্বারা এমন গরীব দীনদারকে বোঝানো হয়, যে নির্মোহ, বিনয়নম্র, প্রচারবিমুখ ও অতি সাধারণ জীবনযাপনকারী। বাক্যের পরবর্তী অংশটি প্রথম অংশের বিশেষণ, যা দ্বারা আল্লাহ তাআলার কাছে এ শ্রেণীর লোকদের মর্যাদা তুলে ধরা হয়েছে। বলা হচ্ছে- لو أقسم على الله لأبره (যে আল্লাহর নামে শপথ করলে আল্লাহ অবশ্যই তার শপথ রক্ষা করেন)। অর্থাৎ তার শপথের মর্যাদা রক্ষার্থে সে যে উদ্দেশ্যে শপথ করেছে, আল্লাহ তাআলা তা পূর্ণ করেন। এ ব্যাপারে হযরত আনাস ইবনুন নাযর রাযি. ও তাঁর বোন রুবায়্যি রাযি.-এর ঘটনা উল্লেখযোগ্য।
হযরত রুবায়্যি রাযি.-এর সঙ্গে একবার এক মহিলার কলহ দেখা দেয়। তাতে হযরত রুবায়্যি রাযি.-এর এক আঘাতে সে মহিলার একটি দাঁত ভেঙে যায়। তাঁর পক্ষের লোকজন সে মহিলার পক্ষের লোকজনকে অনুরোধ জানাল যেন তারা ক্ষমা করে দেয়। তারা ক্ষমা করতে রাজি হল না। তারপর অনুরোধ জানাল, তাহলে তোমরা এর অর্থমূল্য নিয়ে নাও। তাতেও রাজি হল না। তাদের এক দাবি- দাঁতের বদলে দাঁত, আমরা রুবায়্যিরও একটা দাঁত ভেঙ্গে দেব।
শেষপর্যন্ত বিচার আসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদালতে। তিনি রায় দিলেন- রুবায়্যিরও দাঁত ভেঙ্গে দেওয়া হবে। এ রায় শুনে হযরত আনাস ইবনুন নাযর রাযি. বলে উঠলেন- রুবায়্যির দাঁত ভেঙ্গে ফেলা হবে? ইয়া রাসূলাল্লাহ! ওই আল্লাহর কসম, যিনি আপনাকে সত্যসহ পাঠিয়েছেন! রুবায়্যির দাঁত ভাঙ্গা হবে না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তুমি কী বলছ হে আনাস, এটা তো আল্লাহর বিধান, কিসাস গ্রহণ তাঁর কিতাবের ফয়সালা? কিন্তু তাঁর একই কথা- তার দাঁত ভাঙ্গা হবে না। এটা কুরআনের বিধান ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ফয়সালা অমান্য করা নয়; বরং আল্লাহর প্রতি গভীর আস্থার বহিঃপ্রকাশ। তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস ছিল, আল্লাহ তাআলা কোনও সহজ সুরত পয়দা করে দেবেন। সে কারণেই তিনি কসম করে বলছিলেন- তার দাঁত ভাঙ্গা হবে না। আল্লাহ তাআলা তাঁর কসমের মর্যাদা রাখলেন। অপরপক্ষ কিসাস গ্রহণের দাবি ত্যাগ করল এবং অর্থদণ্ড গ্রহণে রাজি হয়ে গেল। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আকস্মিক পরিবর্তনে আশ্চর্য হয়ে গেলেন। তারপর তিনি মন্তব্য করলেন إن من عباد الله من لو أقسم على الله لأبره "আল্লাহর এমন কোনও কোনও বান্দাও আছে, যে আল্লাহর নামে কসম করলে আল্লাহ তা পূর্ণ করেন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. ভোগ-বিলাসিতা পরিহার করে যথাসম্ভব যুহদ ও সাদামাটা জীবনযাপনে অভ্যস্ত হওয়া চাই ।
হযরত রুবায়্যি রাযি.-এর সঙ্গে একবার এক মহিলার কলহ দেখা দেয়। তাতে হযরত রুবায়্যি রাযি.-এর এক আঘাতে সে মহিলার একটি দাঁত ভেঙে যায়। তাঁর পক্ষের লোকজন সে মহিলার পক্ষের লোকজনকে অনুরোধ জানাল যেন তারা ক্ষমা করে দেয়। তারা ক্ষমা করতে রাজি হল না। তারপর অনুরোধ জানাল, তাহলে তোমরা এর অর্থমূল্য নিয়ে নাও। তাতেও রাজি হল না। তাদের এক দাবি- দাঁতের বদলে দাঁত, আমরা রুবায়্যিরও একটা দাঁত ভেঙ্গে দেব।
শেষপর্যন্ত বিচার আসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদালতে। তিনি রায় দিলেন- রুবায়্যিরও দাঁত ভেঙ্গে দেওয়া হবে। এ রায় শুনে হযরত আনাস ইবনুন নাযর রাযি. বলে উঠলেন- রুবায়্যির দাঁত ভেঙ্গে ফেলা হবে? ইয়া রাসূলাল্লাহ! ওই আল্লাহর কসম, যিনি আপনাকে সত্যসহ পাঠিয়েছেন! রুবায়্যির দাঁত ভাঙ্গা হবে না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তুমি কী বলছ হে আনাস, এটা তো আল্লাহর বিধান, কিসাস গ্রহণ তাঁর কিতাবের ফয়সালা? কিন্তু তাঁর একই কথা- তার দাঁত ভাঙ্গা হবে না। এটা কুরআনের বিধান ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ফয়সালা অমান্য করা নয়; বরং আল্লাহর প্রতি গভীর আস্থার বহিঃপ্রকাশ। তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস ছিল, আল্লাহ তাআলা কোনও সহজ সুরত পয়দা করে দেবেন। সে কারণেই তিনি কসম করে বলছিলেন- তার দাঁত ভাঙ্গা হবে না। আল্লাহ তাআলা তাঁর কসমের মর্যাদা রাখলেন। অপরপক্ষ কিসাস গ্রহণের দাবি ত্যাগ করল এবং অর্থদণ্ড গ্রহণে রাজি হয়ে গেল। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আকস্মিক পরিবর্তনে আশ্চর্য হয়ে গেলেন। তারপর তিনি মন্তব্য করলেন إن من عباد الله من لو أقسم على الله لأبره "আল্লাহর এমন কোনও কোনও বান্দাও আছে, যে আল্লাহর নামে কসম করলে আল্লাহ তা পূর্ণ করেন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. ভোগ-বিলাসিতা পরিহার করে যথাসম্ভব যুহদ ও সাদামাটা জীবনযাপনে অভ্যস্ত হওয়া চাই ।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
