আল জামিউল কাবীর- ইমাম তিরমিযী রহঃ
৪৭. নবীজী ﷺ থেকে বর্ণিত যাবতীয় দোয়া-জিকির
হাদীস নং: ৩৩৮০
আন্তর্জাতিক নং: ৩৩৮০
যে সম্প্রদায় কোন মজলিসে বসে কিন্তু আল্লাহর যিক্র করে না
৩৩৮০. মুহাম্মাদ ইবনে বাশশার (রাহঃ) .... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, তারা সাক্ষ্য দিয়ে বলেন যে নবী (ﷺ) বলেছেনঃ কোন সম্প্রদায় যখন কোন মজলিসে বসে কিন্তু সেখানে তারা যদি আল্লাহর যিক্র না করে এবং তাদের নবীর উপর দরুদ পাঠ না করে, তবে তা তাদের জন্য আফসোস ও ক্ষতির কারণ হবে। ইচ্ছা করলে আল্লাহ্ তাদের শস্তি দিবেন আর ইচ্ছা করলে তাদের তিনি মাফ করে দিবেন।
হাদীসটি হাসান। আবু হুরায়রা (রাযিঃ) সূত্রে নবী (ﷺ) থেকে একাধিকভাবে এটি বর্ণনা আছে।
হাদীসটি হাসান। আবু হুরায়রা (রাযিঃ) সূত্রে নবী (ﷺ) থেকে একাধিকভাবে এটি বর্ণনা আছে।
باب فِي الْقَوْمِ يَجْلِسُونَ وَلاَ يَذْكُرُونَ اللَّهَ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ صَالِحٍ، مَوْلَى التَّوْأَمَةِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، رضى الله عنه عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَا جَلَسَ قَوْمٌ مَجْلِسًا لَمْ يَذْكُرُوا اللَّهَ فِيهِ وَلَمْ يُصَلُّوا عَلَى نَبِيِّهِمْ إِلاَّ كَانَ عَلَيْهِمْ تِرَةً فَإِنْ شَاءَ عَذَّبَهُمْ وَإِنْ شَاءَ غَفَرَ لَهُمْ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَقَدْ رُوِيَ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَمَعْنَى قَوْلِهِ تِرَةً يَعْنِي حَسْرَةً وَنَدَامَةً . وَقَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْمَعْرِفَةِ بِالْعَرَبِيَّةِ: التِّرَةُ هُوَ الثَّأْرُ
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছে প্রতিটি মজলিস ও সভা-সেমিনারে আল্লাহ তা'আলার যিকির ও স্মরণ করার প্রতি উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। মজলিসে বিভিন্ন লোক একত্র হয়। তাতে নানারকম কথা হয়। সেসব কথা মানুষের অন্তরে উদাসীনতা সৃষ্টি করে। ফলে মানুষ আল্লাহর স্মরণ থেকে গাফেল হয়ে যায়। সে গাফলাতের ভেতর মজলিসের পুরোটা সময়ই কেটে যায়। অথচ মানুষের প্রতিটি মুহূর্ত কত মূল্যবান। এ মূল্যবান সময় নষ্ট করার কারণে কিয়ামতের দিন বড়ই আক্ষেপ হবে। দুনিয়ার সময়টা তো আখিরাতের পুঁজি সংগ্রহের জন্যই। সে পুঁজি সংগ্রহ ছাড়া এমনি এমনিই সময়টা নষ্ট হয়ে যাওয়া কতইনা ক্ষতিকর। তাই এ হাদীছে আমাদের সতর্ক করা হয়েছে যেন আমরা কোনও মজলিস অবহেলার ভেতর না কাটাই। অর্থাৎ এমনভাবে না কাটে যে, তাতে আল্লাহর কোনও যিকির করা হয়নি। যিকির কথাটি ব্যাপক। কুরআন তিলাওয়াত, সুবহানাল্লাহ-আলহামদুলিল্লাহ জপা, সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজে নিষেধ করা, নসীহত করা, দরূদ পড়া সবই আল্লাহর যিকির। এসব যিকিরের যে-কোনও একটি করলেও মজলিস মূল্যবান হয়ে হয়। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি দরূদপাঠ অতি মূল্যবান যিকির। এ যিকির যত বেশি করা যায় ততোই লাভ। কোনওরকমের যিকির না করাটা নেহাৎ ক্ষতিকর। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-
الا كان عليهم ترة (তাদের জন্য সে মজলিস ক্ষতির কারণ হবে)। ترة এর অর্থ ক্ষতি,দায়,আক্ষেপ, এরূপ মজলিসকে আক্ষেপের কারণ বলা হয়েছে। আক্ষেপ হবে অহেতুক সময় নষ্ট হওয়ার কারণে। যিকিরবিহীন সময় পার করা সময় নষ্ট করাই বটে। অপচয় তো কোনওকিছুরই জায়েয নেই। এ অবস্থায় মহামূল্যবান সময় নষ্ট করা কীভাবে জায়েয হতে পারে? তা মোটেই জায়েয নয়; বরং অপরাধ। তাই তো এর পরে ইরশাদ হয়েছে-
فَإِنْ شَاءَ عَذَّبَهُمْ، وَإِن شَاءَ غَفَرَ أَنَّهُمْ (আল্লাহ চাইলে তাদেরকে শাস্তি দেবেন, আর চাইলে তাদেরকে ক্ষমা করবেন) বোঝা গেল প্রতিটি মজলিসে আল্লাহ তা'আলার কোনও না কোনওরকমের যিকির ও স্মরণ অবশ্যই করা চাই। তা না করলে আখিরাতে শান্তিপ্রাপ্ত হওয়ার আশঙ্কা আছে। হাঁ, আল্লাহ তা'আলা মহাক্ষমাশীল। তিনি চাইলে ক্ষমাও করতে পারেন। কিন্তু ক্ষমা করতে পারেন বলে গাফলাতি করা কিছুতেই জায়েয হতে পারে না। মনে ভয় থাকলেই ক্ষমার আশা থাকে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. যে-কোনও মজলিসে কিছু না কিছু যিকির অবশ্যই করা চাই।
খ. নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি দরূদপাঠ অতি মূল্যবান যিকির।
গ. সময় অতি মূল্যবান। তা অহেতুক নষ্ট করতে নেই।
الا كان عليهم ترة (তাদের জন্য সে মজলিস ক্ষতির কারণ হবে)। ترة এর অর্থ ক্ষতি,দায়,আক্ষেপ, এরূপ মজলিসকে আক্ষেপের কারণ বলা হয়েছে। আক্ষেপ হবে অহেতুক সময় নষ্ট হওয়ার কারণে। যিকিরবিহীন সময় পার করা সময় নষ্ট করাই বটে। অপচয় তো কোনওকিছুরই জায়েয নেই। এ অবস্থায় মহামূল্যবান সময় নষ্ট করা কীভাবে জায়েয হতে পারে? তা মোটেই জায়েয নয়; বরং অপরাধ। তাই তো এর পরে ইরশাদ হয়েছে-
فَإِنْ شَاءَ عَذَّبَهُمْ، وَإِن شَاءَ غَفَرَ أَنَّهُمْ (আল্লাহ চাইলে তাদেরকে শাস্তি দেবেন, আর চাইলে তাদেরকে ক্ষমা করবেন) বোঝা গেল প্রতিটি মজলিসে আল্লাহ তা'আলার কোনও না কোনওরকমের যিকির ও স্মরণ অবশ্যই করা চাই। তা না করলে আখিরাতে শান্তিপ্রাপ্ত হওয়ার আশঙ্কা আছে। হাঁ, আল্লাহ তা'আলা মহাক্ষমাশীল। তিনি চাইলে ক্ষমাও করতে পারেন। কিন্তু ক্ষমা করতে পারেন বলে গাফলাতি করা কিছুতেই জায়েয হতে পারে না। মনে ভয় থাকলেই ক্ষমার আশা থাকে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. যে-কোনও মজলিসে কিছু না কিছু যিকির অবশ্যই করা চাই।
খ. নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি দরূদপাঠ অতি মূল্যবান যিকির।
গ. সময় অতি মূল্যবান। তা অহেতুক নষ্ট করতে নেই।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
