আল জামিউল কাবীর- ইমাম তিরমিযী রহঃ
৪৬. কুরআনের তাফসীর অধ্যায়
হাদীস নং: ৩৩০১
আন্তর্জাতিক নং: ৩৩০১
সূরা আল-মুজাদালা
৩৩০১. আব্দ ইবনে হুমায়দ (রাহঃ) ...... আনাস ইবনে মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক বার এক ইয়াহুদী নবী (ﷺ) ও সাহাবীদের কছে এসে বললঃ আসসামু আলাইকুম (আস-সাম অর্থ মৃত্যু,ধ্বংস। কিন্তু ইহুদীটি এমন ভাবে এর উচ্চারণ করলো যে, সাহাবীগণ মনে করলেন সে বুঝি আসসালামু বলেছে) তারা এর জবাব দিলেন। নবী(ﷺ) বললেনঃ এ কি বলেছে তোমরা কি তা বুঝতে পেরেছ?
সাহাবীরা বলল আল্লাহ এবং তার রাসুলই ভাল জানেন। হে আল্লাহর নবী! এত সালাম করেছে। তিনি বললেন না সে ত অমুক কথা বলেছে। ইহুদীটিকে ফিরিয়ে নিয়ে এস। সাহাবীরা তাকে ফিরিয়ে নিয়ে এলেন। নবীজী (ﷺ) তাকে বললেনঃ তুমি কি আমাদেরকে আসসামু আলাইকুম বলেছিলে?
সে বলল হ্যাঁ। তখন নবীজী (ﷺ) বললেনঃ কোন কিতাবী ব্যক্তি (ইহুদী বা খৃষ্টান) যদি তোমাদের সালাম দেয় তবে তোমরা এর উত্তরে বলবেঃ ’আলাইকা মা কুলতা’ তুমি যা বলেছ তাই তোমার উপর আপতিত হোক। আনন্তর তিনি পাঠ করলেনঃ
وإِذَا جَاءُوكَ حَيَّوْكَ بِمَا لَمْ يُحَيِّكَ بِهِ اللَّهُ
এরা যখন তোমাদের নিকট আসে তখন তারা তোমাকে এমন কথা দ্বারা আভিবাধন করে যাদ্বারা আল্লাহ তোমাকে আভিবাদন করেন নি। তারা মনে মনে বলে আমরা যা বলি এর জন্য আল্লাহ আমাদের না জানি শাস্তি দিয়ে দেন। জাহান্নামই এদের যথাযোগ্য শাস্তি। যেখানে তারা প্রবেশ করবে। কত নিকৃষ্ট সেই আবাস। (সূরা মুজাদালা ৫৮ঃ ৮)।
সাহাবীরা বলল আল্লাহ এবং তার রাসুলই ভাল জানেন। হে আল্লাহর নবী! এত সালাম করেছে। তিনি বললেন না সে ত অমুক কথা বলেছে। ইহুদীটিকে ফিরিয়ে নিয়ে এস। সাহাবীরা তাকে ফিরিয়ে নিয়ে এলেন। নবীজী (ﷺ) তাকে বললেনঃ তুমি কি আমাদেরকে আসসামু আলাইকুম বলেছিলে?
সে বলল হ্যাঁ। তখন নবীজী (ﷺ) বললেনঃ কোন কিতাবী ব্যক্তি (ইহুদী বা খৃষ্টান) যদি তোমাদের সালাম দেয় তবে তোমরা এর উত্তরে বলবেঃ ’আলাইকা মা কুলতা’ তুমি যা বলেছ তাই তোমার উপর আপতিত হোক। আনন্তর তিনি পাঠ করলেনঃ
وإِذَا جَاءُوكَ حَيَّوْكَ بِمَا لَمْ يُحَيِّكَ بِهِ اللَّهُ
এরা যখন তোমাদের নিকট আসে তখন তারা তোমাকে এমন কথা দ্বারা আভিবাধন করে যাদ্বারা আল্লাহ তোমাকে আভিবাদন করেন নি। তারা মনে মনে বলে আমরা যা বলি এর জন্য আল্লাহ আমাদের না জানি শাস্তি দিয়ে দেন। জাহান্নামই এদের যথাযোগ্য শাস্তি। যেখানে তারা প্রবেশ করবে। কত নিকৃষ্ট সেই আবাস। (সূরা মুজাদালা ৫৮ঃ ৮)।
بَابٌ: وَمَنْ سُورَةِ الْمُجَادَلَةِ
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا يُونُسُ، عَنْ شَيْبَانَ، عَنْ قَتَادَةَ، حَدَّثَنَا أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ، أَنَّ يَهُودِيًّا، أَتَى عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَأَصْحَابِهِ فَقَالَ السَّامُ عَلَيْكُمْ فَرَدَّ عَلَيْهِ الْقَوْمُ فَقَالَ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " هَلْ تَدْرُونَ مَا قَالَ هَذَا " . قَالُوا اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ سَلَّمَ يَا نَبِيَّ اللَّهِ . قَالَ " لاَ وَلَكِنَّهُ قَالَ كَذَا وَكَذَا رُدُّوهُ عَلَىَّ " . فَرَدُّوهُ قَالَ " قُلْتَ السَّامُ عَلَيْكُمْ " . قَالَ نَعَمْ . قَالَ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عِنْدَ ذَلِكَ " إِذَا سَلَّمَ عَلَيْكُمْ أَحَدٌ مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ فَقُولُوا عَلَيْكَ " . قَالَ " عَلَيْكَ مَا قُلْتَ " . قَالَ : (وإِذَا جَاءُوكَ حَيَّوْكَ بِمَا لَمْ يُحَيِّكَ بِهِ اللَّهُ ) . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
হাদীসের ব্যাখ্যা:
'আসসালামু আলাইকুম' শব্দে সালাম দেওয়া এবং এর উত্তরে ওয়া আলাইকুমুস সালাম বলা ইসলামের নিদর্শন। এটা কেবল মুসলিমদের বেলায়ই প্রযোজ্য। এ শব্দে যেমন অমুসলিমদের সালাম দেওয়া জায়েয নয়, তেমনি এভাবে তাদের সালামের জবাব দেওয়াও জায়েয নয়। কাজেই তারা কোনও মুসলিমকে আসসালামু আলাইকুম শব্দে সালাম দিলে তার উত্তরে ওয়া আলাইকুমুস সালাম বলা যাবে না। কেবল وَعَلَيْكُمْ (তোমাদের প্রতিও) বলতে হবে, যেমনটা আলোচ্য হাদীছে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, মদীনার ইহুদীরা মুসলিমদেরকে যখন সালাম দিত, তখন বলত- السَّامُ عَلَيْكُمْ (তোমাদের প্রতি ধ্বংস পতিত হোক অর্থাৎ তোমরা ধ্বংস হও বা তোমরা মরো)। কুরআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছে-
وَإِذَا جَاءُوكَ حَيَّوْكَ بِمَا لَمْ يُحَيِّكَ بِهِ اللَّهُ
'এবং (হে রাসূল!) তারা তোমার কাছে যখন আসে, তখন তারা তোমাকে এমন কথা দ্বারা অভিবাদন জানায়, যা দ্বারা আল্লাহ তোমাকে অভিবাদন জানাননি’। (সূরা মুজাদালা, আয়াত ৮)
একবার কয়েকজন ইহুদী নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে সাক্ষাৎ করল। তখন তারা السَّامُ عَلَيْكُمْ বলে অভিবাদন জানিয়েছিল। উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রাযি. উত্তর দিলেন-
بَلْ عَلَيْكُمُ السَّامُ وَاللَّعْنَةُ
'বরং তোমাদের উপর পতিত হোক ধ্বংস ও লা'নত।'
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ক্ষান্ত হও হে আয়েশা। তারপর বললেন-
إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الرِّفْقَ فِي الْأَمْرِ كُلِّهِ
'আল্লাহ সকল বিষয়ে কোমলতা পসন্দ করেন।'
হযরত আয়েশা রাযি. বললেন, আপনি শোনেননি তারা কী বলেছে? তিনি বললেন, আমিও তো বলেছি وَعَلَيْكُمْ (তোমাদের প্রতিও)। (সহীহ মুসলিম: ২১৬৫)
অর্থাৎ এতটুকু দ্বারাই উত্তর হয়ে গেছে। শুধু শুধু শক্ত কথা বলার কী প্রয়োজন?
মোটকথা তাদের বিকৃত সালামের উত্তরে وَعَلَيْكُمْ বলাই যথেষ্ট। এর অর্থ হয় আমাদের উপর যে বদদু'আ তোমরা করেছ, অনুরূপ বদদু'আ তোমাদের উপরও। এ প্রসঙ্গে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-
وَإِنَّا نُجَابُ عَلَيْهِمْ وَلَا يُجَابُونَ عَلَيْنَا
তাদের প্রতি আমাদের বদদু'আ কবুল হবে। কিন্তু আমাদের প্রতি তাদের বদদু'আ কবুল হবে না। (সহীহ মুসলিম : ২১৬৬; বায়হাকী, শু'আবুল ঈমান : ৮৬৮০)
হাদীছটির সম্পর্ক যদিও ইহুদী বা আহলে কিতাব সম্পর্কে, তবে এর বিধান যে- কোনও অমুসলিমের জন্যই প্রযোজ্য। তারা বিশুদ্ধ বা বিকৃত যে শব্দেই সালাম দিক, তার উত্তর দেওয়া হবে কেবল وَعَلَيْكُمْ শব্দ দ্বারা। অর্থাৎ তোমরা যার উপযুক্ত তাই যেন হয়। তোমাদের প্রতি আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে যথোপযুক্ত আচরণ করা হোক।
অমুসলিমগণ যদি সালাম ছাড়া অন্য কোনও শব্দে মুসলিমদের অভিবাদন জানায়, তবে তার উত্তরে অনুরূপ শব্দ ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন সুপ্রভাতের বিপরীতে সুপ্রভাত, শুভ সন্ধ্যার বিপরীতে শুভ সন্ধ্যা, আদাবের বিপরীতে আদাব।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. কোনও অমুসলিম ব্যক্তি সালাম দিলে তার উত্তরে ওয়া আলাইকুমুস সালাম বলা যাবে না। শুধু وَعَلَيْكُمْ বলতে হবে
খ. অমুসলিম কোনও ব্যক্তি তার ধর্মীয় নিদর্শন নয় এমন কোনও শব্দে অভিবাদন জানালে অনুরূপ শব্দে তার উত্তর দেওয়া যাবে।
উল্লেখ্য, মদীনার ইহুদীরা মুসলিমদেরকে যখন সালাম দিত, তখন বলত- السَّامُ عَلَيْكُمْ (তোমাদের প্রতি ধ্বংস পতিত হোক অর্থাৎ তোমরা ধ্বংস হও বা তোমরা মরো)। কুরআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছে-
وَإِذَا جَاءُوكَ حَيَّوْكَ بِمَا لَمْ يُحَيِّكَ بِهِ اللَّهُ
'এবং (হে রাসূল!) তারা তোমার কাছে যখন আসে, তখন তারা তোমাকে এমন কথা দ্বারা অভিবাদন জানায়, যা দ্বারা আল্লাহ তোমাকে অভিবাদন জানাননি’। (সূরা মুজাদালা, আয়াত ৮)
একবার কয়েকজন ইহুদী নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে সাক্ষাৎ করল। তখন তারা السَّامُ عَلَيْكُمْ বলে অভিবাদন জানিয়েছিল। উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রাযি. উত্তর দিলেন-
بَلْ عَلَيْكُمُ السَّامُ وَاللَّعْنَةُ
'বরং তোমাদের উপর পতিত হোক ধ্বংস ও লা'নত।'
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ক্ষান্ত হও হে আয়েশা। তারপর বললেন-
إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الرِّفْقَ فِي الْأَمْرِ كُلِّهِ
'আল্লাহ সকল বিষয়ে কোমলতা পসন্দ করেন।'
হযরত আয়েশা রাযি. বললেন, আপনি শোনেননি তারা কী বলেছে? তিনি বললেন, আমিও তো বলেছি وَعَلَيْكُمْ (তোমাদের প্রতিও)। (সহীহ মুসলিম: ২১৬৫)
অর্থাৎ এতটুকু দ্বারাই উত্তর হয়ে গেছে। শুধু শুধু শক্ত কথা বলার কী প্রয়োজন?
মোটকথা তাদের বিকৃত সালামের উত্তরে وَعَلَيْكُمْ বলাই যথেষ্ট। এর অর্থ হয় আমাদের উপর যে বদদু'আ তোমরা করেছ, অনুরূপ বদদু'আ তোমাদের উপরও। এ প্রসঙ্গে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-
وَإِنَّا نُجَابُ عَلَيْهِمْ وَلَا يُجَابُونَ عَلَيْنَا
তাদের প্রতি আমাদের বদদু'আ কবুল হবে। কিন্তু আমাদের প্রতি তাদের বদদু'আ কবুল হবে না। (সহীহ মুসলিম : ২১৬৬; বায়হাকী, শু'আবুল ঈমান : ৮৬৮০)
হাদীছটির সম্পর্ক যদিও ইহুদী বা আহলে কিতাব সম্পর্কে, তবে এর বিধান যে- কোনও অমুসলিমের জন্যই প্রযোজ্য। তারা বিশুদ্ধ বা বিকৃত যে শব্দেই সালাম দিক, তার উত্তর দেওয়া হবে কেবল وَعَلَيْكُمْ শব্দ দ্বারা। অর্থাৎ তোমরা যার উপযুক্ত তাই যেন হয়। তোমাদের প্রতি আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে যথোপযুক্ত আচরণ করা হোক।
অমুসলিমগণ যদি সালাম ছাড়া অন্য কোনও শব্দে মুসলিমদের অভিবাদন জানায়, তবে তার উত্তরে অনুরূপ শব্দ ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন সুপ্রভাতের বিপরীতে সুপ্রভাত, শুভ সন্ধ্যার বিপরীতে শুভ সন্ধ্যা, আদাবের বিপরীতে আদাব।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. কোনও অমুসলিম ব্যক্তি সালাম দিলে তার উত্তরে ওয়া আলাইকুমুস সালাম বলা যাবে না। শুধু وَعَلَيْكُمْ বলতে হবে
খ. অমুসলিম কোনও ব্যক্তি তার ধর্মীয় নিদর্শন নয় এমন কোনও শব্দে অভিবাদন জানালে অনুরূপ শব্দে তার উত্তর দেওয়া যাবে।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
