আল জামিউল কাবীর- ইমাম তিরমিযী রহঃ
৪৬. কুরআনের তাফসীর অধ্যায়
হাদীস নং: ৩১৬১
আন্তর্জাতিক নং: ৩১৬১
সূরা মারয়াম
৩১৬১. কুতায়বা (রাহঃ) ..... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেনঃ আল্লাহ্ যখন কোন বান্দাকে ভালবাসেন তখন জিবরাঈলকে ডেকে বলেন, আমি অমুককে ভালবাসি। সুতরাং তুমিও তাকে ভালবাসবে। তারপর আসমানে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। এরপর পৃথিবীবাসীদের মধ্যে তাঁর প্রতি মুহাববত নাযিল করা হয় এ বিষয়ই হল আল্লাহর বাণীঃ
إنَّ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ سَيَجْعَلُ لَهُمُ الرَّحْمَنُ وُدًّا
আর তিনি যখন কোন বান্দাকে অপছন্দ করেন তখন জিবরাঈলকে ডেকে বলেন, আমি অমুককে ঘৃণা করি। তারপর আসমানে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। এরপর পৃথিবীতে তার প্রতি ঘৃণার ফায়সালা নাযিল করে দেওয়া হয়।
إنَّ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ سَيَجْعَلُ لَهُمُ الرَّحْمَنُ وُدًّا
আর তিনি যখন কোন বান্দাকে অপছন্দ করেন তখন জিবরাঈলকে ডেকে বলেন, আমি অমুককে ঘৃণা করি। তারপর আসমানে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। এরপর পৃথিবীতে তার প্রতি ঘৃণার ফায়সালা নাযিল করে দেওয়া হয়।
بَابٌ: وَمِنْ سُورَةِ مَرْيَمَ
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ مُحَمَّدٍ، عَنْ سُهَيْلِ بْنِ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِذَا أَحَبَّ اللَّهُ عَبْدًا نَادَى جِبْرِيلَ إِنِّي قَدْ أَحْبَبْتُ فُلاَنًا فَأَحِبَّهُ قَالَ فَيُنَادِي فِي السَّمَاءِ ثُمَّ تَنْزِلُ لَهُ الْمَحَبَّةُ فِي أَهْلِ الأَرْضِ فَذَلِكَ قَوْلُ اللَّهِ : ( إنَّ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ سَيَجْعَلُ لَهُمُ الرَّحْمَنُ وُدًّا ) وَإِذَا أَبْغَضَ اللَّهُ عَبْدًا نَادَى جِبْرِيلَ إِنِّي قَدْ أَبْغَضْتُ فُلاَنًا فَيُنَادِي فِي السَّمَاءِ ثُمَّ تَنْزِلُ لَهُ الْبَغْضَاءُ فِي الأَرْضِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رَوَى عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ أَبِي صَالِحٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَ هَذَا .
হাদীসের ব্যাখ্যা:
বান্দাকে আল্লাহ তা'আলার ভালোবাসার আলামত
ও তা অর্জনে সচেষ্ট থাকার প্রতি উৎসাহদান
কুরআন মাজীদের বিভিন্ন আয়াত ও নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিভিন্ন হাদীছ দ্বারা জানা যায় যে, এমন অনেক আমল আছে, যা আল্লাহ তাআলার ভালোবাসার প্রমাণ বহন করে। অর্থাৎ যে ব্যক্তি সেসব আমল করে, আল্লাহ তাআলা তাকে ভালোবাসেন। এটা তো সত্য যে, মানুষ মাত্রই আল্লাহ তাআলাকে ভালোবাসে, যদি না কোনও কারণে তার মানসিক ও মানবিক বিকৃতি ঘটে গিয়ে থাকে। কিন্তু আল্লাহ তাআলাকে ভালোবাসলেই যে তাঁরও ভালোবাসা পাওয়া যাবে এটা অনিবার্য নয়। তাঁর ভালোবাসা পাওয়া যাবে কেবল তখনই, যখন তাঁর পসন্দমত কাজও করা হবে। বস্তুত শরীআত যেসব কাজের আদেশ করেছে তা করা এবং যা নিষেধ করেছে তা থেকে বিরত থাকাই আল্লাহ তাআলার পসন্দ। সুতরাং কেবল তাঁরই ভালোবাসায় উজ্জীবিত হয়ে যে ব্যক্তি শরীআত পালন করবে, সে আল্লাহ তাআলার ভালোবাসা পাবেই। তারপরও সুনির্দিষ্টভাবেও কোনও কোনও আমল সম্পর্কে জানানো হয়েছে যে, তাতে লিপ্ত থাকলে আল্লাহ তাআলার ভালোবাসা পাওয়া যায়। এমনিভাবে কোনও কোনও গুণ সম্পর্কেও স্পষ্ট বলে দেওয়া হয়েছে যে, তার অধিকারী হতে পারাটা আল্লাহ তাআলার ভালোবাসা পাওয়ার আলামত। সেগুলো যখন আল্লাহ তাআলার ভালোবাসা পাওয়ার আলামত, তখন প্রত্যেক আল্লাহপ্রেমিকের উচিত মনেপ্রাণে সেসব আমল করতে সচেষ্ট থাকা, সেসকল গুণ অর্জনের সাধনায় রত থাকা।
যারা আল্লাহ তাআলার প্রিয় বান্দা, সাধারণত মানুষ তাদের ভালোবাসে। ওলী-বুযুর্গগণ পৃথিবীর সমস্ত মাখলূকের ভালোবাসা পায়। তারা সর্বজনপ্রিয় হয়ে যায়। অন্যদিকে পাপী ও অসৎকর্মশীলদের সকলে ঘৃণা করে। এর রহস্য কী? আলোচ্য হাদীছে এর জবাব দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, আল্লাহ তাআলা তাঁর কোনও বান্দাকে ভালোবাসলে তিনি হযরত জিবরীল আলাইহিস সালামকে তাকে ভালোবাসতে হুকুম দেন। ফলে জিবরীল আলাইহিস সালাম তাকে ভালোবাসেন। তারপর তাকে ভালোবাসে সকল আসমানবাসী। তারপর পৃথিবীবাসীদের অন্তরে তার প্রতি ভালোবাসা সঞ্চার করে দেওয়া হয়। তাকে সকলের কাছে মকবূল করে তোলা হয়। সে হয়ে যায় সকলের প্রিয়। বোঝা গেল, পৃথিবীতে কারও সর্বজনপ্রিয় হওয়ার উৎস হলো আল্লাহর ভালোবাসা। আল্লাহ তাআলা কাউকে ভালোবাসলেই সে সকলের প্রিয় হয়ে যায়। তাহলে কারও সর্বজনপ্রিয় হওয়াটা এ কথার আলামত যে, আল্লাহ তাআলা তাকে ভালোবাসেন।
প্রকাশ থাকে যে, কারও প্রতি আল্লাহ তাআলার ভালোবাসা থাকার অর্থ তিনি তার কল্যাণ চান ও তাকে তার কৃতকর্মের জন্য পুরস্কৃত করেন। ফিরিশতাদের পক্ষ থেকে ভালোবাসার অর্থ তার জন্য আল্লাহ তাআলার কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করা, তার দোজাহানের কল্যাণ কামনা করা এবং তার প্রতি তাদের আকর্ষণ বোধ করা। মাখলূকাতের ভালোবাসার অর্থ হলো তার প্রতি সুধারণা রাখা, শ্রদ্ধা-ভক্তি প্রকাশ করা এবং সাধ্যানুযায়ী বিপদ-আপদ থেকে তাকে সুরক্ষা দেওয়া।
বলার অপেক্ষা রাখে না, আল্লাহ তাআলা কাউকে ভালোবাসেন তখনই, যখন সে আল্লাহর মর্জিমত চলে। যেমন পেছনের হাদীছে আছে- বান্দা নফল ইবাদত-বন্দেগী দ্বারা আমার নিকটবর্তী হতে থাকে। একপর্যায়ে আমি তাকে ভালোবেসে ফেলি। কুরআন মাজীদেও ইরশাদ হয়েছে إِنَّ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ سَيَجْعَلُ لَهُمُ الرَّحْمَنُ وُدًّا 'যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, নিশ্চয়ই দয়াময় (আল্লাহ) সত্বর তাদের জন্য সৃষ্টি করবেন ভালোবাসা।৩১৬
এক হাদীছে ইরশাদ হয়েছে
إن العبد ليلتمس مرضاة الله، فلا يزال بذلك، فيقول الله لجبريل : إن فلانا عبدي يلتمس أن يرضيني، ألا وإن رحمتي عليه، فيقول جبريل : رحمة الله على فلان ويقولها حملة العرش، ويقولها من حولهم، حتى يقولها أهل السماوات السبع ثم تهبط له إلى الأرض
“বান্দা নিরবচ্ছিন্নভাবে নেক আমলের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি সন্ধানে লিপ্ত থাকে। শেষে আল্লাহ জিবরীলকে বলেন, আমার অমুক বান্দা আমাকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টায় লেগে আছে। শুনে রাখ, তার উপর আমার রহমত রয়েছে। জিবরীল বলেন, অমুকের উপর আল্লাহর রহমত। তারপর আরশবাহী ফিরিশতাগণও বলেন, অমুকের উপর আল্লাহর রহমত। একই কথা বলেন আরশের চারপাশের ফিরিশতাগণ। তারপর সাত আসমানের অধিবাসীগণও সে কথা বলে থাকে। তারপর পৃথিবীতে তার উপর রহমত বর্ষিত হয়।৩১৭
কারও প্রতি মানুষের অন্তরে ঘৃণা ও অশ্রদ্ধা জন্মানোরও মূল কারণ এটাই যে, সে প্রথমে আল্লাহ তাআলার কাছে অপ্রিয় হয়ে গেছে। আল্লাহ তাআলার কাছে অপ্রিয় হয়ে যাওয়ার কারণে পর্যায়ক্রমে সে সাত আসমানের ফিরিশতাদের কাছে অপ্রিয় হয়ে যায়। সবশেষে পৃথিবীবাসীর কাছেও তাকে অপ্রিয় করে তোলা হয়।
আল্লাহ তাআলার কাছে প্রিয় হওয়ার কারণ যেমন ছিল তাঁর আদেশ-নিষেধ মেনে চলা, তেমনি তাঁর কাছে অপ্রিয় হওয়ার কারণ তাঁর আদেশ-নিষেধ অমান্য করা। সুতরাং কারও দ্বারা নাফরমানির কাজ হওয়া আল্লাহর কাছে তার অপ্রিয় হওয়ার আলামত।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. কারও প্রতি ব্যাপকভাবে মানুষের অন্তরে সমাদর ও শ্রদ্ধাভক্তি থাকা আল্লাহ তাআলার কাছে তার প্রিয় হওয়ার আলামত।
খ. জনমনে কারও ঘৃণ্য ও ধিকৃত হওয়াটা আল্লাহর কাছে তার অপ্রিয় হওয়ার আলামত।
৩১৬. সূরা মারয়াম (১৯), আয়াত ৯৬
৩১৭. মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ২২৪০১; তাবারানী, আল মু'জামুল আওসাত, হাদীছ নং ১২৪০
ও তা অর্জনে সচেষ্ট থাকার প্রতি উৎসাহদান
কুরআন মাজীদের বিভিন্ন আয়াত ও নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিভিন্ন হাদীছ দ্বারা জানা যায় যে, এমন অনেক আমল আছে, যা আল্লাহ তাআলার ভালোবাসার প্রমাণ বহন করে। অর্থাৎ যে ব্যক্তি সেসব আমল করে, আল্লাহ তাআলা তাকে ভালোবাসেন। এটা তো সত্য যে, মানুষ মাত্রই আল্লাহ তাআলাকে ভালোবাসে, যদি না কোনও কারণে তার মানসিক ও মানবিক বিকৃতি ঘটে গিয়ে থাকে। কিন্তু আল্লাহ তাআলাকে ভালোবাসলেই যে তাঁরও ভালোবাসা পাওয়া যাবে এটা অনিবার্য নয়। তাঁর ভালোবাসা পাওয়া যাবে কেবল তখনই, যখন তাঁর পসন্দমত কাজও করা হবে। বস্তুত শরীআত যেসব কাজের আদেশ করেছে তা করা এবং যা নিষেধ করেছে তা থেকে বিরত থাকাই আল্লাহ তাআলার পসন্দ। সুতরাং কেবল তাঁরই ভালোবাসায় উজ্জীবিত হয়ে যে ব্যক্তি শরীআত পালন করবে, সে আল্লাহ তাআলার ভালোবাসা পাবেই। তারপরও সুনির্দিষ্টভাবেও কোনও কোনও আমল সম্পর্কে জানানো হয়েছে যে, তাতে লিপ্ত থাকলে আল্লাহ তাআলার ভালোবাসা পাওয়া যায়। এমনিভাবে কোনও কোনও গুণ সম্পর্কেও স্পষ্ট বলে দেওয়া হয়েছে যে, তার অধিকারী হতে পারাটা আল্লাহ তাআলার ভালোবাসা পাওয়ার আলামত। সেগুলো যখন আল্লাহ তাআলার ভালোবাসা পাওয়ার আলামত, তখন প্রত্যেক আল্লাহপ্রেমিকের উচিত মনেপ্রাণে সেসব আমল করতে সচেষ্ট থাকা, সেসকল গুণ অর্জনের সাধনায় রত থাকা।
যারা আল্লাহ তাআলার প্রিয় বান্দা, সাধারণত মানুষ তাদের ভালোবাসে। ওলী-বুযুর্গগণ পৃথিবীর সমস্ত মাখলূকের ভালোবাসা পায়। তারা সর্বজনপ্রিয় হয়ে যায়। অন্যদিকে পাপী ও অসৎকর্মশীলদের সকলে ঘৃণা করে। এর রহস্য কী? আলোচ্য হাদীছে এর জবাব দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, আল্লাহ তাআলা তাঁর কোনও বান্দাকে ভালোবাসলে তিনি হযরত জিবরীল আলাইহিস সালামকে তাকে ভালোবাসতে হুকুম দেন। ফলে জিবরীল আলাইহিস সালাম তাকে ভালোবাসেন। তারপর তাকে ভালোবাসে সকল আসমানবাসী। তারপর পৃথিবীবাসীদের অন্তরে তার প্রতি ভালোবাসা সঞ্চার করে দেওয়া হয়। তাকে সকলের কাছে মকবূল করে তোলা হয়। সে হয়ে যায় সকলের প্রিয়। বোঝা গেল, পৃথিবীতে কারও সর্বজনপ্রিয় হওয়ার উৎস হলো আল্লাহর ভালোবাসা। আল্লাহ তাআলা কাউকে ভালোবাসলেই সে সকলের প্রিয় হয়ে যায়। তাহলে কারও সর্বজনপ্রিয় হওয়াটা এ কথার আলামত যে, আল্লাহ তাআলা তাকে ভালোবাসেন।
প্রকাশ থাকে যে, কারও প্রতি আল্লাহ তাআলার ভালোবাসা থাকার অর্থ তিনি তার কল্যাণ চান ও তাকে তার কৃতকর্মের জন্য পুরস্কৃত করেন। ফিরিশতাদের পক্ষ থেকে ভালোবাসার অর্থ তার জন্য আল্লাহ তাআলার কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করা, তার দোজাহানের কল্যাণ কামনা করা এবং তার প্রতি তাদের আকর্ষণ বোধ করা। মাখলূকাতের ভালোবাসার অর্থ হলো তার প্রতি সুধারণা রাখা, শ্রদ্ধা-ভক্তি প্রকাশ করা এবং সাধ্যানুযায়ী বিপদ-আপদ থেকে তাকে সুরক্ষা দেওয়া।
বলার অপেক্ষা রাখে না, আল্লাহ তাআলা কাউকে ভালোবাসেন তখনই, যখন সে আল্লাহর মর্জিমত চলে। যেমন পেছনের হাদীছে আছে- বান্দা নফল ইবাদত-বন্দেগী দ্বারা আমার নিকটবর্তী হতে থাকে। একপর্যায়ে আমি তাকে ভালোবেসে ফেলি। কুরআন মাজীদেও ইরশাদ হয়েছে إِنَّ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ سَيَجْعَلُ لَهُمُ الرَّحْمَنُ وُدًّا 'যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, নিশ্চয়ই দয়াময় (আল্লাহ) সত্বর তাদের জন্য সৃষ্টি করবেন ভালোবাসা।৩১৬
এক হাদীছে ইরশাদ হয়েছে
إن العبد ليلتمس مرضاة الله، فلا يزال بذلك، فيقول الله لجبريل : إن فلانا عبدي يلتمس أن يرضيني، ألا وإن رحمتي عليه، فيقول جبريل : رحمة الله على فلان ويقولها حملة العرش، ويقولها من حولهم، حتى يقولها أهل السماوات السبع ثم تهبط له إلى الأرض
“বান্দা নিরবচ্ছিন্নভাবে নেক আমলের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি সন্ধানে লিপ্ত থাকে। শেষে আল্লাহ জিবরীলকে বলেন, আমার অমুক বান্দা আমাকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টায় লেগে আছে। শুনে রাখ, তার উপর আমার রহমত রয়েছে। জিবরীল বলেন, অমুকের উপর আল্লাহর রহমত। তারপর আরশবাহী ফিরিশতাগণও বলেন, অমুকের উপর আল্লাহর রহমত। একই কথা বলেন আরশের চারপাশের ফিরিশতাগণ। তারপর সাত আসমানের অধিবাসীগণও সে কথা বলে থাকে। তারপর পৃথিবীতে তার উপর রহমত বর্ষিত হয়।৩১৭
কারও প্রতি মানুষের অন্তরে ঘৃণা ও অশ্রদ্ধা জন্মানোরও মূল কারণ এটাই যে, সে প্রথমে আল্লাহ তাআলার কাছে অপ্রিয় হয়ে গেছে। আল্লাহ তাআলার কাছে অপ্রিয় হয়ে যাওয়ার কারণে পর্যায়ক্রমে সে সাত আসমানের ফিরিশতাদের কাছে অপ্রিয় হয়ে যায়। সবশেষে পৃথিবীবাসীর কাছেও তাকে অপ্রিয় করে তোলা হয়।
আল্লাহ তাআলার কাছে প্রিয় হওয়ার কারণ যেমন ছিল তাঁর আদেশ-নিষেধ মেনে চলা, তেমনি তাঁর কাছে অপ্রিয় হওয়ার কারণ তাঁর আদেশ-নিষেধ অমান্য করা। সুতরাং কারও দ্বারা নাফরমানির কাজ হওয়া আল্লাহর কাছে তার অপ্রিয় হওয়ার আলামত।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. কারও প্রতি ব্যাপকভাবে মানুষের অন্তরে সমাদর ও শ্রদ্ধাভক্তি থাকা আল্লাহ তাআলার কাছে তার প্রিয় হওয়ার আলামত।
খ. জনমনে কারও ঘৃণ্য ও ধিকৃত হওয়াটা আল্লাহর কাছে তার অপ্রিয় হওয়ার আলামত।
৩১৬. সূরা মারয়াম (১৯), আয়াত ৯৬
৩১৭. মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ২২৪০১; তাবারানী, আল মু'জামুল আওসাত, হাদীছ নং ১২৪০
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
