আল জামিউল কাবীর- ইমাম তিরমিযী রহঃ

৪২. অনুমতি প্রার্থনা ও বিবিধ শিষ্টাচারের অধ্যায়

হাদীস নং: ২৭২৮
আন্তর্জাতিক নং: ২৭২৮
মুসাফাহা।
২৭২৮. সুওয়ায়দ (রাহঃ) ...... আনাস ইবনে মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ জনৈক ব্যক্তি বললঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্, আমাদের কারো যদি তার ভাই বা তার বন্ধুর সাথে সাক্ষাত হয় তবে কি সে তার অভিবাদন এর জন্য মাথা ঝুঁকাবে? তিনি বললেনঃ না। লোকটি বললঃ তা হলে কি তাকে লেপটে ধরবে এবং চুমা দিবে? তিনি বললেনঃ না। লোকটি বললঃ তা হলে কি তাকে লেপটে ধরবে এবং তার সাথে মুসাফাহা করবে? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ।
باب مَا جَاءَ فِي الْمُصَافَحَةِ
حَدَّثَنَا سُوَيْدٌ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، أَخْبَرَنَا حَنْظَلَةُ بْنُ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ رَجُلٌ يَا رَسُولَ اللَّهِ الرَّجُلُ مِنَّا يَلْقَى أَخَاهُ أَوْ صَدِيقَهُ أَيَنْحَنِي لَهُ قَالَ " لاَ " . قَالَ أَفَيَلْتَزِمُهُ وَيُقَبِّلُهُ قَالَ " لاَ " . قَالَ أَفَيَأْخُذُ بِيَدِهِ وَيُصَافِحُهُ قَالَ " نَعَمْ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ .

হাদীসের ব্যাখ্যা:

কোনও মুসলিম ভাই বা বন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাৎকালে অভিবাদনস্বরূপ মাথা নোওয়ানো যাবে কি? কোনও কোনও জাতির মধ্যে এর রেওয়াজ আছে। তারা মাথা নুইয়ে একে অন্যকে অভিবাদন করে, যেমন হিন্দুরা নমস্কার করে থাকে। আগের দিনে মানুষ রাজা-বাদশাদের সামনে মাথা নুইয়ে শ্রদ্ধা জানাত। এক সাহাবী এ বিষয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করলেন যে, এটা করা যাবে কি না। তিনি 'না' করে দিলেন। অর্থাৎ এটা করা যাবে না। কেননা এতে রুকূ'র ভঙ্গি হয়ে যায়। রুকু' করা একটি ইবাদত। এটা কেবল আল্লাহ তা'আলার জন্যই করা যায়। ইবাদতস্বরূপ যা আল্লাহ তা'আলার জন্য নির্ধারিত, কোনও মাখলুকের বেলায় তার প্রয়োগ জায়েয নেই। অনুরূপ সিজদা করাও সম্পূর্ণ হারাম।

কোনও ভাই বা বন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তাকে জড়িয়ে ধরা যাবে কি? এমনিভাবে তাকে হাদীছটিতে একই সাহাবীর দ্বিতীয় জিজ্ঞাসা ছিল জড়িয়ে ধরা ও চুম্বন করা সম্পর্কে। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এটাও নিষেধ করে দিলেন।

সাহাবী তৃতীয় পর্যায়ে প্রশ্ন করেন মুসাফাহা সম্পর্কে। নবী কারীম সাল্লাল্লাহ আলায়হি ওয়াসাল্লাম এটা অনুমোদন করলেন। অর্থাৎ সাক্ষাৎকালে মুসাফাহা করা যাবে। এতে কোনও দোষ নেই।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

ক. পরস্পর সাক্ষাৎকালে অভিবাদনস্বরূপ মাথা নোওয়ানো যাবে না।

খ. মুসাফাহা করা যাবে। এটা সুন্নত।

গ. কোনও কাজ করা যাবে কি যাবে না, এ বিষয়ে মনে খটকা থাকলে বিজ্ঞ ও মুত্তাকী আলেমের কাছে জিজ্ঞেস করে তা ভালোভাবে জেনে নেওয়া উচিত।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
জামে' তিরমিযী - হাদীস নং ২৭২৮ | মুসলিম বাংলা