আল জামিউল কাবীর- ইমাম তিরমিযী রহঃ
৩৮. রাসূলুল্লাহ ﷺ থেকে বর্ণিত জান্নাতের বিবরণ
হাদীস নং: ২৫২৬
আন্তর্জাতিক নং: ২৫২৬
জান্নাতের বিবরণ ও এর নিআমতসমূহ
২৫২৮. আবু কুরায়ব (রাহঃ) ..... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা বললামঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাদের একি অবস্থা যে, যখন আপনার কাছে থাকি তখন আমাদের হৃদয় কোমল হয় এবং আমরা দুনিয়া বিমুখ হয়ে পড়ি। আর আমরা হয়ে যাই আখিরাতের লোকের ন্যায়। কিন্তু যখন আপনার এখান থেকে বের হয়ে গিয়ে পরিবার-পরিজনদের সাথে মেলামেশা করি এবং সন্তান-সন্ততিদের সোহাগ করি তখন আমাদের মনকে অন্য রকম পাই।
রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বললেনঃ যখন তোমরা আমার নিকট থেকে বেরিয়ে যাও তখনও যদি তোমরা সে অবস্থায় থাকতে তবে ফিরিশতাগণ তোমাদের ঘরে এসে তোমাদের যিয়ারত করতেন। তোমাদের যদি গুনাহ্ সংঘটিত না হত তবে আল্লাহ্ তাআলা নতুন এক জাতি সৃষ্টি করতেন যেন তারা গুনাহ্ করে আর তিনি তাদের মাফ করেন।
আবু হুরায়রা (রাযিঃ) বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করলামঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্, কিসের থেকে এই সৃষ্টিকুলের সৃষ্টি? তিনি বললেনঃ পানি থেকে। আমি বললাম, জান্নাতের নির্মাণ কি দিয়ে?
তিনি বললেনঃ এর একটি ইট হল রূপার আর একটি হল সোনার। এর গাঁথুনী হল সুগন্ধ ময় মিশকের। এর নুড়িগুলো হল মাটির ও ইয়াকুতের, মাটি হল যাফরানের। যে ব্যক্তি এতে প্রবেশ করবে সে নিআমত ও সুখ ভোগ করবে, কষ্ট পাবে না কখনও। সদাসর্বদা থাকবে, মৃত্যু হবে না কখনও। তাদের পরিচ্ছদ কখনও পুরাতন হবে না, আর তাদের যৌবন কখনও শেষ হবে না।
এরপর তিনি বললেনঃ তিন ব্যক্তি এমন যে তাদের দুআ কখনও প্রত্যাখ্যান করা হয় না: ন্যায়পরায়ণ শাসনকর্তা, রোযাদার যখন সে ইফতার করে এবং মজলুমের দুআ। যা মেঘের উপরও তুলে নেয়া হয় এবং আসমানের সব দরজা এর জন্য খুলে দেওয়া হয়, আল্লাহ্ তাআলা বলেনঃ আমার ইযযতের কসম, কিছুকাল পরে হলেও অবশ্যই আমি তোমাকে সাহায্য করব।
এ হাদীসটির সনদ তত শক্তিশালী নয়। আমার মতে এটি মুত্তাসিল নয়। এটি অন্য এক সনদেও আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত আছে।
রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বললেনঃ যখন তোমরা আমার নিকট থেকে বেরিয়ে যাও তখনও যদি তোমরা সে অবস্থায় থাকতে তবে ফিরিশতাগণ তোমাদের ঘরে এসে তোমাদের যিয়ারত করতেন। তোমাদের যদি গুনাহ্ সংঘটিত না হত তবে আল্লাহ্ তাআলা নতুন এক জাতি সৃষ্টি করতেন যেন তারা গুনাহ্ করে আর তিনি তাদের মাফ করেন।
আবু হুরায়রা (রাযিঃ) বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করলামঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্, কিসের থেকে এই সৃষ্টিকুলের সৃষ্টি? তিনি বললেনঃ পানি থেকে। আমি বললাম, জান্নাতের নির্মাণ কি দিয়ে?
তিনি বললেনঃ এর একটি ইট হল রূপার আর একটি হল সোনার। এর গাঁথুনী হল সুগন্ধ ময় মিশকের। এর নুড়িগুলো হল মাটির ও ইয়াকুতের, মাটি হল যাফরানের। যে ব্যক্তি এতে প্রবেশ করবে সে নিআমত ও সুখ ভোগ করবে, কষ্ট পাবে না কখনও। সদাসর্বদা থাকবে, মৃত্যু হবে না কখনও। তাদের পরিচ্ছদ কখনও পুরাতন হবে না, আর তাদের যৌবন কখনও শেষ হবে না।
এরপর তিনি বললেনঃ তিন ব্যক্তি এমন যে তাদের দুআ কখনও প্রত্যাখ্যান করা হয় না: ন্যায়পরায়ণ শাসনকর্তা, রোযাদার যখন সে ইফতার করে এবং মজলুমের দুআ। যা মেঘের উপরও তুলে নেয়া হয় এবং আসমানের সব দরজা এর জন্য খুলে দেওয়া হয়, আল্লাহ্ তাআলা বলেনঃ আমার ইযযতের কসম, কিছুকাল পরে হলেও অবশ্যই আমি তোমাকে সাহায্য করব।
এ হাদীসটির সনদ তত শক্তিশালী নয়। আমার মতে এটি মুত্তাসিল নয়। এটি অন্য এক সনদেও আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত আছে।
بَابُ مَا جَاءَ فِي صِفَةِ الجَنَّةِ وَنَعِيمِهَا
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ فُضَيْلٍ، عَنْ حَمْزَةَ الزَّيَّاتِ، عَنْ زِيَادٍ الطَّائِيِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قُلْنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا لَنَا إِذَا كُنَّا عِنْدَكَ رَقَّتْ قُلُوبُنَا وَزَهِدْنَا فِي الدُّنْيَا وَكُنَّا مِنْ أَهْلِ الآخِرَةِ فَإِذَا خَرَجْنَا مِنْ عِنْدِكَ فَآنَسْنَا أَهَالِيَنَا وَشَمَمْنَا أَوْلاَدَنَا أَنْكَرْنَا أَنْفُسَنَا . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لَوْ أَنَّكُمْ تَكُونُونَ إِذَا خَرَجْتُمْ مِنْ عِنْدِي كُنْتُمْ عَلَى حَالِكُمْ ذَلِكَ لَزَارَتْكُمُ الْمَلاَئِكَةُ فِي بُيُوتِكُمْ وَلَوْ لَمْ تُذْنِبُوا لَجَاءَ اللَّهُ بِخَلْقٍ جَدِيدٍ كَىْ يُذْنِبُوا فَيَغْفِرَ لَهُمْ " . قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ مِمَّ خُلِقَ الْخَلْقُ قَالَ " مِنَ الْمَاءِ " . قُلْنَا الْجَنَّةُ مَا بِنَاؤُهَا قَالَ " لَبِنَةٌ مِنْ فِضَّةٍ وَلَبِنَةٌ مِنْ ذَهَبٍ وَمِلاَطُهَا الْمِسْكُ الأَذْفَرُ وَحَصْبَاؤُهَا اللُّؤْلُؤُ وَالْيَاقُوتُ وَتُرْبَتُهَا الزَّعْفَرَانُ مَنْ يَدْخُلْهَا يَنْعَمْ وَلاَ يَبْأَسْ وَيُخَلَّدْ وَلاَ يَمُوتْ لاَ تَبْلَى ثِيَابُهُمْ وَلاَ يَفْنَى شَبَابُهُمْ " . ثُمَّ قَالَ " ثَلاَثَةٌ لاَ تُرَدُّ دَعْوَتُهُمُ الإِمَامُ الْعَادِلُ وَالصَّائِمُ حِينَ يُفْطِرُ وَدَعْوَةُ الْمَظْلُومِ يَرْفَعُهَا فَوْقَ الْغَمَامِ وَتُفَتَّحُ لَهَا أَبْوَابُ السَّمَاءِ وَيَقُولُ الرَّبُّ عَزَّ وَجَلَّ وَعِزَّتِي لأَنْصُرَنَّكِ وَلَوْ بَعْدَ حِينٍ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ لَيْسَ إِسْنَادُهُ بِذَاكَ الْقَوِيِّ وَلَيْسَ هُوَ عِنْدِي بِمُتَّصِلٍ وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ بِإِسْنَادٍ آخَرَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছ দ্বারা আল্লাহ তা'আলার কাছে বান্দার তাওবা-ইস্তিগফারের গুরুত্ব অনুমান করা যায়। দৃশ্যত মনে হয় বান্দাকে ইচ্ছাকৃতভাবে গুনাহ করতে ও তারপর ইস্তিগফার করতে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে বিষয়টি তা নয়। মূলত নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ বক্তব্যটি দিয়েছিলেন সাহাবায়ে কেরামকে সান্ত্বনা দেওয়া ও তাদের অন্তর থেকে ভয়ের তীব্রতা দূর করার জন্য। তাদের অন্তরে ভয় এতবেশি ছিল যে, কেউ কেউ তো পালিয়ে পাহাড়ে চলে গিয়েছিলেন, কেউ নারীসঙ্গ ত্যাগ করেছিলেন, কেউ ঘুম বর্জন করেছিলেন।
সাহাবায়ে কেরাম তো কখনও পরিকল্পিতভাবে গুনাহ করতেন না। অনিচ্ছাকৃতভাবে তাদের দ্বারা তা কখনও কখনও হয়ে যেত। আর তাতেও তারা এতটা ভীত হয়ে পড়তেন। তাই তাদের মনের ভার লাঘব করার জন্য এ হাদীছটি ব্যক্ত হয়েছে।
বলা হচ্ছে, এরকম অনিচ্ছাজনিত গুনাহ বা ক্ষণিকের অসংযম ও উত্তেজনাবশে কৃত গুনাহের মধ্যে বিশেষ হিকমত নিহিত আছে। যেমন, এর ফলে বান্দা নিজ গুনাহের কথা স্বীকার করে, সে আল্লাহর সামনে বিনীত হয়, তার অন্তর থেকে আত্মতুষ্টি ও অহমিকার ভাব দূর হয়, তারপর তাওবার মাধ্যমে আল্লাহ তা'আলার কাছে ক্ষমালাভ করে।
আল্লাহ তা'আলা ক্ষমা করতে পসন্দ করেন। আল্লাহ তা'আলা বান্দার পাপ ক্ষমা করে তাকে সংশোধনের সুযোগ করে দেন। তাকে সামনে এগিয়ে চলার ব্যবস্থা করে দেন। যদি তার দ্বারা গুনাহ না হতো, তবে এতসব ফায়দা তার হাসিল হতো না। সে উন্নতির দিকে এগিয়ে যেতে পারত না। তাই বলা হয়েছে, তোমরা গুনাহ না করলে আল্লাহ তোমাদের স্থানে এমন এক মাখলুক সৃষ্টি করতেন, যাদের দ্বারা গুনাহ হয়ে যেত, তারপর তারা ইস্তিগফার করত, ফলে আল্লাহ তাদের ক্ষমা করতেন আর তারা উন্নতির দিকে এগিয়ে যেত।
বস্তুত আল্লাহ মানুষকে সৃষ্টিই করেছেন এভাবে যে, তার মধ্যে আত্মাভিমান, অহংকার ও আমিত্ব বিদ্যমান রয়েছে। সে সবসময় নিজের দিকে তাকায়। নিজেকে একটা কিছু মনে করে। আল্লাহ চান মুমিন বান্দা নিজের না হয়ে আল্লাহর হয়ে যাক। সে নিজের নয়, অন্য কারও দিকে নয়; বরং কেবলই আল্লাহর দিকে নজর দিক। সে আল্লাহরই অভিমুখী থাকুক, তাঁরই বাধ্য ও অনুগত হয়ে চলুক। কিন্তু আমিত্ব ও অহমিকা তার একটি বাধা। এ বাধার কারণে সে আল্লাহর না হয়ে নিজেরই হয়ে থাকে। তাই আল্লাহ তা'আলা তাকে দিয়ে মাঝেমধ্যে গুনাহ করান আর এর মাধ্যমে তার মধে আত্মসচেতনতা সৃষ্টি করেন। সে বুঝতে পারে তার মধ্যে কত দোষত্রুটি। ফলে তার অহমিকা দূর হয়। এ দোষত্রুটি থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য সে আল্লাহর অভিমুখী হয় এবং তাঁর কাছে তাওবা করে। আর এভাবে সে নিজের ও সমস্ত গায়রুল্লাহ'র বন্ধন থেকে মুক্ত হয়ে একান্তভাবে আল্লাহ তা'আলার বান্দায় পরিণত হয়ে যায়। সুতরাং গুনাহ করে। ফেলাটা বাস্তবিকপক্ষে তার জন্য মন্দ নয়; বরং কল্যাণকরই, যেহেতু এর ফলে তার তাওবা করা ও আল্লাহ-অভিমুখী হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়। মূলত গুনাহ করাটা মুখ্য নয়; তাওবাই মুখ্য। এটাই কাম্য। তাই আল্লাহ তা'আলা বলেন-
وَتُوبُوا إِلَى اللهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
“হে মুমিনগণ! তোমরা সকলে আল্লাহর কাছে তাওবা কর, যাতে তোমরা সফলতা অর্জন কর।"
প্রকাশ থাকে যে, গুনাহ এমন জিনিস নয়, যা কোনও বান্দা পরিকল্পিতভাবে করবে। এটা নফস ও শয়তানের ধোঁকায় হয়ে যাওয়ার বিষয়। তারপরও যদি কেউ পরিকল্পিতভাবেই গুনাহ করে ফেলে এবং তারপর খাটিমনে তাওবা-ইস্তিগফার করে, তবে তাওবা-ইস্তিগফারের ফযীলত তার জন্যও প্রযোজ্য হবে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছ দ্বারা আল্লাহ তা'আলার অসীম ক্ষমাশীলতার গুণ সম্পর্কে ধারণা লাভ হয়
খ. আল্লাহ তা'আলার কাছে বান্দার তাওবা-ইস্তিগফার খুব পসন্দ। তাই আমরা বেশি বেশি তাওবা-ইস্তিগফার করব।
সাহাবায়ে কেরাম তো কখনও পরিকল্পিতভাবে গুনাহ করতেন না। অনিচ্ছাকৃতভাবে তাদের দ্বারা তা কখনও কখনও হয়ে যেত। আর তাতেও তারা এতটা ভীত হয়ে পড়তেন। তাই তাদের মনের ভার লাঘব করার জন্য এ হাদীছটি ব্যক্ত হয়েছে।
বলা হচ্ছে, এরকম অনিচ্ছাজনিত গুনাহ বা ক্ষণিকের অসংযম ও উত্তেজনাবশে কৃত গুনাহের মধ্যে বিশেষ হিকমত নিহিত আছে। যেমন, এর ফলে বান্দা নিজ গুনাহের কথা স্বীকার করে, সে আল্লাহর সামনে বিনীত হয়, তার অন্তর থেকে আত্মতুষ্টি ও অহমিকার ভাব দূর হয়, তারপর তাওবার মাধ্যমে আল্লাহ তা'আলার কাছে ক্ষমালাভ করে।
আল্লাহ তা'আলা ক্ষমা করতে পসন্দ করেন। আল্লাহ তা'আলা বান্দার পাপ ক্ষমা করে তাকে সংশোধনের সুযোগ করে দেন। তাকে সামনে এগিয়ে চলার ব্যবস্থা করে দেন। যদি তার দ্বারা গুনাহ না হতো, তবে এতসব ফায়দা তার হাসিল হতো না। সে উন্নতির দিকে এগিয়ে যেতে পারত না। তাই বলা হয়েছে, তোমরা গুনাহ না করলে আল্লাহ তোমাদের স্থানে এমন এক মাখলুক সৃষ্টি করতেন, যাদের দ্বারা গুনাহ হয়ে যেত, তারপর তারা ইস্তিগফার করত, ফলে আল্লাহ তাদের ক্ষমা করতেন আর তারা উন্নতির দিকে এগিয়ে যেত।
বস্তুত আল্লাহ মানুষকে সৃষ্টিই করেছেন এভাবে যে, তার মধ্যে আত্মাভিমান, অহংকার ও আমিত্ব বিদ্যমান রয়েছে। সে সবসময় নিজের দিকে তাকায়। নিজেকে একটা কিছু মনে করে। আল্লাহ চান মুমিন বান্দা নিজের না হয়ে আল্লাহর হয়ে যাক। সে নিজের নয়, অন্য কারও দিকে নয়; বরং কেবলই আল্লাহর দিকে নজর দিক। সে আল্লাহরই অভিমুখী থাকুক, তাঁরই বাধ্য ও অনুগত হয়ে চলুক। কিন্তু আমিত্ব ও অহমিকা তার একটি বাধা। এ বাধার কারণে সে আল্লাহর না হয়ে নিজেরই হয়ে থাকে। তাই আল্লাহ তা'আলা তাকে দিয়ে মাঝেমধ্যে গুনাহ করান আর এর মাধ্যমে তার মধে আত্মসচেতনতা সৃষ্টি করেন। সে বুঝতে পারে তার মধ্যে কত দোষত্রুটি। ফলে তার অহমিকা দূর হয়। এ দোষত্রুটি থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য সে আল্লাহর অভিমুখী হয় এবং তাঁর কাছে তাওবা করে। আর এভাবে সে নিজের ও সমস্ত গায়রুল্লাহ'র বন্ধন থেকে মুক্ত হয়ে একান্তভাবে আল্লাহ তা'আলার বান্দায় পরিণত হয়ে যায়। সুতরাং গুনাহ করে। ফেলাটা বাস্তবিকপক্ষে তার জন্য মন্দ নয়; বরং কল্যাণকরই, যেহেতু এর ফলে তার তাওবা করা ও আল্লাহ-অভিমুখী হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়। মূলত গুনাহ করাটা মুখ্য নয়; তাওবাই মুখ্য। এটাই কাম্য। তাই আল্লাহ তা'আলা বলেন-
وَتُوبُوا إِلَى اللهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
“হে মুমিনগণ! তোমরা সকলে আল্লাহর কাছে তাওবা কর, যাতে তোমরা সফলতা অর্জন কর।"
প্রকাশ থাকে যে, গুনাহ এমন জিনিস নয়, যা কোনও বান্দা পরিকল্পিতভাবে করবে। এটা নফস ও শয়তানের ধোঁকায় হয়ে যাওয়ার বিষয়। তারপরও যদি কেউ পরিকল্পিতভাবেই গুনাহ করে ফেলে এবং তারপর খাটিমনে তাওবা-ইস্তিগফার করে, তবে তাওবা-ইস্তিগফারের ফযীলত তার জন্যও প্রযোজ্য হবে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছ দ্বারা আল্লাহ তা'আলার অসীম ক্ষমাশীলতার গুণ সম্পর্কে ধারণা লাভ হয়
খ. আল্লাহ তা'আলার কাছে বান্দার তাওবা-ইস্তিগফার খুব পসন্দ। তাই আমরা বেশি বেশি তাওবা-ইস্তিগফার করব।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
