আল জামিউল কাবীর- ইমাম তিরমিযী রহঃ
৩৬. যুহদ-দুনিয়া বিমুখতার বর্ণনা
হাদীস নং: ২৩৯০
আন্তর্জাতিক নং: ২৩৯০
আল্লাহর জন্য ভালবাসা।
২৩৯৩. আহমাদ ইবনে মানী‘ (রাহঃ) ...... মুআয ইবনে জাবাল (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে বলতে শুনেছি যে, আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেনঃ আমার সম্মান ও পরাক্রমের খাতিরে যারা পরস্পরকে ভালবাসে (কিয়ামতের দিন) তাদের জন্য হবে নুরের মিম্বর। নবী ও শহীদগণও তাদের মর্যাদা দর্শনে গিবতা (ঈর্ষা) করবেন।*
*গিবতা অর্থ কারো মর্যাদা দর্শনে বা কোন গুণ দেখে তা লাভের আশা করা। এখানে অর্থ হল নবী ও শহীদগণও তাদের এই মর্যাদার প্রশংসা করবেন। স্বীয় মর্যাদার সঙ্গে নিজের জন্য এই মর্যাদা লাভেরও তাঁদের প্রত্যাশা হবে।
*গিবতা অর্থ কারো মর্যাদা দর্শনে বা কোন গুণ দেখে তা লাভের আশা করা। এখানে অর্থ হল নবী ও শহীদগণও তাদের এই মর্যাদার প্রশংসা করবেন। স্বীয় মর্যাদার সঙ্গে নিজের জন্য এই মর্যাদা লাভেরও তাঁদের প্রত্যাশা হবে।
باب مَا جَاءَ فِي الْحُبِّ فِي اللَّهِ
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ هِشَامٍ، حَدَّثَنَا جَعْفَرُ بْنُ بُرْقَانَ، حَدَّثَنَا حَبِيبُ بْنُ أَبِي مَرْزُوقٍ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ أَبِي رَبَاحٍ، عَنْ أَبِي مُسْلِمٍ الْخَوْلاَنِيِّ، حَدَّثَنِي مُعَاذُ بْنُ جَبَلٍ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ الْمُتَحَابُّونَ فِي جَلاَلِي لَهُمْ مَنَابِرُ مِنْ نُورٍ يَغْبِطُهُمُ النَّبِيُّونَ وَالشُّهَدَاءُ " . وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ وَابْنِ مَسْعُودٍ وَعُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَأَبِي مَالِكٍ الأَشْعَرِيِّ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَأَبُو مُسْلِمٍ الْخَوْلاَنِيُّ اسْمُهُ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ ثُوَبَ .
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছে আল্লাহ তাআলার জন্য যারা একে অন্যকে ভালোবাসে, আখেরাতে তারা কী উচ্চমর্যাদার অধিকারী হবে তা জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে, তাদের জন্য থাকবে নূরের মিম্বর। তাতে তারা সমাসীন হবে। তাদের এ উচ্চমর্যাদা দেখে নবী ও শহীদগণ পর্যন্ত ঈর্ষাবোধ করবেন। হাদীছটির শব্দ হচ্ছে-
يَغْبِطُهُمُ النَّبِيُّونَ وَالشُّهَدَاءُ (নবী ও শহীদগণও তাদের প্রতি ঈর্ষাবোধ করবেন)। يَغْبِطُ ক্রিয়াপদটির উৎপত্তি غبطة থেকে। গিবতা (غبطة) হলো অন্যের প্রাপ্ত নিআমতের অনুরূপ নিজের জন্য আকাঙ্ক্ষা করা, কিন্তু তার থেকে তা বিলুপ্তি কামনা না করা। আরেক হচ্ছে হাসাদ। হাসাদ বলা হয় অন্যের থেকে নিআমতের বিলুপ্তি কামনার সঙ্গে নিজের জন্য তা পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা করা। হাসাদ করা কঠিন পাপ। গিবতা পাপ নয়; বরং ফযীলতের ক্ষেত্রে তা প্রশংসনীয়। যেমন অন্যের ইলমী যোগ্যতা দেখে নিজের জন্যও অনুরূপ যোগ্যতা কামনা করা, অন্যের তাকওয়া-পরহেযগারী দেখে নিজের জন্যও অনুরূপ তাকওয়া-পরহেযগারী কামনা করা ইত্যাদি।
প্রশ্ন হতে পারে, নবী ও শহীদদের মর্যাদা তো আরও উপরে, তারা কেন এদের প্রতি গিবতা বা ঈর্ষা বোধ করবেন?
এর উত্তর হলো, নবী ও শহীদদের ঈর্ষাবোধের কথাটি বলা হয়েছে কেবলই আল্লাহর জন্য পরস্পরে ভালোবাসা পোষণকারীদের উচ্চমর্যাদা ফুটিয়ে তোলা ও সে মর্যাদার কারণে তাদের প্রতি নবী ও শহীদদের মুগ্ধতা প্রকাশের জন্য। এটি একটি বাকশৈলী। এর দ্বারা উদ্দেশ্য এ কথা বোঝানো নয় যে, তারাও অনুরূপ মর্যাদা কামনা করবেন। এরকম বাকশৈলী সব ভাষায়ই আছে। ছাত্র বা শিষ্যকে পুরস্কৃত হতে দেখে তার মুগ্ধ উস্তায বা গুরুজন অনেক সময় বলে থাকে, এরকম পুরস্কৃত যদি আমিও হতে পারতাম! বাস্তবে হয়তো তিনি তারচে'ও বড় পুরস্কার পেয়েছিলেন। তার এ কথা বলার উদ্দেশ্য কেবলই তাকে উৎসাহ দেওয়া ও বাহবা জানানো।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
এ হাদীছ দ্বারা জানা যায়, আল্লাহ তাআলার কাছে ওই সকল লোকের কত উচ্চমর্যাদা, যারা কেবল আল্লাহরই জন্য একে অন্যকে ভালোবাসে। সুতরাং আমরাও কেবল আল্লাহর জন্যই একে অন্যকে ভালোবাসব।
يَغْبِطُهُمُ النَّبِيُّونَ وَالشُّهَدَاءُ (নবী ও শহীদগণও তাদের প্রতি ঈর্ষাবোধ করবেন)। يَغْبِطُ ক্রিয়াপদটির উৎপত্তি غبطة থেকে। গিবতা (غبطة) হলো অন্যের প্রাপ্ত নিআমতের অনুরূপ নিজের জন্য আকাঙ্ক্ষা করা, কিন্তু তার থেকে তা বিলুপ্তি কামনা না করা। আরেক হচ্ছে হাসাদ। হাসাদ বলা হয় অন্যের থেকে নিআমতের বিলুপ্তি কামনার সঙ্গে নিজের জন্য তা পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা করা। হাসাদ করা কঠিন পাপ। গিবতা পাপ নয়; বরং ফযীলতের ক্ষেত্রে তা প্রশংসনীয়। যেমন অন্যের ইলমী যোগ্যতা দেখে নিজের জন্যও অনুরূপ যোগ্যতা কামনা করা, অন্যের তাকওয়া-পরহেযগারী দেখে নিজের জন্যও অনুরূপ তাকওয়া-পরহেযগারী কামনা করা ইত্যাদি।
প্রশ্ন হতে পারে, নবী ও শহীদদের মর্যাদা তো আরও উপরে, তারা কেন এদের প্রতি গিবতা বা ঈর্ষা বোধ করবেন?
এর উত্তর হলো, নবী ও শহীদদের ঈর্ষাবোধের কথাটি বলা হয়েছে কেবলই আল্লাহর জন্য পরস্পরে ভালোবাসা পোষণকারীদের উচ্চমর্যাদা ফুটিয়ে তোলা ও সে মর্যাদার কারণে তাদের প্রতি নবী ও শহীদদের মুগ্ধতা প্রকাশের জন্য। এটি একটি বাকশৈলী। এর দ্বারা উদ্দেশ্য এ কথা বোঝানো নয় যে, তারাও অনুরূপ মর্যাদা কামনা করবেন। এরকম বাকশৈলী সব ভাষায়ই আছে। ছাত্র বা শিষ্যকে পুরস্কৃত হতে দেখে তার মুগ্ধ উস্তায বা গুরুজন অনেক সময় বলে থাকে, এরকম পুরস্কৃত যদি আমিও হতে পারতাম! বাস্তবে হয়তো তিনি তারচে'ও বড় পুরস্কার পেয়েছিলেন। তার এ কথা বলার উদ্দেশ্য কেবলই তাকে উৎসাহ দেওয়া ও বাহবা জানানো।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
এ হাদীছ দ্বারা জানা যায়, আল্লাহ তাআলার কাছে ওই সকল লোকের কত উচ্চমর্যাদা, যারা কেবল আল্লাহরই জন্য একে অন্যকে ভালোবাসে। সুতরাং আমরাও কেবল আল্লাহর জন্যই একে অন্যকে ভালোবাসব।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
