আল জামিউল কাবীর- ইমাম তিরমিযী রহঃ
৩৬. যুহদ-দুনিয়া বিমুখতার বর্ণনা
হাদীস নং: ২৩৫৫
আন্তর্জাতিক নং: ২৩৫৫
দরিদ্র মুহাজিরগণ ধনীদের পূর্বে জান্নাতে প্রবেশ করবেন।
২৩৫৮. আব্বাস ইবনে মুহাম্মাদ দূরী (রাহঃ) ..... জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ দরিদ্র মুসলমানগণ ধনীদের অর্ধেক দিন পূর্বেই জান্নাতে দাখেল হবে।
باب مَا جَاءَ أَنَّ فُقَرَاءَ الْمُهَاجِرِينَ يَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ قَبْلَ أَغْنِيَائِهِمْ
حَدَّثَنَا الْعَبَّاسُ بْنُ مُحَمَّدٍ الدُّورِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يَزِيدَ الْمُقْرِئُ، حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ أَبِي أَيُّوبَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ جَابِرٍ الْحَضْرَمِيِّ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " يَدْخُلُ فُقَرَاءُ الْمُسْلِمِينَ الْجَنَّةَ قَبْلَ أَغْنِيَائِهِمْ بِأَرْبَعِينَ خَرِيفًا " . هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ .
হাদীসের ব্যাখ্যা:
১. ইবনে মাজার রেওয়ায়তে আছে, পাঁচ শত বৎসর পূর্বে প্রবেশ করিবে। ইহার সমাধানে বলা হয় যে, আলোচ্য হাদীসে মুহাজির গরীব ও মুহাজির ধনীর মধ্যে চল্লিশ বৎসরের ব্যবধান। আর পাঁচ শত বৎসরের ব্যবধান হইল সাধারণ ঈমানদারদের মধ্যে।
হাদীসের মূল শব্দ হইল خريف – গ্রীষ্ম ও শীত এই উভয় ঋতুর মধ্যবর্তী সময়কে ‘খারীফ’ বলা হয়। তবে সাধারণতঃ 'দীর্ঘ সময়' অর্থে ব্যবহৃত হয়। বস্তুতঃ দীর্ঘ সময় বলিতে একটি গোটা বৎসরকে বুঝায়।
২. হাদীছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জানিয়েছেন যে, গরীবেরা ধনীদের চল্লিশ বৎসর আগে জান্নাতে প্রবেশ করবে। এর কারণ, হিসাব-নিকাশের জন্য ধনীদের আটকে রাখা হবে। তারা কোন পথে সম্পদ অর্জন করেছিল এবং কোন কোন খাতে ব্যয় করেছিল সে সম্পর্কে তাদেরকে জিজ্ঞেস করা হবে। গরীবদের তো সে বালাই নেই।
হযরত মালিক ইবন দীনার রহ. এক সফরে নদীর এক পার থেকে অপর পারে গেলেন। ওপারে যেতেই কর আদায়কারীগণ ধরল। তোমার মালামালের কর দিয়ে যাও। তিনি দু'হাত উঁচু করে বললেন, দেখ কী আছে, নিয়ে নাও। তারা দেখল সঙ্গে মালামাল বলতে কিছুই নেই। তাদের তো ব্যস্ততা। শুধু শুধু কথা বলে সময় নষ্ট করার অবকাশ নেই। তাড়া দিয়ে বলল, যাও যাও! তিনি কতদূর এগিয়ে গিয়ে দাঁড়ালেন। তারপর নিজেকে সম্বোধন করে বললেন, ওহে দীনারের পুত্র মালিক। আখিরাতের বিষয়টি তো এমনই হবে। অর্থাৎ মাল নেই তো হিসাবও নেই। মাল থাকলে হিসাব দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে থাকো।
এর দ্বারা বোঝা গেল ধনী দীনদার অপেক্ষা গরীব দীনদারের আখিরাতে পার হওয়া সহজ হবে। দীনদার ব্যক্তি ধনী হলে তার সম্পদের হিসাব দেওয়ার একটা ব্যাপার যেহেতু আছে, তাই তার কিছু না কিছু বিলম্ব অবশ্যই হবে। হাঁ, আল্লাহ তা'আলা যাদেরকে বিনা হিসেবে পার করে দেবেন তাদের কথা আলাদা।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. গরীবানা অবস্থা বাহ্যদৃষ্টিতে কষ্টকর হলেও আখিরাতের পক্ষে কল্যাণকর। তাই গরীবদের উচিত অভাব-অনটনের জন্য আক্ষেপ না করে ধৈর্য ও সহ্যের সঙ্গে দুনিয়ার জীবন পার করা।
খ. বিষয়টা যেহেতু জান্নাতে প্রবেশের, তাই দীনদারীর শর্ত অবশ্যই আছে। সুতরাং কেবল গরীবানা অবস্থার উপর নির্ভর করার সুযোগ নেই। নিজ দীন ও ঈমানেরও যত্ন নিতে হবে।
গ. বিলম্বে হলেও দীনদার ধনী ব্যক্তি অবশ্যই জান্নাতে যাবে। তাই ধনী ব্যক্তিরও নিজ দ্বীনদারীর পরিচর্যা করা অবশ্যকর্তব্য।
হাদীসের মূল শব্দ হইল خريف – গ্রীষ্ম ও শীত এই উভয় ঋতুর মধ্যবর্তী সময়কে ‘খারীফ’ বলা হয়। তবে সাধারণতঃ 'দীর্ঘ সময়' অর্থে ব্যবহৃত হয়। বস্তুতঃ দীর্ঘ সময় বলিতে একটি গোটা বৎসরকে বুঝায়।
২. হাদীছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জানিয়েছেন যে, গরীবেরা ধনীদের চল্লিশ বৎসর আগে জান্নাতে প্রবেশ করবে। এর কারণ, হিসাব-নিকাশের জন্য ধনীদের আটকে রাখা হবে। তারা কোন পথে সম্পদ অর্জন করেছিল এবং কোন কোন খাতে ব্যয় করেছিল সে সম্পর্কে তাদেরকে জিজ্ঞেস করা হবে। গরীবদের তো সে বালাই নেই।
হযরত মালিক ইবন দীনার রহ. এক সফরে নদীর এক পার থেকে অপর পারে গেলেন। ওপারে যেতেই কর আদায়কারীগণ ধরল। তোমার মালামালের কর দিয়ে যাও। তিনি দু'হাত উঁচু করে বললেন, দেখ কী আছে, নিয়ে নাও। তারা দেখল সঙ্গে মালামাল বলতে কিছুই নেই। তাদের তো ব্যস্ততা। শুধু শুধু কথা বলে সময় নষ্ট করার অবকাশ নেই। তাড়া দিয়ে বলল, যাও যাও! তিনি কতদূর এগিয়ে গিয়ে দাঁড়ালেন। তারপর নিজেকে সম্বোধন করে বললেন, ওহে দীনারের পুত্র মালিক। আখিরাতের বিষয়টি তো এমনই হবে। অর্থাৎ মাল নেই তো হিসাবও নেই। মাল থাকলে হিসাব দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে থাকো।
এর দ্বারা বোঝা গেল ধনী দীনদার অপেক্ষা গরীব দীনদারের আখিরাতে পার হওয়া সহজ হবে। দীনদার ব্যক্তি ধনী হলে তার সম্পদের হিসাব দেওয়ার একটা ব্যাপার যেহেতু আছে, তাই তার কিছু না কিছু বিলম্ব অবশ্যই হবে। হাঁ, আল্লাহ তা'আলা যাদেরকে বিনা হিসেবে পার করে দেবেন তাদের কথা আলাদা।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. গরীবানা অবস্থা বাহ্যদৃষ্টিতে কষ্টকর হলেও আখিরাতের পক্ষে কল্যাণকর। তাই গরীবদের উচিত অভাব-অনটনের জন্য আক্ষেপ না করে ধৈর্য ও সহ্যের সঙ্গে দুনিয়ার জীবন পার করা।
খ. বিষয়টা যেহেতু জান্নাতে প্রবেশের, তাই দীনদারীর শর্ত অবশ্যই আছে। সুতরাং কেবল গরীবানা অবস্থার উপর নির্ভর করার সুযোগ নেই। নিজ দীন ও ঈমানেরও যত্ন নিতে হবে।
গ. বিলম্বে হলেও দীনদার ধনী ব্যক্তি অবশ্যই জান্নাতে যাবে। তাই ধনী ব্যক্তিরও নিজ দ্বীনদারীর পরিচর্যা করা অবশ্যকর্তব্য।
২. ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
