আল জামিউল কাবীর- ইমাম তিরমিযী রহঃ

২৬. বিভিন্ন পানীয়ের বিধান ও পান করার আদব

হাদীস নং: ১৮৯২
আন্তর্জাতিক নং: ১৮৯২
উক্ত বিষয়ে অবকাশ প্রসঙ্গে।
১৮৯৮। ইবনে আবু উমর (রাহঃ) ......... কাবাশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) একবার আমার কাছে এলেন, তিনি দাঁড়িয়ে একটি ঝুলন্ত মশকের মুখ থেকে পানি পান করলেন। পরে আমি উঠে গিয়ে এর মুখটি কেটে রেখে দিলাম।

এ হাদীসটি হাসান-সহীহ-গারীব। ইয়াযীদ ইবনে ইয়াযীদ ইবনে জাবির (রাহঃ) হলেন, আব্দুর রহমান ইবনে ইয়াযীদ ইবনে জাবির (রাহঃ)-এর ভাই, তিনি তার পূর্বে মারা যান।
باب مَا جَاءَ فِي الرُّخْصَةِ فِي ذَلِكَ
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ يَزِيدَ بْنِ جَابِرٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي عَمْرَةَ، عَنْ جَدَّتِهِ، كَبْشَةَ قَالَتْ دَخَلَ عَلَىَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَشَرِبَ مِنْ فِي قِرْبَةٍ مُعَلَّقَةٍ قَائِمًا فَقُمْتُ إِلَى فِيهَا فَقَطَعْتُهُ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ . وَيَزِيدُ بْنُ يَزِيدَ بْنِ جَابِرٍ هُوَ أَخُو عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ يَزِيدَ بْنِ جَابِرٍ وَهُوَ أَقْدَمُ مِنْهُ مَوْتًا .

হাদীসের ব্যাখ্যা:

এ হাদীছ দ্বারা তিনটি বিষয় জানা যায়।

(ক) নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়িয়ে পানি পান করেছেন। এর দ্বারা বোঝা গেল দাঁড়িয়ে পানি পান করা মাকরূহে তানযীহী, হারাম নয়।

(খ) নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মশকের মুখে মুখ লাগিয়ে পানি পান করেছেন। অথচ পেছনে দুই হাদীছে তিনি এভাবে পানি পান করতে নিষেধ করেছেন। এর দ্বারা বোঝা যায় ওই নিষেধাজ্ঞা হারাম পর্যায়ের নয়। নানারকম ক্ষতির আশঙ্কা থাকে বলেই তা নিষেধ করা হয়েছে। তার মানে ওভাবে পানি পান করা অপসন্দনীয়। অর্থাৎ মাকরূহে তানযীহী। আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে যে মশকে মুখ দিয়ে পান করেছেন, এটা প্রমাণ করে এভাবে পান করা জায়েয আছে, যদিও মাকরূহ বা অপসন্দনীয়।

(গ) হযরত উম্মু ছাবিত রাযি. মশকের মুখ কেটে নিয়েছেন। এর ব্যাখ্যায় ইমাম নববী রহ. বলেন, যেহেতু মশকের মুখে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মুখ লেগেছিল, তাই মশকের সে স্থানটি তাবাররুক হিসেবে নিজের কাছে সংরক্ষণ করার জন্য তিনি সেটি কেটে নিয়েছিলেন।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

ক. কলস বা মশকের মুখে মুখ লাগিয়ে পানি পান করতে নেই। এতে নানা ক্ষতির আশঙ্কা থাকে।

খ. এ হাদীছ দ্বারা তাবাররুকের বৈধতা প্রমাণ হয়। কাজেই কেউ যদি আল্লাহওয়ালাদের কোনও স্মৃতিচিহ্ন তাবাররুক হিসেবে সংরক্ষণ করে, তবে তাতে আপত্তি করার কোনও বৈধতা নেই।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
জামে' তিরমিযী - হাদীস নং ১৮৯২ | মুসলিম বাংলা