আল জামিউল কাবীর- ইমাম তিরমিযী রহঃ

২৬. বিভিন্ন পানীয়ের বিধান ও পান করার আদব

হাদীস নং: ১৮৮৮
আন্তর্জাতিক নং: ১৮৮৮
পানীয় বস্তুতে ফুঁক দেওয়া মাকরূহ।
১৮৯৪। ইবনে আবু উমর (রাহঃ) ......... ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, নবী (ﷺ) পাত্রে শ্বাস ফেলতে বা তাতে ফুঁক দিতে নিষেধ করেছেন। ইবনে মাজাহ ৩৪২৯

এ হাদীসটি হাসান-সহীহ।
باب مَا جَاءَ فِي كَرَاهِيَةِ النَّفْخِ فِي الشَّرَابِ
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ عَبْدِ الْكَرِيمِ الْجَزَرِيِّ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم نَهَى أَنْ يُتَنَفَّسَ فِي الإِنَاءِ أَوْ يُنْفَخَ فِيهِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .

হাদীসের ব্যাখ্যা:

নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পানপাত্রে নিঃশ্বাস ফেলতে ও ফুঁ দিতে নিষেধ করেছেন, তাতে পাত্রে পানি থাকুক বা শরবত বা অন্য কিছু, যেমন বর্তমানকালে চা, কফি ইত্যাদি।

পাত্রে নিঃশ্বাস ফেলতে ও ফুঁ দিতে নিষেধ করার কারণ এক তো এই হতে পারে যে, তাতে পাত্রের ভেতর থুথু বা শ্লেষ্মা পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এরপর সে পাত্র থেকে পান করতে নিজেরই খারাপ লাগবে। অন্যের তো অরুচি লাগবেই। ফলে পাত্রের পানি, শরবত কিংবা অন্য যা-ই থাকে তা ফেলে দিতে হবে। এটা নি'আমতের অপচয়।

চিকিৎসা শাস্ত্রীয় গবেষণা অনুযায়ী পাত্রে নিঃশ্বাস ত্যাগ করাটা স্বাস্থ্যের পক্ষেও ক্ষতিকর। কেননা মানুষ নাক ও মুখ দিয়ে যখন নিঃশ্বাস গ্রহণ করে, তখন বায়ুমণ্ডল থেকে তার ভেতরে অক্সিজেন প্রবেশ করে। আর যখন নিঃশ্বাস ছাড়ে, তখন কার্বন-ডাই-অক্সাইড বের হয়ে আসে। তার ভেতর দেহের দূষিত বাষ্প ও রোগ-জীবাণু থাকে। পাত্রে নিঃশ্বাস ত্যাগ করলে খাবার বা পানির সঙ্গে তা মিশে যায়। সেই খাবার বা পানি যখন খাওয়া হয়, তখন ওই দূষিত বাষ্প ও রোগ-জীবাণু পুনরায় শরীরে প্রবেশ করে। ফলে নানা রোগ-ব্যাধি জন্ম নেওয়ার আশঙ্কা থাকে।

কারণ যাই হোক, হাদীছে যেহেতু পাত্রে ফুঁ দিতে ও নিঃশ্বাস ফেলতে নিষেধ করা হয়েছে, তখন আমরা অবশ্যই তা থেকে বিরত থাকব। এটা সুন্নতের অনুসরণ। এতে ছাওয়াব পাওয়া যাবে। ছাওয়াব অর্জনই আমাদের মূল লক্ষ্যবস্তু।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

ক. পানি ও শরবতের গ্লাস, চায়ের কাপ ইত্যাদিতে ফুঁ দেওয়া ও নিঃশ্বাস ছাড়া উচিত নয়।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)