আল জামিউল কাবীর- ইমাম তিরমিযী রহঃ
২১. নবীজী ﷺ থেকে বর্ণিত জিহাদের বিধানাবলী
হাদীস নং: ১৬০৫
আন্তর্জাতিক নং: ১৬০৫
মুশরীকদের মাঝে বসবাস নিন্দনীয়।
১৬১১। হান্নাদ (রাহঃ) ......... কায়স ইবনে আবু হাযিম (রাহঃ) থেকে আবু মুআবিয়া (১৬০৭ নং) বর্ণিত হাদীসের বর্ণনা করেছেন। তবে এ সনদে জারীর (রাযিঃ)-এর উল্লেখ নেই। এটি অধিকত সহীহ।
এই বিষয়ে সামুরা (রাযিঃ) থেকেও হাদীস বর্ণিত আছে। ইসমাঈল (রাহঃ) এর অধিকাংশ শারগিদ এটিকে কায়স ইবনে আবু হাযিম থেকে রিওয়ায়াত করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এক বাহিনী প্রেরণ করেছিলেন। এতে তারা জারীর (রাযিঃ)-এর উল্লেখ করেননি। হাম্মাদ ইবনে সালামা এটিকে হাজ্জাজ ইবনে আরতাত-ইসমাঈল ইবনে আবু খালিদ-কায়স-জারীর (রাযিঃ) সূত্রে আবু মুআবিয়া (রাহঃ) এর অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। আমি মুহাম্মাদ (ইমাম বুখারী)-কে বলতে শুনেছি যে, সহীহ হলো কায়স-নবী (ﷺ) সূত্রে মুরসালরূপে বর্ণিত রিওয়ায়াতটি। সামুরা ইবনে জুনদুব (রাযিঃ) বর্ণনা করেন যে, নবী (ﷺ) বলেছেনঃ তোমরা মুশরিকদের সাথে বসবাস করবে না এবং তাদের সাথে একত্রিতও হবে না। যে ব্যক্তি তাদের সাথে বসবাস করবে বা তাদের সাথে মিলিত হবে সে তাদেরই মত।
এই বিষয়ে সামুরা (রাযিঃ) থেকেও হাদীস বর্ণিত আছে। ইসমাঈল (রাহঃ) এর অধিকাংশ শারগিদ এটিকে কায়স ইবনে আবু হাযিম থেকে রিওয়ায়াত করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এক বাহিনী প্রেরণ করেছিলেন। এতে তারা জারীর (রাযিঃ)-এর উল্লেখ করেননি। হাম্মাদ ইবনে সালামা এটিকে হাজ্জাজ ইবনে আরতাত-ইসমাঈল ইবনে আবু খালিদ-কায়স-জারীর (রাযিঃ) সূত্রে আবু মুআবিয়া (রাহঃ) এর অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। আমি মুহাম্মাদ (ইমাম বুখারী)-কে বলতে শুনেছি যে, সহীহ হলো কায়স-নবী (ﷺ) সূত্রে মুরসালরূপে বর্ণিত রিওয়ায়াতটি। সামুরা ইবনে জুনদুব (রাযিঃ) বর্ণনা করেন যে, নবী (ﷺ) বলেছেনঃ তোমরা মুশরিকদের সাথে বসবাস করবে না এবং তাদের সাথে একত্রিতও হবে না। যে ব্যক্তি তাদের সাথে বসবাস করবে বা তাদের সাথে মিলিত হবে সে তাদেরই মত।
باب مَا جَاءَ فِي كَرَاهِيَةِ الْمُقَامِ بَيْنَ أَظْهُرِ الْمُشْرِكِينَ
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا عَبْدَةُ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ أَبِي خَالِدٍ، عَنْ قَيْسِ بْنِ أَبِي حَازِمٍ، مِثْلَ حَدِيثِ أَبِي مُعَاوِيَةَ وَلَمْ يَذْكُرْ فِيهِ عَنْ جَرِيرٍ، . وَهَذَا أَصَحُّ . وَفِي الْبَابِ عَنْ سَمُرَةَ، . قَالَ أَبُو عِيسَى وَأَكْثَرُ أَصْحَابِ إِسْمَاعِيلَ قَالُوا عَنْ قَيْسِ بْنِ أَبِي حَازِمٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَعَثَ سَرِيَّةً وَلَمْ يَذْكُرُوا فِيهِ عَنْ جَرِيرٍ. وَرَوَاهُ حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ عَنْ الْحَجَّاجِ بْنِ أَرْطَاةَ عَنْ إِسْمَعِيلَ بْنِ أَبِي خَالِدٍ عَنْ قَيْسٍ عَنْ جَرِيرٍ مِثْلَ حَدِيثِ أَبِي مُعَاوِيَةَ قَالَ وَسَمِعْت مُحَمَّدًا يَقُولُ الصَّحِيحُ حَدِيثُ قَيْسٍ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُرْسَلٌ وَرَوَى سَمُرَةُ بْنُ جُنْدَبٍ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَا تُسَاكِنُوا الْمُشْرِكِينَ وَلَا تُجَامِعُوهُمْ فَمَنْ سَاكَنَهُمْ أَوْ جَامَعَهُمْ فَهُوَ مِثْلُهُمْ
হাদীসের ব্যাখ্যা:
কুরআন মজীদে ইরশাদ হয়েছে-‘হে ঈমানদারগণ, তোমরা নিজেদেরকে ও তোমাদের পরিবার-পরিজনকে ওই আগুন থেকে রক্ষা কর, যার ইন্ধন মানুষ ও পাথর, যাতে নিয়োজিত রয়েছে নির্মমহৃদয়, কঠোরস্বভাব ফেরেশতাগণ, যারা কখনও আল্লাহর আদেশের অবাধ্য হয় না এবং যে আদেশ তাদেরকে করা হয় তা-ই তারা পালন করে।’ (সূরা তাহরীম : ৬) এই আয়াতে আল্লাহ তাআলা তাঁর মুমিন বান্দাদেরকে সম্বোধন করেছেন এবং জাহান্নামের ভয়াবহ আযাব সম্পর্কে সাবধান করে আদেশ দিয়েছেন যে, তারা যেন নিজেরাও ওই আযাব থেকে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা করে এবং পরিবার-পরিজনকেও রক্ষা করার চেষ্টা করে। আল্লাহ তাআলা এই আদেশ করেছেন তার বিশ্বাসী বান্দাদেরকে, বিশ্বাসী বলে সম্বোধন করে। তাই একদিকে যেমন জানা যাচ্ছে যে, এটি একটি ফরয বিধান যা পালন করা প্রত্যেক ঈমানদার নর-নারীর জন্য অপরিহার্য, অন্যদিকে তার তাৎপর্যও বোঝা যাচ্ছে। ঈমানদার বান্দাদের প্রতি আল্লাহ তাআলার করুণা ও মেহেরবানীতে এই সম্বোধনটি সিক্ত। এই আয়াত থেকে প্রমাণ হয় যে, যে পরিমাণ দ্বীনদারী ছাড়া আখিরাতের আযাব থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে না ওই পরিমাণ দ্বীনদারী অর্জন করা এবং রক্ষা করা অপরিহার্য। তদ্রূপ যে পরিবেশে তা রক্ষা করা সম্ভব নয় সেই পরিবেশ পরিত্যাগ করাও অপরিহার্য।
আল্লামা খাত্তাবী (রহ.) এই হাদীসের ব্যাখ্যায় বলেছেন, এর অনেকগুলো কারণ রয়েছে। বিজ্ঞ ওলামায়ে কেরামের অনেকে হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এই ইরশাদের ব্যাখ্যা করেছেন বিভিন্নভাবে। যেমন কোন কোন বিজ্ঞ আলেমের কাছে এর অর্থ হল এই যে, হুকুমের ক্ষেত্রে মুসলমান আর মুশরিক সমকক্ষ হতে পারে না। উভয়ের আহকাম ভিন্ন ভিন্ন। আবার কোন কোন আলেম বলেছেন, এই হাদীসটির সারমর্ম হল এই যে, আল্লাহ তাআলা দারুল ইসলাম এবং দারুল কুফরকে ভিন্ন ভিন্ন করে দিয়েছেন। সুতরাং কোন মুসলমানের জন্য কাফেরদের রাষ্ট্রে তাদের সঙ্গে একত্রে বসবাস করা জায়েয নেই। কেননা যখন মুশরিকরা তাদের (বিজয়ের) মশাল সমুজ্জল করবে, আর তাদের সঙ্গে মুসলমানরা নীরবতা অবলম্বন করে থাকবে, তখন বাহ্যিক দৃষ্টিতে এটিই মনে হবে যে, তারা (মুসলমানরা) এদেরই অন্তর্ভুক্ত। ওলামায়ে কেরামের এই ব্যাখ্যা দ্বারা একথাও পরিস্কার হয়ে যাচ্ছে যে, যদি কোন মুসলমান ব্যবসা বাণিজ্যের উদ্দেশ্যেও কাফেরদের রাষ্ট্রে গমণ করে, তাহলে তার জন্য সেখানে প্রয়োজনের অতিরিক্ত সময় অবস্থান করা মাকরূহ।' (মাআলিমুস সুনান লিল-খাত্তাবী : [আবু সুলায়মান আল খাত্তাবী, মৃত্যু : ৩৮৮ হি.] খণ্ড ৩, পৃষ্ঠা ৪৩৭)
আল্লামা খাত্তাবী (রহ.) এই হাদীসের ব্যাখ্যায় বলেছেন, এর অনেকগুলো কারণ রয়েছে। বিজ্ঞ ওলামায়ে কেরামের অনেকে হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এই ইরশাদের ব্যাখ্যা করেছেন বিভিন্নভাবে। যেমন কোন কোন বিজ্ঞ আলেমের কাছে এর অর্থ হল এই যে, হুকুমের ক্ষেত্রে মুসলমান আর মুশরিক সমকক্ষ হতে পারে না। উভয়ের আহকাম ভিন্ন ভিন্ন। আবার কোন কোন আলেম বলেছেন, এই হাদীসটির সারমর্ম হল এই যে, আল্লাহ তাআলা দারুল ইসলাম এবং দারুল কুফরকে ভিন্ন ভিন্ন করে দিয়েছেন। সুতরাং কোন মুসলমানের জন্য কাফেরদের রাষ্ট্রে তাদের সঙ্গে একত্রে বসবাস করা জায়েয নেই। কেননা যখন মুশরিকরা তাদের (বিজয়ের) মশাল সমুজ্জল করবে, আর তাদের সঙ্গে মুসলমানরা নীরবতা অবলম্বন করে থাকবে, তখন বাহ্যিক দৃষ্টিতে এটিই মনে হবে যে, তারা (মুসলমানরা) এদেরই অন্তর্ভুক্ত। ওলামায়ে কেরামের এই ব্যাখ্যা দ্বারা একথাও পরিস্কার হয়ে যাচ্ছে যে, যদি কোন মুসলমান ব্যবসা বাণিজ্যের উদ্দেশ্যেও কাফেরদের রাষ্ট্রে গমণ করে, তাহলে তার জন্য সেখানে প্রয়োজনের অতিরিক্ত সময় অবস্থান করা মাকরূহ।' (মাআলিমুস সুনান লিল-খাত্তাবী : [আবু সুলায়মান আল খাত্তাবী, মৃত্যু : ৩৮৮ হি.] খণ্ড ৩, পৃষ্ঠা ৪৩৭)
.
