আল জামিউল কাবীর- ইমাম তিরমিযী রহঃ

১৭. নবীজী ﷺ থেকে বর্ণিত দন্ড বিধি

হাদীস নং: ১৪৩৩
আন্তর্জাতিক নং: ১৪৩৩
বিবাহিত ব্যক্তির উপর ’রজম’ প্রয়োগ।
১৪৩৯। নসর ইবনে আলী প্রমুখ (রাহঃ) ......... আবু হুরায়রা, যায়দ ইবনে খালিদ ও শিবল (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, তাঁরা নবী (ﷺ) এর কাছে ছিলেন। এমন সময় তাঁর নিকট দুই ব্যক্তি বিবাদ করতে করতে এল। একজন তাঁর নিকট দাঁড়িয়ে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ, আল্লাহর কসম দিয়ে বলছি আপনি আমাদের মাঝে আল্লাহর কিতাব দিয়ে ফায়সালা করে দিবেন। তার চাইতে অধিকতর বোধসম্পন্ন তার সঙ্গীটি বলল, হ্যাঁ, ইয়া রাসূলাল্লাহ, আপনি অবশ্যই আল্লাহর কিতাব অনুসারে আমাদের মাঝে ফায়সালা করে দিবেন। আর আমাকে কথা বলতে অনুমতি দিন। আমার ছেলে এই ব্যক্তির কাছে মজদুর হিসাবে ছিল। অনন্তর সে তার স্ত্রীর সাথে যিনা করে বসেছে। লোকেরা আমাকে অবহিত করল যে, আমার পুত্রের উপর ‘রজম’ প্রযোজ্য। ফলে আমি এর বদলে একশত বকরী ও একজন খাদিম ফিদয়া রূপে দিয়ে দেই। পরে আলেমদের মত কিছু লোকের সঙ্গে আমার সাক্ষাত হয়। তারা মত দিলেন, আমার ছেলের উপর প্রযোজ্য হল এক শত কোড়া এবং এক বছরের জন্য নির্বাসন দন্ড। আর রজম হল এই ব্যক্তির স্ত্রীর উপর।

তখন নবী (ﷺ) বললেন, যার হাতে আমার প্রাণ তাঁর কসম, অবশ্যই তোমাদের মাঝে আমি আল্লাহর কিতাব অনুসারে ফায়সালা করে দিব। একশত ছাগল ও খাদিম তোমাদের নিকট প্রত্যাবৃত্ত হবে। তোমার পুত্রের উপর শাস্তি হল, এক শত কোড়া ও এক বছরের জন্য নির্বাসন দন্ড। হে উনায়স, তুমি ভোরে এর স্ত্রীর কাছে যাবে। যদি সে তার অপরাধ স্বীকার করে তবে তাকে ‘রজম’ দন্ড দেবে। পরে তিনি ভোরে ঐ মহিলাটির কাছে গেলে সে অপরাধ স্বীকার করে। ফলে তিনি তাকে ‘রজম’ করেন।

ইবনে মাজাহ ২৫৪৯, নাসাঈ

ইসহাক ইবনে মুসা আল-আনসারী (রাহঃ) ......... আবু হুরায়রা ও যায়দ ইবনে খালিদ (রাযিঃ) সূত্রে নবী (ﷺ) থেকে উক্ত মর্মে অনুরূপ বর্ণিত আছে।

কুতায়বা (রাহঃ) ......... ইবনে শিহাব (রাহঃ) থেকে মালিক (রাহঃ) সূত্রে অনুরূপ মর্মে (১৪৩৯ নং) হাদীস বর্ণিত আছে। এই বিষয়ে আবু বকর, উবাদা ইবনুস সামিত, আবু হুরায়রা, আবু সাঈদ, ইবনে আব্বাস, জাবির ইবনে সামুরা, হাযযাল, বুরায়দা, সালামা ইবনুল মুহাববাক, আবু বারযা ও ইমরান ইবনে হুসাইন (রাযিঃ) থেকেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু হুরায়রা ও যায়দ ইবনে খালিদ (রাযিঃ) বর্ণিত হাদীসটি হাসান-সহীহ।

মালিক ইবনে আনাস, মা‘মার (রাহঃ) প্রমুখ যুহরী থেকে উবাইদুল্লাহ ইবনে আব্দুল্লাহ-আবু হুরায়রা ও যায়দ ইবনে খালিত (রাযিঃ) সূত্রে নবী (ﷺ) থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। উক্ত সনদে নবী (ﷺ) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি বললেনঃ দাসী যদি যিনা করে তবে তাকে দুররা মার। চতুর্থ বারও যদি সে যিনায় লিপ্ত হয় তবে একটি দড়ির বিনিময়ে হলেও তাকে বিক্রি করে দিবে।

সুফিয়ান ইবনে উয়াইনা (রাহঃ) অনুরূপভাবে এটিকে যুহরী সূত্রে উবাইদুল্লাহর মাধ্যমে আবু হুরায়রা, যায়দ ইবনে খালিদ ও শিবল (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন; তারা বললেন, আমরা নবী (ﷺ) এর কাছে ছিলাম। ইবনে উয়াইনা দুটি হাদীসকেই আবু হুরায়রা, যায়দ ইবনে খালিদ ও শিবল (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন। কিন্তু ইবনে উয়াইনা (রাযিঃ)-এর রিওয়ায়াতে ওয়াহম বা বিভ্রান্তি ঘটেছে। এ বিভ্রান্তি সয়ং সুফিয়ান ইবনে উয়াইনা (রাহঃ) থেকে ঘটেছে। তিনি একটি রিওয়ায়াতকে আর একটি রিওয়ায়াতের মধ্যে ঢুকিয়ে ফেলেছেন।

সহীহ হল যুবায়দী, ইউনুস ইবনে উবাইদ ও যুহরী ভ্রাতুষ্পুত্র-যুহরী সূত্রে উবাইদুল্লাহর মাধ্যমে আবু হুরায়রা ও যায়দ ইবনে খালিদ (রাযিঃ) এর সনদে নবী (ﷺ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যদি দাসী যিনা করে (অপর সূত্র) এবং যুহরী-উবাইদুল্লাহ থেকে, তিনি শিবল ইবনে খালিদ থেকে, তিনি আব্দুল্লাহ ইবনে মালিক আওসী (রাযিঃ) থেকে, তিনি নবী (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, যদি দাসী যিনা করে...। হাদীস বিশারদগণের মতে এটি সহীহ।

শিবল ইবনে খালিদ (রাহঃ) নবী (ﷺ) এর সাক্ষাত পান নাই। তিনি আব্দুল্লাহ ইবনে মালিক আওসী (রাযিঃ)-এর বরাতে নবী (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেন। এটি সহীহ। ইবনে উয়াইনার রিওয়ায়াতটি ‘মাহফুজ’ নয়। তার থেকে এও বর্ণিত আছে যে, তিনি নামোল্লেখ করতে গিয়ে বলেছেন শিবল ইবনে হামিদ, অথচ তা হল ভুল। আসলে তিনি শিবল ইবনে খালিদ এবং তাকে শিবল ইবনে খুলায়দও বলা হয়।
باب مَا جَاءَ فِي الرَّجْمِ عَلَى الثَّيِّبِ .
حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ، وَغَيْرُ، وَاحِدٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ، سَمِعَهُ مِنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، وَزَيْدِ بْنِ خَالِدٍ، وَشِبْلٍ، أَنَّهُمْ كَانُوا عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَأَتَاهُ رَجُلاَنِ يَخْتَصِمَانِ فَقَامَ إِلَيْهِ أَحَدُهُمَا وَقَالَ أَنْشُدُكَ اللَّهَ يَا رَسُولَ اللَّهِ لَمَّا قَضَيْتَ بَيْنَنَا بِكِتَابِ اللَّهِ . فَقَالَ خَصْمُهُ وَكَانَ أَفْقَهَ مِنْهُ أَجَلْ يَا رَسُولَ اللَّهِ اقْضِ بَيْنَنَا بِكِتَابِ اللَّهِ وَائْذَنْ لِي فَأَتَكَلَّمَ إِنَّ ابْنِي كَانَ عَسِيفًا عَلَى هَذَا فَزَنَا بِامْرَأَتِهِ فَأَخْبَرُونِي أَنَّ عَلَى ابْنِي الرَّجْمَ فَفَدَيْتُ مِنْهُ بِمِائَةِ شَاةٍ وَخَادِمٍ ثُمَّ لَقِيتُ نَاسًا مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ فَزَعَمُوا أَنَّ عَلَى ابْنِي جَلْدَ مِائَةٍ وَتَغْرِيبَ عَامٍ وَإِنَّمَا الرَّجْمُ عَلَى امْرَأَةِ هَذَا . فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لأَقْضِيَنَّ بَيْنَكُمَا بِكِتَابِ اللَّهِ الْمِائَةُ شَاةٍ وَالْخَادِمُ رَدٌّ عَلَيْكَ وَعَلَى ابْنِكَ جَلْدُ مِائَةٍ وَتَغْرِيبُ عَامٍ وَاغْدُ يَا أُنَيْسُ عَلَى امْرَأَةِ هَذَا فَإِنِ اعْتَرَفَتْ فَارْجُمْهَا " . فَغَدَا عَلَيْهَا فَاعْتَرَفَتْ فَرَجَمَهَا .
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مُوسَى الأَنْصَارِيُّ، حَدَّثَنَا مَعْنٌ، حَدَّثَنَا مَالِكٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، وَزَيْدِ بْنِ خَالِدٍ الْجُهَنِيِّ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَهُ بِمَعْنَاهُ .
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، بِإِسْنَادِهِ نَحْوَ حَدِيثِ مَالِكٍ بِمَعْنَاهُ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي بَكْرَةَ وَعُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَأَبِي سَعِيدٍ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَجَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ وَهَزَّالٍ وَبُرَيْدَةَ وَسَلَمَةَ بْنِ الْمُحَبِّقِ وَأَبِي بَرْزَةَ وَعِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ وَزَيْدِ بْنِ خَالِدٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَهَكَذَا رَوَى مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ وَمَعْمَرٌ وَغَيْرُ وَاحِدٍ عَنِ الزُّهْرِيِّ عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَزَيْدِ بْنِ خَالِدٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .
وَرَوَوْا بِهَذَا الإِسْنَادِ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ " إِذَا زَنَتِ الأَمَةُ فَاجْلِدُوهَا فَإِنْ زَنَتْ فِي الرَّابِعَةِ فَبِيعُوهَا وَلَوْ بِضَفِيرٍ " . وَرَوَى سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ عَنِ الزُّهْرِيِّ عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَزَيْدِ بْنِ خَالِدٍ وَشِبْلٍ قَالُوا كُنَّا عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . هَكَذَا رَوَى ابْنُ عُيَيْنَةَ الْحَدِيثَيْنِ جَمِيعًا عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَزَيْدِ بْنِ خَالِدٍ وَشِبْلٍ وَحَدِيثُ ابْنِ عُيَيْنَةَ وَهَمٌ وَهِمَ فِيهِ سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ أَدْخَلَ حَدِيثًا فِي حَدِيثٍ . وَالصَّحِيحُ مَا رَوَى مُحَمَّدُ بْنُ الْوَلِيدِ الزُّبَيْدِيُّ وَيُونُسُ بْنُ يَزِيدَ وَابْنُ أَخِي الزُّهْرِيِّ عَنِ الزُّهْرِيِّ عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَزَيْدِ بْنِ خَالِدٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِذَا زَنَتِ الأَمَةُ فَاجْلِدُوهَا " . وَالزُّهْرِيُّ عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ عَنْ شِبْلِ بْنِ خَالِدٍ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَالِكٍ الأَوْسِيِّ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِذَا زَنَتِ الأَمَةُ " . وَهَذَا الصَّحِيحُ عِنْدَ أَهْلِ الْحَدِيثِ . - وَشِبْلُ بْنُ خَالِدٍ لَمْ يُدْرِكِ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم إِنَّمَا رَوَى شِبْلٌ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَالِكٍ الأَوْسِيِّ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَهَذَا الصَّحِيحُ وَحَدِيثُ ابْنِ عُيَيْنَةَ غَيْرُ مَحْفُوظٍ وَرُوِيَ عَنْهُ أَنَّهُ قَالَ شِبْلُ بْنُ حَامِدٍ وَهُوَ خَطَأٌ إِنَّمَا هُوَ شِبْلُ بْنُ خَالِدٍ وَيُقَالُ أَيْضًا شِبْلُ بْنُ خُلَيْدٍ .
tahqiqতাহকীক:বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)
জামে' তিরমিযী - হাদীস নং ১৪৩৩ | মুসলিম বাংলা