আল জামিউল কাবীর- ইমাম তিরমিযী রহঃ

১০. জানাযা-কাফন-দাফনের অধ্যায়

হাদীস নং: ১০২৮
আন্তর্জাতিক নং: ১০২৮
সালাতুল জানাযা ও মৃত ব্যক্তির জন্য শাফাআতের পদ্ধতি।
১০২৮. আবু কুরায়ব (রাহঃ) ...... মারছাদ ইবনে আব্দুল্লাহ আল ইয়াযানী (রাহঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, মালিক ইবনে হুবায়রা (রাযিঃ) যখন সালাতুল জানাযায় যেতেন তখন লোক সংখ্যা কম হলে তাদেরকে তিন ভাগে বিভক্ত করতেন। বলতেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, তিন কাতার লোক যার সালাতুল জানাযা আদায় করেছেন তার জন্য (জান্নাত) ওয়াজিব করে নিয়েছে।

এই বিষয়ে আয়িশা, উম্মে হাবীবা, আবু হুরায়রা উন্মুল মু’মিনীন মায়মুনা (রাযিঃ) থেকেও হাদীস বর্ণিত আছে। ইমাম আবু ঈসা রহঃ বলেন, মালিক ইবনে হুরায়রা (রাযিঃ) বর্ণিত হাদীসটি হাসান। এইভাবেই একাধিক রাবী এটিকে মুহাম্মাদ ইবনে ইসহাক রহঃ থেকে বর্ণনা করেছেন। ইবরাহীম ইবনে সা’দ হাদীসটিকে মুহাম্মাদ ইবনে ইসহাক রহঃ থেকে রিওয়য়াত করেছেন। কিন্তু এতে মারছাদ ও মালিক ইবনে হুরায়রা (রাযিঃ) এর মাঝে আরেক ব্যক্তির উল্লেখ করেছেন। আমার কাছে এদের রিওয়ায়াতটিই অধিকতর সহীহ।
باب مَا جَاءَ فِي الصَّلاَةِ عَلَى الْجَنَازَةِ وَالشَّفَاعَةِ لِلْمَيِّتِ
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، وَيُونُسُ بْنُ بُكَيْرٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي حَبِيبٍ، عَنْ مَرْثَدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ الْيَزَنِيِّ، قَالَ كَانَ مَالِكُ بْنُ هُبَيْرَةَ إِذَا صَلَّى عَلَى جَنَازَةٍ فَتَقَالَّ النَّاسَ عَلَيْهَا جَزَّأَهُمْ ثَلاَثَةَ أَجْزَاءٍ ثُمَّ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ صَلَّى عَلَيْهِ ثَلاَثَةُ صُفُوفٍ فَقَدْ أَوْجَبَ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَائِشَةَ وَأُمِّ حَبِيبَةَ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَمَيْمُونَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ مَالِكِ بْنِ هُبَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ هَكَذَا رَوَاهُ غَيْرُ وَاحِدٍ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ . وَرَوَى إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ هَذَا الْحَدِيثَ وَأَدْخَلَ بَيْنَ مَرْثَدٍ وَمَالِكِ بْنِ هُبَيْرَةَ رَجُلاً . وَرِوَايَةُ هَؤُلاَءِ أَصَحُّ عِنْدَنَا .

হাদীসের ব্যাখ্যা:

এ হাদীছটির দৃষ্টিতে উলামায়ে কেরাম বলেন, জানাযার নামায সর্বনিম্ন তিন কাতারে হওয়া মুস্তাহাব। লোকসংখ্যা যদি কম হয়, তবে একেক কাতারে অন্ততপক্ষে দু'জন করে হলেও তিন কাতার বানিয়ে নেওয়া ভালো। যদিও এক বা দুই কাতারে করলেও জানাযা জায়েয হয়ে যায়।

তিন কাতারের ফযীলত সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এর দ্বারা মায়্যিতের জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যায়। এটা একটা ওয়াদা, যা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে শুনিয়েছেন। আল্লাহ তা'আলার ওয়াদায় কোনও ব্যতিক্রম হয় না। তবে অন্যান্য হাদীছের দৃষ্টিতে এটা স্পষ্ট হয়ে আছে যে, এর দ্বারা বান্দার হক মাফ হয় না। কাজেই মায়্যিতের উপর যদি বান্দার কোনও হক থেকে যায়, তবে তা পরিশোধের ব্যবস্থা করা উচিত। অন্যথায় আখিরাতে এর জন্য সে আটকা পড়ে যাবে।

সাহাবায়ে কেরাম নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুসরণ করতে সর্বদা বদ্ধপরিকর থাকতেন। আলোচ্য হাদীছটিতেও তার প্রমাণ পাওয়া যায়। হযরত মালিক ইবন হুবায়রা রাযি. সম্পর্কে এতে বলা হয়েছে যে, জানাযায় উপস্থিত লোকের সংখ্যা কম দেখলে তিনি তাদেরকে তিন কাতারে বিভক্ত করে নিতেন। তিনি এর সপক্ষে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী দ্বারা প্রমাণ পেশ করেছেন। এর দ্বারা বোঝা যায় লোকসংখ্যা যদি বেশি হয় এবং কাতারের সংখ্যা তিনের বেশি হয়ে যায়, তাতে অসুবিধার কিছু নেই। বরং লোক যত বেশি হবে আর তাতে কাতার যত বেশি বাড়বে ততোই ভালো।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

ক. জানাযার নামাযে তিন কাতার করা মুস্তাহাব।

খ. প্রতিটি কাজে সুন্নতের অনুসরণ করার উৎসাহ রাখা উচিত।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
জামে' তিরমিযী - হাদীস নং ১০২৮ | মুসলিম বাংলা