আল জামিউল কাবীর- ইমাম তিরমিযী রহঃ
১০. জানাযা-কাফন-দাফনের অধ্যায়
হাদীস নং: ৯৭৫
আন্তর্জাতিক নং: ৯৭৫
এক- তৃতীয়াংশ বা এক- চতুর্থাংশ সম্পদের ওয়াসিয়্যাত করা।
৯৭৭. কুতায়বা (রাহঃ) ...... সা’দ ইবনে মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, আমি অসুস্থ ছিলাম। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাকে দেখতে এলেন। তিনি আমাকে বললেন, তুমি কি ওয়াসিয়্যাত করেছ? বললাম, জ্বী, হ্যাঁ। তিনি বললেন, কতটুকু? বললাম, আমার সব মাল আল্লাহর রাস্তায় দিয়ে দিলাম। তিনি বললেন, তোমার সন্তানদের জন্য কি পরিমাণ রেখেছ? বললাম, তারা বেশী ধনী। তিনি বললেন, এক দশমাংশ ওয়াসিয়্যাত করে যাও। সা’দ বললেন, আমি তা কম মনে করতে লাগলাম, শেষে তিনি বললেন, এক তৃতীয়াংশ ওয়াসিয়্যাত করে যাও। এক তৃতীয়াংশ তো বিরাট। - আবু দাউদ, বুখারি, মুসলিম
আবু আব্দুর রহমান বললেন, এক-তৃতীয়াংশ তো অনেক। এই বিষয়ে ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) থেকেও হাদীস বর্ণিত আছে। ইমাম আবু ঈসা (রাযিঃ) বলেন, সা‘দ বর্ণিত হাদীসটি হাসান-সহীহ। একাধিক সূত্রে এটি বর্ণিত আছে। কোন কোন বর্ণনায় كبير শব্দ কোন কোন বর্ণনায় كثير শব্দের উল্লেখ রয়েছে। আলিমগণ এতদনুসারে আমল করার অভিমত প্রকাশ করেছেন। এক তৃতীয়াংশেরও অধিক ওয়াসিয়্যাত করা তারা জায়েজ মনে করেন না। বরং এক তৃতীয়াংশের কম পরিমাণ ওয়াসিয়্যাত করা তারা মুস্তাহাব বলে মনে করেন। সুফিয়ান ছাওরী বলেনঃ এক চতুর্থাংশের তুলনায় এক পঞ্চমাংশ, এক তৃতীয়াংশের তুলনায় এক চতুর্থাংশ ওয়াসিয়্যাত করা পূর্ববর্তী আলিমগণ মুস্তাহাব বলে মনে করতেন। যে ব্যক্তি এক তৃতীয়াংশ সম্পদ ওয়াসিয়্যাত করল সে তো আর কিছু ছাড়লই না। এক তৃতীয়াংশের অধিক ওয়াসিয়্যাত করা তার জন্য জায়েজ নেই।
আবু আব্দুর রহমান বললেন, এক-তৃতীয়াংশ তো অনেক। এই বিষয়ে ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) থেকেও হাদীস বর্ণিত আছে। ইমাম আবু ঈসা (রাযিঃ) বলেন, সা‘দ বর্ণিত হাদীসটি হাসান-সহীহ। একাধিক সূত্রে এটি বর্ণিত আছে। কোন কোন বর্ণনায় كبير শব্দ কোন কোন বর্ণনায় كثير শব্দের উল্লেখ রয়েছে। আলিমগণ এতদনুসারে আমল করার অভিমত প্রকাশ করেছেন। এক তৃতীয়াংশেরও অধিক ওয়াসিয়্যাত করা তারা জায়েজ মনে করেন না। বরং এক তৃতীয়াংশের কম পরিমাণ ওয়াসিয়্যাত করা তারা মুস্তাহাব বলে মনে করেন। সুফিয়ান ছাওরী বলেনঃ এক চতুর্থাংশের তুলনায় এক পঞ্চমাংশ, এক তৃতীয়াংশের তুলনায় এক চতুর্থাংশ ওয়াসিয়্যাত করা পূর্ববর্তী আলিমগণ মুস্তাহাব বলে মনে করতেন। যে ব্যক্তি এক তৃতীয়াংশ সম্পদ ওয়াসিয়্যাত করল সে তো আর কিছু ছাড়লই না। এক তৃতীয়াংশের অধিক ওয়াসিয়্যাত করা তার জন্য জায়েজ নেই।
باب مَا جَاءَ فِي الْوَصِيَّةِ بِالثُّلُثِ وَالرُّبُعِ
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ السَّائِبِ، عَنْ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ السُّلَمِيِّ، عَنْ سَعْدِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ عَادَنِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَنَا مَرِيضٌ فَقَالَ " أَوْصَيْتَ " . قُلْتُ نَعَمْ . قَالَ " بِكَمْ " . قُلْتُ بِمَالِي كُلِّهِ فِي سَبِيلِ اللَّهِ . قَالَ " فَمَا تَرَكْتَ لِوَلَدِكَ " . قُلْتُ هُمْ أَغْنِيَاءُ بِخَيْرٍ . قَالَ " أَوْصِ بِالْعُشْرِ " . فَمَا زِلْتُ أُنَاقِصُهُ حَتَّى قَالَ " أَوْصِ بِالثُّلُثِ وَالثُّلُثُ كَثِيرٌ " . قَالَ أَبُو عَبْدِ الرَّحْمَنِ وَنَحْنُ نَسْتَحِبُّ أَنْ يَنْقُصَ مِنَ الثُّلُثِ لِقَوْلِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " وَالثُّلُثُ كَثِيرٌ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ سَعْدٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ وَقَدْ رُوِيَ عَنْهُ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ وَقَدْ رُوِيَ عَنْهُ " وَالثُّلُثُ كَبِيرٌ " . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ لاَ يَرَوْنَ أَنْ يُوصِيَ الرَّجُلُ بِأَكْثَرَ مِنَ الثُّلُثِ وَيَسْتَحِبُّونَ أَنْ يَنْقُصَ مِنَ الثُّلُثِ . قَالَ سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ كَانُوا يَسْتَحِبُّونَ فِي الْوَصِيَّةِ الْخُمُسَ دُونَ الرُّبُعِ وَالرُّبُعَ دُونَ الثُّلُثِ وَمَنْ أَوْصَى بِالثُّلُثِ فَلَمْ يَتْرُكْ شَيْئًا وَلاَ يَجُوزُ لَهُ إِلاَّ الثُّلُثُ .
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছটিতে হযরত সা'দ রাযি. নিজ ঘটনা বর্ণনা করেন যে, তিনি বিদায় হজ্জের বছর মক্কা মুকার্রামায় কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। সংবাদ পেয়ে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে দেখতে আসেন। কোনও সাহাবী অসুস্থ হলে তাকে দেখতে আসা তাঁর সাধারণ অভ্যাস ছিল। তিনি অন্যদেরকেও রোগী দেখতে যাওয়ার প্রতি উৎসাহিত করেছেন। এটা তাঁর সুন্নত এবং এর অনেক ফযীলত।
হযরত সা'দ রাযি. বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে দেখতে আসলেন। আমি তাঁকে জানালাম যে, আমার ওয়ারিশ তো মাত্র আমার এক কন্যা। অন্যদিকে আমার সম্পদ প্রচুর। এ অবস্থায় আমি কি আমার সম্পদের তিন ভাগের দুইভাগ সদকা করে দিতে পারি? নবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করলেন। তারপর তিনি অর্ধেকের কথা বললেন। তাও নিষেধ করলেন। শেষে যখন তিন ভাগের একভাগের কথা বললেন, তখন পরিমাণ হিসেবে এটাকেও বেশিই সাব্যস্ত করলেন, কিন্তু তা সত্ত্বেও অনুমতি দিয়ে দিলেন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. কেউ অসুস্থ হয়েছে জানলে তাকে দেখতে যাওয়া উচিত। এটা প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নত।
খ. উল্লেখযোগ্য কোনও কাজ করতে চাইলে সে ব্যাপারে বিজ্ঞজনের সংগে পরামর্শ করা উচিত, যেমন হযরত সা'দ ইবন আবূ ওয়াক্কাস রাযি. তার সম্পদ দান করে দেওয়ার ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের সংগে পরামর্শ করেছেন।
গ. মুমূর্ষু ব্যক্তি যদি তার সম্পদ দান করতে চায় বা সে সম্পর্কে অসিয়ত করতে চায়, তবে তা সর্বোচ্চ এক–তৃতীয়াংশের ভেতর করতে পারে, এর বেশি করা জায়েয নয়। উত্তম হল এক–তৃতীয়াংশেরও নিচে রাখা
হযরত সা'দ রাযি. বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে দেখতে আসলেন। আমি তাঁকে জানালাম যে, আমার ওয়ারিশ তো মাত্র আমার এক কন্যা। অন্যদিকে আমার সম্পদ প্রচুর। এ অবস্থায় আমি কি আমার সম্পদের তিন ভাগের দুইভাগ সদকা করে দিতে পারি? নবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করলেন। তারপর তিনি অর্ধেকের কথা বললেন। তাও নিষেধ করলেন। শেষে যখন তিন ভাগের একভাগের কথা বললেন, তখন পরিমাণ হিসেবে এটাকেও বেশিই সাব্যস্ত করলেন, কিন্তু তা সত্ত্বেও অনুমতি দিয়ে দিলেন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. কেউ অসুস্থ হয়েছে জানলে তাকে দেখতে যাওয়া উচিত। এটা প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নত।
খ. উল্লেখযোগ্য কোনও কাজ করতে চাইলে সে ব্যাপারে বিজ্ঞজনের সংগে পরামর্শ করা উচিত, যেমন হযরত সা'দ ইবন আবূ ওয়াক্কাস রাযি. তার সম্পদ দান করে দেওয়ার ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের সংগে পরামর্শ করেছেন।
গ. মুমূর্ষু ব্যক্তি যদি তার সম্পদ দান করতে চায় বা সে সম্পর্কে অসিয়ত করতে চায়, তবে তা সর্বোচ্চ এক–তৃতীয়াংশের ভেতর করতে পারে, এর বেশি করা জায়েয নয়। উত্তম হল এক–তৃতীয়াংশেরও নিচে রাখা
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)


বর্ণনাকারী: