আল জামিউল কাবীর- ইমাম তিরমিযী রহঃ

৯. হজ্ব - উমরার অধ্যায়

হাদীস নং: ৮৮৫
আন্তর্জাতিক নং: ৮৮৫
গোটা আরাফাই উকুফ স্থল।
৮৮৬. মুহামামদ ইবনে বাশশার (রাহঃ) ...... আলী ইবনে আবু তালিব (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল (ﷺ) আরাফাতে উকুফ করলেন। পরে বললেনঃ এ হলো আরাফা, এ হলো উকুফ স্থল। আর গোটা আরাফারই উকুফ স্থল। এরপর তিনি সূর্য অস্ত গেলে সেখানে থেকে প্রত্যাবর্তন করলেন এবং উসামা ইবনে যায়দ কে তাঁর বাহনের পিছনে বসালেন। তিনি স্বীয় অবস্থান থেকে হাত ইশারা করছিলেন। লোকজন ডানে বামে তাদের উটগুলো হাঁকাচ্ছিল। তিনি মুযদালিফায় এলেন, এখানে তিনি তাদেরকে নিয়ে উভয় ওয়াক্ত (মাগরিব ও এশা) নামায এক সঙ্গে আদায় করলেন।, ভোরে তিনি ‘কাযাহ্’ নামক স্থানে এসে অবস্থান করলেন এবং বললেন, এ হলো কাযাহ্; এ-ও উকুফ স্থল, আর মুযদালিফা সারাটাই উকুফের জায়গা।

এরপর তিনি ওয়াদী মুহাসসারে এসে পৌছেলেন। তিনি তাঁর উটটিকে বেত দিয়ে মারলেন। ফলে সেটি খুব দ্রুত দৌড়ে সেটি এই উপত্যকাটি অতিক্রম করে গেল, পরে তিনি থামলেন এবং তাঁর পিছনে (ইবনে আব্বাস) ফযল কে বসালেন। এরপর তিনি জামরায় আসলেন এবং এখানে কংকর মারলেন। পরে কুরবানীর জায়গায় আসলেন এবং বললেন, এ হলো, কুরবানী করার স্থান। আর গোটা মিনাই হলো কুরবানী করার স্থান, এই সময় খাছআম গোত্রের এক যুবতী মহিলা তাঁকে জিজ্ঞাসা করলো যে, আমার পিতা অতি বৃদ্ধ। তার উপর আল্লাহর নির্ধারিত হজ্জ ফরয হয়েছে। আমি তার পক্ষ থেকে হজ্জ করলে তা কি আদায় হয়ে যাবে? তিনি বললেন, তোমার পিতার পক্ষ থেকে একটি হজ্জ আদায় করে নাও।

আলী (রাযিঃ) বলেন, এই সময় তিনি ফযলের ঘাড় কেন ঘুরিয়ে দিলেন? তিনি বললেন, আমি দেখলাম এরা দু’জন হল যুবক-যুবতী। সুতারাং আমি তাদেরকে শয়তান থেকে নিরাপদ মনে করিনি। এরপর একজন লোক এসে তাঁকে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি যে মাথা মুণ্ডনের পূর্বেই তাওয়াফে ইফাযা করে ফেলেছি। তিনি বললেন, মাথা মুণ্ডন করে নাও, কোন অসুবিধা নেই। (অথবা বললেন চুল ছেটে নাও কোন অসুবিধা নেই) রাবী বললেন, আরেক ব্যক্তি এসে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! কংকর মারার আগে আমি যবেহ্ করে ফেলেছি। তিনি বললেন কংকর মেরে নাও, কোন অসুবিধা নেই। আলী (রাযিঃ) বলেন, এরূপ তিনি বায়তুল্লাহ্ এসে তাওয়াফ করলেন। পরে যমযম কূপের কাছে এসে বললেন, হে বনু আব্দুল মুত্তালিব! এই বিষয়ে মানুষ তোমাদের উপর প্রবল হয়ে উঠবে এই আশঙ্কা যদি না হত তবে আমি অবশ্যই তোমাদের সঙ্গে পানি টেনে তুলতাম।

এই বিষয় জাবির (রাযিঃ) থেকেও হাদীস বর্ণিত আছে। ইমাম আবু ঈসা (রাহঃ) বলেন, আলী (রাযিঃ) বর্ণিত হাদীসটি হাসান-সহীহ্। আব্দুর রহমান ইবনে হারিস ইবনে আয়াশ - এর সূ্ত্র ছাড়া আলী (রাযিঃ) বর্ণিত হাদীসটি অন্য কোন সূত্রে বর্ণিত আছে বলে আমাদের জানা নেই। একাধিক রাবী ছাওরী (রাযিঃ) থেকে অনুরূপ রিওয়ায়াত করেছেন। আলিমগণ এতদনুসারে আমল গ্রহণ করেছেন। তারা বলেন, আরাফায় যোহরের ওয়াক্তে যোহর ও আসর একসঙ্গে আদায় করতে হবে। কতক আলিম বলেন। যদি কোন ব্যক্তি নিজের অবস্থান স্থলেই নামায আদায় করে, ইমামের সঙ্গে নামাযে হাযির না হয় তবে সে ইচ্ছা করলে ইমামের মত দুই নামায এক সঙ্গে আদায় করতে পারে। রাবী যায়দ ইবনে আলী হলেন যায়দ ইবনে আলী ইবনে ইবনে হাসান ইবনে আলী ইবনে আবু তালিব।
باب مَا جَاءَ أَنَّ عَرَفَةَ كُلَّهَا مَوْقِفٌ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا أَبُو أَحْمَدَ الزُّبَيْرِيُّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْحَارِثِ بْنِ عَيَّاشِ بْنِ أَبِي رَبِيعَةَ، عَنْ زَيْدِ بْنِ عَلِيٍّ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي رَافِعٍ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ، رضى الله عنه قَالَ وَقَفَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِعَرَفَةَ فَقَالَ " هَذِهِ عَرَفَةُ وَهَذَا هُوَ الْمَوْقِفُ وَعَرَفَةُ كُلُّهَا مَوْقِفٌ " . ثُمَّ أَفَاضَ حِينَ غَرَبَتِ الشَّمْسُ وَأَرْدَفَ أُسَامَةَ بْنَ زَيْدٍ وَجَعَلَ يُشِيرُ بِيَدِهِ عَلَى هَيْئَتِهِ وَالنَّاسُ يَضْرِبُونَ يَمِينًا وَشِمَالاً يَلْتَفِتُ إِلَيْهِمْ وَيَقُولُ " يَا أَيُّهَا النَّاسُ عَلَيْكُمُ السَّكِينَةَ " . ثُمَّ أَتَى جَمْعًا فَصَلَّى بِهِمُ الصَّلاَتَيْنِ جَمِيعًا فَلَمَّا أَصْبَحَ أَتَى قُزَحَ فَوَقَفَ عَلَيْهِ وَقَالَ " هَذَا قُزَحُ وَهُوَ الْمَوْقِفُ وَجَمْعٌ كُلُّهَا مَوْقِفٌ " . ثُمَّ أَفَاضَ حَتَّى انْتَهَى إِلَى وَادِي مُحَسِّرٍ فَقَرَعَ نَاقَتَهُ فَخَبَّتْ حَتَّى جَاوَزَ الْوَادِيَ فَوَقَفَ وَأَرْدَفَ الْفَضْلَ ثُمَّ أَتَى الْجَمْرَةَ فَرَمَاهَا ثُمَّ أَتَى الْمَنْحَرَ فَقَالَ " هَذَا الْمَنْحَرُ وَمِنًى كُلُّهَا مَنْحَرٌ " . وَاسْتَفْتَتْهُ جَارِيَةٌ شَابَّةٌ مِنْ خَثْعَمٍ فَقَالَتْ إِنَّ أَبِي شَيْخٌ كَبِيرٌ قَدْ أَدْرَكَتْهُ فَرِيضَةُ اللَّهِ فِي الْحَجِّ أَفَيُجْزِئُ أَنْ أَحُجَّ عَنْهُ قَالَ " حُجِّي عَنْ أَبِيكِ " . قَالَ وَلَوَى عُنُقَ الْفَضْلِ فَقَالَ الْعَبَّاسُ يَا رَسُولَ اللَّهِ لِمَ لَوَيْتَ عُنُقَ ابْنِ عَمِّكَ قَالَ " رَأَيْتُ شَابًّا وَشَابَّةً فَلَمْ آمَنِ الشَّيْطَانَ عَلَيْهِمَا " . ثُمَّ أَتَاهُ رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي أَفَضْتُ قَبْلَ أَنْ أَحْلِقَ . قَالَ " احْلِقْ أَوْ قَصِّرْ وَلاَ حَرَجَ " . قَالَ وَجَاءَ آخَرُ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي ذَبَحْتُ قَبْلَ أَنْ أَرْمِيَ . قَالَ " ارْمِ وَلاَ حَرَجَ " . قَالَ ثُمَّ أَتَى الْبَيْتَ فَطَافَ بِهِ ثُمَّ أَتَى زَمْزَمَ فَقَالَ " يَا بَنِي عَبْدِ الْمُطَّلِبِ لَوْلاَ أَنْ يَغْلِبَكُمُ النَّاسُ عَنْهُ لَنَزَعْتُ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ جَابِرٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَلِيٍّ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ لاَ نَعْرِفُهُ مِنْ حَدِيثِ عَلِيٍّ إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ مِنْ حَدِيثِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْحَارِثِ بْنِ عَيَّاشٍ . وَقَدْ رَوَاهُ غَيْرُ وَاحِدٍ عَنِ الثَّوْرِيِّ مِثْلَ هَذَا . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ رَأَوْا أَنْ يُجْمَعَ بَيْنَ الظُّهْرِ وَالْعَصْرِ بِعَرَفَةَ فِي وَقْتِ الظُّهْرِ . وَقَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ إِذَا صَلَّى الرَّجُلُ فِي رَحْلِهِ وَلَمْ يَشْهَدِ الصَّلاَةَ مَعَ الإِمَامِ إِنْ شَاءَ جَمَعَ هُوَ بَيْنَ الصَّلاَتَيْنِ مِثْلَ مَا صَنَعَ الإِمَامُ . قَالَ وَزَيْدُ بْنُ عَلِيٍّ هُوَ ابْنُ حُسَيْنِ بْنِ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ عَلَيْهِ السَّلاَمُ .
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
জামে' তিরমিযী - হাদীস নং ৮৮৫ | মুসলিম বাংলা