আল জামিউল কাবীর- ইমাম তিরমিযী রহঃ

৫. দুই ঈদের অধ্যায়

হাদীস নং: ৫৪১
আন্তর্জাতিক নং: ৫৪১
রাসূল (ﷺ) ঈদের নামাযে এক পথে যেতেন অন্য পথে আসতেন।
৫৪১. আব্দুল আ’লা ইবনে ওয়াসিল ইবনে ইবনে আব্দিল আ’লা আল কুফী ও আবু যুর’আ (রাহঃ) ...... আবু হুরাইরা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, ঈদের দিন রাসুল (ﷺ) এক পথে যেতেন অন্য পথে আসতেন। - ইবনে মাজাহ ১৩০১

এই বিষয়ে আব্দুল্লাহ ইবনে উমর এবং আবু রাফিঈ (রাযিঃ) থেকেও হাদীস বর্ণিত আছে। ইমাম আবু ঈসা তিরমিযী (রাহঃ) বলেনঃ আবু হুরাইরা (রাযিঃ) বর্ণিত হাদীসটি হাসান-গরীব। আবু তুমাইলা ও ইউনুস ইবনে মুহাম্মাদ (রাহঃ)ও এই হাদীসটি ফুলায়হ ইবনে সুলাইমান ......... সাইদ ইবনে আল হারিস ...... জাবীর ইবনে আব্দিল্লাহ (রাযিঃ) সূত্রে বর্ণনা করেছেন। এই হাদীসের অনুসরণে ইমামের জন্য এক পথে যাওয়া এবং অন্য পথে আসা কতক আলিম মত প্রকাশ করেছেন। এ হল ইমাম শাফিঈ (রাহঃ) এর অভিমত। এই বিষয়ে জাবির (রাযিঃ) বর্ণিত হাদীসটি সহীহ।
باب مَا جَاءَ فِي خُرُوجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِلَى الْعِيدِ فِي طَرِيقٍ وَرُجُوعِهِ مِنْ طَرِيقٍ آخَرَ
حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى بْنُ وَاصِلِ بْنِ عَبْدِ الأَعْلَى الْكُوفِيُّ، وَأَبُو زُرْعَةَ قَالاَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الصَّلْتِ، عَنْ فُلَيْحِ بْنِ سُلَيْمَانَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْحَارِثِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِذَا خَرَجَ يَوْمَ الْعِيدِ فِي طَرِيقٍ رَجَعَ فِي غَيْرِهِ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ وَأَبِي رَافِعٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَحَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ . وَرَوَى أَبُو تُمَيْلَةَ وَيُونُسُ بْنُ مُحَمَّدٍ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ فُلَيْحِ بْنِ سُلَيْمَانَ عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْحَارِثِ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ . قَالَ وَقَدِ اسْتَحَبَّ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ لِلإِمَامِ إِذَا خَرَجَ فِي طَرِيقٍ أَنْ يَرْجِعَ فِي غَيْرِهِ اتِّبَاعًا لِهَذَا الْحَدِيثِ وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ . وَحَدِيثُ جَابِرٍ كَأَنَّهُ أَصَحُّ .

হাদীসের ব্যাখ্যা:

এ হাদীছ অনুযায়ী আমাদের জন্যও ঈদগাহে এক পথে যাওয়া এবং সেখান থেকে অন্য পথে ফেরা মুস্তাহাব হবে। কেননা সকল নেককাজে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের আদর্শ। ঈদগাহে আসা-যাওয়া করাটাও একটি নেককাজ। তিনি যখন যাওয়া-আসাটা পৃথক পৃথক পথে করতেন, তখন আমাদেরও সেরকমই করা উচিত। একজন নবীপ্রেমী ও ছাওয়াবের প্রত্যাশী কেবল ফরয-ওয়াজিব কাজ করেই ক্ষান্ত থাকতে পারে না। সে পদে পদে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুকরণ করবে। আগ্রহ-উদ্দীপনার সঙ্গে সুন্নত, মুস্তাহাবও মেনে চলবে।

উলামায়ে কেরাম লেখেন, ঈদগাহে যাওয়া-আসার দুই পথের এক পথ যদি বেশি লম্বা হয়, তবে যাওয়ার সময় লম্বা পথ ধরবে আর ফিরবে সংক্ষিপ্ত পথে। কারণ যাওয়ার সময় আগ্রহ-উদ্দীপনা বেশি থাকে। তাই তখন পথ দীর্ঘ হলে তাতে ক্লান্তিবোধ হবে না। কিন্তু ফেরার সময় শরীর ক্লান্ত থাকে। তাই এ সময় সংক্ষিপ্ত পথই উপযোগী।

ঈদগাহে দুই পথে যাওয়া-আসা করার কারণ কী? এ বিষয়ে উলামায়ে কেরাম বিভিন্ন কথা বলেছেন। যেমন, কিয়ামতের দিন রাস্তাও সাক্ষ্য দেবে। তাই এর দ্বারা সাক্ষীর সংখ্যা বাড়ে। যাওয়া-আসার পথে যিকির করলে দুই পথেই যিকির করা হয়। এতে করে আল্লাহর যিকিরের প্রচার বৃদ্ধি হয়। আল্লাহর মহিমা প্রচার যত বেশি হয় ততোই কল্যাণ। দুই পথে আসা-যাওয়া করলে মানুষজনের খোঁজখবর বেশি নেওয়া যায়। এতে করে দান-খয়রাতও বেশি করা সম্ভব হয়। এ পন্থায় ঈদের আনন্দ উপভোগে তুলনামূলক বেশি মানুষকে শরীক করা যায়। এছাড়াও উলামায়ে কেরাম এর বিভিন্ন কারণ বর্ণনা করেছেন।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

সম্ভব হলে ঈদগাহ, মসজিদ প্রভৃতি স্থানে দুই পথে যাওয়া-আসা করা চাই। এতে করে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আরও একটি সুন্নতের উপর আমল হয়ে যায়।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান